পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প এক সময় দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় খাত ছিল, তবে বর্তমানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও প্রশাসনিক অদক্ষতার কারণে এই শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, পর্যটন নীতির দুর্বলতা ও পরিকাঠামোর অভাব পর্যটনের অগ্রগতিকে থমকে দিয়েছে। বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের ওপরও প্রভাব ফেলছে। পরিবেশ ও ঐতিহ্যগত স্থানগুলিরও অবনতি হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে, পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য কার্যকর প্রশাসনিক উদ্যোগ ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজনীয়তা আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে বেশি। এখনই প্রশ্ন, এই শিল্পের ভবিষ্যৎ কোথায় দাঁড়িয়ে?

সূচিপত্র

🎯 পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন শিল্প: সম্ভাবনা ও সংকট

পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প গত কয়েক দশকে তীব্র সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছিল। পাহাড়, সমুদ্র, জঙ্গল, ঐতিহাসিক স্থাপত্য আর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য—এই রাজ্যের হাতে সম্ভারের কোনো অভাব নেই। অথচ আজ পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প এক অদ্ভুত সংকটে। নিচে প্রতিটি সমস্যাকে বিস্তারিতভাবে বিশ্লেষণ করা হলো, যাতে বোঝা যায় এই সংকট কতটা গভীর এবং কেন পর্যটনের অগ্রগতি থমকে আছে।

 প্রশাসনিক কাঠামোর দুর্বলতা ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ

🔸 রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ

  • স্থানীয় রাজনীতি প্রায়শই প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করে। উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিরপেক্ষভাবে এগোলে যে উন্নতি সম্ভব, তা রাজনৈতিক চাপে থমকে যায়।

  • নির্বাচনের আগে বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্রের অবকাঠামো তড়িঘড়ি করে তৈরি হলেও, নির্বাচন শেষে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা অকার্যকর হয়ে পড়ে।

🔸 প্রশাসনিক অদক্ষতা

  • প্রকল্পে বরাদ্দ টাকা থাকলেও পর্যটন দপ্তরের ব্যর্থতা এবং নিচুস্তরের দুর্নীতির কারণে তা পুরোপুরি ব্যবহার হয় না।

  • পর্যটন কেন্দ্রের অব্যবস্থাপনা এতটাই স্পষ্ট যে, বহু পর্যটনস্থানে পর্যটকদের জন্য অনুপযুক্ত পরিকাঠামো দেখা যায়—যেমন, অপর্যাপ্ত শৌচাগার, জল সরবরাহ, স্বাস্থ্যব্যবস্থা।

 পর্যটন নীতির দুর্বলতা ও পরিকল্পনার অভাব

🔸 সরকারের পরিকল্পনার অভাব

  • পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্পের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রায় অনুপস্থিত। অধিকাংশ প্রকল্প হয় অস্থায়ী বা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ।

  • সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে পর্যটনের অগ্রগতি থমকে যায়।

🔸 পর্যটন নীতির দুর্বলতা

  • রাজ্য পর্যটন নীতিতে বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে সবচেয়ে বড় সংকেত। রাজ্যের ট্যুরিজম পলিসি গুলিতে রূপরেখা থাকলেও বাস্তবায়ন দুর্বল এবং বেসরকারি উদ্যোগকে নিরুৎসাহিত করে।

 পরিবেশ ও ঐতিহ্যগত স্থানের অবহেলা

🔸 পর্যটন কেন্দ্রের অব্যবস্থাপনা

  • বহু ঐতিহাসিক স্থান, যেমন গৌড়, মুর্শিদাবাদ, বিষ্ণুপুর ইত্যাদির রক্ষণাবেক্ষণ নেই বললেই চলে। যা পর্যটকদের আস্থা কমিয়ে দিচ্ছে।

  • পাহাড়ি ও বনাঞ্চল এলাকায় অপরিকল্পিত নির্মাণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে পরিবেশ ও ঐতিহ্যগত স্থানের ক্ষতি হচ্ছে।

