সব কিছু কি সত্যিই ততটা সরল, যতটা আমাদের দেখানো হয়? আলোর নিচে দাঁড়িয়ে থাকা মুখগুলো কি সবসময় যোগ্যতার প্রতীক? কিছু পুরস্কার যেন আসে অদ্ভুত এক নিয়মে—না বলা কথায়, নিঃশব্দ চুক্তিতে। পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক পরিসরে এমন এক খেলা চলছে, যার নিয়ম সবাই জানে, কিন্তু কেউ বলে না।

সূচিপত্র

শিল্পের সিংহাসনে বসে রাজনীতি: পুরস্কারের মঞ্চে এক অদৃশ্য খেলা

শিল্প পুরস্কারের রাজনৈতিকীকরণ শব্দটা এখন আর কেবল আলোচনার বিষয় নয়—এটা বাস্তবের অঙ্গ। যাকে আপনি টেলিভিশনের পর্দায়, বইয়ের মলাটে বা মঞ্চের আলোয় দেখতে পান, হয়তো সেই মুখটা উঠে এসেছে নিছক প্রতিভায় নয়—বরং নির্দিষ্ট রাজনৈতিক ঘরানার ‘নীরব সমর্থনে’।
এখানেই শুরু হয় নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার

 পুরস্কারের পেছনে ‘চুপচাপ চুক্তি’ — কথায় নয়, কার্যকলাপে প্রকাশ

বহু পুরস্কারের পেছনে আছে এক অদৃশ্য জাল—দেখা যায় না, কিন্তু টেনে ধরে শিল্পকে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে:

  • একাধিক সরকারি পুরস্কার বিতরণ ঠিক সেই শিল্পীদের হাতে গেছে, যারা নির্বাচনের আগে বিশেষ রাজনৈতিক প্রচারে অংশ নিয়েছেন।

  • ২০২1 সালে নাট্যব্যক্তিত্ব দীপক রায় (ছদ্মনাম) পুরস্কার পান। কাকতালীয়ভাবে, তিনি নির্বাচনের ঠিক আগেই একটি দলের প্রচারচলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

  • অন্যদিকে, যাঁরা সরব ছিলেন সরকারের বিরুদ্ধে, তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ—শুধু এ কারণে যে তাঁরা ‘অন্য সুরে’ কথা বলেছিলেন।

এইভাবে শিল্পজগতে পক্ষপাতিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়, অথচ কেউ তা প্রকাশ্যে বলে না। পুরস্কার হয়ে যায় এক ধরনের নিঃশব্দ পুরস্কার—নির্বাচনের ছক সাজানোর চুপচাপ প্রতিদান।

 পুরস্কার মানেই স্বীকৃতি নয়—প্রশ্ন ওঠে ‘যোগ্যতা’ নিয়ে

পুরস্কার বণ্টনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন এখন শিল্পীদের মধ্যেও বাড়ছে।
অনেক শিল্পীই বলছেন, তারা জানেন না কীভাবে নির্বাচিত হন পুরস্কারপ্রাপ্তরা। নেই কোনও খোলা মাপকাঠি, নেই স্বাধীন বিচারবিভাগ।
আর সেই জায়গা দখল করে নেয় রাজনীতির প্রভাব শিল্পে

স্মরণীয় এক ঘটনা, 2019 সালে এক উঠতি শিল্পী মুর্শিদাবাদ থেকে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েও রাজ্য পুরস্কার পাননি।
পরবর্তীতে জানা যায়, তিনি সামাজিক মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে পোস্ট করেছিলেন।
কাউকে কিছু না বলে, তাঁকে ‘প্যানেল থেকে বাদ’ দেওয়া হয়।
এভাবেই জন্ম নেয় পুরস্কারের যোগ্যতা বিতর্ক, আর প্রশ্ন ওঠে—সত্যিই কি এই সম্মানগুলো নিখাদ প্রতিভার মাপকাঠিতে আসে?

 শিল্প ও সংস্কৃতির স্বাধীনতা কি হারাচ্ছে?

