২০২৫ সালের ১লা এপ্রিল থেকে নতুন আয়কর স্ল্যাব কার্যকর হয়েছে। এটি বিশেষ করে মধ্যবিত্ত এবং চাকরিজীবীদের জন্য বড় পরিবর্তন এনেছে। এবার ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে কোনো কর লাগবে না, যা আগে সম্ভব ছিল না। আসুন, ধাপে ধাপে দেখে নিই –
নতুন আয়কর স্ল্যাব ২০২৫: কী পরিবর্তন হলো?
আগে আয় অনুযায়ী করের হার ছিল বেশ জটিল। এবার সরকার নতুন ইনকাম ট্যাক্স স্ল্যাব সহজ করে দিয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী:
নতুন আয়কর স্ল্যাব অনুযায়ী করহার
বার্ষিক আয় (₹) | করহার (%) |
---|---|
₹০ – ₹৪,০০,০০০ | ০% (কোনো কর নেই) |
₹৪,০০,০০১ – ₹৮,০০,০০০ | ৫% কর |
₹৮,০০,০০১ – ₹১২,০০,০০০ | ১০% কর |
₹১২,০০,০০১ – ₹১৬,০০,০০০ | ১৫% কর |
₹১৬,০০,০০১ – ₹২০,০০,০০০ | ২০% কর |
₹২০,০০,০০১ – ₹২৪,০০,০০০ | ২৫% কর |
₹২৪,০০,০০১-এর বেশি | ৩০% কর |
👉 প্রধান সুবিধা:
✅ ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে কোনো কর নেই
✅ মধ্যবিত্তরা বেশি সঞ্চয় করতে পারবেন
✅ বিনিয়োগ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বস্তি আসবে
পুরনো ও নতুন ট্যাক্স রেজিম: কোনটা ভালো?
বর্তমানে দুটি আলাদা আয়কর রেজিম (Tax Regime) চালু আছে –
📌 পুরনো আয়কর ব্যবস্থা
📌 নতুন আয়কর ব্যবস্থা (২০২৫)
পুরনো রেজিম বনাম নতুন রেজিম
বিষয় | পুরনো রেজিম | নতুন রেজিম (২০২৫) |
---|---|---|
প্রথম ৫ লাখ টাকার কর | রিবেট পাওয়া যেত | সরাসরি করমুক্ত |
১২ লাখ পর্যন্ত আয় | কর দিতে হতো | কর ফ্রি |
ডিডাকশন (ছাড়) পাওয়া যেত? | হ্যাঁ (৮০C, HRA, LTA ইত্যাদি) | না |
ট্যাক্স রিবেট সুবিধা | ৭ লাখ পর্যন্ত | ১২ লাখ পর্যন্ত |
কার জন্য উপযুক্ত? | বিনিয়োগ বেশি করলে | সাধারণ চাকরিজীবীদের জন্য |
👉 যদি কেউ বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ করে, তাহলে পুরনো রেজিম ভালো।
কিন্তু যদি বিনিয়োগের চিন্তা না থাকে, তাহলে নতুন রেজিমই লাভজনক।
নতুন কর ব্যবস্থায় যে বাড়তি সুবিধা এসেছে
২০২৫ সালের নতুন আয়কর ব্যবস্থায় বেশ কিছু সংযোজন ও পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা সাধারণ করদাতাদের জন্য উপকারী হবে।
স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বৃদ্ধি
স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন হলো কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই কর কমানোর সুযোগ। আগে এই ছাড় ছিল ₹৫০,০০০, যা এবার ₹৭৫,০০০ করা হয়েছে।
📌 সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য এই ছাড় আরও বেশি – ₹১,০০,০০০ পর্যন্ত।
👉 ফলাফল:
✅ বেতনভোগীদের কর কমবে
✅ বার্ষিক করযোগ্য আয় কমবে
✅ বেশি সঞ্চয়ের সুযোগ পাওয়া যাবে
টিডিএস (TDS) সংক্রান্ত পরিবর্তন
টিডিএস হলো উৎসে কর কাটা। নতুন নিয়মে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে –
বাড়ির ভাড়ার ওপর টিডিএস বৃদ্ধি
আগে যদি কেউ ₹২.৪ লাখ টাকার বেশি ভাড়া পেতেন, তাহলে টিডিএস কাটত।
এখন এই সীমা ₹৬ লাখ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
👉 ফলাফল:
✅ বাড়িওয়ালারা করের চাপ থেকে কিছুটা মুক্তি পাবেন
✅ যারা বাড়িভাড়া আয় করেন, তাদের আয় কিছুটা বাড়বে
ফ্রিল্যান্সার ও পেশাদারদের জন্য সুবিধা
আগে ফ্রিল্যান্সারদের ₹৩০,০০০-এর বেশি আয়ের ওপর টিডিএস কাটা হতো।
এখন এই সীমা ₹৫০,০০০ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
👉 ফলাফল:
✅ ছোট ফ্রিল্যান্সার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের উপকার হবে
✅ তাদের আয় থেকে টিডিএস কম কাটা হবে
ইউনিট লিঙ্কড ইনস্যুরেন্স প্ল্যান (ULIP)-এর কর
আগে ULIP-এ বিনিয়োগ করলে সেই টাকার ওপর কোনো কর দিতে হতো না।
কিন্তু এখন নতুন নিয়ম অনুযায়ী:
📌 যদি বার্ষিক প্রিমিয়াম ₹২.৫ লাখের বেশি হয়, তাহলে কর কাটবে।
👉 কর হার:
✅ Short-term gain → ২০% কর
✅ Long-term gain → ১২.৫% কর
👉 ফলাফল:
✅ ULIP বিনিয়োগকারীদের কর বেশি দিতে হবে
✅ কম প্রিমিয়ামের ULIP বেশি জনপ্রিয় হবে
নতুন রিবেট সুবিধা (Tax Rebate ২০২৫)
আগে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত আয়কর রিবেট পাওয়া যেত।
এখন এই সীমা বাড়িয়ে ১২ লাখ টাকা করা হয়েছে।
👉 ফলাফল:
✅ অনেকেই পুরোপুরি করের আওতার বাইরে চলে যাবেন
✅ চাকরিজীবীদের জন্য বিশাল সুবিধা হবে
নতুন আয়কর ব্যবস্থার মূল সুবিধাগুলো সংক্ষেপে
📌 ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত কর ফ্রি – সাধারণ মানুষের জন্য বড় সুবিধা
📌 স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বাড়ানো হয়েছে – বেশি সঞ্চয়ের সুযোগ
📌 টিডিএসের সীমা বাড়ানো হয়েছে – ফ্রিল্যান্সার ও বাড়িওয়ালাদের জন্য স্বস্তি
📌 ULIP-এর কর সংযোজন – বিনিয়োগকারীদের নতুন হিসাব কষতে হবে
কর রিবেট ও আয়কর রিটার্ন (ITR) জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা
২০২৫ সালের নতুন আয়কর ব্যবস্থায় কর রিবেটের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ITR ফাইল করার নিয়মেও কিছু পরিবর্তন এসেছে। এর ফলে করদাতাদের জন্য কিছু সুবিধা ও কিছু বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়েছে।
কর রিবেট সুবিধা (Tax Rebate ২০২৫)
আগের কর ব্যবস্থায় ₹৭ লাখ পর্যন্ত বার্ষিক আয় সম্পূর্ণ করমুক্ত ছিল।
নতুন ব্যবস্থায় ₹১২ লাখ পর্যন্ত আয় করমুক্ত করা হয়েছে।
📌 কারা লাভবান হবেন?
✅ যারা বেতনভোগী বা ছোট ব্যবসায়ী
✅ মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির চাকরিজীবী
✅ যাদের বার্ষিক আয় ₹১২ লাখের নিচে
👉 ফলাফল:
✅ অনেক করদাতার আয় পুরোপুরি করমুক্ত হয়ে যাবে
✅ বাজারে ভোগ্যপণ্যের কেনাকাটা বাড়বে, কারণ মানুষের হাতে বেশি টাকা থাকবে
আয়কর রিটার্ন (ITR) জমার বাধ্যবাধকতা
যদিও ₹১২ লাখ পর্যন্ত কর রিবেটের সুবিধা পাওয়া যাবে, তবে আয়কর রিটার্ন (ITR) জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক।
📌 কেন ITR জমা দেওয়া জরুরি?
✅ ব্যাংক থেকে লোন নিতে গেলে (হোম লোন, গাড়ির লোন) ITR দরকার
✅ ভবিষ্যতে কর সংক্রান্ত জটিলতা এড়াতে
✅ প্যান কার্ড ও আধার কার্ডের সংযোগ বাধ্যতামূলক হওয়ার কারণে
👉 ফলাফল:
✅ সবাইকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ITR ফাইল করতে হবে
✅ অনলাইন ফাইলিং সহজ করা হয়েছে, তাই বেশিরভাগ মানুষই মোবাইল বা ল্যাপটপ থেকেই করতে পারবেন
ITR দাখিল না করলে কী সমস্যা হতে পারে?
যারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ITR ফাইল করবেন না, তাদের জন্য কিছু জরিমানার বিধান আছে।
📌 সময়মতো ITR জমা না দিলে:
❌ ₹১,০০০ থেকে ₹১০,০০০ পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে
❌ বড় লেনদেনের ক্ষেত্রে আয়কর দপ্তরের নোটিস আসতে পারে
❌ ভবিষ্যতে লোন পেতে সমস্যা হতে পারে
👉 ফলাফল:
✅ সাধারণ মানুষকে সময়মতো ITR জমা দিতে উৎসাহিত করা হবে
✅ কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা কমবে
সহজতর করা হয়েছে ITR ফাইল করার প্রক্রিয়া
২০২৫ সালের নতুন ব্যবস্থায় ITR ফাইল করা আরও সহজ করা হয়েছে।
📌 কী কী সুবিধা এসেছে?
✅ প্রি-ফিলড (Pre-filled) ITR ফর্ম – যার ফলে অনেক তথ্য অটোমেটিক ভাবে পূরণ হয়ে যাবে
✅ মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ITR ফাইল করা যাবে
✅ তথ্য যাচাইয়ের (Verification) সময় কমানো হয়েছে
👉 ফলাফল:
✅ সাধারণ মানুষের ITR ফাইল করতে সময় ও পরিশ্রম কম লাগবে
✅ অফলাইন বা এজেন্টের উপর নির্ভরতা কমবে
করদাতাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা
✅ যারা ₹১২ লাখ পর্যন্ত আয়ে কর রিবেট পাচ্ছেন, তাদেরও ITR ফাইল করতে হবে
✅ বেতনভোগীদের জন্য সহজতর ফর্ম ও কম ডকুমেন্ট লাগবে
✅ ফ্রিল্যান্সার ও ব্যবসায়ীদের জন্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে ITR ফাইল করা সহজ করা হয়েছে
✅ আগে থেকে হিসাব করে রাখা ভালো, যাতে জরিমানার ঝামেলায় পড়তে না হয়
নতুন ট্যাক্স ব্যবস্থা মধ্যবিত্তদের জন্য কতটা উপকারী?
২০২৫ সালের নতুন আয়কর নীতিতে মধ্যবিত্তদের জন্য বেশ কিছু সুবিধা ও ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে এই পরিবর্তনের ফলে তারা বাস্তবে কতটা লাভবান হবেন, তা নির্ভর করছে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের উপর। এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধি
আগে মধ্যবিত্তদের জন্য ₹৭ লাখ পর্যন্ত আয় করমুক্ত ছিল, কিন্তু ২০২৫ সালের নতুন ব্যবস্থায় ₹১২ লাখ পর্যন্ত করমুক্ত করা হয়েছে।
কীভাবে সুবিধা হবে?
✅ মধ্যবিত্তদের কর কমবে
✅ সঞ্চয়ের পরিমাণ বাড়বে
✅ বাড়তি আর্থিক স্বাধীনতা পাওয়া যাবে
👉 ফলাফল:
✅ যাদের বার্ষিক আয় ₹১২ লাখ বা তার কম, তারা পুরোপুরি করের বাইরে থাকবেন
✅ বেতনভোগী চাকরিজীবী ও ছোট ব্যবসায়ীদের ওপর করের চাপ কমবে
স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বৃদ্ধি
স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন হলো কোনো অতিরিক্ত বিনিয়োগ ছাড়াই করের পরিমাণ কমানোর সুবিধা।
নতুন পরিবর্তন
📌 আগে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন ছিল ₹৫০,০০০, এখন তা ₹৭৫,০০০ করা হয়েছে।
📌 সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য ছাড় আরও বেশি, ₹১,০০,০০০ পর্যন্ত।
👉 ফলাফল:
✅ বেতনভোগীদের জন্য অতিরিক্ত কর ছাড় পাওয়া যাবে
✅ ট্যাক্সেবল ইনকাম কমবে
মধ্যবিত্তদের জন্য বাড়তি সঞ্চয়ের সুযোগ
নতুন কর ব্যবস্থায় কয়েকটি সঞ্চয় প্রকল্পে কর সুবিধা বাড়ানো হয়েছে, যা মধ্যবিত্তদের দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করবে।
PPF (Public Provident Fund) ও ELSS (Equity Linked Savings Scheme)
📌 PPF-এ বার্ষিক বিনিয়োগের সীমা ₹২ লাখ থেকে ₹৩ লাখ করা হয়েছে
📌 ELSS-এ বিনিয়োগ করলে অতিরিক্ত কর ছাড় পাওয়া যাবে
👉 ফলাফল:
✅ মধ্যবিত্তরা বেশি সঞ্চয় করতে পারবেন
✅ ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ বিনিয়োগের সুযোগ বাড়বে
ফ্রিল্যান্সার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সুবিধা
ফ্রিল্যান্সার এবং ছোট ব্যবসায়ীদের উৎসে কর কর্তন (TDS) সংক্রান্ত কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে।
কী কী পরিবর্তন এসেছে?
