তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসা সরকারের প্রথম ১০০ দিন—“মোদি ৩.০” শুরুতে অনেক প্রত্যাশা ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই সময়ে কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তবে পাশাপাশি নানা জটিলতা ও প্রশ্নও উঠে এসেছে। অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং নিরাপত্তা খাতে সরকারের কাজ কেমন, তা নিয়ে নানা মতভেদ তৈরি হয়েছে। “মোদি ৩.০” এবং “মোদীর ১০০ দিন” নিয়ে এই প্রতিবেদন পড়লে বোঝা যাবে সামগ্রিক অবস্থা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে।
মোদীর ১০০ দিনে রাস্তাঘাট ও সেতু নির্মাণ: ঘোষণার অন্তরালে গতি ও বাস্তবতা
অনুমোদনের পরিসংখ্যান
৬২,৫০০ কিমি সড়ক ও সেতু নির্মাণে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে মোদি ৩.০ সরকারের পরিকাঠামো উন্নয়নের অংশ হিসেবে।
প্রকল্পের মোট সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ₹১.৬৩ লক্ষ কোটি টাকা, যার মধ্যে মাত্র ₹৩৪,৭০০ কোটি ইতিমধ্যেই বরাদ্দ।
গ্রামের সংযোগ পরিকল্পনা
২৫,০০০ গ্রামকে সংযুক্ত করার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু গ্রামগুলোর নাম বা অবস্থান প্রকাশ করা হয়নি।
গ্রামীণ সংযোগ প্রকল্পের আওতায় এই বরাদ্দ ₹৪৯,০০০ কোটি হলেও, এ পর্যন্ত বাস্তবায়িত প্রকল্প সংখ্যা মাত্র ১১%।
বাস্তবায়নের গতির তথ্য
মোদীর ১০০ দিনে রাস্তাঘাট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে মাত্র ৬,০০০ কিমিতে।
সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন গড়ে ২৪.৫ কিমি রাস্তা নির্মাণ হয়েছে—যা আগের মোদি ২.০-র গড়ের চেয়ে কম।
পুরনো প্রকল্পে পুনঃঘোষণা?
প্রকল্পের প্রায় ৩৭% আগেই অনুমোদিত ছিল, মোদি ৩.০ সরকারের পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে পুনরায় ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের জাঙ্গিপুর-মালদা ও বিহারের মুঙ্গের-বক্সার রুটের কথা পূর্ববর্তী বাজেটে উল্লেখ ছিল।
মোদীর ১০০ দিনে রেলপথ সম্প্রসারণ: অনুমোদন বনাম নির্মাণ
৮টি নতুন রেল প্রকল্প
মোদীর ১০০ দিনে রেল প্রকল্পের মধ্যে ৮টি নতুন রুটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৪টি পূর্বাঞ্চলভিত্তিক।
তবে নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে মাত্র ২টি রুটে (উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর-বালিয়া ও ওড়িশার খোরদা-বালান্দা)।
কর্মসংস্থানের পরিসংখ্যান
বলা হয়েছে এই প্রকল্পগুলি ৪.৪২ কোটি কর্মদিবস সৃষ্টি করবে।
বাস্তবে রেল বোর্ডের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, এ পর্যন্ত ১.৭৫ লক্ষ অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ হয়েছে, যা ৩% এরও কম।
ভূমি অধিগ্রহণের বাধা
বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে বেশ কিছু প্রকল্প ভূমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় আটকে আছে।
ফলে মোদীর ১০০ দিনে রেল প্রকল্পগুলির বাস্তব গতি স্পষ্টভাবে প্রশ্নবিদ্ধ।
মোদীর ১০০ দিনে বিমানবন্দর উন্নয়ন: ঘোষণার ধাঁচে ‘ট্রান্সপোর্ট পলিটিক্স’?
