প্রধানমন্ত্রী Narendra Modi-র সাম্প্রতিক জাপান সফর আবারও প্রমাণ করল যে দুই দেশের বন্ধন শুধু কূটনৈতিক নয়, তা কৌশলগত ও ভবিষ্যতগামী। সফরের প্রথম দিন থেকেই তিনি স্পষ্ট করে দেন যে ভারত–জাপান অংশীদারিত্ব শুধুমাত্র আজকের জন্য নয়, এটি “দশকব্যাপী অংশীদারিত্ব” তৈরি করার উদ্দেশ্য নিয়েই এগোচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমাদের সম্পর্ক সংস্কৃতি ও কয়েক দশকের সহযোগিতার ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে আছে। Maruti Suzuki-এর মতো কোম্পানিগুলি Make in India-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর।” এই মন্তব্যের মধ্যেই উঠে এসেছে ভারত–জাপান অর্থনৈতিক সহযোগিতার শক্ত ভিত।
সূচিপত্র
Toggle📌 Story Highlights (Read Box)
Narendra Modi-র জাপান সফর দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিল
হানসালপুরে Maruti Suzuki Made-in-India Battery Electric Vehicle উৎপাদন লাইন উদ্বোধন
Special Strategic and Global Partnership কৌশলগত রূপ পেল
৫টি লিডার-লেভেল ডকুমেন্ট এবং ১৮০+ MoC স্বাক্ষর
Shinkansen Bullet Train Project ও সেমিকন্ডাক্টর খাতে যৌথ উদ্যোগ
৫টি মূল ক্ষেত্র : Economic Security, MSME, Defence, People-to-People Exchange, Multilateral Cooperation
Make in India-র বার্তা
সফরের কয়েকদিন আগে গুজরাটের হানসালপুরে Narendra Modi Maruti Suzuki-র প্রথম ‘Made-in-India’ গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিক ব্যাটারি ইলেকট্রিক ভেহিকল উৎপাদন লাইন উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, “Make in India-এর এই সাফল্য আমাদের ‘Viksit Bharat 2047’-এর ভিতকে শক্তিশালী করছে।” এই বার্তায় স্পষ্ট হয় যে ভারত শুধু পণ্য উৎপাদনে নয়, বিশ্বব্যাপী মানদণ্ড স্থাপনে এগিয়ে যাচ্ছে।
কৌশলগত সম্পর্কের বিস্তার
বর্তমান ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে India–Japan অংশীদারিত্বকে অপরিহার্য বলে বর্ণনা করেন Narendra Modi। দুই দেশের “Special Strategic and Global Partnership”-কে আরও কৌশলগত আকার দেওয়া হয়। তিনি উল্লেখ করেন, “আজ এমন কোনও ক্ষেত্র নেই যেখানে ভারত–জাপান একসাথে কাজ করতে পারবে না।”
দুই দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক সহযোগিতা, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং মানুষে-মানুষে বিনিময় পর্যন্ত নানা বিষয়ে আলাপ করেন। এই সফর জাপানকে ভারতের সবচেয়ে বিশ্বস্ত কৌশলগত অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করল।
সোনালি অধ্যায়ের পথে
Narendra Modi বলেন, “এই সফর আমাদের সম্পর্কের ‘নতুন সোনালি অধ্যায়’-এর ভিত গড়ে দিল।” দুই নেতা ৫টি লিডার-লেভেল ডকুমেন্ট প্রকাশ করেন এবং ১৮০-র বেশি সমঝোতা স্মারক (MoC) স্বীকৃতি দেন। এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ সহযোগিতার রোডম্যাপ তৈরি হয় এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে কংক্রিট উদ্যোগের ঘোষণা হয়।
শিনকানসেন ও প্রযুক্তি সহযোগিতা
মিয়াগি প্রিফেকচারে সফরের সময় দুই নেতা Shinkansen-এ ভ্রমণ করেন। জাপানের প্রতীকী এই বুলেট ট্রেনকে ভারতীয় মাটিতে আনার লক্ষ্যেই প্রকল্পটি ফ্ল্যাগশিপ আকারে এগোচ্ছে। টোকিও ইলেকট্রন মিয়াগি লিমিটেড-এ তারা সেমিকন্ডাক্টর নির্মাণ ও যৌথ প্রকল্প প্রত্যক্ষ করেন। এই ঘটনাগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি ও শিল্পে ভারত–জাপান সহযোগিতার সম্ভাবনা বাড়িয়েছে।
পাঁচটি প্রধান ক্ষেত্র
১. Economic Security Initiative: সেমিকন্ডাক্টর, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, এআই ও সাপ্লাই চেইন ইত্যাদিতে সহযোগিতা দ্রুততর করতে হবে।
২. MSME: জাপানি MSME “Make in India, Make for the World” এগিয়ে নিতে মূল চালিকা শক্তি। ১০ ট্রিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৬৮ বিলিয়ন ডলার) বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে জাপান প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
৩. Defence Equipment: ১৭ বছর পর “Joint Declaration on Security Cooperation” সংশোধিত হয়েছে। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি হস্তান্তরে সহযোগিতা বাড়বে এবং UNICORN-পরবর্তী প্রকল্প তৈরি হবে।
৪. People-to-People Exchange: “Japan–India Human Resource Exchange Initiative” ঘোষণা হয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে পরিপূরক মানবসম্পদ বিনিময় ও বিকাশে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
৫. Multilateral and Minilateral Cooperation: ইন্দো–প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি, স্থিতি ও সমৃদ্ধি আনতে Quad Summit এবং G20, জাতিসংঘ, গ্লোবাল কাউন্টার টেররিজমের মতো বহুপাক্ষিক ফোরামে একসাথে কাজ করবে জাপান ও ভারত।
ভবিষ্যতের দিশা
২০২৭ সালে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫তম বর্ষপূর্তির দিকে এগোতে গিয়ে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর “Japan Month” হিসেবে পালিত হচ্ছে। এই বছর “Japan–India Science, Technology, and Innovation Exchange Year”ও। এসব উদ্যোগ দুই দেশের জনগণকে আরও কাছাকাছি আনছে এবং কৌশলগত অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করছে।
Narendra Modi-র ভাষায়, “এই সহযোগিতা শুধু ভারত ও জাপানকেই নয়, ইন্দো–প্যাসিফিক ও বিশ্বকেও নতুন ভবিষ্যতের পথে নিয়ে যাবে।”
ভারত–জাপান সম্পর্কের এই নতুন অধ্যায় শুধু কূটনৈতিক নয়, কৌশলগতও। প্রধানমন্ত্রী Narendra Modi-র জাপান সফর প্রমাণ করেছে যে দুই দেশ ভবিষ্যতের জন্য একসাথে এগোতে প্রস্তুত। হানসালপুরে Maruti Suzuki-র প্রথম ‘Made-in-India’ ব্যাটারি ইলেকট্রিক ভেহিকল উৎপাদন লাইন উদ্বোধন থেকে শুরু করে Shinkansen Bullet Train Project, সেমিকন্ডাক্টর ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা—সব ক্ষেত্রেই Make in India-এর বার্তা স্পষ্ট। এই অংশীদারিত্ব শুধু ভারতের অর্থনীতিকে নয়, ইন্দো–প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি, স্থিতি ও সমৃদ্ধিকেও শক্তিশালী করবে। Narendra Modi-র ভাষায়, এটি সত্যিই “নতুন সোনালি অধ্যায়”, যা Make in India-কে বৈশ্বিক মানচিত্রে আরও উজ্জ্বল করে তুলবে।