🔸 অপ্রতিরোধ্য ভিড় ও বাণিজ্যিকীকরণ

  • দিঘা, সুন্দরবন, দার্জিলিং—এমন সব গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পর্যটকদের ভিড় সামলাতে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা নেই, ফলে পর্যটন কেন্দ্রের অব্যবস্থাপনা প্রকট হচ্ছে।

 পর্যটন রাজস্ব হ্রাস ও অর্থনৈতিক প্রভাব

🔸 পর্যটন রাজস্ব হ্রাস

  • পর্যটকদের আগমন কমলে হোটেল, ট্রান্সপোর্ট, হস্তশিল্প সবক্ষেত্রেই ক্ষতি হয়। এতে রাজস্ব প্রবাহে বড় ধাক্কা লাগে।

  • সরকারি অনুদানের উপর নির্ভরশীলতা বাড়ে, ফলে বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে আরও স্পষ্ট হয়।

🔸 কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়া

  • পর্যটন শিল্পে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে বহু মানুষ কাজ করেন। এই খাতে মন্দা দেখা দিলে, বহু স্থানীয় মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েন।

  • বেকার যুবকদের জন্য পর্যটন ছিল সম্ভাবনার খাত, আজ তা পর্যটনের অগ্রগতি থমকে যাওয়ায় মুখ থুবড়ে পড়ছে।

 বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে: সংকটের মূলে

এই পয়েন্টে বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে ব্যাখ্যা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি গোটা সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু।

  • সরকার পর্যটনকে শুধুমাত্র উৎসব-নির্ভর খাতে পরিণত করেছে। বছরজুড়ে টেকসই পর্যটন গড়ে তোলার চেষ্টায় ঘাটতি স্পষ্ট।

  • বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা দুর্নীতি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও দুর্বল আইন-শৃঙ্খলার কারণে পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী নন।

  • বহিরাগত পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে যেসব আন্তর্জাতিক মানের সুবিধা দরকার, তা এখনও অনুপস্থিত, যার ফলে পর্যটন বিকাশে বাধা অব্যাহত।

পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প আজ এক চুপচাপ বিপর্যয়ের দিকে এগোচ্ছে—যা একসময়ে ছিল অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণের আশার আলো। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, প্রশাসনিক অদক্ষতা, পর্যটন নীতির দুর্বলতা এবং বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে এই অগ্রগতিকে কঠিন করে তুলেছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে এই শিল্প থেকে রাজ্যের মানুষ ও সংস্কৃতি চিরতরে বঞ্চিত হতে পারে।

West Bengal: Bleak Future ahead for Tourism Sector, Workforce Struggles to  Get by | NewsClick

🧭 রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের প্রভাব: পর্যটনের অগ্রগতি থমকে কেন?

পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প‌ একটি বহুমাত্রিক সম্ভাবনার ক্ষেত্র—কিন্তু এই শিল্পের স্বাভাবিক প্রবাহে সবচেয়ে বড় বাধা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। উন্নয়নের বদলে রাজনৈতিক প্রভাব যখন প্রশাসনের চেয়ে প্রাধান্য পায়, তখনই শুরু হয় অবক্ষয়। নিচে এই সমস্যাকে কয়েকটি দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা হল, যেখানে বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে, পর্যটনের অগ্রগতি থমকে যাওয়া এবং পর্যটন বিকাশে বাধা একে অপরের সঙ্গে জটিলভাবে জড়িয়ে গেছে।

🔹 স্থানীয় রাজনীতি বনাম পর্যটন উন্নয়ন

🔸 ক্ষমতার রাজনীতি:

  • স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের ক্ষমতার দখলদারি পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে উন্নয়নের গতি ব্যাহত করে। রিসোর্ট নির্মাণ, রোড প্রজেক্ট কিংবা বাজার উন্নয়ন—সব ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক আনুগত্যই যেন মূল যোগ্যতা।

  • ফলে প্রকৃত প্রয়োজনীয়তা বা পরিকল্পনার বদলে প্রকল্প বরাদ্দ চলে যায় ‘নিজেদের লোক’ পরিচালিত এলাকায়, যেখানে পর্যটকদের জন্য অনুপযুক্ত পরিকাঠামো প্রায় অবধারিত।

🔸 প্রশাসনের বশীকরণ:

  • বহু পর্যটন দপ্তরের ব্যর্থতা মূলত প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক নির্দেশের প্রভাবের ফল। যেকোনো পর্যটন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রথমে দেখা হয় রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতির হিসাব।

🔹 রাজনৈতিক পরিবর্তন মানেই উন্নয়নের পুনর্নির্মাণ

🔸 ‘পর্যটন কেন্দ্রের অব্যবস্থাপনা’র নতুন সংজ্ঞা:

  • নতুন সরকার এলে পুরনো সরকার চালু করা পর্যটন প্রকল্প বন্ধ করে দেয় অথবা নাম পাল্টে নিজেদের কৃতিত্ব দাবি করে।

  • এতে যেমন আর্থিক অপচয় হয়, তেমনই পর্যটনের অগ্রগতি থমকে যায়, কারণ প্রকল্প মাঝপথে বন্ধ হলে স্থানীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

🔸 উদাহরণ:

  • দার্জিলিং ও সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এমনই পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, নিরাপত্তাহীনতা এবং বন্ধ দোকানের কারণে বহু পর্যটক বিকল্প রাজ্যে ঘুরতে চলে যায়—এতে সরাসরি পর্যটন রাজস্ব হ্রাস ঘটে।

🔹 উৎসবকেন্দ্রিক রাজনীতি: লোকদেখানো, টেকসই নয়

🔸 একমাসের গ্ল্যামার, বছরের অব্যবস্থা:

  • বহু ক্ষেত্রে সরকার পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প উন্নয়নের জন্য শুধু কিছু ঋতুভিত্তিক উৎসব আয়োজন করে। যেমন, গঙ্গাসাগর, দুর্গাপুজো, ট্যুরিজম ফেস্ট—যা ভোটের মুখে প্রচার কার্যক্রমে পরিণত হয়।

  • কিন্তু এই উৎসব শেষ হতেই পর্যটন কেন্দ্রের অব্যবস্থাপনা প্রকট হয়ে ওঠে, দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা বা উন্নয়ন থাকে না।

🔸 “ইভেন্ট-চালিত উন্নয়ন” বনাম বাস্তব অবকাঠামো:

  • সাময়িক আলো-ঝলকানির পেছনে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় হলেও, স্থায়ী পর্যটন নীতির দুর্বলতাবিনিয়োগের অভাব পর্যটনে প্রকৃত অগ্রগতিকে ধ্বংস করে দেয়।

🔹 রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিনিয়োগ-বিমুখতা

🔸 বিনিয়োগকারীদের অনীহা:

  • পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্পে বিদেশি বা বড়ো বেসরকারি সংস্থা বিনিয়োগ করতে চায় না, কারণ অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও চঞ্চল প্রশাসনিক নিয়মনীতি তাদের নিরুৎসাহিত করে।

  • কোনো এক অঞ্চলে হোটেল বা রিসোর্ট স্থাপন করতে গেলেই দেখা যায়, স্থানীয় দলীয় নেতাদের অনুমতি ছাড়া কাজ এগোয় না—এটাই বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে-এর মূল কারণ।

🔸 দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক ক্ষতি:

  • যখন পর্যটন প্রকল্প বারবার রাজনৈতিক টানাপোড়েনে পড়ে, তখন তা পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন এর বদলে সরকারের ব্যর্থতার নিদর্শন হয়ে দাঁড়ায়।