একটা সময় ছিল যখন শিল্পীরা ছিলেন সমাজের বিবেক।
কিন্তু এখন অনেকেই রাজনীতির ছায়ায় দাঁড়িয়ে স্বীকৃতি পাওয়ার রাস্তা খোঁজেন।
এই পরিবর্তন শুধু একটি প্রজন্মের শিল্পীকে নয়, গোটা সাংস্কৃতিক জগতকে প্রভাবিত করছে।

শিল্পীদের রাজনৈতিক যোগ এখন যেন বাধ্যতামূলক হয়ে উঠছে যদি তাঁরা চায় রাজনীতির রঙে রাঙানো পুরস্কার
এতে করে হারিয়ে যাচ্ছে শিল্প ও সংস্কৃতির স্বাধীনতা

এক প্রবীণ চিত্রপরিচালক একবার বলেছিলেন,
“আজকাল যারা পুরস্কার পায়, তারা শিল্পচর্চা করে না—তারা লবিং করে।”

 একটি অনুচ্চারিত সত্য: ‘নীরবতা’ও এখন একটি অবস্থান

অনেক প্রতিভাবান শিল্পী চুপ করে থাকেন—কোনও পক্ষেই কথা বলেন না।
কারণ তাঁরা জানেন, যেকোনও মন্তব্য তাঁদের ক্যারিয়ারে প্রভাব ফেলতে পারে।
এই চুপচাপ থেকে যাওয়ার মধ্যেই রয়েছে এক বড় প্রতিবাদ। কিন্তু সেই প্রতিবাদ পুরস্কার পায় না—পায় না সম্মান।
এখানেই বোঝা যায় সংস্কৃতি জগতে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আর কতো গভীরে গিয়েছে।

 পাঠকের জন্য প্রশ্ন:

  • আপনি কি কখনও ভেবেছেন, কারা ঠিক করেন কারা পুরস্কার পাবেন?

  • আপনি কি মনে করেন, পুরস্কার পাওয়ার পেছনে এখন রাজনীতির ছায়া সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর?

  • আপনি কি খেয়াল করেছেন, কিছু মুখ বারবার পুরস্কার পান—কিন্তু কিছু প্রতিভা কখনও আলোয় আসেন না?

এই সব প্রশ্নের উত্তর একদিনে আসবে না। কিন্তু আলোচনার শুরু হওয়া দরকার—শিল্পের মঞ্চে যেন না চলে নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার, না জেগে ওঠে শিল্প পুরস্কারের রাজনৈতিকীকরণ নামক এক নিরব অন্ধকার।

শিল্প মানে মুক্ত কণ্ঠ—আর পুরস্কার মানে সেই কণ্ঠকে সম্মান।
কিন্তু যদি সেই কণ্ঠকেই বেছে নেওয়া হয় রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে, তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে—পুরস্কার কি আজও শিল্পের সম্মান? নাকি নিছক রাজনৈতিক বিনিয়োগের রিটার্ন?

কেন এই বিষয়টি আলোচনায়?

আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন, হঠাৎ করে কিছু শিল্পী নির্দিষ্ট সময়েই পুরস্কারের আলোয় আসেন, আবার অনেকে বছরের পর বছর দুর্দান্ত কাজ করেও থেকে যান নীরব? প্রশ্নটা শুধু প্রতিভার নয়—প্রশ্নটা গভীরে গিয়ে গিয়ে দাঁড়ায় শিল্প পুরস্কারের রাজনৈতিকীকরণ এবং এক অদৃশ্য পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক রাজনীতি-র মুখোমুখি।

এই বিতর্কটা নতুন নয়, তবে সাম্প্রতিক সময়ে এটি আরও গাঢ় হয়েছে। এর মূল কারণ—নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার এক ভয়ানক বাস্তবতা হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক দলগুলি এখন শিল্পীদের শুধু প্রচারের মুখ হিসেবে নয়, বরং ‘পুরস্কার-প্রাপ্ত সম্ভাব্য মুখ’ হিসেবেও ব্যবহার করছে।

KalighatPainting _by RadhaChitrakar

ঘটনাটি শুরু হয়েছিল ছোট একটি পোস্ট থেকে…

২০১৯ সালে এক তরুণ নাট্যকার সামাজিক মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ রাজনৈতিক মত প্রকাশ করেন। পোস্টটি তেমন আলোড়ন তুলেনি, কিন্তু তার কিছুদিন পরেই জানা গেল, তিনি রাজ্যস্তরের একটি সরকারি নাট্য পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েও বাদ পড়েছেন।
অফিশিয়াল কোনও ব্যাখ্যা নেই, কিন্তু সহকর্মীরা বলেন, “তাঁর পোস্টের পরই তালিকাটা পাল্টে যায়।”
এই একটিমাত্র ঘটনা নয়—এটা এখন শিল্প ও রাজনীতি মিলে তৈরি এক ‘স্ট্র্যাটেজিক নিঃশব্দতা’র অংশ।

এভাবেই ধীরে ধীরে সৃষ্টি হয়েছে পুরস্কার বিতর্ক, যেখানে পুরস্কার বণ্টনের স্বচ্ছতা-ই প্রশ্নবিদ্ধ।

রাজনৈতিক ছায়া পড়ে ক্যানভাসে, কিন্তু দেখা যায় না

একটি সময় ছিল যখন বাংলা সংস্কৃতি ও রাজনীতি ছিল পরস্পর পরিপূরক—কবিরা বলতেন, নাট্যকাররা প্রতিবাদ করতেন, চিত্রশিল্পীরা প্রতীক দিয়ে সত্য উন্মোচন করতেন।
কিন্তু আজ সেই চিত্র বদলে গেছে।
এখন অনেকেই পুরস্কারের মুখ চেয়ে রাজনীতির সঙ্গে ‘সামঞ্জস্য’ রাখেন।
এই প্রবণতাই জন্ম দিয়েছে এক নতুন ধারার: রাজনীতি বনাম প্রতিভা

বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরস্কার তালিকা প্রস্তুতের ক্ষেত্রে এখন ‘তালিকা আগে, যোগ্যতা পরে’ নিয়ম চলছে। অর্থাৎ আগে দেখা হয়—কে কোথায়, কোন দলে, কী ভূমিকায়। তারপর আসে—তিনি কী সৃষ্টি করলেন।

মানুষের প্রতিক্রিয়া ও শিল্পীদের প্রতিবাদ

সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে মানুষ এখন সব দেখছে—আর মন্তব্য করছে।
একজন চলচ্চিত্র সমালোচক একবার লিখেছিলেন,
“যেখানে জুরি বোর্ডের সদস্যরাই রাজনৈতিক ক্যাম্পেনের মুখ, সেখানে পুরস্কার মানে রাজনীতির সার্টিফিকেট!”

শিল্পীদের একটা বড় অংশ নীরব থাকলেও, কেউ কেউ মুখ খুলছেন।
তাঁদের বক্তব্যে বারবার উঠে আসছে সেই চিরচেনা অভিযোগ:
শিল্প পুরস্কারের রাজনৈতিকীকরণ আজ এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার ঠিক যেন ক্যাম্পেনের কৌশল—নির্বাচনের আগে কিছু মুখকে খেতাব দিয়ে জনমত তৈরি করার হাতিয়ার।

কেন এখনই প্রশ্ন তোলা জরুরি?

এই পুরো প্রক্রিয়া যদি নীরবে চলতেই থাকে, তাহলে ভবিষ্যতের শিল্পী সমাজে প্রতিভার থেকে বেশি গুরুত্ব পাবে ‘সংযোগ’।
যে শিল্প কখনো ছিল বিদ্রোহের হাতিয়ার, তা হয়ে উঠবে রাজনৈতিক রঙে রাঙানো পুরস্কার-এর চুপচাপ প্রাপ্তি।
এটাই সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য।

এবং এখানেই এসে দাঁড়ায় আজকের এই আলোচনা—কারণ এই অদৃশ্য রাজনীতির চোরাস্রোত যদি প্রশ্ন না তোলে, তাহলে শিল্পের ভবিষ্যতকে এক অদ্ভুত চুপচাপ পতনের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: রাজনৈতিকীকরণ ও নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার

শিল্প পুরস্কারের রাজনৈতিকীকরণ আজ আর কল্পনার বিষয় নয়, বরং পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক রাজনীতির এক অনিবার্য বাস্তবতা। একদিকে যেমন প্রতিভাবান শিল্পীরা উপেক্ষিত, অন্যদিকে নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার এক নতুন মাত্রা পাচ্ছে, যেখানে পুরস্কার হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক সুবিধার হাতিয়ার।

 পুরস্কার নয়, প্রভাবের পুরস্কার!

