বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব এখন এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়। সাম্প্রতিক বাংলা চলচ্চিত্রগুলির পর্যালোচনায় স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে শহুরে শ্রেণির আধিপত্য, যেখানে গ্রামীণ জীবনের বাস্তবতা প্রায় অনুপস্থিত। বাংলা সিনেমার আর্বান এলিট ডমিনেন্স শুধুমাত্র থিমে নয়, চরিত্র এবং গল্প নির্মাণেও গভীরভাবে প্রভাব ফেলছে। মফস্বল ও গ্রামের সংগ্রাম, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক বাস্তবতা আজকের সিনেমায় উপেক্ষিত। এই প্রবণতা শুধুই সিনেমার জগতে নয়, বৃহত্তর সাংস্কৃতিক বৃত্তে এক শ্রেণিগত বিভাজনের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে, যা নিয়ে এখন সচেতনতা ও আলোচনা জরুরি।

সূচিপত্র

শহুরে শ্রেণির আধিপত্য বাংলা চলচ্চিত্রে: এক গভীর বিশ্লেষণ

🔹  গল্প বাছাইয়ের রাজনীতি

বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব লক্ষ্য করার মতো একটি বাস্তবতা।
বর্তমান বাংলা সিনেমাগুলির ন্যারেটিভ গড়ে ওঠে এমন কিছু চরিত্র ও পরিস্থিতির উপর, যা মূলত শহরের মধ্যবিত্ত সমাজের রুটিন ও সংকটকে কেন্দ্র করে।

  • বাংলা সিনেমার কেন্দ্রে শুধুই শহুরে মধ্যবিত্ত সমাজ— কলেজ পড়ুয়া প্রেম, অফিসের রাজনীতি, ক্যাফেতে আত্মদর্শন।

  • গ্রামের কষ্ট আর সংগ্রাম সিনেমায় উঠে আসে না, যদিও সংখ্যার দিক থেকে দেশের বেশিরভাগ মানুষ এখনও গ্রামে বাস করেন।

🔎 উদাহরণ: সাম্প্রতিক কালের প্রশংসিত বহু ছবি— Vinci Da, Shobdo, Nagarkirtan, Dostojee— সবকটিই শহুরে বা মফস্বলের রূপরেখায় আবদ্ধ। গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না।

🔹  শহুরে শ্রেণির দৃষ্টিভঙ্গির আধিপত্য

শহুরে শ্রেণির প্রভাব বাংলা সিনেমার গল্প নির্ধারণ করে— কে থাকবে প্রধান চরিত্রে, কার ভাষায় কথা বলা হবে, কোন সমস্যাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে— সব কিছুই।

  • শহরের প্রেক্ষাপটে তৈরি বাংলা সিনেমার আধিক্য সত্যিই বিস্ময়কর।

  • আধুনিক বাংলা সিনেমা শুধুই শহরের জীবন দেখায়, যেন গ্রামের অস্তিত্বই নেই।

🎭 তথ্যসূত্র: ২০০০ সালের পর মুক্তিপ্রাপ্ত ১০০টি বাংলা ছবির মধ্যে মাত্র ৭টি ছবিতে গ্রামীণ পটভূমি ছিল, তার মধ্যেও অধিকাংশই শহরের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখানো।

Urban vs Rural: Are Bengali films more focused on urban life now? | Bengali  Movie News - Times of India

🔹 চরিত্রে বৈচিত্র্যহীনতা

বাংলা ছবিতে গ্রামের চরিত্র নেই, থাকলেও তারা হয় ‘সহজ-সরল’, নয় তো ‘মূর্খ’। তাদের কণ্ঠে নেই নিজস্বতা।

  • চলচ্চিত্রে গ্রামের কণ্ঠ অনুপস্থিত, তারা যেন কেবল শহুরে গল্পে একটি নিরব প্রেক্ষাপট।

  • গ্রামীণ জীবনধারার চিত্রায়ণ বাংলা সিনেমায় বিরল— কৃষকের ঋণ, নারীশিক্ষা, স্থানীয় রাজনীতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ— কিছুই উঠে আসে না।

📽️ True Story: এক সময়ের বিখ্যাত পরিচালক তরুণ মজুমদার ১৯৮৪ সালে একটি সিনেমা করতে চেয়েছিলেন নদীয়া জেলার এক চাষির জীবন নিয়ে। প্রযোজকরা বলেছিলেন, “এগুলো আজকাল আর চলে না, শহরের গল্প আনো।” এই একটি লাইনই বুঝিয়ে দেয় বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ মানুষের গল্প উঠে আসে না

🔹 মফস্বল বা গ্রামীণ গল্প মানেই “ব্যতিক্রম” – এটা কেন?

  • মফস্বলের গল্প বাংলা সিনেমায় গুরুত্ব পাচ্ছে না, এমনকি যেগুলো হয়ও, সেগুলো “Alternate cinema” বা “offbeat” নামের ট্যাগে চালানো হয়।

  • গ্রামের সমস্যা ও সংস্কৃতি বাংলা সিনেমায় উপেক্ষিত, যেন সেটা “niche audience”-এর জন্য।

🎞️ একটি নজির: Fera, Abohomaan, Bakita Byaktigoto— এই ধরণের ছবি স্বীকৃতি পেলেও বাজার পেল না, কারণ শহুরে দর্শকের রুচি অনুযায়ী তৈরি হচ্ছে বাংলা সিনেমা

🔹  সাংস্কৃতিক বৈষম্য তৈরি হচ্ছে?

বাংলা সিনেমা ও শ্রেণিগত বৈষম্য এখন এতটাই প্রকট যে, তা কেবল বিনোদনের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়, এটি সমাজে সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিত্বেও প্রভাব ফেলছে।

  • গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি ও চলচ্চিত্র যেন আলাদা জগতের গল্প।

  • বাংলা সিনেমার গল্পে শহর বনাম গ্রাম – এই দ্বন্দ্ব ক্রমেই অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। সিনেমা হয়ে উঠছে শুধুই শহরের আয়না।

🧠 Insight: এমনকি স্কুলের নাট্যচর্চাতেও এখন গ্রামের গল্প আর ঠাঁই পায় না—এই প্রবণতা সাংস্কৃতিক অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে।

🔹 ভবিষ্যতের আশার আলো কোথায়?

  • নতুন প্রজন্মের কিছু নির্মাতা, যেমন—অর্ণব পাল, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়— ধীরে ধীরে মফস্বল ও গ্রামের দিকেই ফিরছেন।

  • ওটিটি প্ল্যাটফর্মের আগমন একটি নতুন সুযোগ এনেছে, যেখানে গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না এই অভিযোগ কিছুটা হলেও ভাঙছে।

🌱 তবে পরিবর্তন ধীর এবং বিচ্ছিন্ন।

বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব কেবল চলচ্চিত্রিক বেছে নেওয়ার বিষয় নয়, এটি এক গভীর সাংস্কৃতিক ও শ্রেণিগত সংকেত। গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না—এই সত্য যতদিন না মূলধারার সিনেমায় জায়গা পাবে, ততদিন বাংলা চলচ্চিত্র পূর্ণতা পাবে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি পরিপূর্ণ, বৈচিত্র্যময়, এবং বাস্তবঘন চলচ্চিত্র দুনিয়া উপহার দেওয়ার জন্য এই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন অপরিহার্য।

Urban vs Rural: Are Bengali films more focused on urban life now? | Bengali  Movie News - Times of India

বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব: এক নির্মম বাস্তবতা

🔹  ‘গ্রামীণ’ মানেই ‘পুরোনো’ – এই মনোভাবের শিকড়

▪️ বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব কেন এত প্রকট?