বাগডোগরা ও বিহতা সিভিল এনক্লেভ
বাগডোগরায় সিভিল এনক্লেভ সম্প্রসারণের জন্য ১৫০ একর জমি প্রয়োজন, যার মাত্র ৩৮% এখনো অধিগৃহীত।
বিহতার নতুন বিমানবন্দর প্রকল্প মূলত পুনঃঘোষিত — এই প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর ২০১৯-এই স্থাপিত হয়েছিল।
লাক্ষাদ্বীপের আগাত্তি ও মিনিকয় এয়ারস্ট্রিপ
আগাত্তি ও মিনিকয়-তে এয়ারস্ট্রিপ উন্নয়নের জন্য ₹৩৯৫ কোটি বরাদ্দ, তবে নৌ-বাহিনীর অনুমোদন এখনো অনির্দিষ্ট।
মোদীর ১০০ দিনে বিমানবন্দর উন্নয়নের এই ঘোষণাগুলিকে সংশ্লিষ্ট রাজ্য প্রশাসন ‘সাময়িক অনুমোদন’ বলেই চিহ্নিত করেছে।
বাস্তব উন্নয়ন বনাম রাজনৈতিক বার্তা
মোদি ৩.০ সরকারের পরিকাঠামো উন্নয়নের এই পরিকল্পনাগুলি মূলত নির্বাচনী কেন্দ্রিক রাজ্যগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে (উদাহরণ: বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ)।
উত্তর-পূর্ব ভারতে, যেখানে অবকাঠামোর জরুরি প্রয়োজন ছিল, সেখানে এই মোদীর ১০০ দিনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটেনি।
🌾 কৃষক কল্যাণে মোদীর ১০০ দিন: মোদি ৩.০ সরকারের পরিকাঠামো উদ্যোগে আর্থিক সাহায্য ও এমএসপি বৃদ্ধির বাস্তবতা
আর্থিক সহায়তা: কাগজের পরিসংখ্যান বনাম মাঠের চিত্র
প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি: বিতরণের অঙ্ক
মোদীর ১০০ দিনে কৃষি সহায়তা প্রকল্পে ১৭তম কিস্তিতে ₹২০,০০০ কোটি বিতরণ করা হয়েছে।
সরকারী তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ₹৩ লক্ষ কোটি টাকা ১২.৩৩ কোটি কৃষক পরিবারের অ্যাকাউন্টে পৌঁছেছে।
প্রকৃত বিতরণের অনুপাত
রিপোর্ট অনুযায়ী, মে ২০২৫ পর্যন্ত ৩.৮৭ কোটি কৃষক অ্যাকাউন্টে কিস্তি জমা হয়নি, প্রধানত e-KYC ভেরিফিকেশন অসম্পূর্ণ থাকায়।
রাজস্থান, বিহার ও ওড়িশার কিছু অঞ্চলে বিলম্বিত বা ভুল অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
PM-KISAN-এর আওতায় সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র, যেখানে কৃষকদের ৮০% আবেদনগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
পেন-লিংক ও KYC বাধা
মোদীর ১০০ দিনে কৃষি সহায়তার অর্থ পৌঁছাতে পেন-আধার সংযোগ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এতে প্রায় ২.৪ কোটি কৃষক এখনো পরিষেবা থেকে বাদ পড়েছেন, বিশেষত যাঁদের আধার কার্ডে ভুল তথ্য ছিল।
eKYC ব্যর্থতার ফলে অসম, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় কৃষকরা তুলনামূলকভাবে কম কিস্তি পেয়েছেন।
📈 ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (MSP) বৃদ্ধি: পরিসংখ্যানে লভ্যাংশ, বাস্তবে সীমাবদ্ধতা
খরিফ ২০২৪-২৫ মৌসুমে MSP ঘোষণা
মোদীর ১০০ দিনে MSP বৃদ্ধি হয়েছে গড়ে ৬%-৮%, বিশেষত ধান, মুগডাল, অড়হর, সূর্যমুখী ও তুলো চাষে।
কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের মতে, এতে ১২ কোটি কৃষক ₹২ লক্ষ কোটি টাকার সরাসরি উপকার পেয়েছেন।
MSP ঘোষণার সীমিত ফলপ্রসুতা
মাত্র ২৩টি ফসলের জন্য MSP ঘোষণা করা হয়, যার মধ্যে অধিকাংশই রাজ্য সরকার দ্বারা সরাসরি ক্রয় হয় না।
eNAM মার্কেট প্ল্যাটফর্মে ৩৭% MSP হারের নিচে বিক্রি হয়েছে জুলাই ২০২৫-এর মধ্যে।
মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড় ছাড়া অন্য অধিকাংশ রাজ্যে MSP-তে সরকারি ক্রয় কম হয়েছে।
MSP বনাম খরচ মূল্য
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান MSP হার C2 খরচ ভিত্তিক নয় (C2 = জমি ভাড়া, শ্রম, বীজ, সেচ, যন্ত্রপাতি)।
ধান উৎপাদনে প্রতি কুইন্টাল খরচ ₹২,০১০ হলেও MSP নির্ধারিত ₹২,১৮৩—লভ্যাংশ মাত্র ₹১৭৩, যা পরিবহন ও বাজার ফি কেটে নেতিবাচকও হতে পারে।
📊 রাজ্যভিত্তিক অগ্রগতির ফারাক
উল্লিখিত রাজ্য যেখানে বেশি উপকৃত
উত্তরপ্রদেশে ১.৭২ কোটি কৃষক PM-KISAN কিস্তি পেয়েছেন, যদিও ৪০ লক্ষ আবেদন এখনো প্রক্রিয়াধীন।
মধ্যপ্রদেশে MSP-তে সবচেয়ে বেশি সরাসরি ক্রয় হয়েছে, মূলত “ভান্ডার গ্যারান্টি স্কিম”-এর সঙ্গে সংযুক্ত থাকায়।
পিছিয়ে থাকা অঞ্চল
পশ্চিমবঙ্গে মোদীর ১০০ দিনে কৃষি সহায়তার অর্থ বিতরণ হয়েছে মাত্র ১৭.৬ লক্ষ কৃষকের মধ্যে, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২.৭ লক্ষ।
কেরালা ও তামিলনাড়ুতে কৃষি জমির মালিকানা সমস্যার কারণে বহু কৃষক আবেদনপত্র ফেরত পেয়েছেন।
⚠️ গোপন তথ্য ও কিছু অপ্রচলিত দিক
কৃষক নন এমন ব্যক্তিরা সুবিধা পেয়েছেন?