  • এই স্থবিরতা রাজ্যের জন্য বিপজ্জনক, কারণ পর্যটন একটি অন্যতম দ্রুততর কর্মসংস্থান-সৃষ্টিকারী খাত—এখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়া ভবিষ্যতের বড়ো আর্থিক বোঝা।

🔹 রাজনৈতিক ‘ভূমি-রাজনীতি’ ও ঐতিহ্য বিনাশ

🔸 ঐতিহ্যবাহী স্থান নিয়ে সংঘাত:

  • বহু ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় পর্যটনস্থানের আশেপাশের জমি নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়, যার ফলে পরিবেশ ও ঐতিহ্যগত স্থানের ক্ষতি ঘটে।

  • উদাহরণস্বরূপ, গঙ্গার তীরে একাধিক নির্মাণ প্রকল্প পর্যটন বিকাশে বাধা তৈরি করেছে, কারণ সেখানে পরিবেশ রক্ষা আইন মানা হয়নি।

রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ শুধুমাত্র প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে সীমাবদ্ধ নয়, এটি পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প-এর ভিত নাড়িয়ে দিচ্ছে। অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, পরিকল্পনার অভাব এবং সর্বোপরি বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে এই শিল্পকে পিছনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যদি এই হস্তক্ষেপ রাজনৈতিক কৌশল থেকে উন্নয়নের কৌশলে না বদলানো যায়, তাহলে খুব তাড়াতাড়ি এই সম্ভাবনাময় খাত সম্পূর্ণ ধ্বংসের মুখে পড়বে।

West Bengal Breaks Tourism Record with 18.5 Crore Visitors in 2024-  GetBengal story

🏗️ প্রশাসনিক অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনা: পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন শিল্পে গোপন ব্যাধি

পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন শিল্প যেভাবে সম্ভাবনায় পূর্ণ, ততটাই জর্জরিত প্রশাসনিক অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনা-এর বদ্ধচক্রে। এই নিরব ঘুণপোকা ধীরে ধীরে পর্যটনের অগ্রগতি থমকে দিয়েছে, এবং বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে আরও প্রকট করে তুলেছে। নিচে একে বিশ্লেষণ করা হলো বহুস্তর বিশিষ্ট ধারায়।

🔹 দক্ষতার ঘাটতি: টেবিলের ওপাশে অযোগ্যতা

🔸 অপ্রশিক্ষিত ট্যুরিজম আধিকারিকেরা

  • অনেক পর্যটন অফিসে কর্মরতরা ট্যুরিজম সম্পর্কিত আধুনিক জ্ঞান ও ট্রেনিং থেকে বঞ্চিত।

  • ফলত আন্তর্জাতিক মানের পরিকল্পনা ও মার্কেটিংয়ে পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প পিছিয়ে পড়ে।

🔸 প্রযুক্তি ব্যবহারে স্থবিরতা

  • যেখানে গোয়া, কেরালা ও গুজরাট সরকার পর্যটন ব্যবস্থাপনায় AI ও ডেটা অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনে প্রযুক্তির অনুপস্থিতি স্পষ্ট।

  • আজও অনেকে অনলাইনে বুকিং করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন, কারণ ওয়েবসাইট পুরোনো, ধীরগতি এবং অর্ধ-সম্পূর্ণ।

🔹 বাজেট বরাদ্দের অনিয়ম ও অপচয়

🔸 প্রকল্প শুরুর আগেই বাজেট শেষ

  • বহুবার দেখা গেছে, কোন একটি পর্যটন প্রকল্পের জন্য বাজেট বরাদ্দ হয়েছে, কিন্তু প্রকল্প শুরু হওয়ার আগেই সেই বাজেট বিভিন্ন খাতে “ব্যয়” হয়ে গেছে।

  • এই আর্থিক অনিয়ম পর্যটন বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এবং পর্যটনের অগ্রগতি থমকে যায়।

উদাহরণ:

  • বাঁকুড়া জেলার সাস্কৃতিক পর্যটন প্রকল্প ২০১৭ সালে ঘোষিত হলেও ২০২5-এর দোরগোড়ায় এসেও কাজের অগ্রগতি ১৫%। কারণ? মূল বাজেটের অর্ধেক ব্যয় হয়েছে শুধুমাত্র “সমীক্ষা” এবং “কনসালটেন্সি ফি”-তে।

West Bengal Breaks Tourism Record with 18.5 Crore Visitors in 2024-  GetBengal story

🔹 পর্যটন স্থানে রক্ষণাবেক্ষণের শৈথিল্য

🔸 হেরিটেজ স্থানের অযত্ন

  • পুরোনো কেল্লা, মন্দির বা ঐতিহাসিক স্থানগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে চূড়ান্ত অবহেলা রয়েছে। এতে শুধু দর্শনার্থী কমে না, পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প এর ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

🔸 স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ব্যর্থতা

  • অনেক পর্যটন কেন্দ্রে শৌচাগার নেই বা অচল।

  • পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে, যা বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে-এর আরেকটি কারণ।

🔹 তথ্যগত অপ্রকাশ ও দুর্বোধ্যতা

🔸 পর্যটন তথ্যের দুষ্প্রাপ্যতা

  • পর্যটকদের জন্য উপযুক্ত তথ্য যেমন ট্রান্সপোর্ট টাইমিং, হোটেল অপশন, গাইড ভাড়া, স্থানীয় সংস্কৃতির বিবরণ — সবই বিখণ্ডিতভাবে ছড়ানো ও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুল।

🔸 যোগাযোগ ব্যবস্থার তথ্য বিভ্রাট

  • রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে সংযোগ দুর্বল এবং তার তথ্যও অস্পষ্ট, ফলে অনেক সম্ভাবনাময় অঞ্চল পর্যটকদের দৃষ্টির বাইরে থেকে যায়। এতে পর্যটন বিকাশে বাধা অব্যাহত থাকে।

🔹 লোকবল ও মনোবলের সংকট

🔸 পর্যাপ্ত কর্মী নিয়োগের অভাব

  • প্রতিটি জেলা পর্যটন অফিসে জনবল অপর্যাপ্ত, যা পরিষেবা ব্যবস্থায় বিলম্ব সৃষ্টি করে এবং পর্যটনের অগ্রগতি থমকে দেয়।

  • স্থানীয় পর্যটন গাইডদের প্রশিক্ষণ নেই, ফলে পর্যটকরা বারবার অভিযোগ জানাচ্ছেন।

🔸 ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে সমন্বয়ের ঘাটতি

  • সরকারি পর্যায়ে ট্যুর অপারেটরদের কোনো প্ল্যাটফর্ম নেই যেখানে তারা নীতি-নির্ধারণে অংশ নিতে পারেন।

  • এই ‘টপ-ডাউন অ্যাপ্রোচ’ মূলত পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প কে নিম্নগামী রেখেছে।

প্রশাসনিক অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনা শুধু একটি প্রথাগত সমস্যা নয়, এটি এক জটিল, শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রতিবন্ধকতা যা পর্যটনের অগ্রগতি থমকে দিয়েছে বহু স্তরে। পরিকল্পনা, বাজেট, রক্ষণাবেক্ষণ, তথ্য প্রচার—প্রত্যেকটি স্তরে এই অব্যবস্থাপনা বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে-র মূল অনুঘটক হয়ে উঠেছে। যদি এই স্তরভিত্তিক ভাঙন বন্ধ না করা যায়, তাহলে পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প ধীরে ধীরে নিজের অস্তিত্ব হারাবে।

West Bengal Breaks Tourism Record with 18.5 Crore Visitors in 2024-  GetBengal story