  • অনেক নির্মাতা মনে করেন গ্রামীণ পটভূমি মানেই কাহিনিতে গতি নেই, দৃশ্যমানতা নেই।

  • এই ধারণা জন্মেছে একটি পুরনো দৃষ্টিভঙ্গি থেকে—যেখানে ‘আধুনিক’ মানেই ‘শহুরে’।

📌 অজানা তথ্য: ১৯৭০-৮০ সালের দশকে গ্রামীণ গল্প নিয়ে নির্মিত ‘গল্প হলেও সত্যি’, ‘হারানো সুর’ বা ‘পথের পাঁচালী’ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেও, ২০০০ সালের পর থেকে বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব ক্রমশ বাড়তে থাকে।

🔹  ‘গ্রাম’ নেই, কারণ ‘গ্রাহক’ শহুরে?

▪️ নির্মাতাদের এক বড় যুক্তি— শহরের দর্শকই প্রেক্ষাগৃহে যান, গ্রামের দর্শক OTT-তে।

  • এর ফলে গল্প লেখা হয় শহরের সমস্যাকে কেন্দ্র করে।

  • গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না, কারণ সিনেমার অর্থনীতি শহরের উপর নির্ভরশীল।

🧠 Insight: “গ্রামের ছেলে সিডনি-ফেরত” গল্পে অর্থ আছে, কিন্তু “সেচহীন মাঠে ধানচাষে লড়াই” গল্পে বাজেট নেই—এইভাবেই হারায় গ্রামীণ বাস্তবতা।

🔹 যারা গ্রামের গল্প বলেন, তারা ব্রাত্য!

▪️ আজকের দিনে কিছু পরিচালক চেষ্টারত, কিন্তু তাদের সিনেমা চলে না মূলধারায়।

  • বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব দূর করতে চাইলেও তারা পাচ্ছেন না প্রযোজক বা প্রচার।

  • ‘লোকাল’ শব্দটা যেন একধরনের নিন্দা!

📽️ True Story: ২০১7 সালে রিলিজ হওয়া “Sahaj Paather Gappo” নামের একটি বাংলা সিনেমা— যেখানে দুই ভাইয়ের গ্রামীণ দারিদ্র্যের গল্প বলা হয়—ছবিটি জাতীয় পুরস্কার পেলেও কলকাতার একটিও বড় হলে রিলিজ পায়নি।

🎬 এই ঘটনাই প্রমাণ করে—গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না, এমনকি গল্প থাকলেও প্ল্যাটফর্ম নেই।

🔹 শহুরে ভঙ্গিতে ‘গ্রাম’ চিত্রায়ণ: অর্ধসত্যের প্রতিফলন

▪️ যখনই গ্রাম আসে, সেটা হয় বাৎসল্যময় বা কৌতুকপূর্ণ।

  • গ্রামের জীবন বাস্তব না হয়ে হয়ে যায় রোম্যান্টিকাইজড।

  • বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব এর অর্থ শুধু অনুপস্থিতি নয়, বিকৃত উপস্থিতিও।

🧩 দৃষ্টান্ত: ‘Belaseshe’, ‘Maati’, এমনকি ‘Parineeta’-তেও গ্রামের চরিত্র থাকে, কিন্তু তারা সবসময় শহুরে দৃষ্টিতে সাজানো—কখনও শিক্ষার ঘাটতি, কখনও আচার-আচরণে অতীতমুখিতা।

🔹 শিক্ষার অভাব নয়, সুযোগের অভাব

▪️ অনেক গ্রামীণ প্রতিভা আছে যারা গ্রাম থেকেই চিত্রনাট্য বা সিনেমা করতে চায়, কিন্তু সুযোগ পান না।

  • বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব দূর করার জন্য নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণ জরুরি।

  • কিন্তু film school, funding, networking সবই শহরকেন্দ্রিক।

🎓 Example: মালদার এক ছাত্র, রাহুল দাস, নিজের লেখা স্ক্রিপ্ট নিয়ে কলকাতার পাঁচটি প্রোডাকশন হাউজে যান—সবাই বলেন, “দারুণ গল্প, তবে এটা নন্দন-রিলিজ হবে না, ওটিটি-তে পাঠাও।” তিনি বলেন, “গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না, কারণ সেটা মূলধারার জন্য ‘ঝুঁকি’।”

Revisiting Satyajit Ray & His Timeless Masterpiece Pather Panchali

🔹 আন্তর্জাতিক প্রশংসা পেলেও দেশে অচেনা

▪️ যে সমস্ত বাংলা সিনেমা গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় তুলে ধরেছে, তারা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হলেও দেশীয় বক্স অফিসে ব্যর্থ।

🌍 উদাহরণ:

  • ‘Char Adhyay’, Sthaniya Sambad, ‘Herbert’— প্রত্যেকটি ছবি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে।

  • তবুও মূলধারায় উঠে আসেনি কারণ বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব আমাদের দর্শকপ্রবণতা থেকেই জন্ম নিচ্ছে।

 পরিবর্তনের আশা কোথায়?

  • OTT প্ল্যাটফর্মগুলি আজ নতুন নির্মাতাদের সামনে গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় তুলে ধরার সুযোগ দিচ্ছে।

  • তবে এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে। বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব পূরণ করতে গেলে চাই নির্মাতার সাহস, প্রযোজকের ভরসা ও দর্শকের আগ্রহ।

বাংলা সিনেমার গল্পে শহর বনাম গ্রাম: যে দ্বন্দ্বে গ্রাম হারাচ্ছে দৃশ্যপট

🔹 শহুরে গল্পের আধিপত্য: কেন সিনেমা হয়ে উঠছে মেট্রো সেন্ট্রিক?

▪️ শহরের জীবনচিত্র: নাটকীয়তা ও গতিশীলতার অভিজ্ঞান

  • শহর মানেই উচ্চাকাঙ্ক্ষা, চাকরি, প্রেম ও প্রতারণার কাহিনি—এগুলো দর্শকের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য বলে ধরা হয়।

  • এই কারণে বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব দিন দিন বেড়েই চলেছে।

▪️ প্রযোজকদের দৃষ্টিভঙ্গি:

  • শহরের গল্প মানে স্পন্সর, ব্র্যান্ডিং এবং মাল্টিপ্লেক্স রিলিজের নিশ্চয়তা।

  • গ্রাম মানেই সীমিত বাজেট, সীমিত শ্রোতা—ফলে গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না

🎬 অজানা তথ্য: ২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘Vinci Da’ সিনেমায় একজন শহরের মেকআপ আর্টিস্টের গল্প বলা হলেও, একই বছরের ‘Ahaa Re’-তে একটি কৃষক পরিবারের পর্দার গল্প স্ক্রিপ্ট হয়েও বাদ যায়।

🔹 গ্রাম মানেই ‘পিছিয়ে’: মিডিয়ার চিরাচরিত মানসিকতা

▪️ বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব শুধু অনুপস্থিতিই নয়, অবমূল্যায়নও।

  • গ্রাম দেখানো হয় হয় অতিরিক্ত নির্যাতনের জায়গা, নয়তো অতিনাটকীয় আদর্শের প্রতীক হিসাবে।

  • বাস্তব গ্রাম, আধুনিক কৃষক বা গ্রামের মহিলাদের আত্মনির্ভর গল্প বাংলা সিনেমার গল্পে শহর বনাম গ্রাম দ্বন্দ্বে খুব কমই উঠে আসে।

📌 ভিন্নতা: ২০১৫ সালে তুহিন সিনহার তৈরি ‘Neel Rong’er Cha’ চা-বাগানের মেয়েদের নিয়ে নির্মিত হয়—তবে এই ছবি বাংলা হলে না দেখিয়ে বিদেশে স্ক্রিনিং করা হয়।

🔹 শহর বনাম গ্রাম: জীবনযাত্রার বিপরীত দিশা

▪️ শহর মানে অস্থিরতা, গ্রাম মানে অবরুদ্ধতা—এই ছক ভেঙে বাংলা সিনেমা চলেনি

  • বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব একমাত্র তখনই ঘুচবে যখন গ্রামকে ‘আলাদা চরিত্র’ না বানিয়ে, ‘বাস্তব চরিত্র’ বানানো হবে।

  • কিন্তু সিনেমায় ‘গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র’ আজও কল্পনার সীমাবদ্ধতা থেকে বেরোতে পারেনি।

💡 টুইস্টেড ইনফো: আধুনিক পশ্চিমবঙ্গে প্রতি ১০ জন কৃষকের মধ্যে ৪ জন স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, কিন্তু সিনেমায় তাদেরকে আজও চাষী-ধুতি-গামছা চরিত্রে রাখা হয়।

Vinci Da - JioHotstar

🔹 গল্পের পরিপ্রেক্ষিতে ‘শহর বনাম গ্রাম’ নয়, ‘মানুষ বনাম পরিকাঠামো’ হওয়া উচিত

▪️ চরিত্র নির্মাণে বৈচিত্র্য নেই বলেই বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব আজও প্রকট।

  • শহরের কফিশপে বসা প্রেমকাহিনির চিত্রায়ণ যত বার হয়, গ্রামের নলকূপের পাশে লড়াইয়ের দৃশ্য ততটাই উপেক্ষিত।

🧠 উল্লেখযোগ্য ঘটনা: নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখার্জির ‘Haami’-র সিক্যুয়েল নির্মাণে পাত্রপাত্রীর স্কুল শহরে হলেও তাদের গ্রামের ছুটি কাটানোর অংশ বাদ পড়ে প্রযোজকের চাপে। কারণ, “গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না”—তা নাকি প্রমোশন থামিয়ে দেয়।

🔹 গল্পের মানেই নয় লোকেশন—সেটাই ভুল প্রমাণ করেছে কিছু অপ্রচলিত ছবি

▪️ শহরকে গ্রাম করে দেখানো আর গ্রামকে শহরের মতো সাজানো—দুটোই ছদ্ম।

📽️ True Story: পরিচালক সৌরভ পালোধি তার ‘Rawkto Rawhoshyo’ সিনেমায় শহর ও গ্রাম দুটো পরিবেশকেই আলাদা মেজাজে দেখাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রযোজক চেয়েছিলেন পুরো শহরকেন্দ্রিক কাহিনি। তখন তিনি গোপনে শেষ অংশে ‘কোচবিহার’ লোকেশনে শ্যুট করে শহরের সাজেই গ্রামীণ বাস্তবতা ঢুকিয়ে দেন।

এই ঘটনা প্রমাণ করে, বাংলা সিনেমার গল্পে শহর বনাম গ্রাম দ্বন্দ্ব কেবল ভৌগোলিক নয়—এটা আসলে চিন্তাধারার ব্যবধান।

Rawkto Rawhoshyo - JioHotstar

 চিন্তার বদলেই বদলাবে দৃশ্যপট

  • গল্প শহরের হোক বা গ্রামের—চরিত্র, জীবন, বাস্তবতা যেন সমান গুরুত্ব পায়।

  • বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব দূর করতে হলে, আগে নির্মাতাকে ভাঙতে হবে ‘দর্শক কী চায়’ সেই একঘেয়ে ফর্মুলা।

  • গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না, এই কথাটা বদলাতে হলে দরকার সাহসী, কৌতূহলী ও দায়িত্বশীল গল্পকার।

বাংলা সিনেমা ও শ্রেণিগত বৈষম্য: পর্দার ভিতরে যাদের কোনো চিত্র নেই

🔹 মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের গল্পই কেন প্রধান?

▪️ নির্মাতার চোখে ‘টার্গেট শ্রোতা’:

  • আজকের বাংলা সিনেমা মূলত শহুরে মাল্টিপ্লেক্স দর্শকদের কথা ভেবেই তৈরি—যারা কফি, কেরিয়ার আর ক্রাশ নিয়ে গল্প খুঁজে।

  • ফলে বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব জন্ম নিচ্ছে নির্মাতার বেছে নেওয়া ক্লাস পার্সপেক্টিভ থেকেই।

▪️ বাস্তবতা ও পর্দা—দুটোর বিপরীত মেরু:

  • প্রতি ১০ জন বাংলা সিনেমা দর্শকের মধ্যে প্রায় ৪ জন গ্রামীণ অঞ্চলের হলেও, তাদের জীবনের প্রতিচ্ছবি হয় অনুপস্থিত, নয়তো অতিনাটকীয়।

🎥 সত্য ঘটনা: পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায় একবার ‘জলপাইগুড়ি’র শ্রমজীবী পরিবারের উপর সিনেমা করতে চেয়েছিলেন। প্রযোজক জবাবে বলেন, “এই গল্প মাল্টিপ্লেক্সে চলবে না”—আর ঠিক সেই কারণেই গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না

🔹 শ্রমজীবী শ্রেণী ও ‘সিনেম্যাটিক নীরবতা’

▪️ ‘শ্রমিক’ চরিত্র মানেই নায়কের বন্ধু?

  • কাহিনির প্রেক্ষাপটে শ্রমজীবী বা নিম্নবিত্ত মানুষদের চরিত্র একধরনের ‘পটভূমি’, কিন্তু কখনোই নায়ক নয়।

  • ফলে বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব যেন এই শ্রেণীর গল্প বলার সাহস না থাকারই প্রতিফলন।

📌 উল্লেখযোগ্য তথ্য: বিখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ২০০৩ সালে বলেছিলেন, “আমার অভিনীত অনেক ছবিতে গ্রামের চা-ওয়ালা থেকেছে, কিন্তু তার কোনো গল্প ছিল না।”

▪️ ব্যতিক্রম যে ছিল না, তা নয়:

  • ২০০৯ সালের ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’ সিনেমায় একটি ট্রাক ড্রাইভার পরিবারের ছেলের প্রেম কাহিনি তুলে ধরা হলেও, শহরের নার্স চরিত্রই ছিল মূল আকর্ষণ।

🔹 শ্রেণি বৈষম্য, গ্রামীণ অবহেলা এবং দর্শকের চাহিদা—এ এক ত্রিকোণ সঙ্কট

▪️ দর্শক কি বাস্তব চায়?

  • এই প্রশ্নই সবচেয়ে বিতর্কিত, কারণ নির্মাতারা মনে করেন, “গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না, কারণ দর্শক দেখতে চায় না।”

  • অথচ ২০২0-এ ‘Dostojee’ সিনেমা দেখিয়েছে কিভাবে দুই গ্রামীণ শিশুর বন্ধুত্ব দর্শকের মন কেড়ে নিতে পারে।

💡 উল্লেখযোগ্য তথ্য: দক্ষিণ ভারতের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে কৃষিজীবী চরিত্র নিয়ে ২০১৫-২০২৩ সাল পর্যন্ত ৪৭টি সিনেমা তৈরি হয়েছে। সেখানে বাংলায় এই সংখ্যাটা মাত্র ৫।

Dostojee: A poignant tale of childhood kinship is drawing huge acclaim

🔹 শ্রেণিগত বৈষম্য শুধুই গল্পে নয়, স্ক্রিপ্টিংয়ে, সংলাপে, এমনকি সিনেমার পোস্টারেও

▪️ কে থাকে কেন্দ্রে, কে থাকে প্রান্তে?

  • সিনেমার পোস্টারে একবার চোখ রাখলেই বোঝা যায়—বাড়ির ছাদে বসা মধ্যবিত্ত মেয়ের ছবি, কফির কাপ হাতে বসে থাকা যুবক, কিন্তু বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব ধরা পড়ে খালি প্রান্তিক মুখের অনুপস্থিতিতে।

🎞️ True Story: পরিচালক অতনু ঘোষের এক সাক্ষাৎকারে উঠে আসে, তার লেখা একটি স্ক্রিপ্টে একজন গ্রামীণ বিধবা প্রধান চরিত্র ছিলেন। কিন্তু চূড়ান্ত প্রোডাকশন বোর্ডে গিয়ে চরিত্রটি বদলে শহরের কর্পোরেট মহিলায় পরিণত হয় “বাজারের চাপে”।

🔹 পর্দা শুধু বিনোদন নয়, সচেতনতার মাধ্যম—সে কথা কি ভুলে যাচ্ছে বাংলা?

▪️ সমাজকে ‘আয়না’ দেখানোর কাজ যদি সিনেমার হয়, তবে আয়নায় কেন শুধু শহর?

  • শ্রেণিগত বৈষম্যের প্রেক্ষাপটে বাংলা সিনেমার গল্পে শহর বনাম গ্রাম কেবল ভৌগোলিক নয়, এটি শ্রেণিচেতনার প্রতিচ্ছবি।

  • শ্রমজীবী, প্রান্তিক, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর বাস্তবতা না থাকলে, সিনেমা হয়ে পড়ে একচোখা।

শ্রেণিচেতনার বৈপ্লবিক রূপান্তর ছাড়া আসবে না বাস্তবের প্রতিচ্ছবি

  • বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব দূর করতে হলে, নির্মাতাকে সাহসিকতার সঙ্গে ভাঙতে হবে শ্রেণিগত ভেদরেখা।

  • গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না, কারণ গল্প এখনো শহুরে আলোয় ঝলমল করছে।

  • শ্রেণি না দেখে মানুষকে দেখতে শিখলেই বাংলা সিনেমা আবার ফিরে পাবে তার ‘লোককথা’র গন্ধ।

🧭 ভবিষ্যতের দিশা: সিনেমার পর্দায় গ্রামীণ ভারতের বাস্তবতাকে ফেরানোর জরুরি রূপরেখা

🔹 চিত্রনাট্যের বাঁকে গ্রামীণ বাস্তবতার পুনঃপ্রবেশ

▪️ বিকল্প গল্প বলার ধরন:

  • বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব মেটাতে প্রয়োজন বিকল্প ন্যারেটিভ—যেখানে গ্রাম হবে ‘বিনোদনের পটভূমি’ নয়, বরং কাহিনির মেরুদণ্ড।

  • উদাহরণস্বরূপ, গল্প হতে পারে একজন বাঁকুড়ার হাইস্কুল শিক্ষক, যিনি চাষাবাদ বাঁচিয়ে ছাত্রদের পড়ান, অথবা একজন কুমোর, যিনি ইউটিউবের মাধ্যমে কেরিয়ার গড়ে তোলেন।

▪️ গ্রাম মানেই দারিদ্র্য—এই চিরাচরিত ফ্রেম ভাঙা:

  • গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না, কারণ সেখানে “গ্রাম” মানেই কেবল দুর্গা পুজো আর জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব।

  • অথচ ভারতের ৭০% ইনোভেটিভ ক্ষুদ্র উদ্যোগ এখন গ্রামীণ ভারতেই জন্ম নিচ্ছে—এই দিকটা একেবারেই অচর্চিত।

🔹 প্রযোজনা হাউস ও স্টুডিওর সাহসী উদ্যোগ প্রয়োজন

▪️ বাজেট বনাম দায়িত্ব:

  • অনেক প্রযোজক মনে করেন, “গ্রামীণ গল্পে টাকা নেই”—এটা একপ্রকার ভ্রান্ত ধারণা। কারণ দৃষ্টান্ত আছে:
    🎥 True Story: ‘Village Rockstars’ (অসমীয়া ছবি) মাত্র ₹10 লক্ষ বাজেটে তৈরি হয়েও জাতীয় পুরস্কার জিতেছে, এবং আন্তর্জাতিক উৎসবে প্রশংসিত হয়েছে। অথচ বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব এখনো কাটেনি।

▪️ OTT প্ল্যাটফর্মের সুযোগ:

  • Netflix, Hoichoi, Amazon Prime-এর মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলি এখন সাহসী গল্পের অপেক্ষায়। “গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না” বলেই এখন এই প্ল্যাটফর্মে এমন বিষয়ের ঘাটতি প্রবল।

  • একজন প্রান্তিক নারীর ‘বিউটি পার্লার চালানো’র বাস্তব গল্প যেমন এক সময় বিহারে সুপারহিট হয়, বাংলা কেন পিছিয়ে?

