রাতটি শুধুই পুরস্কারের ছিল না, ছিল ফ্যাশনেরও! লাল গালিচায় নেমেছিল রঙ, আভিজাত্য আর ব্যক্তিত্বের এক বিপুল উৎসব। কেউ নজর কাড়লেন অপূর্ব শৈলীতে, কেউ হারিয়ে গেলেন ভুলের গভীরে। কিন্তু কার পোশাক সত্যিই জাদু ছড়ালো, আর কারটি পরিণত হলো হাস্যরসের খোরাকে? জানতে হলে পড়ুন পুরোটা!
হলিউডের দিগন্তজোড়া আসর, যেখানে জৌলুস আর সৃজনশীলতার অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটে। অস্কারের রক্তিম মসৃণ পথ বেয়ে তারকারা এসে দাঁড়ান, যেনো তারা কোনো মহাজাগতিক সমারোহের দূত। কিছু মুখ উজ্জ্বল হয় অভিজাত শোভায়, কিছু হারিয়ে যায় অতিরঞ্জিত অলংকারের ভারে। পোশাক এখানে শুধু বস্ত্র নয়, বরং একেকটি ভাষা—যে ভাষায় ব্যক্ত হয় কারও রুচি, কারও অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস, আবার কারও অনবধানতা। ২০২৫ সালের অস্কারও ব্যতিক্রম নয়। কারো পোশাক ইতিহাসে জায়গা করে নিলো, কারোটা পরিণত হলো ফ্যাশন-ভ্রান্তির প্রতিচ্ছবিতে। এ যেন এক সুরেলা অথচ রহস্যময় আখ্যান, যেখানে পোশাকই বলে দেয় তারকার গল্প।
সূচিপত্র
Toggleযারা বাজিমাত করলেন
ফ্যাশন শুধু শরীর ঢাকার উপকরণ নয়, বরং এটি ব্যক্তিত্বের এক নিঃশব্দ ভাষা, যা বলে দেয় একজন তারকার আত্মবিশ্বাস, রুচিবোধ এবং ফ্যাশনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি। ২০২৫ সালের অস্কারের রেড কার্পেটে কিছু তারকা এমনই পোশাক বেছে নিয়েছেন, যা শুধুই পরিধেয় বস্ত্র নয়, বরং একেকটি চলমান শিল্পকর্ম।
সেলেনা গোমেজ – রালফ লরেনের মোহনীয়তা
রাতের আলোর নিচে রালফ লরেনের তৈরি হালকা গোলাপি গাউনে সেলেনা গোমেজ যেনো এক স্বপ্নময় রাজকন্যা। তার পোশাকটি ছিল অফ-শোল্ডার, কোমরে সূক্ষ্মভাবে আঁটসাঁট হয়ে নামছিল ঢেউ খেলানো ভাঁজে, যা একদিকে রাজকীয়, অন্যদিকে অতি সূক্ষ্ম নান্দনিকতার প্রতিচ্ছবি। পোশাকের সুতীব্র মিনিমালিস্ট উপস্থাপনাই ছিল তার শক্তি—কোনো অযথা অলংকার নেই, নেই অতি চাকচিক্যের চাপ। মুখে ন্যূনতম মেকআপ, ঠোঁটে নরম গোলাপি আভা, চোখে হালকা স্মোকি শেড—সব মিলিয়ে এক অনায়াস সৌন্দর্য।
তার চলার ভঙ্গিতে ছিল আত্মবিশ্বাস, ছিল এক অনন্য মহিমা, যেন পোশাক নয়, বরং তিনিই সেটিকে মহিমান্বিত করেছেন। তার হাতে ছিল হীরার সূক্ষ্ম আংটি, যা আলোয় এক স্নিগ্ধ ঝলক ছড়াচ্ছিল, এবং কানে ছোট্ট ঝুলন্ত হীরার দুল, যা পোশাকের সাথে নিখুঁতভাবে মানিয়ে গেছে। ক্যামেরার ফ্ল্যাশের নিচে সেলেনার গাউন একবারও ভারী মনে হয়নি, বরং ছিল এক অপার্থিব হালকাতা, যেন বাতাসে ভাসছে এক সৌন্দর্যের প্রতিচ্ছবি।
সিনথিয়া এরিভো – সাহসী ও শৈল্পিক অভিব্যক্তি
