রেলের বড় সিদ্ধান্ত: ই-আধারেই মিলবে তৎকাল টিকিটের চাবিকাঠি

তৎকাল টিকিট বুকিংয়ে বড়সড় পরিবর্তন, এবার বাধ্যতামূলক ই-আধার যাচাইকরণ

ভারতীয় রেলের তৎকাল টিকিট বুকিং প্রক্রিয়ায় আসছে চমকপ্রদ বদল। প্রতিদিনের টিকিট যুদ্ধে ভিড়ের চাপে দমবন্ধ সাধারণ যাত্রীদের জন্য এবার একটু স্বস্তির হাওয়া। তৎকাল বুকিংয়ের সময় এবার বাধ্যতামূলক হতে চলেছে ই-আধার যাচাইকরণ। রেলমন্ত্রকের ঘোষণা অনুযায়ী, আধার লিঙ্ক করা অ্যাকাউন্টধারীরা পাবেন বুকিংয়ের প্রথম দশ মিনিটে অগ্রাধিকার, যেখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে এজেন্টদের। এর মধ্যেই বাতিল হয়েছে ২.৪ কোটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট। এই নতুন নিয়ম যাত্রাপথের গতি ও গুণমান—দু’টিতেই আনবে শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা এবং সুরক্ষা।

📌 QUICK READ (AI GENERATED):

• তৎকাল টিকিট বুকিংয়ে বাধ্যতামূলক হবে ই-আধার যাচাইকরণ

• আধার লিঙ্ক করা অ্যাকাউন্টধারীরা পাবেন প্রাথমিক ১০ মিনিটে অগ্রাধিকার

• প্রথম ১০ মিনিটে অনুমোদিত IRCTC এজেন্টদের টিকিট বুকিং নিষিদ্ধ

• বিগত ৬ মাসে ২.৪ কোটি ইউজার অ্যাকাউন্ট বন্ধ

• ২০ লক্ষ অ্যাকাউন্ট সন্দেহজনক, তদন্ত চলছে

• বর্তমানে প্রতি মাসে ২৪টি টিকিট বুক করার জন্য আধার সংযুক্তির সুবিধা বিদ্যমান

ট্রেনের তৎকাল টিকিট মানেই যেন এক নিঃশ্বাসে দৌড়, একটানা রিফ্রেশ আর শেষ মুহূর্তের হতাশা! অনেক সময় চেষ্টার পরও মেলে না নিশ্চিত টিকিট। এই সমস্যার সমাধানে এবং জালিয়াতির পথ বন্ধ করতে বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে ভারতীয় রেল। এবার থেকে টাটকাল টিকিট বুকিংয়ের জন্য বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে ই-আধার যাচাইকরণ। এই সিদ্ধান্তের কথা নিজেই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।

রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন,

“আমরা ই-আধার যাচাইকরণ চালু করার পরিকল্পনা করছি যাতে প্রকৃত যাত্রীরা তাদের প্রয়োজনে নিশ্চিতভাবে টিকিট পেতে পারেন। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার ব্যবহার করে টিকিট ব্লক করে রাখেন কিছু দালালচক্র। তার ফল ভোগ করতে হয় সাধারণ যাত্রীদের।”

রেলওয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, এই নতুন প্রক্রিয়া টিকিট বুকিংয়ের প্রথম দশ মিনিটে বিশেষ প্রভাব ফেলবে। যাঁদের IRCTC অ্যাকাউন্ট ইতিমধ্যে আধার নম্বরের সঙ্গে সংযুক্ত, তাঁরা পাবেন অগ্রাধিকার। অর্থাৎ তৎকাল বুকিং শুরু হওয়ার প্রথম ১০ মিনিটে কেবল আধার যুক্ত ইউজাররাই টিকিট বুক করতে পারবেন। এই সময়ে অনুমোদিত IRCTC এজেন্টরাও কোনো ধরনের বুকিং করতে পারবেন না।

একই সূত্র জানায়, অনলাইন টিকিট বুকিংয়ে স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার ব্যবহারের বিরুদ্ধে রেলের অভিযানের অংশ হিসেবেই এই ই-আধার যাচাইকরণের প্রস্তাব আনা হয়েছে।এই উদ্যোগের ফলে সাধারণ যাত্রীরা আরও স্বচ্ছ ও সুরক্ষিতভাবে টিকিট বুক করতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে রেল কর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণ ও অভিজ্ঞতা। আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা যেমন দ্রুত টিকিট বুক করার সুযোগ এনে দিয়েছে, তেমনই কিছু অসাধু প্রক্রিয়া এই ব্যবস্থাকে বারবার প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। রেলের দাবি, কিছু স্বয়ংক্রিয় বট বা সফটওয়্যার ব্যবহার করে একাধিক ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে টিকিট কেটে সাধারণ যাত্রীর অধিকারকে লঙ্ঘন করা হচ্ছিল।

এই অনৈতিক ব্যবস্থার মোকাবিলায় গত ছয় মাসে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বড়সড় অভিযান চালিয়েছে। রেলের হিসেব অনুযায়ী, প্রায় ২ কোটি ৪০ লক্ষ ইউজার অ্যাকাউন্ট ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি আরও ২০ লক্ষ অ্যাকাউন্ট সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এবং সেগুলোর তদন্ত চলছে।

রেল মন্ত্রকের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন,

“ই-আধার যাচাইকরণ এই মুহূর্তে একটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক পদক্ষেপ। IRCTC অ্যাকাউন্টে আধার যুক্ত করা থাকলে বর্তমানে যাত্রীরা প্রতি মাসে ২৪টি পর্যন্ত টিকিট বুক করতে পারেন। এখন সেই একই আধার-যুক্ত ব্যবস্থাকে টাটকাল টিকিটের ক্ষেত্রেও বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে যাতে স্বচ্ছতা ও সমতা বজায় থাকে।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগের ফলে যেমন জালিয়াতি কমবে, তেমনি স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে পুরো টিকিট বুকিং ব্যবস্থার ওপর। তবে সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে এখন থেকেই একটি প্রশ্ন উঁকি দিতে শুরু করেছে—এই ই-আধার যাচাইকরণের প্রক্রিয়া কতটা ব্যবহারবান্ধব হবে?

রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ই-আধার যাচাইকরণ একটি সরল ও নিরাপদ অনলাইন প্রক্রিয়া হবে, যা দ্রুত সম্পন্ন করা যাবে। যাঁদের অ্যাকাউন্ট এখনো আধারের সঙ্গে সংযুক্ত নয়, তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ দেওয়া হবে।