পিএম কিষাণ সম্মান নিধি যোজনার ২০তম কিস্তি আজ প্রকাশিত হতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে বারাণসীতে। প্রায় ৯.৭ কোটি উপযুক্ত কৃষকের অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা পড়বে ২,০০০ টাকা। বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ই-কেরাইসি, জমি-আধার সংযুক্তিকরণ ও যাচাইকরণ প্রক্রিয়া। যাঁরা এই শর্ত মানেননি, তাঁদের কিস্তি স্থগিত। তবে পরবর্তী সময়ে প্রক্রিয়া পূর্ণ করলে পাওয়া যাবে বকেয়া অর্থসহ সুবিধা। ২০১৯ সালে চালু হওয়া বিশ্বের বৃহত্তম DBT প্রকল্প এই পিএম কিষাণ যোজনা, যা কৃষকের সম্মানে এক সরকারি শ্রদ্ধার্ঘ্য।

📌 STORY HIGHLIGHTS READ

🔸 আজই প্রকাশ পাচ্ছে পিএম কিষাণ যোজনার ২০তম কিস্তি
🔸 প্রতিটি কৃষকের অ্যাকাউন্টে ২,০০০ টাকা
🔸 বাধ্যতামূলক ই-কেরাইসি, আধার, ল্যান্ড সিডিং
🔸 উপযুক্ত না হলে কিস্তি স্থগিত
🔸 অফিশিয়াল ওয়েবসাইট: pmkisan.gov.in

বারাণসীর পবিত্র মাটিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের সাক্ষী দেশ। শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পিএম কিষাণ সম্মান নিধি যোজনার ২০তম কিস্তি প্রকাশ করবেন। এই যোজনার অধীনে দেশের প্রায় ৯.৭ কোটিরও বেশি কৃষক প্রত্যক্ষ আর্থিক সহায়তা পেতে চলেছেন।

কৃষকদের প্রতীক্ষার অবসান

মাটির মানুষের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যতম প্রকল্প পিএম কিষাণ সম্মান নিধি। আজ তারই ২০তম কিস্তি মুক্তি পেতে চলেছে। প্রত্যেক উপযুক্ত কৃষক তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২,০০০ টাকা করে পাবেন। এটি শুধুই একটি আর্থিক সহায়তা নয়, বরং কৃষকসমাজের জন্য এক সম্মানজনক স্বীকৃতি—এই বার্তাই পৌঁছে দিতে চায় কেন্দ্র।

মোদীর ভাষ্যে ‘কৃষক-সম্মান’

প্রধানমন্ত্রী মোদী বিভিন্ন সময়েই কৃষকদের ‘দেশের মেরুদণ্ড’ বলে উল্লেখ করেছেন। এবারের অনুষ্ঠানেও বারবার উঠে এসেছে সেই কথাই। তিনি বলেন,
“দেশের অন্নদাতারা সবসময় আমাদের অগ্রাধিকার। তাঁদের স্বার্থ রক্ষা করাই আমাদের কর্তব্য। পিএম কিষাণ প্রকল্প সেই উদ্দেশ্যেই গড়ে উঠেছে।”

কিন্তু শর্ত পূরণ করাই হবে মূল চাবিকাঠি

তবে শুধু রেজিস্ট্রেশন করলেই কিস্তি পাওয়া যাবে না। কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের এক বিবৃতি অনুযায়ী,
“আধার-ভিত্তিক পেমেন্ট, জমির সঙ্গে আধার লিংকিং এবং ই-কেরাইসি সম্পূর্ণ করা বাধ্যতামূলক। যাঁরা তা করেননি, তাঁদের কিস্তি স্থগিত রাখা হয়েছে।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়,
“যখনই কোনও কৃষক এই শর্তগুলি পূর্ণ করবেন, তাঁকে বকেয়া অর্থ-সহ কিস্তি প্রদান করা হবে।”

ই-কেরাইসি করতেই হবে, নেই আর অন্য রাস্তা

পিএম কিষাণ যোজনার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে,
“ই-কেরাইসি পিএম কিষাণ রেজিস্টার্ড কৃষকদের জন্য বাধ্যতামূলক।”

এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য তিনটি পথ খোলা রয়েছে—
১. ওটিপি ভিত্তিক ই-কেরাইসি
২. বায়োমেট্রিক ই-কেরাইসি
৩. ফেসিয়াল অথেনটিকেশন

বেনিফিশিয়ারি তালিকায় নাম আছে কি না, জানবেন এভাবে

আপনার নাম সুবিধাভোগীদের তালিকায় রয়েছে কি না, তা জানতে নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করুন—
▪ ওয়েবসাইটে যান: pmkisan.gov.in
▪ ‘Know Your Status’ অপশনে ক্লিক করুন
▪ রেজিস্ট্রেশন নম্বর বা আধার নম্বর প্রবেশ করুন
▪ তালিকায় আপনার নাম রয়েছে কি না, তা যাচাই করুন
▪ নিশ্চিত করুন ই-কেরাইসি সম্পূর্ণ হয়েছে

বিশ্বের বৃহত্তম DBT স্কিম — পিএম কিষাণ

২০১৯ সালে অন্তর্বর্তী বাজেটে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ঘোষণা করেছিলেন এই প্রকল্প। এটি বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম Direct Benefit Transfer প্রকল্প হিসেবে পরিচিত।

কৃষকেরা বছরে মোট ₹৬,০০০ আর্থিক সহায়তা পান তিনটি পর্যায়ে—
▪ এপ্রিল-জুলাই
▪ আগস্ট-নভেম্বর
▪ ডিসেম্বর-মার্চ

প্রতিবারই ₹২,০০০ করে তাঁদের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।

কী কী শর্তে মিলবে এই অর্থ সহায়তা?

▪ আবেদনকারীর ভারতীয় নাগরিক হতে হবে
▪ তাঁর নিজের নামে চাষযোগ্য জমি থাকতে হবে
▪ আবেদনকারীকে ছোট বা প্রান্তিক কৃষক হতে হবে
▪ তিনি যেন মাসিক ₹১০,০০০ বা তার বেশি পেনশন না পান
▪ আবেদনকারী যেন ইনকাম ট্যাক্স না দিয়ে থাকেন
▪ তিনি যেন কোনও প্রাতিষ্ঠানিক জমির মালিক না হন

নতুন করে আবেদন করতে চাইলে কী করবেন?

▪ ওয়েবসাইটে যান: pmkisan.gov.in
▪ ‘New Farmer Registration’-এ ক্লিক করুন
▪ আধার নম্বর ও ক্যাপচা দিন
▪ প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করুন, ‘Yes’ এ ক্লিক করুন
▪ ফর্ম সাবমিট করে প্রিন্টআউট নিন

সাহায্যের প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন হেল্পলাইনে

যেকোনো রকম তথ্য জানার জন্য আপনি যোগাযোগ করতে পারেন হেল্পলাইনে—
১৫৫২৬১
০১১-২৪৩০০৬০৬

মাঠে চাষ করা কৃষকের জন্য সরকারের এই আর্থিক সহায়তা নিঃসন্দেহে একটি বড় পদক্ষেপ। তবে সেই সহায়তা পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই যারা এখনও ই-কেরাইসি বা জমির সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণ করেননি, তাঁদের দ্রুত এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। অর্থ সহায়তা যেমন সম্মানের বিষয়, তেমনই প্রযুক্তি ব্যবহারে সচেতন হওয়া আজ সময়ের দাবি।

পিএম কিষাণ সম্মান নিধি যোজনা দেশের কৃষকদের জন্য একটি নিরবিচারে আর্থিক সহায়তার প্রতীক। আজকের ২০তম কিস্তির মাধ্যমে কেন্দ্র সরকার আবারও তাদের প্রতিশ্রুতির প্রতি অটুট থেকে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিল। তবে এই সহায়তা পেতে হলে কৃষকদের নিজ দায়িত্বে সমস্ত বাধ্যতামূলক যাচাইকরণ দ্রুত সম্পন্ন করতেই হবে। সরকারি প্রকল্পের সুফল পেতে প্রযুক্তি ও নিয়মের প্রতি যত্নবান হওয়াই আজ সময়ের দাবি। সরল সহায়তার মাঝে লুকিয়ে আছে এক গভীর দায়িত্ববোধ—যা কৃষক ও রাষ্ট্র, উভয়েরই উন্নয়নের সেতুবন্ধন।

আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো

Leave a Reply