সিনথিয়া এরিভো কখনোই প্রচলিত ধারার অনুসারী নন। তার ফ্যাশন মানেই একটি বিবৃতি, একটি গল্প, যা চিৎকার করে বলে—”আমি এখানে, আমি আলাদা, আমি অনন্য!” এবারের অস্কারেও তিনি তার সেই স্বতন্ত্রতা বজায় রেখেছেন। লুই ভুইতঁর গভীর সবুজ ভেলভেটের গাউন, যার গলা অবধি উঁচু কলার আর প্রশস্ত বো যেন এক নাটকীয় আভিজাত্যের সুর সৃষ্টি করেছে।
পোশাকের বুনন এতটাই নিখুঁত ছিল যে সেটি কেবল একটি গাউন নয়, বরং যেন একটি স্থাপত্য। কাপড়ের ভাঁজ, বো-এর বিন্যাস, এমনকি এর হাতার কাট—সবকিছুই ভেবেচিন্তে তৈরি, যেন একটি চলমান ভাস্কর্য। তিনি কেবল তার পোশাকে সীমাবদ্ধ থাকেননি; বরং চুলের গাঁথুনি, গাঢ় গহনা, চকচকে বুটের মতো জুতার সংযোজনেও তিনি অপ্রথাগত, অপ্রতিরোধ্য।
তার লুকের সবচেয়ে চমকপ্রদ অংশ ছিল তার স্বর্ণাভ চোখের মেকআপ—সেটা যেন পোশাকের সঙ্গে মিশে গিয়েও আলাদা এক আলো ছড়াচ্ছিল। প্রতিটি ফ্রেমে তিনি ছিলেন এক চলমান চিত্রকর্ম, যেখানে ক্ল্যাসিক ফ্যাশন ও সমসাময়িক সাহসী ট্রেন্ডের এক দুর্দান্ত সংমিশ্রণ ঘটেছে।
মাইলি সাইরাস – গথিক মোহময়ী
ফ্যাশন যদি হয় বিদ্রোহ, তবে মাইলি সাইরাস হলেন তার নির্ভীক যোদ্ধা। তিনি সবসময়ই প্রচলিত নিয়ম ভাঙার সাহস দেখান, আর এবারের রেড কার্পেটেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আলেকজান্ডার ম্যাককুইনের কালো গাউনে তিনি ছিলেন যেন আধুনিক যুগের এক রহস্যময় রানী, যার চোখে দৃঢ়তা, চলনে অভিজাত বিদ্রোহ।
তার পোশাকের শিয়র লেসের বুননে ছিল সূক্ষ্ম জটিলতা, যা আলোর প্রতিফলনে সৃষ্টি করছিল ছায়ার খেলা—এক গভীরতা, এক নাটকীয় সৌন্দর্য। তার কাঁধ থেকে নেমে আসা কালো গ্লাভস এক অতিরিক্ত তীব্রতা যোগ করেছিল লুকে, যা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। চুল ছিল ঢেউ খেলানো অথচ বুনো, যেন কোনো ফ্যাশন বিধি মেনে বাঁধা হয়নি। আর ঠোঁটে ছিল গাঢ় লাল—যা তার সাহসী রূপকে পরিপূর্ণতা দিয়েছে।
অ্যান্ড্রু গারফিল্ড – রুচির নিখুঁত ছোঁয়া
রেড কার্পেট মানেই কি শুধুই গ্লিটারিং গাউন? মোটেই নয়! অ্যান্ড্রু গারফিল্ড দেখিয়ে দিলেন, কীভাবে একটি নিখুঁতভাবে তৈরি স্যুটও হয়ে উঠতে পারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তার পরনে ছিল গুচির মনোক্রোম ব্রাউন স্যুট, যার নিখুঁত ফিট আর সূক্ষ্ম সাটিনের শার্ট এক অভিজাত আধুনিকতার প্রতিনিধিত্ব করছিল।
তার লুকের সবচেয়ে নজরকাড়া অংশ ছিল তার সোনালি অ্যাকসেসরিজ—একটি মৃদু চকচকে ঘড়ি, একটি হালকা ব্রোচ এবং পাতলা রিমের সানগ্লাস। তার উপস্থিতিতে ছিল এক স্বতঃস্ফূর্ত আত্মবিশ্বাস, যা কাপড়ের সৌন্দর্যকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
এটি শুধুই একটি পোশাক ছিল না, এটি ছিল একটি বার্তা—শৈলী মানে শুধুমাত্র বাহ্যিক চাকচিক্য নয়, এটি এক সুসংগঠিত ব্যক্তিত্বের ছাপ, যা কোনো অতিরিক্ত প্রচেষ্টা ছাড়াই দর্শকদের মুগ্ধ করতে পারে।