📌 আগে ₹৩০,০০০-এর বেশি আয়ের ক্ষেত্রে ১০% TDS কাটা হতো
📌 এখন এই সীমা ₹৫০,০০০ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে
👉 ফলাফল:
✅ ছোট ব্যবসায়ী ও ফ্রিল্যান্সারদের নগদ প্রবাহ (cash flow) বাড়বে
✅ কম আয়ের পেশাজীবীরা কম করের আওতায় থাকবেন
বাড়িভাড়ার উপর কর ছাড়
অনেক মধ্যবিত্ত মানুষের বাড়িভাড়া থেকে আয় থাকে। নতুন ট্যাক্স ব্যবস্থায় বাড়িভাড়ার কর ছাড় বাড়ানো হয়েছে।
নতুন নিয়ম কী?
📌 আগে ₹২.৪ লাখ টাকার বেশি ভাড়ার আয় হলে TDS কাটত
📌 এখন এই সীমা ₹৬ লাখ পর্যন্ত করা হয়েছে
👉 ফলাফল:
✅ যারা বাড়িভাড়া থেকে আয় করেন, তারা অতিরিক্ত কর ছাড় পাবেন
✅ নতুন বাড়ি কেনার প্রবণতা বাড়তে পারে
গৃহঋণ ও হোম লোনের কর ছাড়
মধ্যবিত্তরা বেশিরভাগ সময়ই গৃহঋণের (Home Loan) মাধ্যমে ফ্ল্যাট বা বাড়ি কেনেন। নতুন আয়কর ব্যবস্থায় গৃহঋণের সুদের উপর কর ছাড় বাড়ানো হয়েছে।
নতুন ছাড়ের সুবিধা
📌 আগে হোম লোনের সুদের উপর ₹২ লাখ পর্যন্ত ছাড় ছিল
📌 এখন এই ছাড় ₹৩ লাখ পর্যন্ত করা হয়েছে
👉 ফলাফল:
✅ বাড়ি কেনার জন্য মধ্যবিত্তরা উৎসাহিত হবেন
✅ রিয়েল এস্টেট মার্কেট চাঙ্গা হবে
স্বাস্থ্য বিমা ও মেডিকেল খরচের ছাড়
স্বাস্থ্য খাতের জন্যও কিছু কর ছাড় বাড়ানো হয়েছে।
কী কী পরিবর্তন এসেছে?
📌 স্বাস্থ্য বিমায় (Health Insurance) প্রিমিয়ামের উপর কর ছাড়ের সীমা বাড়ানো হয়েছে
📌 সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য মেডিকেল খরচের ছাড় বাড়ানো হয়েছে
👉 ফলাফল:
✅ মধ্যবিত্তরা বেশি স্বাস্থ্য বীমা করতে উৎসাহিত হবেন
✅ চিকিৎসার খরচ কমবে
নতুন কর ব্যবস্থার কিছু চ্যালেঞ্জ
যদিও মধ্যবিত্তরা অনেক কর ছাড়ের সুবিধা পাচ্ছেন, তবুও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে –
বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর ছাড় কমানো হয়েছে
❌ PPF বা EPF-এর মত কিছু বিনিয়োগ স্কিমে আগের মত অতিরিক্ত কর ছাড় নেই
❌ কিছু বিশেষ ইনভেস্টমেন্ট স্কিমের ছাড় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে
উচ্চ আয়ের মধ্যবিত্তরা খুব বেশি সুবিধা পাবেন না
❌ যাদের আয় ₹১২ লাখের বেশি, তারা করের আওতায় থাকছেন
❌ অতিরিক্ত বেতনের উপর বেশি কর কাটা হবে
👉 ফলাফল:
✅ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের চাকরিজীবীদের জন্য সুবিধা বেশি
✅ উচ্চ মধ্যবিত্তদের ক্ষেত্রে করের সুবিধা তুলনামূলক কম
সার্বিক বিশ্লেষণ – নতুন আয়কর ব্যবস্থা মধ্যবিত্তদের জন্য কতটা ভালো?
📌 সুবিধাগুলো:
✅ ₹১২ লাখ পর্যন্ত আয় করমুক্ত – বিশাল সুবিধা
✅ স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বাড়ানো হয়েছে
✅ হোম লোনের কর ছাড় বৃদ্ধি
✅ স্বাস্থ্য বীমায় বাড়তি ছাড়
✅ ফ্রিল্যান্সারদের জন্য করের চাপ কমানো হয়েছে
📌 কিছু সীমাবদ্ধতা:
❌ উচ্চ মধ্যবিত্তদের জন্য করের সুবিধা তুলনামূলক কম
❌ বিনিয়োগ ভিত্তিক কর ছাড় কিছুটা কমানো হয়েছে
👉 সর্বশেষ সিদ্ধান্ত:
✅ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের চাকরিজীবীদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী ব্যবস্থা
✅ উচ্চ মধ্যবিত্তরা কিছু ক্ষেত্রে আগের চেয়ে বেশি কর দিতে হতে পারে
নতুন আয়কর স্ল্যাবের প্রভাব কোথায় পড়বে?
২০২৫ সালের নতুন আয়কর স্ল্যাব চালুর ফলে বিভিন্ন খাতের উপর ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এটি শুধুমাত্র বেতনভোগী চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ীদের জন্য নয়, বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি, বিনিয়োগ, ভোক্তা ব্যয় ও সঞ্চয়ের ওপরও গভীর প্রভাব ফেলবে। নিচে বিস্তারিতভাবে এই প্রভাবগুলোর আলোচনা করা হলো:
চাকরিজীবীদের উপর প্রভাব
নিম্ন ও মধ্যম আয়ের চাকরিজীবীদের জন্য সুবিধা
✅ ₹১২ লাখ পর্যন্ত আয় করমুক্ত হওয়ায় চাকরিজীবীদের সঞ্চয়ের পরিমাণ বাড়বে
✅ স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন ₹৭৫,০০০ হওয়ায় অতিরিক্ত কর ছাড় পাওয়া যাবে
✅ স্বাস্থ্য বীমা ও হোম লোনে কর ছাড় থাকায় ব্যয় কমবে
উচ্চ মধ্যবিত্ত চাকরিজীবীদের জন্য কিছু চ্যালেঞ্জ
❌ যাদের আয় ₹১২ লাখের বেশি, তাদের করের হার পরিবর্তন হয়নি
❌ কিছু বিনিয়োগের ওপর আগের মতো কর ছাড় নেই
👉 ফলাফল:
✅ মোটামুটি মধ্যবিত্ত শ্রেণির উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে
✅ কিন্তু উচ্চ আয়ের চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো কর ছাড় নেই
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ফ্রিল্যান্সারদের উপর প্রভাব
ব্যবসায়ীদের কর চাপ কিছুটা কমবে
✅ ₹৫০,০০০ পর্যন্ত TDS ছাড় পাওয়া যাবে, যা ফ্রিল্যান্সার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য উপকারী
✅ কম আয় হলে নতুন করমুক্ত সীমার কারণে বাড়তি কর দিতে হবে না
বিনিয়োগে কর ছাড় কমে যাওয়ায় কিছু অসুবিধা
❌ কিছু বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আগের অতিরিক্ত কর ছাড় নেই
❌ ব্যবসায়ীরা যারা উচ্চ মুনাফা করেন, তাদের জন্য খুব বেশি সুবিধা নেই
👉 ফলাফল:
✅ কম আয়ের ব্যবসায়ীদের জন্য সুবিধাজনক, কারণ কর কমবে
❌ বিনিয়োগ ও দীর্ঘমেয়াদি লাভের ক্ষেত্রে তেমন কর ছাড় নেই
বিনিয়োগ বাজারের উপর প্রভাব
শেয়ার বাজার ও মিউচুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগে পরিবর্তন
✅ উচ্চ আয়ের মানুষ নতুন কর ছাড় সুবিধার কারণে বেশি বিনিয়োগ করতে পারেন
✅ মিউচুয়াল ফান্ড ও ইকুইটিতে বিনিয়োগ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে
সঞ্চয় স্কিমের ক্ষেত্রে প্রভাব