এই প্রসঙ্গে ‘বিনয় মল্লিক’-এর ঘটনাটি প্রাসঙ্গিক। তিনি একজন প্রতিভাবান থিয়েটার পরিচালক, যিনি বিগত এক দশকে গ্রামীণ নাট্যচর্চায় নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু যখন “রাজ্য নাট্য পুরস্কার” ঘোষণা করা হলো, তাঁর নাম দেখা গেলো না সেই তালিকায়। বদলে পুরস্কার পেলেন এমন একজন যিনি রাজ্যের শাসকদলের সাংস্কৃতিক শাখার ঘনিষ্ঠ। এখানেই উঠে আসে প্রশ্ন—এই কি শিল্প ও রাজনীতির সংযোগ? নাকি সরাসরি শিল্প পুরস্কারের রাজনৈতিকীকরণ?

এ ঘটনা শুধু ব্যতিক্রম নয়। নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার যেন আজ স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনপ্রিয় অভিনেতা বা গায়ক হঠাৎ নির্বাচনের আগে সরকারি মঞ্চে ‘সম্মান’ পান, তারপর কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁদের দেখা যায় রাজনৈতিক মিছিলে। এমনকি বহুবার দেখা গেছে, একাধিক পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী নির্বাচনের পর আর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় নন। তাহলে এই পুরস্কার কি শুধুই প্রতিভার স্বীকৃতি, না কি ভোটব্যাংকের পরিকল্পিত খেলা?

সাংস্কৃতিক পর্যটনের পীঠস্থান, পশ্চিমবঙ্গের মুকুটে নয়া পালক - Bhramon Online

 স্বচ্ছতার আড়ালে ঘন ধোঁয়া

পুরস্কার বণ্টনের স্বচ্ছতা নিয়ে যতই বক্তৃতা শোনা যাক না কেন, ভিতরে ভিতরে শিল্পজগতে পক্ষপাতিত্ব যেন অব্যাহত। প্রায়শই দেখা যায় যে পুরস্কার জুরি বোর্ডে থাকেন রাজনৈতিকভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত কিছু ‘বিশেষজ্ঞ’। তাঁদের সুপারিশে চলে সরকারি পুরস্কার বিতরণ। ফলে প্রতিভা নয়, বরং ঘনিষ্ঠতা হয়ে ওঠে পুরস্কার প্রাপ্তির চাবিকাঠি।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ২০২২ সালের ‘বাংলা চিত্রশিল্পী সম্মান’-এর কথা, যেখানে একজন নবাগত শিল্পী হঠাৎ উঠে আসেন আলোচনায়, যাঁর নাম আগে কোথাও শোনা যায়নি। পরে জানা যায়, তিনি একজন বিধায়কের আত্মীয়। এই ঘটনা প্রশ্ন তো তোলে—এই কি রাজনৈতিক রঙে রাঙানো পুরস্কার?

 পক্ষপাতিত্ব ও প্রতিবাদ—এক অনন্য নাটক

শুধু অভ্যন্তরীণ কথাই নয়, কখনো কখনো প্রকাশ্যে প্রতিবাদও উঠে এসেছে। ২০১9 সালে কবি প্রলয় সেন সরকার কর্তৃক ‘রাজ্য সাহিত্য পুরস্কার’ প্রত্যাখ্যান ছিল এক নজিরবিহীন প্রতিবাদ। তিনি স্পষ্ট করে বলেছিলেন যে, এই পুরস্কারের পেছনে ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং “একটি নির্দিষ্ট ভাবধারার লোককেই সম্মানিত করা হচ্ছে।” তাঁর বক্তব্যে ছিল তীব্র অভিযোগ—সংস্কৃতি জগতে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এখন আর শুধু অভিযোগ নয়, তা বাস্তবের দিকেই ইঙ্গিত করে।

এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে যে, পুরস্কারের যোগ্যতা বিতর্ক আজকাল শুধুই যোগ্যতার ভিত্তিতে নয়, বরং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী নির্ধারিত হচ্ছে। আর এখানেই প্রশ্ন জাগে—রাজনীতি বনাম প্রতিভা, কে জিতছে?

📉 চার্টের চোখে বাস্তবতা

বিষয়বাস্তবচিত্র
শিল্প পুরস্কারের রাজনৈতিকীকরণগত ৫ বছরে ৬০% পুরস্কারপ্রাপ্তই রাজনৈতিকভাবে পরিচিত মুখ
নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহারনির্বাচনের আগে শিল্পীদের “সম্মাননা” দেওয়ার ঘটনা বেড়েছে ৩ গুণ
পুরস্কার বণ্টনের স্বচ্ছতা৪০% জুরি বোর্ডে রাজনৈতিক পরিচয় সম্পন্ন ব্যক্তি
শিল্পীদের প্রতিবাদগত ১০ বছরে ৭ জন শিল্পী পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন
শিল্প ও সংস্কৃতির স্বাধীনতা৮০% শিল্পী মনে করেন তাঁদের কাজ রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত

 এক বিষণ্ণ চিত্র

এই বাস্তবতায় উঠে আসে একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন—কোথায় আজ শিল্প ও সংস্কৃতির স্বাধীনতা? শিল্পের মূল শক্তি ছিল রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে থেকে সমাজকে সত্য বলা। আজ তা নিজেই এক রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার এবং শিল্প পুরস্কারের রাজনৈতিকীকরণ মিলিয়ে একটা অদ্ভুত সমীকরণ তৈরি হয়েছে, যেখানে প্রতিভা আর কণ্ঠ হারিয়ে যাচ্ছে রাজনীতির কোলাহলে।

এই পরিবর্তনের সময় কি তবে ঘনিয়ে এসেছে? যেখানে পুরস্কার মানে হবে শুধু প্রতিভার স্বীকৃতি, রাজনীতির চিহ্ন নয়?

কারা এর পেছনে?

এই প্রশ্নটাই আসলে সবচেয়ে জটিল আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শিল্প পুরস্কারের রাজনৈতিকীকরণ এমন এক প্রক্রিয়া, যেখানে সামনের দৃশ্যপটে থাকে পুরস্কারের ঝলক, কিন্তু পর্দার আড়ালে চলে সাংগঠনিক কুশলী নাটক। আর এখানেই উঠে আসে সেই চেনা অচেনা কিছু মুখ, যাঁদের হাত ধরে নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার দিন দিন নির্লজ্জভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক সংঘের ছায়া

পশ্চিমবঙ্গে একাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে, যেগুলি সরকারি অনুদানে চলে এবং রাজ্যের শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। এই সংগঠনগুলিই মূলত শিল্পী নির্বাচনে “সুপারিশ” করে। পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম প্রকাশের আগে যে “কমিটি” বসে, সেখানে এমন অনেকেই থাকেন, যাঁদের শিল্পজগতের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক নেই। তাঁরা অধিকাংশই সাংস্কৃতিক শাখার রাজনৈতিক কর্মী, কিংবা সাংসদের ঘনিষ্ঠ পরামর্শদাতা। এখানেই প্রবেশ করে শিল্প ও রাজনীতি–র অদ্ভুত সমীকরণ।

  • এই সব কমিটি থেকে যেমন প্রতিযোগিতার ধারণা উধাও, তেমনই পুরস্কার বণ্টনের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠে যায়।

  • অনেক সময় দেখা যায়, নির্বাচনের বছরেই নতুন নতুন “সংস্কৃতি উৎসব” তৈরি হয়, আর সেখানেই সম্মাননা নামক প্রহসনের আয়োজন।

  • এই রকম আয়োজনগুলো মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার-এরই এক কৌশলী রূপ।

 আসল গল্প: এক প্রতিভার হারিয়ে যাওয়া

নাট্যকার সৌরভ দে, যিনি ২০১৭ সালে এক অভিনব মনস্তাত্ত্বিক থিয়েটার “অপ্রকাশ্য” মঞ্চস্থ করে দর্শক এবং সমালোচকদের দারুণ প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। তাঁর নাটক মনোবিদ্যার সঙ্গে নাট্যকলার এক নতুন সংমিশ্রণ তৈরি করেছিল। কিন্তু তিন বছর ধরে তিনি আবেদন করেও কোনো সরকারি নাট্য পুরস্কার পাননি। কেন? কারণ তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ ছিলেন না, এমনকি একটি বিতর্কিত নাটকে তিনি রাজনৈতিক নেতার সমালোচনাও করেছিলেন।

  • সৌরভবাবু বলেন, “আমি প্রতিভা দিয়ে লড়ছি, কিন্তু কেউ কেউ পরিচয় দিয়ে জিতছে। এটা কি শিল্পের নিয়ম?”

এই ঘটনা কেবল ব্যতিক্রম নয়, বরং শিল্প পুরস্কারের রাজনৈতিকীকরণ-এর বাস্তব উদাহরণ। এবং একইসঙ্গে ইঙ্গিত করে যে, রাজনৈতিক রঙে রাঙানো পুরস্কার কিভাবে শিল্পীর স্বীকৃতির পথ রুদ্ধ করে দিচ্ছে।

 এক আশ্চর্য চক্র: রাজনীতি বনাম প্রতিভা

যে মুহূর্তে কেউ রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়ে, তখন তাঁর প্রতিভা যেন “স্বীকৃতিযোগ্য” হয়ে ওঠে। একাধিক উদাহরণ আছে যেখানে কোনও গায়ক বা অভিনেতা রাজনীতিতে যোগ দিয়েই পেয়েছেন ‘বিশেষ সম্মাননা’ বা পুরস্কার, অথচ তাঁর সমসাময়িক, সমান কিংবা ভালো প্রতিভার অধিকারী শিল্পী বারবার উপেক্ষিত হয়েছেন।

  • এই অনুপাতটা অদ্ভুত:

    “রাজনৈতিকভাবে যুক্ত শিল্পীদের মধ্যে পুরস্কারপ্রাপ্তির হার প্রায় ৬৫%, যেখানে নিরপেক্ষ শিল্পীদের ক্ষেত্রে সেই হার ১৮%-এর নিচে।”

এখানেই বোঝা যায়, নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার কেবল ব্যবহার নয়, বরং নিয়ন্ত্রনের রূপ নিচ্ছে।

 শিল্পের গলায় শ্বাসরোধ?

বাংলা সংস্কৃতি ও রাজনীতি-র এই মিলেমিশে যাওয়া পরিকাঠামোয় সত্যিই আজ প্রশ্ন ওঠে—কে শিল্পের প্রকৃত রক্ষক? সরকার? রাজনৈতিক দল? না কি মানুষ?

যদি এই ট্রেন্ড চলতে থাকে, তাহলে হয়তো ভবিষ্যতে পুরস্কার পাওয়া মানে হবে রাজনৈতিক আনুগত্যের সনদ, প্রতিভার নয়। আর সেই মুহূর্তেই হারিয়ে যাবে শিল্প ও সংস্কৃতির স্বাধীনতা

বিতর্ক ও চ্যালেঞ্জ: সম্মানের আড়ালে অস্বচ্ছতার ছায়া

শিল্প পুরস্কারের রাজনৈতিকীকরণ আজ শুধু মতভেদের বিষয় নয়, বরং হয়ে উঠেছে এক স্পষ্ট সামাজিক চ্যালেঞ্জ। যেখানে নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার কেবল ইঙ্গিত নয়, বাস্তব ছবি হয়ে সামনে আসছে। এই বিতর্ক যে শুধু শিল্পীদের ভেতরে সীমাবদ্ধ থাকে তা নয়—এটা সমাজজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে শিল্পের প্রতি মানুষের আস্থাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।

 সত্য ঘটনা: ‘মীনাক্ষী সেন’ ও এক অদৃশ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা

২০২১ সালে কলকাতার এক উদীয়মান ছাত্রী, মীনাক্ষী সেন, যিনি ক্লাসিক্যাল ডান্সে একাধিক জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন, রাজ্য সরকারের এক বিশেষ সাংস্কৃতিক সম্মাননায় মনোনীত হয়েছিলেন। অথচ ঠিক পুরস্কার ঘোষণার আগেই তাঁর নাম বাদ পড়ে যায়। পরে জানা যায়, একই বিভাগে মনোনীত হয়েছেন এক বিধায়কের আত্মীয়া, যাঁর পারফরম্যান্সের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে নানাভাবে ট্রোলড হয়েছিল।

এই ঘটনাকে ঘিরে সে বছর উঠেছিল এক বিশাল প্রশ্ন—“শিল্প পুরস্কারের রাজনৈতিকীকরণ কি শুধু রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয়, নাকি এটি হয়ে উঠেছে এক সাংস্কৃতিক প্রতিপত্তির অস্ত্র?” মীনাক্ষীর মতো অনেকেই পরবর্তীতে এই দৌড়ে নাম তুলে নেন, কারণ তাঁরা বুঝে গিয়েছিলেন, রাজনৈতিক রঙে রাঙানো পুরস্কার-এর পেছনে লুকিয়ে থাকে অসম প্রতিযোগিতা।

📉 একটি চিত্রে বিতর্কের রেখাচিত্র

নীচের চার্টে দেখা যাচ্ছে, কীভাবে ২০১6-2024 সালের মধ্যে সরকারি সাংস্কৃতিক পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকা ব্যক্তিদের সংখ্যা বেড়েছে এবং নিরপেক্ষ শিল্পীদের সংখ্যা কমেছে:

সালমোট পুরস্কারপ্রাপ্তরাজনৈতিকভাবে যুক্তনিরপেক্ষ শিল্পীবিতর্কের সংখ্যা
20164012283
20184522237
202052341811
202258411714
202460461417

স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, পুরস্কার বণ্টনের স্বচ্ছতা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে, এবং তার সঙ্গে বাড়ছে সংস্কৃতি জগতে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ

 বিতর্কের প্রকৃতি ও গভীরতা

এই বিতর্কের আরেকটি দিক হলো “যোগ্যতা বনাম পরিচয়”-এর সংঘাত। বহু ক্ষেত্রে দেখা যায়, সেই শিল্পীরাই পুরস্কৃত হচ্ছেন, যাঁরা হয় কোনও সাংস্কৃতিক বোর্ডের সদস্য, নয়তো কোনও সরকারি প্রকল্পের মুখপাত্র। অথচ বহু বিশিষ্ট শিল্পী, যাঁরা আন্তর্জাতিক সম্মান পেয়েছেন, তাঁরা উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছেন।

এখানেই উঠে আসে শিল্পজগতে পক্ষপাতিত্ব এবং রাজনীতি বনাম প্রতিভা প্রসঙ্গ।

“আমার প্রতিভা নাকি আমার চেনাশোনাই গুরুত্বপূর্ণ?”—এমন হতাশা ক্রমেই গিলে খাচ্ছে উঠতি শিল্পীদের মনোবল।

 চ্যালেঞ্জের শেষে পথ কোথায়?

শিল্প ও সংস্কৃতির স্বাধীনতা যদি রক্ষা করতে হয়, তবে প্রথমেই প্রয়োজন সরকারি পুরস্কার বিতরণ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনা। কিন্তু সেই স্বচ্ছতা সম্ভব নয় যতক্ষণ না নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার বন্ধ হয়।

এখন প্রশ্ন একটাই—আসলে পুরস্কারের আসল মানে কী? সত্যিকারের সম্মান, নাকি এক রাজনৈতিক বার্তার বাহক?

ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা: পরিবর্তনের ইঙ্গিত, না কি নতুন মোড়কে পুরনো রাজনীতি?

শিল্প পুরস্কারের রাজনৈতিকীকরণ নিয়ে বিতর্ক এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অত্যন্ত স্বাভাবিক। বিশেষ করে যখন আমরা বারবার দেখতে পাচ্ছি নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার, তখন আশার আলো খোঁজাটাও যেন একটা শিল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 আশা ও আশঙ্কা: এক দ্বন্দ্বমূলক ভবিষ্যৎচিত্র

শিল্প ও রাজনীতি যদি সমান্তরাল না থেকে একে অপরকে প্রভাবিত করে, তবে ভবিষ্যতের চিত্র নিঃসন্দেহে জটিল হতে বাধ্য। আসুন দেখি কী কী সম্ভাবনা ও বিপদ আমাদের সামনে অপেক্ষা করে আছে—

১. প্রযুক্তির মাধ্যমেই স্বচ্ছতা সম্ভব:
→ আগামি দশকে যদি পুরস্কার নির্বাচনে প্রযুক্তি, ব্লকচেইন বা ওপেন সোর্স যাচাইকরণ ব্যবস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তবে পুরস্কার বণ্টনের স্বচ্ছতা অনেকটাই নিশ্চিত হতে পারে।
→ এর ফলে রাজনীতির প্রভাব শিল্পে অনেকটা কমে যাবে এবং রাজনৈতিক রঙে রাঙানো পুরস্কার-এর প্রবণতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

২. বিকল্প পুরস্কারের উত্থান:
→ বিভিন্ন বেসরকারি ও স্বাধীন সংগঠন ইতিমধ্যেই শুরু করেছে “People’s Choice Award” বা “Alternative Talent Honour”-এর মত পুরস্কার।
→ যেমন, “উত্তর কলকাতা সাহিত্য মঞ্চ” ২০২3 সালে এমন এক পুরস্কার শুরু করে যেখানে ভোটার ছিলেন শুধুই পাঠক ও শ্রোতা।
→ এখানেই আসে এক মজার তথ্য—সেই বছর এক রাজনৈতিকভাবে বিতাড়িত নাট্যকার, পবিত্র সেন, এই পুরস্কার জেতেন, যাঁর কাজ সরকারি মঞ্চে নিষিদ্ধ হয়েছিল।

৩. সামাজিক মাধ্যমের শক্তি:
→ আজ আর কিছুই গোপন থাকে না। একটি বিতর্কিত পুরস্কার ঘোষণার পরপরই যখন #BanBiasAward ট্রেন্ড করে, তখন সরকার বা সংস্থার ওপর চাপ তৈরি হয়।
শিল্পীদের প্রতিবাদ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আরও সরব, যা ভবিষ্যতে শিল্প ও সংস্কৃতির স্বাধীনতা রক্ষায় বড় ভূমিকা নিতে পারে।

 একটি বিশ্লেষণ: রাজনৈতিক রঙের পাল্টা স্রোত

যখন নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার দিনের পর দিন স্বাভাবিক হয়ে উঠছে, তখন নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা নিজেদের ঘরেই তৈরি করছেন এক “বিকল্প সংস্কৃতি”। যেমন, ‘আরণ্যক গোষ্ঠী’-র সদস্য শুভ্রা মিত্র একটি ইউটিউব চ্যানেল চালু করেছেন, যেখানে প্রতিমাসে তাঁরা এমন শিল্পীদের নিয়ে আসেন, যাঁদের কাজ কখনও কোনও সরকারি স্বীকৃতি পায়নি।

তাঁর এক কথায়—
“পুরস্কার পেলেই আমি শিল্পী নই, আমি শিল্পী কারণ আমি মানুষের মন ছুঁতে পারি।”

এই মনোভাবই ভবিষ্যতের পথে আলোর দিশা দিতে পারে। এবং এটাই বোঝায়—
শিল্প পুরস্কারের রাজনৈতিকীকরণ যতই প্রভাব ফেলুক না কেন, শিল্পের সত্যতা শেষ পর্যন্ত মাথা তুলে দাঁড়ায়।

Inscript - সারা ভারতের লোকনৃত্য এবং পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান

 স্বীকৃতি না হোক, প্রতিক্রিয়া হোক গর্জে ওঠা

একটা সময় আসবে, যখন পুরস্কার বিতর্ক নিজেই একটা সাবজেক্ট হয়ে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায়। তখন হয়তো ইতিহাসের পাতায় থাকবে, কীভাবে সংস্কৃতি জগতে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ অস্বস্তি তৈরি করেছিল, আবার কীভাবে কিছু সত্যনিষ্ঠ শিল্পী সেই দেয়াল ভেঙে সামনে এসেছিলেন।

তবে এই পরিবর্তনের সম্ভাবনা তখনই বাস্তবায়িত হবে, যখন আমরা সবাই মিলে প্রশ্ন তুলব—
👉 “আমরা কি সত্যিকারের প্রতিভাকে পুরস্কৃত করতে চাই, না নির্বাচনী সুবিধার অনুগত থাকব?”

👉 “নির্বাচনী রাজনীতিতে শিল্পের ব্যবহার” বন্ধ হলেই হয়তো নতুন করে জন্ম নেবে এক স্বতন্ত্র ও মুক্ত শিল্পজগত।

আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো

Leave a Reply