যারা ফ্যাশনের খেলায় হেরে গেলেন
ফ্যাশন এমন এক শিল্প যেখানে সামান্যতম অসামঞ্জস্যতাও বদলে দিতে পারে পুরো অভিব্যক্তি। একদিকে যেমন নিখুঁত রঙের সমন্বয়, সঠিক কাট আর উপযুক্ত স্টাইল ব্যক্তিত্বকে করে তোলে অনবদ্য, তেমনই সামান্যতম ভুলচুক নিমেষেই পরিণত হতে পারে কটাক্ষের উপকরণে। অস্কারের উজ্জ্বল আলোর নিচে, ক্যামেরার ঝলকানির মাঝে, কিছু তারকার পোশাক অনায়াসে জয় করে নিয়েছে ফ্যাশনের মঞ্চ, আবার কেউ কেউ বেছে নিয়েছেন এমন পরিধান, যা দেখে বিস্ময় আর হতাশা একসঙ্গে এসে ধরা দেয়। তাদের ফ্যাশন যেন এক অসম্পূর্ণ সুর, যার মোহময়তা হারিয়ে গেছে ভুলের ঘূর্ণিপাকে।
জো সালদানা – বিভ্রান্তির রঙে আচ্ছন্ন
জো সালদানা, যিনি সাধারণত ফ্যাশনের সূক্ষ্মতায় মুগ্ধতা ছড়ান, এবার যেন আটকে গেলেন এক চরম কনফিউশনের জালে। মেরুন রঙের লেইসি গাউন, যা দেখতে ভারী এবং একাধিক স্তরে সাজানো, তার শারীরিক গঠনের সাথে ঠিক মানিয়ে যায়নি। পোশাকটি যেন একসঙ্গে অনেক কিছু হতে চেয়েছে—একদিকে লেসের সূক্ষ্মতা, অন্যদিকে উজ্জ্বল কাপড়ের জমকালো উপস্থিতি, কিন্তু শেষমেশ সবকিছুই একসঙ্গে মিশে গিয়ে তৈরি করেছে এক ক্লান্তিকর ভার।
এই পোশাকের স্কার্ট অংশ এতটাই স্তরযুক্ত ছিল যে সেটি দেখতে কেকের স্তরের মতো লাগছিল, এবং তার ওপর থাকা অতিরিক্ত লেস ও ওভার-এম্বেলিশড ডিজাইন সেটিকে আরও অগোছালো করে তুলেছিল। এ যেন এমন এক পোশাক, যা নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে গিয়ে নিজেই পথ হারিয়ে ফেলেছে। গাউনটির হাতা ছিল লম্বা, ক্লাসিক গ্লাভসের মতো, কিন্তু সেটিও যুক্ত করেছিল অপ্রয়োজনীয় ভার, যা তার পুরো লুককে আরও জটিল করে তুলেছিল। ফ্যাশন কখনো কখনো কম পরিশ্রমেই মোহ সৃষ্টি করতে পারে, কিন্তু এখানে যেন বিপরীতটাই ঘটেছে—অতিরিক্ততা পুরো সৌন্দর্যকেই নিঃশেষ করে দিয়েছে।
এমা স্টোন – নিরাপদে থেকেও হারিয়ে যাওয়া
ফ্যাশনে দুঃসাহস আর পরীক্ষা-নিরীক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু এমা স্টোন, যিনি সাধারণত তার সাহসী ও নতুন কিছু করার মনোভাবের জন্য পরিচিত, এবার যেন অত্যন্ত ‘নিরাপদ’ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—এবং সেটাই হয়েছে তার সবচেয়ে বড় ভুল। তিনি পরিধান করেছিলেন লুই ভুইতঁর একটি সিলভার গাউন, যা দেখতে খারাপ ছিল না, কিন্তু অস্কারের মতো উচ্চমানের অনুষ্ঠানে তা একেবারে সাদামাটা আর নির্ভরযোগ্য চয়েস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গাউনের ফ্যাব্রিক ছিল উজ্জ্বল ধাতব আভাযুক্ত, তবে সেটির কাট আর ফিটিং ছিল এতটাই সাধারণ যে সেটি কোনো নাটকীয়তা সৃষ্টি করতে পারেনি। নেকলাইন নিঃসন্দেহে মার্জিত, কিন্তু সেটি একঘেয়ে—কোনো ব্যতিক্রম নেই, কোনো শৈল্পিক সূক্ষ্মতা নেই, কেবলমাত্র ‘শৃঙ্খলাবদ্ধ সৌন্দর্য’, যা ফ্যাশনের সবচেয়ে বড় শত্রু হতে পারে।