📉 পর্যটন শিল্পের সংকটের ফলাফল

পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প যে বহুমুখী সংকটে পর্যবসিত হয়েছে, তার ফলাফল শুধুই আর্থিক ক্ষতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি রাজ্যের সামগ্রিক ভাবমূর্তি, সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ, কর্মসংস্থান ও বিদেশি বিনিয়োগের উপর দীর্ঘমেয়াদী ও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। নিচে এই ফলাফলগুলি সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করা হলো।

West Bengal Breaks Tourism Record with 18.5 Crore Visitors in 2024-  GetBengal story

🔹 রাজস্বের সরাসরি ক্ষতি

🔸 ট্যুরিস্ট ইনফ্লো-তে হ্রাস

  • ২০১৫ থেকে ২০২4-এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ঘরোয়া পর্যটকের সংখ্যা ১৭% কমেছে, যেখানে কেরালায় বেড়েছে ২২%।

  • পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প চরম সম্ভাবনাময় হওয়া সত্ত্বেও, পর্যটনের অগ্রগতি থমকে যাওয়ার দরুন এই রাজস্ব হ্রাস একটি কৌতুককর বাস্তবতা।

🔸 বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ হ্রাস

  • বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে-র কারণে বিদেশি মুদ্রার প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

  • পশ্চিমবঙ্গ ২০১৮ সালে বিদেশি পর্যটক সংখ্যায় ৫ম স্থানে থাকলেও বর্তমানে ৮ম স্থানে নেমে এসেছে।

🔹 স্থানীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া

🔸 ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আয় সংকোচন

  • হোটেল, হোমস্টে, হস্তশিল্প, লোকসংস্কৃতি—সবকিছুই পর্যটকের উপর নির্ভরশীল।

  • পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প দুর্বল হয়ে পড়ায়, এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত লক্ষাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আয়হীন হয়ে পড়েছেন।

🔸 উদাহরণ:

  • শান্তিনিকেতনের আশেপাশের পট্টচিত্র শিল্পীরা বিদেশি পর্যটকদের উপর নির্ভর করতেন। পর্যটন কমে যাওয়ায় বহু শিল্পী পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হয়েছেন।

🔹 কর্মসংস্থানের সংকোচন

🔸 সরাসরি কর্মসংস্থান হ্রাস

  • পর্যটনের অগ্রগতি থমকে যাওয়ার ফলে ট্যুর গাইড, ড্রাইভার, ট্র্যাভেল এজেন্টদের কাজ কমেছে।

  • ২০১৯ সালের তুলনায় বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন বিভাগে চুক্তিভিত্তিক কর্মীর সংখ্যা কমেছে প্রায় ২৮%।

🔸 পরোক্ষ কর্মসংস্থানে ধস

  • ক্যাফে, হস্তশিল্প বাজার, স্থানীয় পরিবহন — এই খাতগুলিতেও বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে ও প্রশাসনিক দুর্বলতায় সংকট গভীর হয়েছে।

🔹 ভাবমূর্তির অবনতি

🔸 জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত

  • পর্যটন মানেই একটি রাজ্যের ব্র্যান্ডিং। দুর্বল ব্যবস্থাপনার জন্য পশ্চিমবঙ্গ একটি ‘অব্যবস্থাপনার উদাহরণ’ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।

  • UNWTO-এর এক প্রতিবেদনে পশ্চিমবঙ্গকে “Potential-rich but Execution-poor” আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

🔸 মিডিয়া ও সোশ্যাল ফিডব্যাকে নেতিবাচকতা

  • Tripadvisor, Google Reviews-এ বহু পর্যটক উল্লেখ করেছেন:
    “The place is culturally rich, but logistically nightmarish.”

🔹 ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ক্ষয়

🔸 পর্যটনের অনুপস্থিতিতে সংরক্ষণের অভাব

  • পর্যটন না থাকলে ঐতিহ্যবাহী স্থানের রক্ষণাবেক্ষণের তহবিলও কমে যায়।

  • ফলে জড়ো হয় ধুলো, হারিয়ে যায় ইতিহাস — এবং পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প হারিয়ে ফেলে তার অস্তিত্বের ভিতর গাঁথা ঐতিহ্য।

🔹 ভবিষ্যতের জন্য নেতিবাচক বার্তা

🔸 বিনিয়োগকারীদের মনোভাব পরিবর্তন

  • যেকোনো বড়ো পর্যটন সংস্থা যখন দেখে যে পর্যটনের অগ্রগতি থমকে, এবং বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে ক্রমবর্ধমান, তখন তারা বিকল্প রাজ্যের দিকে মুখ ঘোরায়।

Kolkata Tours | Best Travel Agency in Kolkata | City Tour Operator

উদাহরণ:

  • ২০২৩ সালে একটি মালয়েশিয়ান রিসোর্ট সংস্থা সুন্দরবনে রিসোর্ট তৈরির প্রস্তাব দেয়। পরে তারা প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেয় ‘land clearance and security clearance delays’-এর অজুহাতে।

পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প সংকটে পড়ার ফলে এর প্রভাব একাধিক স্তরে ছড়িয়ে পড়েছে—রাজস্ব হ্রাস, কর্মসংস্থানে ধস, সাংস্কৃতিক অবক্ষয়, ও ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগের সম্ভাবনা কমে যাওয়া—যা রাজ্যের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভিতকেই কাঁপিয়ে দিয়েছে।
এখন প্রশ্ন একটাই: কেবল প্রচার নয়, কবে বাস্তবিক পরিবর্তন?

Wetlands Overview 2020: Judiciary is active, but remains ineffective –  SANDRP

🔮 ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা

পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প বর্তমানে একটি চুপচাপ ঘুমন্ত সম্ভাবনার নাম, যার জাগরণ নির্ভর করছে একটি সুপরিকল্পিত, দূরদর্শী ও প্রশাসনিকভাবে সক্রিয় কৌশলগত রূপরেখার উপর। নিচে পর্যটনের অগ্রগতি থমকে যাওয়ার এই দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজনীয় কিছু দিকনির্দেশনা ও উদাহরণ তুলে ধরা হলো:

🔹 পর্যটনকে সরকারিভাবে “Mission Mode”-এ আনা

🔸 আলাদা ট্যুরিজম কমিশন

  • একটি স্বতন্ত্র “West Bengal Tourism Revival Commission” গঠন করা যেতে পারে—যা কেবল পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প নিয়ে কাজ করবে।

  • কমিশনে ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট, হসপিটালিটি স্পেশালিস্ট, হেরিটেজ কনজারভেটর এবং সরকারি আধিকারিক থাকবে।

🔸 উদাহরণ:

  • মধ্যপ্রদেশ “Tourism Board” আলাদা করেই গঠন করেছে, যার ফলস্বরূপ ২০১৭ থেকে ২০২৩-এর মধ্যে পর্যটন বৃদ্ধি পেয়েছে ৪২%।

🔹 বিষয়ভিত্তিক পর্যটন প্যাকেজ ও ভৌগোলিক পুনর্বিন্যাস

🔸 থিম-ভিত্তিক ট্যুরিজম রুট

  • হেরিটেজ ট্রেন (মুর্শিদাবাদ–শান্তিপুর), সুন্দরবনে পরিবেশ পর্যটন, কিংবা কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শনের ট্রেকিং রুটে আলাদা থিম-প্যাকেজ চালু করা যেতে পারে।

🔸 ক্লাস্টার নির্ভর পরিকল্পনা

  • পর্যটনের অগ্রগতি থমকে গেলেও পরিকল্পনার মাধ্যমে জঙ্গলমহল, উত্তরবঙ্গ ও রায়চকের মতো অঞ্চলগুলিকে ক্লাস্টার করে উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।

🔹 প্রযুক্তির হস্তক্ষেপ

🔸 “Smart Tourism Portal” চালু

  • যেখানে প্রতিটি গন্তব্যের real-time crowd data, climate condition, security alert, booking facility থাকবে।

