স্বাস্থ্যখাতে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে, কিন্তু প্রশ্ন একটাই—এই টাকার গন্তব্য ঠিক কোথায়?
প্রতিটি ইনজেকশন, প্রতিটি হাসপাতালের বিছানায়, নাকি কোথাও অদৃশ্য ছায়ায়?
পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি ব্যয় নিয়ে এই গল্প ঠিক অঙ্কের নয়, বরং সন্দেহ, স্বপ্ন আর স্বচ্ছতার খোঁজে এক রহস্যরোমাঞ্চ!

সূচিপত্র

আমাদের স্বাস্থ্যখাতে বাজেটের হালচাল – চোখ ধাঁধানো অঙ্ক না এক অপূর্ণ প্রতিশ্রুতি?

পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি ব্যয় শুনলে মাথা চক্কর খেয়ে যায়! ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বরাদ্দ হয়েছে ১৩,৮১৩.৪৬ কোটি টাকা – শুনলেই গর্ব হয়, তাই না? কিন্তু এই অঙ্কের আড়ালে এমন কিছু সূক্ষ্ম খুঁটিনাটি আছে, যেগুলো জানলে আপনি সত্যিই অবাক হবেন।

 বাজেট বরাদ্দ: সংখ্যা আর বাস্তবতার দ্বন্দ্ব

স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বরাদ্দ প্রতি বছর বাড়ছে, কিন্তু মানুষের অভিজ্ঞতা সেই বৃদ্ধির ছায়া পর্যন্ত পায় না!

🧾 উপবিভাগ:

  • ডিজিটাল স্বাস্থ্য প্রকল্প:
    ➤ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য খাতে খরচের হিসাব অনুযায়ী ‘Health Data Repository’ প্রকল্পে কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
    ➤ কিন্তু সেই তথ্য-ভাণ্ডারে কতটা তথ্য আপলোড হয়েছে, সেটা জানা যায় না!
    স্বাস্থ্যখাতে সরকারি টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে—এই প্রশ্ন আজও অনুত্তরিত।

  • আধুনিকীকরণ বনাম বাস্তবতা:
    ➤ বাজেট অনুযায়ী হাসপাতালের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ছিল, কিন্তু রাজ্যের বহু প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এখনও বেহাল।
    বাজেট বরাদ্দ অনুযায়ী হাসপাতালের উন্নয়ন হয়নি, বহু জায়গায় নেই এক্স-রে, নেই ওষুধ, নেই পর্যাপ্ত ডাক্তার!

 প্রকল্প অনুযায়ী খরচ বনাম মগজধোলাই

➡ সরকার বারবার বলে, “নতুন প্রকল্প এসেছে – স্বাস্থ্য হবে ডিজিটাল, দায়িত্ব হবে স্বচ্ছ।” কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে—

🧩 বাস্তবচিত্র:

  • স্বাস্থ্য খাতে প্রকল্প অনুযায়ী ব্যয়ের স্বচ্ছতা নেই বললেই চলে।

  • প্রকল্পের নাম থাকলেও ফান্ডের রূপান্তর কোথায়, কেউ জানে না।

  • স্বাস্থ্যখাতে সরকারি বিনিয়োগ কোথায় হচ্ছে – শহরে, না গ্রামে – তা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গ্রামের মানুষ চরমভাবে উপেক্ষিত।

 “কোথায় গেলো সেই টাকা?”—মানুষের মুখে মুখে প্রশ্ন

➡ স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি এখন আর গুজব নয়—এটা রীতিমতো বাস্তব।

🚨 অজানা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ:

  • RTI রিপোর্ট (2023):
    ➤ একাধিক RTI অনুসন্ধানে প্রকাশ, কিছু জেলায় হাসপাতালের নামে বরাদ্দকৃত টাকা ব্যবহৃত হয়েছে অনানুষ্ঠানিক খাতে!
    ➤ উদাহরণ: ৫০টি নতুন শয্যার নাম, কিন্তু মাঠে-ময়দানে সেই শয্যা নেই।

  • সরকারি হাসপাতালের ব্যয় কাগজে সুন্দর, বাস্তবে অদৃশ্য!
    ➤ বরাদ্দ হয়েছে, কিন্তু তার কার্যকরী বাস্তবায়ন নেই।

Healthcare Budget may face 16-17 percent Cut - Elets eHealth

 বাজেট আছে, কিন্তু মানুষের ভরসা কোথায়?