তার চুলের সাজও ছিল অতি সাধারণ, যা পোশাকের শুষ্কতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ফ্যাশনে যখন সবাই নিজেদের চিহ্ন রেখে যেতে চায়, সেখানে এমন একটি পোশাক বেছে নেওয়া, যা মুহূর্তের মধ্যে বিস্মৃত হয়ে যায়, সেটিই আসলে সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।
টিমোথি চালামেট – অসম্পূর্ণ বিদ্রোহের চিত্র
টিমোথি চালামেট, যার ফ্যাশন বরাবরই একধরনের দুঃসাহসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার খেলা, এবার যেন সেই খেলায় নিজেই পরাজিত হলেন। তিনি পরেছিলেন গিভেঞ্চির ডিজাইন করা একটি হলুদ স্যুট, যার সঙ্গে ছিল সাটিনের শার্ট ও জিন্স-স্টাইল প্যান্ট—সবমিলিয়ে এক বিদ্রোহী ফ্যাশনের প্রচেষ্টা। তবে দুঃখজনকভাবে, এই বিদ্রোহের ছন্দপতন ঘটেছে অসামঞ্জস্যতার জটিলতায়।
হলুদ রঙ, যা যথাযথ স্টাইলিংয়ের মাধ্যমে হয়ে উঠতে পারত শক্তিশালী ও আকর্ষণীয়, সেটি এখানে কেবলই একটি বিশৃঙ্খলার জন্ম দিয়েছে। ক্রপড ব্লেজারটি তার শরীরের অনুপাতে অসম্ভব ছোট দেখাচ্ছিল, আর জিন্স-স্টাইল প্যান্টটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল যে সেটি স্যুটের সাথে মিশতে পারেনি। ফলে এই পোশাকটি একইসঙ্গে ফর্মাল এবং ক্যাজুয়ালের মাঝামাঝি অবস্থান নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত এক চরিত্রে পরিণত হয়েছে, যার নির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য নেই।
চুলের সাজ এবং অ্যাকসেসরিজেও কোনো সমন্বয় ছিল না—যেন কোনো নির্দিষ্ট গল্প নেই, কেবলমাত্র এক অনিশ্চিত পরীক্ষার ফলাফল, যা শেষপর্যন্ত ব্যর্থতাই ডেকে এনেছে।
আরিয়ানা গ্রান্ডে – গলিত সৌন্দর্যের বিভ্রান্তি
আরিয়ানার স্কিয়াপারেলি গাউন প্রথম দেখায় এক অনন্য মহিমা বহন করছিল। গোলাপি রঙের ঢেউ খেলানো ভাঁজ, দৃষ্টিনন্দন বুনন এবং সূক্ষ্ম জৌলুস। কিন্তু একটু ভালো করে দেখলেই বোঝা যায়, এটি যেন একপ্রকার কস্টিউমি ওভারলোড, যা অস্কারের মতো জমকালো রাতের জন্য হয়তো একটু বেশিই অতিরঞ্জিত।
গাউনের বিশাল ভাঁজ তার শরীরকে ঢেকে ফেলেছে এমনভাবে, যা পোশাকের সঙ্গে তাকে মিশিয়ে দিয়েছে, অথচ তাকে আলাদা করে কোনো শক্তিশালী চরিত্র দান করতে পারেনি। এটি যেন সেইসব পোশাক, যা শিল্পমাধ্যমের জন্য তৈরি, কিন্তু বাস্তব জীবনের গ্ল্যামার মঞ্চের সঙ্গে পুরোপুরি খাপ খায় না। আর সেই কারণেই, এত দৃষ্টিনন্দন হয়েও, এটি পরিণত হয়েছে এক ‘গলিত আইসক্রিম’-এর প্রতিচ্ছবিতে—অবয়ব আছে, সৌন্দর্য আছে, কিন্তু কাঠামোর অভাব রয়েছে।
শেষের সুর—ফ্যাশনের মঞ্চে কারা রইলেন অমর, কারা হারিয়ে গেলেন বিস্মৃতির অতলে?