🔸 AI-driven ট্যুরিস্ট রুট সাজেশন

  • পর্যটকের পছন্দ, বাজেট ও অবস্থান অনুযায়ী AI দ্বারা তৈরি রুট ম্যাপ ট্যুরের মান বাড়াবে।

  • পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প কে যদি ভার্চুয়াল ট্যুরিজমে রূপান্তর করা যায়, তবে বৈশ্বিক পর্যায়ে এক নতুন দিগন্ত খুলে যাবে।

🔹 বিদেশি বিনিয়োগ টানা ও বেসরকারি অংশীদারিত্ব

🔸 PPP (Public-Private Partnership) মডেল

  • হোটেল, রিসোর্ট, কনভেনশন সেন্টার স্থাপনে সরকারি জমি লিজ দিয়ে বেসরকারি সংস্থা যুক্ত করা হোক।

🔸 ইনসেনটিভ স্কিম

  • বিনিয়োগের অভাব পর্যটনে কাটাতে বিনিয়োগকারীদের কর ছাড়, প্রমোশনাল সাপোর্ট এবং তহবিল ছাড়ের সুবিধা দেওয়া উচিত।

উদাহরণ:

  • গুজরাটে “Khavda Desert Resort” নির্মিত হয়েছে PPP মডেলে, যার পরিমাণ ১৫৬ কোটি এবং লাভের হার ১৯%।

🔹 স্থানীয় দক্ষতা উন্নয়ন ও ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ব্যবহার

🔸 ট্যুরিজম হাব-ভিত্তিক ট্রেনিং

  • দক্ষ ট্যুর গাইড, রেস্টোরেন্ট স্টাফ, হেরিটেজ কিউরেটর তৈরির জন্য প্রতিটি পর্যটন হাবে হসপিটালিটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা যেতে পারে।

🔸 ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর

  • পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প কে বৈশ্বিক স্তরে তুলে ধরতে একজন সংস্কৃতিসম্পন্ন মুখ যেমন সৌরভ গাঙ্গুলি, জয়া আহসান বা রিচা শর্মাকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করা যেতে পারে।

🔹 একসঙ্গে “Rebranding” ও “Reality Check”

🔸 “Reimagine Bengal” ক্যাম্পেইন

  • পর্যটনের অগ্রগতি থমকে গেছে—এমন ধারণা ভাঙতে হলে দরকার পশ্চিমবঙ্গের নতুন এক ব্র্যান্ডিং।

  • ইমোশন, ঐতিহ্য, প্রকৃতি এবং আতিথেয়তার মিশ্রণে একটি নতুন Storytelling-based ক্যাম্পেইন প্রয়োজন।

🔸 Third-party Performance Audit

  • শুধুমাত্র প্রচার নয়, বাস্তবিক অডিটের মাধ্যমে বর্তমান অবস্থা যাচাই করে, গোপন গলদ চিহ্নিত করা যেতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প যদি ভবিষ্যতের দিকে দৃঢ়ভাবে অগ্রসর হতে চায়, তবে তা হতে হবে অত্যন্ত হিসেবি, ডেটা-চালিত, প্রযুক্তিনির্ভর ও বিনিয়োগবান্ধব।
মেকআপ দিয়ে ঘাটতি ঢাকার সময় পেরিয়ে গেছে—এখন প্রয়োজন সার্জারির।

পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প আজ এক সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে—যেখানে পর্যটনের অগ্রগতি থমকে যাওয়ার পেছনে দায়ী অব্যবস্থা, বিনিয়োগের অভাব এবং নেতৃত্বহীনতা। এখন আর শুধু সম্ভাবনার গল্প নয়, প্রয়োজন বাস্তব পদক্ষেপ, প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং আন্তর্জাতিক মানের পরিকল্পনা। নতুবা পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প চিরতরে হারিয়ে যাবে এক বিস্মৃত সৌন্দর্যে।

আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো

Leave a Reply