সরকারি খরচে স্বচ্ছতা নেই বলেই মানুষ সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার উপর আস্থা হারাচ্ছে।

🧠 উদাহরণ:

  • অনেক মানুষ এখনও ছোটখাটো চিকিৎসার জন্য প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে বাধ্য হন, কারণ সরকারি হাসপাতালে ভিড়, অব্যবস্থা, এবং ঘাটতি চরমে।

  • পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য খাতে খরচের হিসাব থাকলেও, মানুষের উপকার হয় না বলেই অনেকে মনে করেন।

 একটা প্রশ্ন: এত টাকা খরচ হলে উন্নতি কোথায়?

➡ সাধারণ মানুষ একটাই কথা বলেন—
স্বাস্থ্যখাতে সরকারি টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে সেটা যদি আমরা জানতেই না পারি, তাহলে এত বাজেট দিয়ে লাভ কী?
➡ স্বাস্থ্যের মতো সংবেদনশীল খাতে যদি সরকারি খরচে স্বচ্ছতা না থাকে, তবে তা শুধুই একটা নামমাত্র বাজেট হয়ে দাঁড়ায়।

 বিশেষ কিছু খুঁটিনাটি তথ্য (যা অনেকেই জানেন না):

  • পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৪০% সরকারি হাসপাতালের কোনো নির্দিষ্ট ব্লাড স্টোরেজ ইউনিট নেই – অথচ স্বাস্থ্যখাতে সরকারি বিনিয়োগের কথা শোনা যায় বারবার।

  • স্বাস্থ্য দপ্তরের বাজেট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, কিছু প্রকল্পে ৮০% বরাদ্দকৃত অর্থ বছরের শেষে অপরিব্যয়িত থেকে যায়।

  • স্বাস্থ্য পরিষেবায় স্বচ্ছতা নিয়ে সরকারের নিজস্ব অডিট রিপোর্ট অনেক সময় জনসমক্ষে আনা হয় না।

এই সব মিলিয়ে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি ব্যয় কেবল সংখ্যার খেলাই নয় – এটা এক গভীর ছায়া-নাটক, যেখানে তথ্য গোপন, পরিকাঠামো দুর্বল, আর স্বচ্ছতা… ঠিক যেন একটা আয়নার মতো—দেখা যায়, ছোঁয়া যায় না।

👉 পরের অংশে চলুন দেখি, এই অবস্থা থেকে কীভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যায়।

বলুন তো, এই বাজেটটা আসলে আমাদের জন্য—নাকি আমাদের চোখ বন্ধ রাখার এক কৌশল?

বাজেট বরাদ্দ বনাম বাস্তবতা: হিসেবের খাতা গরম, হাসপাতালের বিছানা ঠান্ডা!

পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি ব্যয় নিয়ে যখন বাজেট ঘোষণা হয়, তখন মনে হয় যেন এক নতুন ভোর আসছে।
কিন্তু বাস্তবে যখন হাসপাতালের মেঝেতে রোগী গাদাগাদি করে শুয়ে থাকে, তখন প্রশ্ন ওঠে—এই টাকা তবে কোথায় গেল?

How Healthy is Health Insurance? | The India Forum

 সংখ্যার ভেলকি – চোখ ধাঁধানো কিন্তু মন পোড়া

স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বরাদ্দ প্রতি বছরই বাড়ছে।
২০২3-২৪ সালে বরাদ্দ হয়েছিল প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা, ২০২৪-২৫ এ তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩,৮১৩.৪৬ কোটি টাকা

কিন্তু—

  • বাজেট বরাদ্দ অনুযায়ী হাসপাতালের উন্নয়ন হয়েছে কি?

  • শহরের বাইরের একাধিক হাসপাতালে নেই পর্যাপ্ত ওষুধ,

  • নেই ট্রেনড নার্স,

  • এমনকি বেসিক স্যানিটেশন সিস্টেম পর্যন্ত নেই!

📉 বাস্তবে স্বাস্থ্যখাতে সরকারি টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে, সে উত্তর খুঁজে পাওয়া ভার।

 হিসেব অনুযায়ী উন্নয়ন না হলে প্রশ্ন তো উঠবেই!

➡ রাজ্যের একাধিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে (PHC) এখনও পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই
➡ অথচ ফাইলে লেখা আছে—‘সকল স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিউবওয়েল স্থাপন সম্পূর্ণ’।

📜 এখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য খাতে খরচের হিসাব আর বাস্তবতার মাঝে একটা অদৃশ্য খাদের মত ফাঁক দেখা যায়।

💡 এক মজার তথ্য:

  • হাওড়ার এক ব্লকে একটি সরকারি হাসপাতালে বরাদ্দ হয়েছিল ৭৫ লক্ষ টাকা শুধুমাত্র ভবনের সংস্কারের জন্য
    ➤ বাস্তবে দেখা গেছে, সেই অর্থে ছাদে ফ্ল্যাট ঢালাই দেওয়া ছাড়া কিছুই হয়নি।
    ➤ রোগীরা এখনও ভাঙা জানালায় শুয়ে থাকেন, ঝড়ের রাতে ছাতা মেলে থাকেন শুয়ে!

 সরকারি খরচে স্বচ্ছতা—স্লোগান আছে, সিস্টেম নেই

সরকারি খরচে স্বচ্ছতা বলতে আমরা বুঝি, জনগণের করের টাকা কোথায় কিভাবে খরচ হচ্ছে তার খোলা রিপোর্ট।
➡ অথচ স্বাস্থ্যখাতে সেটা অনেকটাই নেই।

উদাহরণস্বরূপ:

  • স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে স্বাস্থ্য দপ্তরের বাজেট বিশ্লেষণ প্রকাশ হলেও, সেখানে অনেক ডেটা হয় আউটডেটেড নয়তো অসম্পূর্ণ।

  • অনেক ক্ষেত্রে প্রকল্পের নাম লেখা থাকলেও স্বাস্থ্য খাতে প্রকল্প অনুযায়ী ব্যয়ের স্বচ্ছতা খুঁজে পাওয়া যায় না।

 সরকারি হাসপাতালের ব্যয়—ঘোষণা ভারী, বাস্তব হালকা

➡ একাধিক সরকারি হাসপাতালে সিসিইউ (CCU) চালুর কথা বলা হয়েছে বাজেটে।
➡ কিন্তু অনেক জায়গাতেই নেই উপযুক্ত টেকনিশিয়ান, নেই স্পেশালিস্ট ডাক্তার।

🎭 বাস্তব উদাহরণ:

  • এক হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডাক্তার জানান,
    “আমাদের এখানে বাজেট আসে, টেন্ডার হয়, কিন্তু সরঞ্জাম পৌঁছোয় না। তখন আমরা আবার পুরনো ভাঙা যন্ত্রপাতি দিয়েই কাজ চালাই।”
    সরকারি হাসপাতালের ব্যয় ও বাস্তব পরিষেবা যেন উত্তরাধিকার সূত্রে দুই আলাদা গল্প!

 দুর্নীতি: যা বলা হয় না, কিন্তু ঘটে বারবার

স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা যেন একটা অলিখিত নিষেধ।
কিন্তু সাইলেন্ট রিপোর্ট বলছে অন্য কথা।

🧨 চমকপ্রদ তথ্য:

  • মালদহ, মেদিনীপুর, নদিয়ায় কিছু হাসপাতালের নামে বরাদ্দ হওয়া ওষুধ পৌঁছয়নি কিন্তু বিল সম্পূর্ণ হয়েছে।

  • রোগীদের দাবি, “আমরা বহির্বিভাগে গেলে বলে—ওষুধ নেই, বাইরে থেকে আনতে হবে।”

এইখানে বড় প্রশ্ন দাঁড়ায়—স্বাস্থ্যখাতে সরকারি টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে, যদি সাধারণ রোগী এই টাকায় উপকৃত না হয়?

পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি ব্যয় এবং স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বরাদ্দ যখন বাস্তবের মুখোমুখি হয়, তখন দেখা যায় এক গা ছমছমে অসঙ্গতির ছবি।
সরকারি ঘোষণা আর গ্রাউন্ড লেভেলের বাস্তবতার মাঝে যে ব্যবধান, সেটা মুছে না দিলে স্বাস্থ্য পরিষেবায় স্বচ্ছতা কোনওদিনই সম্ভব নয়।

এটা শুধু হিসেবের খেলা নয়, এটা মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন!

India Rejects Lancet Report, Affirms Record High Healthcare Spending -  Business Guardian

স্বচ্ছতার অভাব: কোথায় সমস্যা?

সরকারি খরচে স্বচ্ছতা—এই শব্দদুটো কানে ভালো শোনালেও বাস্তবে এটা যেন আয়নার ওপারে থাকা প্রতিচ্ছবি।
যখন স্বাস্থ্য বাজেট ঘোষণা হয়, তখন ঢাকঢোল পেটানো হয়; কিন্তু বছর ঘুরলে দেখা যায়, হিসেব আছে, খরচ আছে, অথচ পরিষ্কার নেই। পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি ব্যয় কোথায় কীভাবে হচ্ছে, তা নিয়ে জনসাধারণের জানার সুযোগ খুবই সীমিত।

Health expenditure share against GDP increases from 1.13% in FY15 to 1.84%  in FY22 - The Economic Times

 ফাইল ঘরে হিসেব, মাটির ঘরে অন্ধকার

স্বাস্থ্য দপ্তরের বাজেট বিশ্লেষণ শুধু সরকারিভাবে ওয়েবসাইটে দেওয়া কিছু PDF-এ আটকে।
➡ সাধারণ নাগরিক সেই টেকনিক্যাল রিপোর্ট বুঝতেই পারেন না।

🧩 ফলাফল:

  • স্বাস্থ্য খাতে প্রকল্প অনুযায়ী ব্যয়ের স্বচ্ছতা অনুপস্থিত।

  • বহু প্রকল্পের নাম আছে, কাজ নেই।

  • রিপোর্টে লেখা—“৩টি নতুন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি হয়েছে।”
    অথচ এলাকাবাসী বলেন—“আমরা তো খালি মাঠই দেখছি!”

➡ তাহলে প্রশ্ন: স্বাস্থ্যখাতে সরকারি টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে?

 ডিজিটাল পোর্টাল আছে, কিন্তু ডেটা নেই!

➡ স্বাস্থ্য খাতে যেসব সরকারি প্রকল্প চলছে, সেগুলোর আপডেট দেওয়ার কথা আছে সরকারি পোর্টালগুলোতে।
➡ কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়—

  • ডেটা আপডেট হয় না,

  • অনেক পাতায় লেখা থাকে “Data under compilation”।

🎯 এমনকি—

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য খাতে খরচের হিসাব জানার জন্য RTI করা ছাড়া উপায় থাকে না।

 নিরীক্ষা রিপোর্ট: যা প্রকাশ্যে আসে না

➡ স্বাস্থ্যখাতে বিশাল বাজেট বরাদ্দ হয়, কিন্তু নিরীক্ষা রিপোর্ট বা অডিট রিপোর্ট নিয়মিত প্রকাশ করা হয় না।

🚨 উদাহরণ:

  • একবার পশ্চিম মেদিনীপুরে সরকারি হাসপাতালের ব্যয় নিয়ে নিরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা যায়—

    বিল পাস হয়েছে আইসিইউ বেডের, কিন্তু বেড সরবরাহকারীর কোনো রেকর্ডই নেই!

➡ এটা স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি নয় তো কী?

 ‘প্রকল্প বাস্তবায়ন’ মানেই কি খাতাকলমে টিকচিহ্ন?

➡ স্বাস্থ্য দপ্তরের ফাইল বলছে—“৩২টি স্বাস্থ্য ক্যাম্প সফলভাবে সম্পন্ন।”
➡ কিন্তু গ্রামে গ্রামে ঘুরলে দেখা যায়, সেই ক্যাম্পের নাম শুনেছেনই না অনেকেই!

এই ছায়া-প্রকল্প গুলোর ফল কী?

  • বাজেট খরচ হয়,

  • অডিটে সমস্যা দেখা যায় না (কারণ রিপোর্টেই লেখা থাকে—‘Complete’),

  • কিন্তু রোগীরা উপকৃত হন না।

➡ এই ফাঁকে হারিয়ে যায় স্বাস্থ্য পরিষেবায় স্বচ্ছতা

 সাধারণ মানুষের জন্য নেই কোনও ‘ওপেন বাডজেট’ ব্যবস্থা

➡ উন্নত অনেক রাজ্য ও দেশেই বাজেট বরাদ্দ অনুযায়ী হাসপাতালের উন্নয়ন খোলাখুলি ভাবে জনগণের সামনে তুলে ধরা হয়।

➡ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এখনো—

  • নেই কোনও ইনফোগ্রাফিক,

  • নেই ভাষার সহজ ব্যাখ্যা,

  • নেই নাগরিকের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার জায়গা।

🎤 প্রশ্ন ওঠে— পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি ব্যয় কী শুধুই কাগজের খেলা?

 দুর্নীতি ও পক্ষপাত—‘গোপন’ শিকড়

➡ রোগী ভর্তির ক্ষেত্রে, ওষুধ সরবরাহে, কিংবা যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় ঘুষ ও পক্ষপাত অনেক ক্ষেত্রেই জড়িয়ে থাকে।

কিছু চমকপ্রদ তথ্য:

  • এক জরিপে দেখা গেছে, সরকারি হাসপাতালে ভর্তির জন্য অনেক সময় ‘ম্যাজিশিয়ান’ দরকার পড়ে—অর্থাৎ ‘চেনাজানা’।

  • রোগীর পরিবার জানে না—সরকারি খরচে স্বচ্ছতা বলতে বোঝায় কীভাবে কোন খরচ হয়েছে।

➡ যখন স্বাস্থ্যখাতে সরকারি টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে—এই প্রশ্ন অন্ধকারেই রয়ে যায়, তখন দুর্নীতির শিকড় আরও গাঢ় হয়।

 স্বচ্ছতা মানে কি শুধুই মোটা অক্ষরে লেখা শব্দ?

আমরা যদি না জানি—

  • কার কাছে রিপোর্ট দাখিল হয়,

  • কত টাকা বরাদ্দ হল,

  • স্বাস্থ্যখাতে সরকারি টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে,

  • এবং স্বাস্থ্য খাতে প্রকল্প অনুযায়ী ব্যয়ের স্বচ্ছতা কেমন—

তাহলে জনগণ হিসেবে আমাদের অবস্থা কি শুধু “অপেক্ষায় বসে থাকা”?

➡ স্বচ্ছতা মানে কেবল রিপোর্ট নয়—মানুষের হাতে তথ্য তুলে দেওয়া।
আর যখন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য খাতে খরচের হিসাব খোলাখুলি জানানো হবে, তখনই সত্যিকার অর্থে স্বাস্থ্য পরিষেবায় স্বচ্ছতা আসবে।

বাস্তব অভিজ্ঞতা: যখন স্বাস্থ্যখাতে সরকারি টাকা কাজে লাগেনি!

🩸 মালদহের নার্সিং হোমে শিশুমৃত্যু (২০২৩)

ঘটনা:
মালদহ মেডিকেল কলেজে এক প্রসূতি ভর্তির পর প্রায় ১২ ঘণ্টা কোনও চিকিৎসক আসেননি। প্রসব চলাকালীন শিশুর শ্বাস বন্ধ হয়ে মৃত্যু ঘটে।

সমস্যা কোথায়?

  • পর্যাপ্ত ডাক্তার নেই

  • ওটি-র যন্ত্রপাতি নষ্ট

  • হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট জানায়: “নতুন যন্ত্র কেনার জন্য বাজেট এসেও ছাড় হয়নি।”

➡️ প্রশ্ন উঠে: স্বাস্থ্যখাতে সরকারি টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে যদি মায়ের কোল ফাঁকা হয়ে যায়?

🛏  হাওড়ার হাসপাতাল: অক্সিজেন সাপোর্টের অভাবে মৃত্যুর ঘটনা (২০২1 – COVID সময়)

ঘটনা:
হাওড়ার সরকারি হাসপাতালে এক যুবক ভর্তি হন করোনা উপসর্গ নিয়ে। বেড মেলেও অক্সিজেন পাইপলাইন ছিল নষ্ট। অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে ৪৫ মিনিট দেরি হয়। সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্য:
হাসপাতালে স্বাস্থ্য খাতে প্রকল্প অনুযায়ী ব্যয়ের স্বচ্ছতা থাকলে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হত।

💊 বাঁকুড়ার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভ্যাকসিন ঘাটতি

ঘটনা:
২০২২ সালে বাঁকুড়ার এক ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৩ দিন ধরে কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া বন্ধ ছিল।
কারণ – ফ্রিজ নষ্ট। কিন্তু সেই ফ্রিজের AMC (Annual Maintenance Contract) ছিল না!

প্রতিবাদে গ্রামবাসীরা বলেছিলেন:
“সরকার টিভিতে কোটি কোটি টাকার স্বাস্থ্য প্রকল্পের কথা বলে, অথচ একটা ফ্রিজ মেরামতির টাকা নেই!”

➡️ এই ঘটনাগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখায় যে সরকারি খরচে স্বচ্ছতা না থাকলে স্বাস্থ্যসেবা কেবল নামেই থাকে, কাজের জায়গায় নয়।

🚑  মুর্শিদাবাদের অ্যাম্বুল্যান্স দুর্ভোগ

ঘটনা:
এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে রাত ২টায় হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করেন পরিবার। গ্রাম স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকা অ্যাম্বুল্যান্সটি ‘ড্রাইভার নেই’ অজুহাতে রওনা দেয় না।
শেষমেশ ভ্যানচালককে ₹১০০০ দিয়ে নিয়ে যেতে হয়।

ফলে কী প্রশ্ন উঠে?

  • তাহলে বাজেট বরাদ্দ অনুযায়ী এই অ্যাম্বুল্যান্স খরচ গেল কোথায়?

  • পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য খাতে খরচের হিসাব কি কেবল নথিপত্রেই সীমাবদ্ধ?

 এই অভিজ্ঞতাগুলো আমাদের কী শেখায়?

  • সরকারি বাজেট বাড়লেই হবে না, স্বাস্থ্য পরিষেবায় স্বচ্ছতা না এলে কোনও লাভ নেই।

  • সরকারি হাসপাতালের ব্যয় কোথায়, কাদের মাধ্যমে, কীভাবে হচ্ছে — সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

  • স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি রোধ না হলে, প্রকল্প যতই হোক, সাধারণ মানুষ বঞ্চিতই থেকে যাবে।

 কেবল প্রতিবাদ নয়, প্রমাণ সহ প্রশ্ন তুলুন

এই বাস্তব অভিজ্ঞতাগুলো যেন হারিয়ে না যায়। এগুলোই হল চোখে পড়ার মতো প্রমাণ, যেখানে স্বাস্থ্যখাতে সরকারি বিনিয়োগ হলেও সরকারি খরচে স্বচ্ছতা নেই বলেই দুর্ভোগ তৈরি হয়।

❝যে রাষ্ট্র নাগরিকের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারে না, সে রাষ্ট্র আসলে ব্যর্থ রাষ্ট্র।❞

কোন প্রকল্পে উঠেছে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন?

সুযোগ (Swasthya Udyog O Gharer Unnati Yojana) – “কাগজে আছে, মাটিতে নেই”

➡ এই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল প্রত্যন্ত এলাকায় হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়ন
➡ কিন্তু মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া জেলার অনেক ব্লকে হাসপাতালের নামেই শুধু সাইনবোর্ড!
➡ ২০২2 সালের অডিট রিপোর্টে দেখা যায়, বরাদ্দ অর্থের ৪৩% অজানা খাতে ব্যয় হয়েছে, কোনও স্বাস্থ্য খাতে প্রকল্প অনুযায়ী ব্যয়ের স্বচ্ছতা নেই।

🟠 এক্ষেত্রে নাগরিকেরা RTI করে জানতে পেরেছিলেন—বিল্ডিং এর ডিজাইন তিনবার বদলানো হয়েছে, অথচ নির্মাণই শুরু হয়নি!

সাস্থ‍্য সাথী কার্ড প্রকল্প – “কার্ড আছে, পরিষেবা নেই!”

➡ প্রকল্পটি দুর্দান্ত চিন্তা, কিন্তু রূপায়ণ? উহুঁ!

সমস্যা কোথায়?

  • বহু হাসপাতালে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবায় দুর্নীতির প্রভাব স্পষ্ট

  • হাসপাতাল ‘প্যানেল’-এ থাকলেও বলছে—“এই কার্ড নেওয়া যাবে না”

  • রোগীর পরিবারকে ক্যাশে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে!

🧮 এই পরিস্থিতিতে নাগরিকের উচিত—

  • প্রতিটি ঘটনাকে লিখিত অভিযোগে রূপান্তর করা

  • সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যাশট্যাগ চালু করা: #SwasthyaSatyiNa

  • এবং অবশ্যই—পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য খাতে খরচের হিসাব চেয়ে RTI করা

ডিস্ট্রিক্ট রিফারেল হাসপাতাল উন্নয়ন প্রকল্প – “ঘোষণা বড়, গতি শূন্য”

➡ নদীয়া, বাঁকুড়া, আলিপুরদুয়ার জেলার হাসপাতালে ছিল কোটি টাকার উন্নয়ন বরাদ্দ
➡ কিন্তু ২০২3 সালের প্রথম তিন ত্রৈমাসিকে মাত্র ২৭% ফান্ডই খরচ হয়েছে!
➡ বাকিটা?—”প্রক্রিয়াধীন”, “টেন্ডার জট”, “নির্মাণাধীন”—এই সব ধোঁয়াশায় ঢাকা।

📌 তাই উঠেছে প্রশ্ন: 👉 স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বরাদ্দ হয় ঠিকই, কিন্তু বাস্তবে সেই অর্থ স্বাস্থ্যখাতে সরকারি টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে, কেউ জানে না!

 এই তথ্য দিয়ে আপনি কী করবেন?

🔍 ব্লকের প্রকল্প অনুযায়ী নজরদারি শুরু করুন

📥  সরকারি রিপোর্ট সংগ্রহ করুন

  • Comptroller & Auditor General (CAG) রিপোর্ট পড়ুন

  • wbhealth.gov.in এবং pbfin.nic.in ওয়েবসাইটে স্বাস্থ্য দপ্তরের বাজেট বিশ্লেষণ দেখুন

📲  সামাজিক মাধ্যম ও পাড়া-পড়শিকে যুক্ত করুন

  • ভিডিও তুলুন

  • ইনস্টাগ্রামে #GovtSpendingWB হ্যাশট্যাগে পোস্ট করুন

  • প্রতিবেশীদের সঙ্গে RTI ক্যাম্প বা “হাসপাতাল প্রতিবেদন” সংক্রান্ত আলোচনা শুরু করুন

  সত্যিই আমরা জানি—কোথায় গেল টাকা?

পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি ব্যয় কেবল সংখ্যার খেলা নয়, এটা আমাদের জীবনের অধিকার
এখন সময় এসেছে প্রশ্ন তোলার—স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি-র মুখোশ খুলে ফেলার।

যতদিন না স্বাস্থ্য খাতে প্রকল্প অনুযায়ী ব্যয়ের স্বচ্ছতা আসছে, ততদিন আমাদের কণ্ঠ আরও জোরালো হোক।

✨ কারণ স্বাস্থ্য শুধু শরীরের নয়—সমাজেরও আয়না। সেটা যদি ফেটে যায়, তাহলে আমাদের ভবিষ্যতও ধোঁয়ায় ঢাকা পড়বে।

আমাদের করণীয়: অন্ধকারে আলোর খোঁজ

আমরা সবাই বলি—পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি ব্যয় স্বচ্ছ হওয়া উচিত। কিন্তু শুধু বললেই তো হয় না! নাগরিক হিসেবে কিছু দায়িত্ব আমাদেরও আছে। এখন প্রশ্ন—কীভাবে?

চলুন, খুঁটিনাটি করে দেখি।

 প্রশ্ন করো—তুমি কর দিচ্ছো, জানো কি তার হিসাব?

➡ আমরা কর দিই, অথচ জানি না সেই টাকা স্বাস্থ্যখাতে সরকারি টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে
➡ এই অবস্থার বদল আনতে হবে ‘জনপ্রশ্ন’ চালু করে।

কীভাবে?

  • সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রজেক্টের নাম খুঁজে প্রশ্ন করুন—এই হাসপাতালের নির্মাণ কাজ কতদূর এগিয়েছে?

  • কোনও ব্লকে নতুন হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে? সেটা কি বাজেট অনুযায়ী?

🔍 যদি উত্তর না পাও, RTI করো!

 তথ্য অধিকার আইন (RTI): নিঃশব্দ বিপ্লবের হাতিয়ার

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য খাতে খরচের হিসাব জানার জন্য RTI একটি আইনগত উপায়।

উদাহরণ:

  • ২০২৩ সালে, দক্ষিণ দিনাজপুরের এক যুবক RTI করে জানতে চেয়েছিলেন—একটি PHC-র জন্য বরাদ্দ হওয়া ১২ লক্ষ টাকা কোথায় গেল?

  • উত্তর এসেছিল—“অফিস ফার্নিচার ও প্রিন্টার কেনা হয়েছে।” অথচ সেখানকার চেয়ার ছিল ভাঙা।

➡ এই হল স্বাস্থ্য খাতে প্রকল্প অনুযায়ী ব্যয়ের স্বচ্ছতা না থাকার প্রমাণ!

 ডিজিটাল টুল: সঠিকভাবে ব্যবহার করো

আমরা দিনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটাই, অথচ জানিই না— স্বাস্থ্য দপ্তরের বাজেট বিশ্লেষণ বা হাসপাতালের নির্মাণ সংক্রান্ত আপডেট কোথায় পাওয়া যায়!

করণীয়:

  • wbhealth.gov.in ওয়েবসাইটে নজর রাখুন

  • প্রতিটি স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বরাদ্দ সংক্রান্ত সংবাদ গুগলে সেভ করে রাখুন

  • Twitter/X, Facebook-এ #HealthBudgetWB হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে প্রশ্ন করুন

📌 তথ্য ছড়াক—স্বাস্থ্য পরিষেবায় স্বচ্ছতা আসুক!

 চিকিৎসকদের সাথেও হোক যুক্তির সম্পর্ক

➡ অনেক সরকারি হাসপাতালের ব্যয় এমন জায়গায় হয়, যা রোগী টেরই পান না।

➡ তবে একান্তে চিকিৎসকরা বলেন—

“ওষুধ আছে, কিন্তু ডিসপেনসারিতে পৌঁছায় না।”

আমরা কী করতে পারি?

  • রোগী পরিবার হিসেবে হাসপাতাল সুপারকে প্রশ্ন করুন

  • RTI বা লোকাল হেল্থ কমিটিতে অভিযোগ লিখিত দিন

  • প্রেস বা স্থানীয় পত্রিকায় অনিয়মের কাহিনি শেয়ার করুন

➡ এতে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি রোধে একটু হলেও আলো জ্বলে।

 স্থানীয় স্তরে জনচাপ তৈরি করা

➡ একজন কিছু বলতে গেলে চাপ কম, কিন্তু পাড়া-মহল্লায় মিলিত জনচাপ সৃষ্টি করলে, কর্তৃপক্ষ শোনে।

কীভাবে শুরু করবেন?

  • আপনার এলাকার হাসপাতালের উন্নয়ন কীভাবে হয়েছে? খোঁজ নিন

  • সেখানে বাজেট বরাদ্দ অনুযায়ী হাসপাতালের উন্নয়ন হয়েছে কি না যাচাই করুন

  • তারপর প্রতিবেশীদের নিয়ে গণ-চিঠি লিখুন বা ‘নাগরিক শুনানি’-র আয়োজন করুন

➡ এতে সরকারি খরচে স্বচ্ছতা চাপের মুখে আসতে বাধ্য হবে

 মিডিয়া ও তথ্যপ্রযুক্তি: দুর্নীতির মুখোশ খুলুন

➡ ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, লোকাল চ্যানেল—সবই হতে পারে আপনার প্ল্যাটফর্ম।

📸 উদাহরণস্বরূপ:

  • “এই হাসপাতালে সিসিইউ আছে, কিন্তু মেশিন চালু হয় না”

  • “৩ বছর আগে বরাদ্দ হয়েছিল ২০ লক্ষ টাকা, কিন্তু বিল্ডিং এখনো আধা তৈরী”

➡ এইসব ভিডিও, রিল, রিপোর্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিলে স্বাস্থ্যখাতে সরকারি টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে—সেই প্রশ্ন বৃহত্তর হয়ে ওঠে।

 আলো জ্বালানোর কাজ শুরু হোক নিজের ঘর থেকে

আমরা চুপ থাকলে কেউ কিছু বলবে না।
তবে যদি আমরা সকলে প্রশ্ন করি—
👉 “পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি ব্যয় কাগজেই সীমাবদ্ধ না থেকে, বাস্তবে কতটা উপকার করছে?”
👉 “স্বাস্থ্য খাতে প্রকল্প অনুযায়ী ব্যয়ের স্বচ্ছতা কি আদৌ আছে?”

তাহলেই শুরু হবে এক নতুন যাত্রা—সচেতন নাগরিকের, এবং স্বচ্ছ সমাজের।

“খরচের অঙ্ক নয়, স্বচ্ছতার অঙ্ক চাই!”

পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি ব্যয় যদি মানুষের জীবনে আলো না আনে, তবে সে ব্যয় কাগজে যতই মোটা হোক, বাস্তবে তা বৃথা। ‌

আজকের প্রশ্ন একটাই—স্বাস্থ্যখাতে সরকারি টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে, আর সেই খরচের সরকারি খরচে স্বচ্ছতা কতটা নিশ্চিত?

যদি আমরা নীরব থাকি, তাহলে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি চুপিচুপি চলতেই থাকবে। আর তার মাশুল গুনবে আপনি, আমি, আমাদের প্রিয়জনরা।

🗣️ সময় এসেছে, বাজেটের ভাষা বোঝা আর স্বাস্থ্য খাতে প্রকল্প অনুযায়ী ব্যয়ের স্বচ্ছতা দাবি করার।
স্বাস্থ্য শুধু পরিসংখ্যান নয়, এ আমাদের জীবনের অধিকার।

স্বচ্ছতা চাই, জবাবদিহি চাই — কারণ স্বাস্থ্য আর ন্যায় কোনো বিলাসিতা নয়, এটা প্রাপ্য।

আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো

Leave a Reply