২০২৪ সালের মার্চ মাসে CAG রিপোর্টে জানা যায়, ১.৩৭ লক্ষ সরকারি কর্মচারী এই PM-KISAN প্রকল্পের টাকা পেয়েছেন।
তথ্য অনুযায়ী, ₹৭০ কোটির বেশি অর্থ অযোগ্য গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে গিয়েছে, যার মধ্যে কিছু পেনশনভোগী, ট্যাক্সদাতা ও শহুরে বাসিন্দাও ছিলেন।
স্বচ্ছতা ও নিরীক্ষা
মোদি ৩.০ সরকারের কৃষক কল্যাণ প্রকল্পে Third-Party Audit এখনো চালু হয়নি।
কৃষি মন্ত্রকের নিজস্ব পোর্টালে Disbursement Tracker থাকলেও তা প্রতিনিয়ত আপডেট হয় না।
মধ্যবিত্তের জন্য বাজেট: মোদি ৩.০ সরকারের পদক্ষেপ | করছাড়, পেনশন ও আবাসন নীতির বিশ্লেষণ
🧾 করছাড় ব্যবস্থায় মোদীর ১০০ দিনে কী বদল এসেছে?
করছাড় স্ল্যাবের সম্প্রসারণ
মোদি ৩.০ সরকারের মধ্যবিত্ত বাজেটে আয়কর ছাড়ের সীমা ₹৩ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ₹৭ লক্ষ পর্যন্ত করা হয়েছে।
নতুন কর ব্যবস্থা অনুসারে, ₹৭ লক্ষ পর্যন্ত বার্ষিক আয় থাকলে কোনো করযোগ্য দায় থাকছে না, তবে এটি শুধুমাত্র নিউ ট্যাক্স রেজিমে প্রযোজ্য।
স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের পরিমার্জন
মোদীর ১০০ দিনে করছাড় সুবিধায় স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন ₹৫০,০০০ থেকে ₹৭৫,০০০ করা হয়েছে, যা সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য কার্যকর।
এটি শুধুমাত্র বেতনভোগীদের উপর প্রযোজ্য, ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
লাভবান জনসংখ্যা গোষ্ঠী
অর্থ মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ৬.৭ কোটি মধ্যবিত্ত আয়করদাতা এই করছাড় সুবিধার আওতায় এসেছেন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, নতুন কর ব্যবস্থার আওতায় ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে ট্যাক্স রিটার্ন ফাইল করা ব্যক্তিদের সংখ্যা ১৮% পর্যন্ত বেড়েছে।
👥 ইউনিফাইড পেনশন স্কিম: স্থায়ী আয়ের প্রস্তাবনা
২৫ বছরের চাকরিজীবীর পেনশন কাঠামো
মোদীর ১০০ দিনে ইউনিফাইড পেনশন স্কিম চালু হয়েছে যেখানে গড় বেসিক বেতনের ৫০% মাসিক পেনশন হিসাবে ধার্য হবে।
স্কিমটি শুধু EPFO রেজিস্টার্ড চাকরিজীবীদের জন্য প্রযোজ্য, এবং বিশেষত সংগঠিত খাতের কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করে।
ফান্ডিং স্ট্রাকচার
পেনশন স্কিমে বেতনভুক্তির সময় চাকরিদাতা ও চাকরিজীবী উভয়ের অবদান প্রয়োজনীয়, যার অনুপাত ১২:১২।
সরকারি সাবসিডি নেই, তবে কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্র যেমন MSME কর্মী ও নারী কর্মীদের জন্য আংশিক ছাড় দেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের ইঙ্গিত।
সীমাবদ্ধতা ও ব্যতিক্রম
এই স্কিমে আনুষ্ঠানিক চাকরির রেকর্ড বাধ্যতামূলক, ফলে চুক্তিভিত্তিক বা অসংগঠিত শ্রমজীবীরা এর বাইরে।
পেনশনের গণনায় কেবল মূল বেতন ও মহার্ঘ ভাতা (DA) ধরা হচ্ছে, অন্যান্য ভাতা বাদ পড়ছে।
🏠 আবাসন নীতি: সংখ্যা বাড়লেও প্রশ্ন অটুট
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অগ্রগতি
মোদীর ১০০ দিনে আবাসন নীতির আওতায় ৩ কোটি নতুন বাড়ির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এগুলির মধ্যে ৭৩% বাড়ি গ্রামীণ এলাকায়, ২৭% শহরাঞ্চলে বলে গৃহ উন্নয়ন মন্ত্রকের সূত্রে জানা যায়।
নির্মাণের বাস্তব অগ্রগতি
মোট অনুমোদনের তুলনায় অবকাঠামোগত সম্পূর্ণতা ৪২% (মে ২০২৫ পর্যন্ত)।
সবচেয়ে কম নির্মাণের হার পশ্চিমবঙ্গ (২৩%), বিহার (২১%) এবং উত্তরাখণ্ডে (১৮%)।
মালিকানা বিতর্ক
“মোদীর ১০০ দিনে আবাসন নীতি” অনুযায়ী বাড়ির মালিকানা নারী সদস্যের নামে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
অনেক পরিবারে এই কারণে আবেদন বাতিল হয়েছে কারণ জমির দলিলে পুরুষ সদস্যের নাম ছিল।
ঋণ সহায়তা ও সুদের হার
আবাসন ঋণে ৬.৫% সাবসিডি দেওয়া হচ্ছে ৬ লক্ষ পর্যন্ত বার্ষিক আয়ভুক্তদের জন্য।
তবে শহরাঞ্চলে জমির অভাবে অধিকাংশ প্রকল্পে আবাসন ঋণ ছাড়পত্র ব্যাহত হয়েছে।
🔍 বিশেষ তথ্য ও ব্যতিক্রম নজরদারির প্রয়োজন
করছাড়ে একগুচ্ছ শর্ত
নতুন কর ব্যবস্থায় গেলে পুরনো কর ব্যবস্থার ৮০C, HRA, LTA, হাউস লোন ইত্যাদি ছাড় পাওয়া যায় না।
ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে বিভ্রান্তি ও দ্বিধা তৈরি হয়েছে বলে আয়কর অ্যাসোসিয়েশনের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে উল্লেখ আছে।
ইউনিফাইড পেনশনে কিছু পুরনো ইস্যু বজায়
২০১৯ সালে চালু হওয়া EPS স্কিম নিয়ে এখনো মামলা চলমান, যার কারণে অনেক পেনশন দাবিদার সিদ্ধান্তহীনতায়।
নতুন ইউনিফাইড স্কিমেও Ministry of Labour-এর নির্দিষ্ট ফর্ম্যালিটি সম্পন্ন না করলে আবেদন বাতিল হচ্ছে।
আবাসন প্রকল্পে অনিয়মের নজির
২০২৪ সালে CAG অডিট রিপোর্টে জানা যায়, ৩,৪৮৭টি বাড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে যেগুলোর নির্মাণ কাজ শুরু হলেও শেষ হয়নি।
কিছু জেলায় বাড়ির নির্মাণের পরে বিদ্যুৎ সংযোগ বা পানীয় জলের ব্যবস্থাও হয়নি বলে স্বীকার করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
তথ্যগত চিত্র (নিরপেক্ষ ও বিনা মন্তব্যে)
ক্ষেত্র | ঘোষিত পদক্ষেপ | বাস্তব পরিসংখ্যান | প্রতিবন্ধকতা |
---|---|---|---|
করছাড় | ₹৩-৭ লক্ষ পর্যন্ত ছাড় | ৬.৭ কোটি উপকারভোগী | পুরনো ছাড় বাতিল |
পেনশন | বেসিকের ৫০% | EPFO-যুক্ত কর্মীদের জন্য | অসংগঠিত খাত বাদ |
আবাসন | ৩ কোটি বাড়ি | ৪২% নির্মাণ সম্পন্ন | জমির মালিকানা সমস্যা |
স্টার্টআপ ও ব্যবসা সহজীকরণ: মোদি ৩.০ সরকারের উদ্যোগ
কর হ্রাসের বিশেষ ব্যবস্থাপত্র
অ্যাঞ্জেল ট্যাক্স বাতিলের প্রভাব
মোদি ৩.০ সরকারের স্টার্টআপ নীতির অন্তর্ভুক্তি হিসেবে ৩১% অ্যাঞ্জেল ট্যাক্স সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে।
এই কর বাতিলের ফলে উদ্যোক্তাদের জন্য প্রাথমিক বিনিয়োগ আরও আকর্ষণীয় হয়েছে।
এ ধরনের কর হ্রাস সাধারণত স্টার্টআপের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে, কারণ প্রারম্ভিক পর্যায়ে লাভ কম থাকায় করের বোঝা প্রায় নগণ্য।
বিদেশি কোম্পানির কর কমানো
বিদেশি কোম্পানিগুলোর উপর করহার ৪০% থেকে কমিয়ে ৩৫% আনা হয়েছে।
এই পদক্ষেপ বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে নেওয়া বলে রিপোর্টে উল্লেখ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই কর হ্রাসের পর থেকে মোদি ৩.০ সরকারের স্টার্টআপ নীতি প্রণোদনা পাওয়া বিদেশি বিনিয়োগ ৮% বৃদ্ধি পেয়েছে।
ঋণ ও আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি
MUDRA ঋণের সীমা দ্বিগুণকরণ
MUDRA ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ₹১০ লক্ষ থেকে ₹২০ লক্ষ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এই ঋণ সীমা বাড়ানোর ফলে মোদি ৩.০ সরকারের স্টার্টআপ সহজীকরণ নীতির আওতায় ছোট ও মাঝারি উদ্যোগগুলো মূলধন সংগ্রহে সুবিধা পেয়েছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঋণ সীমা বৃদ্ধির পরবর্তী বছরে MUDRA ঋণের আবেদন সংখ্যা ২৭% বেড়েছে।
জামানতবিহীন ঋণের জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম
MSME খাতের জন্য জামানতবিহীন ঋণ প্রদানে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম চালু হয়েছে মোদি ৩.০ সরকারের ব্যবসা সহজীকরণ নীতির অংশ হিসেবে।
স্কিমটির আওতায়, ঋণ গ্রহীতারা জামানত ছাড়াই অর্থায়নের সুযোগ পায়, যা বাণিজ্যের আরম্ভে বাধা কমায়।
অর্থ মন্ত্রকের তথ্যে জানা যায়, এই গ্যারান্টি স্কিমের আওতায় ২০২৫ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে MSME ঋণের অনুমোদন ৩৫% বেড়েছে।
ব্যবসায়িক পরিবেশে অদৃশ্য প্রভাব
নীতির কাঠামোর জটিলতা
মোদি ৩.০ সরকারের স্টার্টআপ সহজীকরণ নীতির মধ্যে করছাড় এবং ঋণ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও নীতিগত জটিলতা কিছু উদ্যোক্তাকে বিভ্রান্ত করছে।
বিভিন্ন জেলার প্রশাসনিক স্তরে আবেদন প্রক্রিয়ার পার্থক্য পাওয়া গেছে।
প্রযুক্তি ও ডিজিটালাইজেশনের প্রভাব
ব্যবসা সহজীকরণের জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের বিস্তার বাড়ানো হয়েছে, যার ফলে অনলাইনে কর ফাইলিং, ঋণের আবেদন দ্রুত সম্পন্ন হচ্ছে।
মোদি ৩.০ সরকারের স্টার্টআপ সহজীকরণ নীতির অংশ হিসেবে ‘ওয়ান-স্টপ ডিজিটাল পোর্টাল’ চালু হয়েছে, যেখানে করছাড়, ঋণ আবেদন ও লাইসেন্স গ্রহণ একত্রে করা যায়।
পরিসংখ্যান ও ফলাফল
ক্ষেত্র | পদক্ষেপ | ফলাফল | মন্তব্য |
---|---|---|---|
কর হ্রাস | অ্যাঞ্জেল ট্যাক্স বাতিল, বিদেশি কর ৩৫% | বিনিয়োগ বৃদ্ধি ৮% | কর সুবিধার প্রভাব স্পষ্ট |
ঋণ সুবিধা | MUDRA ঋণ ₹২০ লক্ষ, জামানতবিহীন ঋণ | ঋণ আবেদন ২৭% বেড়েছে | MSME খাতের সাড়া পাওয়া গেছে |
ডিজিটালাইজেশন | ওয়ান-স্টপ পোর্টাল | আবেদন প্রক্রিয়া দ্রুত | প্রশাসনিক জটিলতা কিছুটা কমেছে |
আইন ও বিচারব্যবস্থা: মোদি ৩.০ সরকারের সংস্কার
নতুন আইন প্রবর্তন: পুরনো আইন থেকে আধুনিক বিধিমালা পর্যন্ত
পুরনো আইনের পরিবর্তন
মোদি ৩.০ সরকারের প্রথম ১০০ দিনের গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল পুরনো ভারতীয় দণ্ডবিধি, নাগরিক সুরক্ষা সনদ এবং সাক্ষ্য আইনকে বাতিল করে তিনটি নতুন আইন প্রবর্তন।
এই আইনগুলোর নাম যথাক্রমে—ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (Bharatiya Nyay Sanhita), ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (Bharatiya Nagarik Suraksha Sanhita), এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইন (Bharatiya Sakshya Adhiniyam)।
মোদীর ১০০ দিন সরকারের এই পদক্ষেপকে আইনি সংস্কারের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায় বলা হচ্ছে, যেখানে ঔপনিবেশিক যুগের আইনের পরিবর্তে স্বাধীন ভারতীয় সাংবিধানিক মূল্যবোধ প্রতিফলিত হচ্ছে।
আইনের প্রভাব ও কাঠামো
নতুন আইনগুলি অপরাধ সংজ্ঞা ও বিচার প্রক্রিয়ার আধুনিকীকরণ লক্ষ্য করে গঠিত।
মোদি ৩.০ সরকারের বিচারব্যবস্থার সংস্কার পদক্ষেপ হিসেবে এই আইনগুলো তথ্যপ্রমাণের গ্রহণযোগ্যতা, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ, এবং অপরাধ প্রতিরোধে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান করবে।
আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তিনটি আইন আদালত ও তদন্ত সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে বলে প্রত্যাশা রয়েছে।
ফরেনসিক অবকাঠামো উন্নয়ন: আধুনিকায়নের নতুন ধারা
জাতীয় ফরেনসিক অবকাঠামো উন্নয়ন স্কিম (NFIES)
মোদি ৩.০ সরকারের জাতীয় ফরেনসিক অবকাঠামো উন্নয়ন স্কিমের জন্য ₹২,২৫৪ কোটি বাজেট অনুমোদিত হয়েছে, যা পাঁচ বছরের জন্য (২০২৪-২০২৯)।
এই অর্থ বরাদ্দ অপরাধ অনুসন্ধান ও বিচার ব্যবস্থার আধুনিকায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
NFIES-র আওতায় দেশের বিভিন্ন জেলা, রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে ফরেনসিক ল্যাব এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
ফরেনসিক উন্নয়নের গুরুত্ব
মোদি ৩.০ সরকারের এই উদ্যোগ অপরাধমূলক তদন্তে বৈজ্ঞানিক প্রমাণের উপর নির্ভরশীলতা বাড়াবে।
রিপোর্ট অনুসারে, বর্তমানে অনেক মামলায় ফরেনসিক প্রমাণের অভাব তদন্ত বিলম্বিত করছে, যা মোদি ৩.০ সরকারের এই প্রকল্পের মাধ্যমে নিরসন হতে পারে।
NFIES-র মাধ্যমে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত আধুনিকতার মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থার গতি বাড়ানো হবে।
চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
ফরেনসিক অবকাঠামো উন্নয়নের কাজটি মোদি ৩.০ সরকারের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ, কারণ দেশের গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকায় আধুনিক প্রযুক্তি পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজন।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই উন্নয়ন কাজের ফলে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে, যদিও বাস্তবায়নের গতি নজরদারির বিষয়।
মোদি ৩.০ সরকারের আইনি সংস্কার: প্রতিবেদন থেকে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য তথ্য
মোদি ৩.০ সরকারের প্রথম ১০০ দিনে আইন ও বিচার ব্যবস্থায় এই দুটি বড় সংস্কার অন্যতম।
National Democratic Alliance (NDA) সরকারের এই পদক্ষেপসমূহের ফলে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ও বিচার ব্যবস্থার আধুনিক রূপান্তর সূচিত হয়েছে।
দেশের বিচারব্যবস্থা ও নাগরিক সুরক্ষা ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে মোদীর ১০০ দিনের কর্মসূচিতে এই আইন প্রণয়নকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ: মোদি ৩.০ সরকারের পদক্ষেপ
স্বাস্থ্যবিমা: প্রবীণদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ
বয়স্ক নাগরিকদের বিমা সুবিধা
মোদি ৩.০ সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ৭০ বছরের ঊর্ধ্ব নাগরিকদের জন্য ₹৫ লক্ষ পর্যন্ত বিনামূল্যে স্বাস্থ্যবিমা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এই স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পটি বয়স্কদের চিকিৎসা ব্যয় কমাতে এবং স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করতে নির্দিষ্ট।
মোদি ৩.০ সরকারের স্বাস্থ্যবিমা পরিকল্পনার অধীনে এই উদ্যোগকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, কারণ প্রবীণদের মধ্যে চিকিৎসা ব্যয় অত্যন্ত উচ্চ।
স্বাস্থ্যবিমার কাঠামো ও সম্ভাব্য প্রভাব
স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পের আওতায় বয়স্ক নাগরিকরা হাসপাতালে ভর্তি ও জটিল রোগের চিকিৎসায় অর্থনৈতিক বোঝা থেকে মুক্ত হতে পারবেন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, মোদীর ১০০ দিনের কর্মসূচিতে এই স্বাস্থ্যবিমা কর্মসূচি সমাজের প্রবীণ অংশের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষ অবদান রাখতে পারে।
মোদি ৩.০ সরকারের স্বাস্থ্যবিমা কাঠামোতে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের সমন্বয় নিশ্চিত করার লক্ষণ পাওয়া যাচ্ছে।
ঔষধে শুল্ক ছাড়: ক্যান্সার ওষুধে প্রাধান্য
শুল্কমুক্ত তিনটি ক্যান্সার ওষুধ
মোদি ৩.০ সরকারের স্বাস্থ্য খাতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল তিনটি নির্দিষ্ট ক্যান্সার ওষুধে কাস্টমস ডিউটি ছাড় দেওয়া।
এই শুল্ক ছাড়ের ফলে সংশ্লিষ্ট ওষুধগুলোর আমদানি খরচ কমে আসবে, যা ক্যান্সার রোগীদের জন্য ঔষধের খরচ হ্রাসে সহায়ক হতে পারে।
মোদি ৩.০ সরকারের এই পদক্ষেপ ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
ঔষধের শুল্ক ছাড়ের পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষণ
কাস্টমস ডিউটি ছাড় পেলে ওষুধের মূল্য বাজারে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যা সাশ্রয়ী চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।
তথ্য অনুযায়ী, মোদীর ১০০ দিনের কর্মপরিধিতে স্বাস্থ্য খাতে এই ধরনের উদ্যোগগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
মোদি ৩.০ সরকারের ঔষধ শুল্ক ছাড় প্রকল্পের মাধ্যমে ক্যান্সার ওষুধে সাশ্রয়ী মূল্য প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ: মোদি ৩.০ সরকারের সামগ্রিক প্রভাব
মোদি ৩.০ সরকারের স্বাস্থ্যবিমা এবং ঔষধে শুল্ক ছাড় প্রকল্পগুলো দেশের স্বাস্থ্য খাতের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।
প্রবীণ জনগোষ্ঠী এবং ক্যান্সার রোগীদের জন্য বিশেষ এই উদ্যোগগুলো সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছে।
স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ খাতে মোদীর ১০০ দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ বলা হচ্ছে।
যুব ও নারী ক্ষমতায়ন: মোদি ৩.০ সরকারের কর্মপরিধি
যুব কর্মসংস্থান: বৃহৎ বিনিয়োগ ও লক্ষ্যমাত্রা
₹২ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজের বাস্তব চিত্র
মোদি ৩.০ সরকারের মোদীর ১০০ দিনের কর্মসূচির অন্যতম আকর্ষণ যুব কর্মসংস্থানে ₹২ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা।
এই প্যাকেজের আওতায় ১ কোটি যুবককে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরকারের উদ্দেশ্য হলো যুবসমাজকে দক্ষতা অর্জনে উৎসাহিত করে কর্মজগতে প্রবেশের সুযোগ বৃদ্ধি করা।
এই উদ্যোগ National Democratic Alliance (NDA) সরকারের যুবনীতি ও অর্থনৈতিক প্রগতির অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কর্মসংস্থানে প্রকল্পের বিস্তার
ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা পাবেন, যা চাকরির বাজারে তাদের অবস্থান দৃঢ় করবে।
বিভিন্ন শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি ও সেবা ক্ষেত্রে ইন্টার্নশিপ সুবিধা দেওয়ার পরিকল্পনা মোদি ৩.০ সরকারের তরফে প্রাধান্য পাচ্ছে।
পরিকল্পনাটির বাস্তবায়ন সরকারের অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনায় নিরীক্ষিত হচ্ছে, যা মোদীর ১০০ দিনের রিপোর্টে প্রতিফলিত।
নারী স্বনির্ভরতা: অর্থায়ন ও ঋণ সুবিধা
₹২,৫০০ কোটি টাকার কমিউনিটি ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড
মোদি ৩.০ সরকারের তরফ থেকে ৪৮ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের জন্য ₹২,৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দ করা হয়েছে।
এই তহবিল নারী উদ্যোক্তা ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোর আর্থিক ও সামাজিক ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যবহার হচ্ছে।
অর্থায়নের মাধ্যমে নারীদের বিভিন্ন ক্ষুদ্র উদ্যোগ ও ব্যবসা পরিচালনায় সহায়তা প্রদান হচ্ছে।
MUDRA ঋণের সীমা বৃদ্ধি: ₹২০ লক্ষ পর্যন্ত
মোদি ৩.০ সরকারের অধীনে MUDRA ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ₹২০ লক্ষ পর্যন্ত উন্নীত করা হয়েছে, যা পুর্বের ₹১০ লক্ষ থেকে দ্বিগুণ।
এই ঋণ সুবিধা নারীদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা সম্প্রসারণে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
MUDRA ঋণ প্রকল্পের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তারা ব্যাংক ঋণের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে নিজস্ব উদ্যোগ গড়ে তুলছেন।
যৌথ প্রভাব ও বাস্তব চিত্র
মোদি ৩.০ সরকারের যুব ও নারী ক্ষমতায়ন কর্মসূচি National Democratic Alliance (NDA) সরকারের সামাজিক উন্নয়নের মুখ্য অঙ্গ হিসেবে চিহ্নিত।
যুব কর্মসংস্থান এবং নারী স্বনির্ভরতার উদ্যোগগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখার চেষ্টা চলছে।
মোদীর ১০০ দিন সরকারী কর্মপরিধিতে এই প্রকল্পগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে, যা ভবিষ্যতে বিশ্লেষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করছে।
অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য
যুব কর্মসংস্থান প্যাকেজ ও নারী ক্ষমতায়ন তহবিলের বাস্তবায়নে স্থানীয় স্তরে মনিটরিং ও ফলাফল সংগ্রহে জোর দেওয়া হচ্ছে।
এই প্রকল্পগুলোর সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা এবং অর্থনৈতিক প্রভাব পর্যবেক্ষণের জন্য স্বাধীন সংস্থাগুলোর ভূমিকা প্রত্যাশিত।
মোদি ৩.০ সরকারের এই কর্মসূচিগুলো দেশের সামগ্রিক কর্মক্ষেত্র ও অর্থনীতিতে দৃষ্টিগোচর পরিবর্তন আনবে বলে বিভিন্ন সূত্রে ধারণা করা হচ্ছে।
সমালোচনা ও বিতর্ক: “মোদি ৩.০” সরকারের চ্যালেঞ্জ
পরিকাঠামো ও দুর্নীতি: প্রকল্প ব্যর্থতার ছায়া
৫৬টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে ব্যর্থতা
মোদি ৩.০ সরকারের পরিকাঠামো উন্নয়নের ৫৬টি প্রধান প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য ব্যর্থতা লক্ষ্য করা গেছে।
এই প্রকল্পগুলোর মধ্যে রাস্তা, সেতু, বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং জল সরবরাহের কাজ অন্তর্ভুক্ত।
প্রকল্প ব্যর্থতার ফলে সরকারের মোদীর ১০০ দিনের কর্মসূচির ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
দুর্নীতির অভিযোগও বেড়েছে, বিশেষ করে প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ও বরাদ্দের ক্ষেত্রে।
National Democratic Alliance (NDA) সরকারের এই ইস্যু সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
দুর্নীতির পরিসর
দুর্নীতির কারণে নির্মাণ কাজের গুণগত মান কমে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরকারি তহবিলের অপচয় ও অনিয়মের তথ্য বিভিন্ন মিডিয়া ও তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে।
অনিয়মের কারণে সময়সূচি ভঙ্গ ও বাজেট বৃদ্ধি ঘটছে।
নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ: সেনা হতাহতের পরিসংখ্যান
২৬টি সন্ত্রাসী হামলা
গত কয়েক মাসে মোদি ৩.০ সরকারের অধীনে ২৬টি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এই হামলায় ২১ জন সেনা নিহত হয়েছে, যা নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রশ্ন তোলে।
দেশের বিভিন্ন সীমান্ত ও অভ্যন্তরীণ এলাকায় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ বাড়ছে।
মোদি ৩.০ সরকারের নিরাপত্তা নীতির কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনায় এসেছে।
সন্ত্রাসবাদের প্রভাব
সন্ত্রাসবাদ পরিস্থিতি সামাজিক অস্থিরতা বাড়াচ্ছে।
সন্ত্রাসী হামলার ফলে নাগরিক জীবনে ভীতি ও অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
অর্থনৈতিক পারফরম্যান্স: বেকারত্ব ও বিনিয়োগে পতন
বেকারত্বের হার বৃদ্ধি
মোদি ৩.০ সরকারের সময়কালে বেকারত্বের হার বেড়েছে বলে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে।
চাকরির বাজারে প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা ও কর্মসংস্থানের ঘাটতি লক্ষ্য করা গেছে।
বিশেষ করে যুব ও নিম্ন আয়ের গোষ্ঠীতে বেকারত্বের পরিমাণ বেশি।
বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাস
বিদেশি বিনিয়োগে পতনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
বিনিয়োগ পরিবেশে অনিশ্চয়তার কারণে বিদেশী কোম্পানিগুলো পিছিয়ে পড়ছে।
আদানি সংক্রান্ত অভিযোগ ও বিতর্ক বিদেশি বিনিয়োগের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
সামাজিক অস্থিরতা: মণিপুর ও লাদাখ পরিস্থিতি
মণিপুর ও লাদাখে অস্থিরতা
মণিপুর ও লাদাখে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পরিস্থিতি জটিল হয়েছে।
মোদি ৩.০ সরকারের এসব অঞ্চলে পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সংঘর্ষ ও বিক্ষোভে সাধারণ মানুষ ভুগছে।
নারী নির্যাতন ইস্যু
নারী নির্যাতনের ঘটনার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সমালোচনা প্রবল।
মোদি ৩.০ সরকারের নিরাপত্তা ও সামাজিক নীতির কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।