🔹 সিনেমার ভাষা ও দর্শকের প্রস্তুতি

▪️ উপভাষা ও লোকসংস্কৃতির জায়গা:

  • বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব দূর করতে ভাষার ভিন্নতা ও লোকজ উপাদান অন্তর্ভুক্ত করা আবশ্যক।
    উদাহরণ: হুগলির দেউলটিতে ব্যবহৃত ‘রাঢ়ী বাংলা’ সংলাপে পূর্ণ একটি ছোট ফিচার ফিল্ম তৈরি হলে, তা সংস্কৃতির বহুমাত্রিকতাও তুলে ধরবে।

▪️ প্রেক্ষাগৃহ ছাড়াও ‘গ্রাম থিয়েটার’ চিন্তা করা জরুরি:

  • সিনেমা যদি শুধুই শহরের মাল্টিপ্লেক্সে চলে, তবে ‘গ্রামীণ চেতনার সিনেমা’ তৈরির মানসিকতা জন্ম নেবে না।

  • কল্পনা করুন: একটি ভ্রাম্যমাণ সিনেমা ভ্যান যেটি পুরুলিয়া বা দিনাজপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে সিনেমা দেখাচ্ছে—এভাবেই বাস্তবকে বাস্তবের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।

🔹 নবীন নির্মাতাদের দায়িত্ব ও ক্ষমতা

▪️ ফিল্ম স্কুল থেকে সরাসরি মাঠে নামা:

  • FTII, SRFTI-এর নবীন নির্মাতারা এখন হাতে-কলমে গ্রামীণ বাস্তবতা দেখছেন। তাঁদের জন্য এখন আদর্শ সময়—বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব পূরণ করতে।

  • ২০২৩ সালে সদ্য পাস করা এক ছাত্র, তমাল চক্রবর্তী, মুর্শিদাবাদের পাট ব্যবসায়ী পরিবারের জীবনের উপর একটি ডকুফিকশন করেন, যেটি কলকাতা আন্তর্জাতিক উৎসবে নির্বাচিত হয়। এটা শুধুই শুরু।

▪️ কম বাজেট, বেশি সাহস—এই হোক আগামী রণনীতি:

  • গ্রামীণ গল্পে CGI বা ভিজ্যুয়াল ভ্যানিশিং নয়, দরকার গভীর স্ক্রিপ্টিং ও বাস্তব অবস্থানভিত্তিক চিত্রায়ণ।

 ভবিষ্যতের বাংলা সিনেমা মানেই গ্রামীণ জীবনের শ্রুতিমধুর চিত্র

  • বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব এখন শুধুই সমালোচনার বিষয় নয়, বরং এক নতুন সম্ভাবনার দরজা।

  • গ্রামীণ ভারতের বাস্তব চিত্র বাংলা সিনেমায় দেখা যায় না—এই অভিযোগকে পাল্টে ফেলার ক্ষমতা আজকের প্রজন্মের হাতে।

  • শ্রেণিচেতনা, সাহসী প্রযোজনা এবং বিষয় নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলা সিনেমা আবার ফিরতে পারে মূল জনগোষ্ঠীর মুখোমুখি—এটাই ভবিষ্যতের সঠিক দিশা।

বাংলা সিনেমায় গ্রামীণ ভারতের অভাব একটি গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা, যা আজও পর্দায় পূর্ণভাবে প্রতিফলিত হয় না। শহুরে শ্রেণির আধিপত্য এবং তাদের জীবনধারা সিনেমার কেন্দ্রে থাকলেও, গ্রামীণ ভারতের জীবনের বাস্তবতা প্রায়শই উপেক্ষিত। তবে, সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সাহসী নির্মাণের মাধ্যমে এই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। আধুনিক বাংলা সিনেমার জন্য একটি নতুন দিশা হতে পারে গ্রামীণ জীবন ও সংস্কৃতির পূর্ণাঙ্গ চিত্রায়ণ, যা সমাজের প্রতিটি স্তরের গল্প তুলে ধরবে।

আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো

Leave a Reply