❌ PPF ও EPF-এ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর ছাড় কিছুটা কমে গেছে
❌ ছোট বিনিয়োগকারীরা কম ঝুঁকিপূর্ণ স্কিমের দিকে ঝুঁকতে পারেন
👉 ফলাফল:
✅ শেয়ার বাজার চাঙ্গা হতে পারে
❌ ঐতিহ্যবাহী সঞ্চয় প্রকল্পগুলোর প্রতি আগ্রহ কমতে পারে
রিয়েল এস্টেট খাতের উপর প্রভাব
বাড়ি কেনার চাহিদা বাড়বে
✅ হোম লোনের সুদের উপর কর ছাড় ₹৩ লাখ হওয়ায় অনেকেই বাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন
✅ প্রথমবার বাড়ি ক্রেতাদের জন্য এটি লাভজনক হবে
ভাড়ার বাজারে পরিবর্তন
✅ ₹৬ লাখ পর্যন্ত বাড়িভাড়ার আয় করমুক্ত হওয়ায় বাড়িওয়ালারা বেশি লাভবান হবেন
❌ তবে বেশি ভাড়া নেওয়া বাড়িওয়ালারা আগের মত সুবিধা পাবেন না
👉 ফলাফল:
✅ রিয়েল এস্টেট খাত চাঙ্গা হতে পারে
❌ ভাড়ার উপর নির্ভরশীল লোকজনের জন্য বিশেষ সুবিধা নেই
মধ্যবিত্তদের ভোগ্যপণ্যে খরচ ও জীবনযাত্রায় প্রভাব
অতিরিক্ত আয় ব্যয়ের দিকে যেতে পারে
✅ করমুক্ত আয়ের পরিমাণ বাড়ায় মধ্যবিত্তরা বেশি খরচ করতে পারেন
✅ এর ফলে ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন
সঞ্চয়ের পরিমাণ বাড়বে
✅ বিনিয়োগের নতুন পরিকল্পনার সুযোগ আসবে
✅ কম আয়ের চাকরিজীবীরা ভবিষ্যতের জন্য বেশি সঞ্চয় করতে পারবেন
👉 ফলাফল:
✅ ব্যক্তিগত খরচের ক্ষমতা বাড়বে, যা অর্থনীতির জন্য ভালো
✅ সঞ্চয়ের পরিমাণও কিছুটা বাড়বে
সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতির উপর প্রভাব
করের বোঝা কমলে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব
✅ বাজারে টাকার প্রবাহ বাড়বে, ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে
✅ ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ভোক্তা ব্যয়ের পরিমাণ বাড়বে
সরকারি রাজস্বে সামান্য পরিবর্তন আসতে পারে
❌ কম আয়ের মানুষের করের পরিমাণ কমে গেলে সরকারি রাজস্ব কিছুটা কমতে পারে
❌ তবে উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের কর ব্যবস্থা অপরিবর্তিত থাকায় রাজস্ব ক্ষতি বেশি হবে না
👉 ফলাফল:
✅ সাধারণ মানুষের খরচের ক্ষমতা বাড়বে, যা বাজারকে চাঙ্গা করবে
❌ সরকারের জন্য কর সংগ্রহের নতুন কৌশল নিতে হতে পারে
নতুন আয়কর নীতির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব
📌 ইতিবাচক দিক:
✅ মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের চাকরিজীবীদের জন্য বিশাল সুবিধা
✅ হোম লোন, স্বাস্থ্য বীমায় ছাড় পাওয়ায় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সহজ হবে
✅ বিনিয়োগ বাজার ও খরচের ক্ষমতা বাড়ার ফলে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে
📌 নেতিবাচক দিক:
❌ উচ্চ মধ্যবিত্তদের তেমন সুবিধা নেই
❌ কিছু বিনিয়োগের উপর কর ছাড় কমে যাওয়ায় সঞ্চয়ের উপর প্রভাব পড়তে পারে
👉 সার্বিক মূল্যায়ন:
✅ মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য বেশ ভালো পদক্ষেপ
✅ কিন্তু উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের তেমন বড় সুবিধা নেই