রাতের আকাশ যেমন তারাদের মিলনস্থল, তেমনই অস্কারের লাল গালিচা হয়ে ওঠে ফ্যাশনের অনির্বচনীয় নাট্যমঞ্চ। সেখানে পোশাক কেবল বস্ত্র নয়, বরং এক-একটি ভাষা, যার প্রতিটি ভাঁজ, প্রতিটি রঙ, প্রতিটি সেলাই এক গল্প বলে। কিছু গল্প হয়ে ওঠে অনন্তকালের জন্য স্মরণীয়—যেমন এক মোহময়ী রংধনু, যা দেখলেই হৃদয়ে উজ্জ্বলতা জাগে। আবার কিছু গল্প হারিয়ে যায়, কুয়াশার আড়ালে ঢাকা পড়ে যায় এক অসম্পূর্ণতার ভারে, যাকে আর কখনো ফিরে দেখার ইচ্ছাও জাগে না।
এই সন্ধ্যায় কেউ ছিলেন নক্ষত্রের মতো উজ্জ্বল, যাদের পোশাক কেবলমাত্র ফ্যাশনের সংজ্ঞাই বদলে দেয়নি, বরং তাদের ব্যক্তিত্বের এক অলিখিত দ্যোতক হয়ে উঠেছে। তারা জানতেন, শৈল্পিকতা মানে শুধু বাহ্যিক চাকচিক্য নয়, বরং আত্মপ্রকাশের এক নিখুঁত রূপ। তাদের পোশাকের প্রতিটি রেখা ছিল এক সুপরিকল্পিত শিল্পকর্মের মতো—যেখানে শৈল্পিক বুনন আর রুচির সংমিশ্রণে সৃষ্টি হয়েছে এক অনবদ্য সৌন্দর্য।
অন্যদিকে, কিছু তারকা যেন পথ হারিয়ে ফেললেন নিজেদেরই নির্ধারিত গন্তব্যের মাঝে। অতিরিক্ত অলংকার, ভুল রঙের সমন্বয়, কিংবা ফিটিংয়ের সামান্য ভুল—এমন ছোট ছোট অসঙ্গতিগুলোই তাদের রূপকে ম্লান করে দিলো। কেউ হারিয়ে গেলেন অতিরঞ্জিত কল্পনার ফাঁদে, কেউবা অতি-সাদামাটা সাজের গ্লানিতে। ফ্যাশনের খেলায় কোথাও যেন তারা ভুল চাল চাললেন, যার ফলে রাতের আলোয় তারা আর উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারলেন না।
ফ্যাশনের ইতিহাসে এই অস্কার রাত এক অধ্যায়ের মতো থেকে যাবে—কেউ স্মরণীয় হয়ে থাকবেন এক আদর্শ শিল্পসত্তা হয়ে, আবার কেউ পরিণত হবেন ভুল সিদ্ধান্তের এক শিক্ষামূলক প্রতিচ্ছবিতে। তবে শেষপর্যন্ত, ফ্যাশন হলো এক আত্ম-অনুসন্ধানের যাত্রা, যেখানে সবচেয়ে বড় জয় হয় তখনই, যখন পোশাক আর ব্যক্তিত্ব একসূত্রে গাঁথা পড়ে যায়।
এই রাত্রির প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি ঝলকানি, প্রতিটি ভুল এবং সাফল্য—সবটাই আগামী দিনের ফ্যাশনচর্চার জন্য এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। কেউ ফ্যাশনের মহাকাশে নক্ষত্র হয়ে জ্বলবেন, আবার কেউ সময়ের অতলে হারিয়ে যাবেন ধুলো হয়ে। কিন্তু গল্প শেষ হয় না, কারণ ফ্যাশন তো চলমান এক প্রবাহ, যেখানে পরবর্তী অস্কারের রাত আবার নতুন রঙ, নতুন রূপ আর নতুন বিস্ময়ের জন্ম দেবে!
আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো