দেউলা-মগরাহাট শাখায় চলন্ত ইএমইউ ট্রেনের চালকের সতর্কতায় এড়ানো গেল এক সম্ভাব্য প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। ৯ জুলাই, ২০২৫—সাধারণ ধর্মঘটের আবহে রেললাইনে ইচ্ছাকৃতভাবে ফেলে রাখা হয় কাঠের স্লিপার, পাশাপাশি কলাপাতা ছোড়া হয় ওভারহেড তারে। চলন্ত ট্রেন থামিয়ে চালক দেখান বিরল উপস্থিত বুদ্ধি, রেল কর্মীদের দ্রুত পদক্ষেপে ফের স্বাভাবিক হয় পরিষেবা। শিয়ালদহ রেল বিভাগের হুঁশিয়ারি, যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে কোনও ছেলেখেলা বরদাস্ত নয়। প্রশাসনের সতর্কতা ও ট্রেন চালকের তৎপরতা মিলিয়ে গড়ে ওঠে এক রুদ্ধশ্বাস নাটক—যেখানে শেষ পর্যন্ত জয়ী হল দায়িত্ববোধ।
প্রধান পয়েন্ট একঝলকে
🔸 তারিখ: ৯ জুলাই, ২০২৫
🔸 রেলপথ: দেউলা-মগরাহাট, শিয়ালদহ ডিভিশন
🔸 ঘটনা: ধর্মঘটকারীদের রেল অবরোধ, লাইনে ফেলা হয় কাঠের স্লিপার
🔸 বিপদের মাত্রা: ওএইচই তারে ছোড়া হয় কলাপাতা, রেল চলাচলে বিঘ্নের আশঙ্কা
🔸 তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া: চালকের তৎপরতা ও রেল কর্মীদের সক্রিয় ভূমিকায় ট্রেন চলাচল বজায়
🔸 প্রশাসনিক হুঁশিয়ারি: রেল বিভাগ দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা
দেউলা-মগরাহাট শাখার এক চলন্ত ইএমইউ ট্রেন বুধবার (৯ জুলাই, ২০২৫) এক সম্ভাব্য বড়সড় দুর্ঘটনার মুখ থেকে রক্ষা পেল, শুধুমাত্র চালকের সময়োচিত সিদ্ধান্ত ও চূড়ান্ত সতর্কতার জেরে। বেলা গড়াতেই যখন ধর্মঘট ঘিরে একাধিক এলাকায় উত্তেজনার পারদ চড়ছে, তখন রেললাইনে কাঠের স্লিপার পড়ে থাকতে দেখে ইএমইউ চালক দ্রুত ট্রেন থামান। এই একটি মুহূর্তেই বদলে যায় পরিস্থিতির মোড়—সংকট এড়ায় শতাধিক যাত্রীর প্রাণ।
জানা গেছে, ওই সময়ে দেউলা-মগরাহাট শাখায় একটি ইএমইউ ট্রেন চলছিল। হঠাৎ চালকের নজরে আসে রেললাইনে ছড়িয়ে আছে বেশ কয়েকটি কাঠের স্লিপার। এই দৃশ্য দেখে তিনি দেরি না করে ট্রেন থামান এবং তড়িঘড়ি করে রেল দফতরকে জানানো হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সাধারণ ধর্মঘটের অংশ হিসেবে কিছু বিক্ষোভকারী ইচ্ছাকৃতভাবেই রেললাইনে স্লিপার ফেলে ট্রেন চলাচল বন্ধ করার চেষ্টা করেছিল।
এছাড়াও, দেউলা ও মগরাহাট স্টেশনের মাঝে ওভারহেড ইকুইপমেন্ট (ওএইচই) তারে ছোড়া হয় কলাপাতা, যা রেল চলাচলে বৈদ্যুতিক সমস্যার সম্ভাবনা তৈরি করে। এই ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রেল কর্মীরা দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং ট্রেন চলাচল পুনরায় স্বাভাবিক রাখা হয়।
এই প্রসঙ্গে সেলদা ডিভিশনের তরফে এক সরকারি বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে—
“যে বা যারা ইচ্ছাকৃতভাবে রেললাইনে বাধা সৃষ্টি করছে এবং যাত্রীদের জীবন ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পথে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
রেল দফতরের এই মন্তব্য থেকেই বোঝা যায়, প্রশাসন বিষয়টিকে একেবারেই হালকাভাবে নিচ্ছে না। রেললাইনে এমন বিপজ্জনক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা কোনওভাবেই সহ্য করা হবে না বলে জানিয়েছে রেল বিভাগ।
এর পাশাপাশি, সেলদা রেল ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার রাজীব সাক্সেনা এক বিবৃতিতে জনসাধারণকে আহ্বান জানান—
“সমাজের প্রতি আমাদের সকলের দায়বদ্ধতা রয়েছে। যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে খেলতে যাওয়া একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। রেল কর্মীরা দিনরাত কাজ করছেন নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে। এই কাজে সকলের সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি।”
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রেল দফতর আরও তৎপর হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট শাখায় নজরদারি আরও জোরদার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
সমগ্র ঘটনার সারমর্ম বলছে, একটি সতর্ক চোখ আর সময়মতো সিদ্ধান্ত যে কত বড় বিপদ ঠেকাতে পারে, তারই এক বাস্তব উদাহরণ তৈরি হল শিয়ালদহ ডিভিশনের এই ট্রেনযাত্রায়। নির্বিঘ্ন যাতায়াতের পেছনে যাঁরা পরিশ্রম করছেন, তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা না দেখিয়ে যাত্রীদের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা করার মানসিকতা কতটা মারাত্মক হতে পারে—এই ঘটনা তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো