পশ্চিমবঙ্গে স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতি নিয়ে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সরকারি এই স্বাস্থ্য প্রকল্পটি আর্থিকভাবে দুর্বল জনগণের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে চালু হলেও, বাস্তবে নানা অনিয়ম, তথ্য গোপন, ও পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে। স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে জবাবদিহিতার অভাব, প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং রাজনৈতিক প্রভাব প্রশ্ন তুলছে এর কার্যকারিতা নিয়ে। কার্ড থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা না পাওয়া এবং দুর্নীতির তদন্তে গাফিলতি প্রকল্পটির বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুন্ন করছে। এই প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়ে মানুষের অভিযোগ এখন আলোচনার কেন্দ্রে।

সূচিপত্র

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প: উদ্দেশ্য আর বাস্তবতা

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল এক কথায় প্রশংসনীয়—সমাজের প্রান্তিক মানুষদের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করা। কিন্তু বাস্তবতা অনেকটাই বিপরীত। স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতি আজ প্রকল্পের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। নিচে পর্যায়ক্রমে এই প্রকল্পের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হল:

 প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য

  • আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবারগুলির জন্য বছরে ₹৫ লক্ষ পর্যন্ত চিকিৎসা খরচ কভার করা।

  • নারীকেন্দ্রিক কার্ড, অর্থাৎ পরিবারের মহিলা সদস্যের নামে কার্ড ইস্যু করা।

  • দ্রুত ও বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি।

✅ এই উদ্দেশ্যগুলি শুনতে যেমন আদর্শ, বাস্তব জীবনে ততটাই অস্পষ্ট ও জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 বাস্তবতা: স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়ে মানুষের অভিযোগ

🏥 উপকারের বদলে অপমান

একজন দমদমের বাসিন্দা সুচেতনা ঘোষ, যিনি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড হাতে নিয়ে ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালে যান।
👉 হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরাসরি বলেন, “এটা আমাদের প্যানেলে নেই,” যদিও নাম সরকারিভাবে তালিকাভুক্ত।
👉 সুচেতনার বক্তব্য, “স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে দুর্নীতির তথ্য গোপন না থাকলে, আমি হয়তো সময়মতো চিকিৎসা পেতাম।”

Why Mamata's populist health care project is on the ventilator

📄 স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকার পরও চিকিৎসা না পাওয়া – কেন এমন হয়?

  • অনেক হাসপাতাল প্রক্রিয়াগত জটিলতা বা প্রকৃত অর্থে সরকার থেকে বিল না পাওয়ার ভয়ে পরিষেবা দিতে অস্বীকার করে।

  • রোগী ও তার পরিবারকে হাসপাতালের দরজায় ঘুরতে হয়—কারণ প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নেই।

  • স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতিতে প্রশাসনিক ব্যর্থতা প্রকল্পের আদর্শকে ধ্বংস করছে।

⚠️ প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির বহুমুখী রূপ

 তথ্য গোপন ও ভুয়ো বিল

  • একাধিক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, হাসপাতালে কখনো চিকিৎসা হয়নি—তবু বিল ক্লেম করা হয়েছে।

  • অনেক স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে দুর্নীতির ঘটনা সরকার নিজেও স্বীকার করেছে।

 রাজনৈতিক প্রভাব

  • সরকারি হাসপাতালগুলো যেখানে চিকিৎসা দিতে বাধ্য, সেখানে কিছু “বিশেষ সুবিধাভোগী” বেসরকারি হাসপাতাল অনুমোদন পায়।

  • স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতিতে রাজনৈতিক প্রভাব প্রকল্পের স্বচ্ছতা নষ্ট করছে।

  • প্রকল্পের অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ জবাবদিহিতার অভাব তৈরি করছে।

💬 মানুষের অভিজ্ঞতা থেকেই উঠে আসা বাস্তবতা

উদাহরণ: শিলিগুড়ির রাজেশ পাল

  • দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় রাজেশকে।

  • স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকলেও চিকিৎসা বন্ধ রেখে পরিবারের কাছ থেকে টাকা দাবি করা হয়।

  • পরে জানা যায়, হাসপাতালটি প্রকল্পে তালিকাভুক্ত নয় অথচ ‘লিস্টেড’ বলে প্রচার করা হত।
    👉 রাজেশ বলেন, “স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়ে মানুষের অভিযোগ মানে শুধু অনুযোগ নয়, বরং জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন।”

📉 স্বাস্থ্য সাথীর ব্যর্থতা: কিছু অপ্রকাশিত দিক

  • অনেক হাসপাতাল ও নার্সিংহোম এখন স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেখে পরিষেবা দিতে অস্বীকার করে—কারণ তারা বিল ক্লিয়ার পায় না।

  • সরকারি পর্যায়ে স্বাস্থ্য সাথী অনিয়ম তদন্তের দাবি উঠেছে, কিন্তু তার রিপোর্ট জনসমক্ষে আসে না।

  • প্রকল্পে স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসনের ভূমিকা এতটাই দুর্বল যে, মানুষ অভিযোগ করেও ফল পাচ্ছে না।

📌 সারসংক্ষেপে প্রকল্পের বাস্তবতা:

  • স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে কারা জবাবদিহি করছে না, সেই প্রশ্নের উত্তর আজও অজানা।

  • স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসনের ভূমিকা দুর্বল ও প্রশ্নবিদ্ধ।

  • 📉 স্বাস্থ্য খাতে জবাবদিহিতা নেই, যার ফলে প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ব্যর্থ হচ্ছে।

  • 💔 স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়ে মানুষের অভিযোগ এখন আর বিচ্ছিন্ন নয়—এটা একটা জোরালো সামাজিক বাস্তবতা।

উদ্দেশ্য ভালো ছিল, বাস্তবতা নির্মম

স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতি প্রমাণ করে, কোনো প্রকল্পের সফলতা শুধু ঘোষণার উপর নির্ভর করে না—প্রয়োজন সঠিক বাস্তবায়ন ও জবাবদিহিতা। স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়ে মানুষের অভিযোগ যত বাড়বে, প্রকল্পটি ততই তার জনসমর্থন হারাবে।

স্বাস্থ্য সাথী অনিয়মে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আসল পরিণতি সবচেয়ে ভালো বোঝা যায় সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা থেকে। যাঁদের কথা ভেবে এই প্রকল্প শুরু হয়েছিল, তাঁরাই আজ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। স্বাস্থ্য সাথী অনিয়মে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি এতটাই প্রকট যে, এখন এ নিয়ে কেবল খবরের শিরোনাম নয়—এটা একটা সামাজিক সংকট।

🎭 প্রতিশ্রুতির ফাঁকা খোলস

✅ মুখে যা বলা হয়

  • স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী বছরে ₹৫ লক্ষ পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা,

  • রাজ্যজুড়ে হাজারের বেশি হাসপাতাল এই প্রকল্পে তালিকাভুক্ত,

  • যেকোনো সরকারি ও নির্ধারিত বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে পরিষেবা দেবে।

❌ বাস্তবে যা ঘটে

  • হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে, “মেশিন খারাপ,” “অ্যাপ স্লো,” বা সরাসরি বলে “আমরা এই কার্ড নিই না।”

  • স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকার পরও চিকিৎসা না পাওয়া রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

  • রোগীকে প্রায়শই গোপনে বলা হয়, “বেড ফাঁকা নেই,” অথচ টাকা দিলে ব্যবস্থা হয়ে যায়।

🔍 বাস্তব অভিজ্ঞতা: রাজ্যের এক প্রবীণের কাহিনি

বাঁকুড়ার ৭০ বছর বয়সী সুধাংশু ঘোষ একদিন পড়ে গিয়ে কোমরের হাড় ভেঙে ফেলেন।

  • পুত্রবধূ স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে নিকটবর্তী বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান।

  • হাসপাতালের মুখে একটাই কথা: “স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে আমাদের ক্লিয়ারেন্স বন্ধ, আমরা রিস্ক নেব না।”

  • পরিবার বাধ্য হয়ে ৪০ হাজার টাকা জোগাড় করে চিকিৎসা চালায়।

👉 “স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতিতে প্রশাসনিক ব্যর্থতা না থাকলে, আমার বাবাকে হয়তো ঘরের টাকা খরচ না করেই চিকিৎসা দেওয়া যেত,” বললেন সুধাংশুর ছেলে।

Swasthya Sathi card: State to build software to stop irregularities

⚙️ কারচুপি ও সিস্টেমের গলদ

স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতির ঘটনা গোপন রাখা হয়

  • রোগীর রেকর্ড সঠিকভাবে আপলোড হয় না, অনেক সময় একাধিকবার ভুল তথ্য দেওয়া হয়।

  • অনেক হাসপাতাল স্বাস্থ্য সাথী ক্লেম করতে গিয়ে ভুয়ো বিল তৈরি করে, অথচ রোগী পরিষেবা পায় না।

স্বাস্থ্য সাথী অনিয়ম তদন্তের দাবি উঠেছে, তবু চুপ সরকার

  • তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও রিপোর্ট প্রকাশ পায় না।

  • রাজনৈতিক চাপ ও প্রভাবের কারণে প্রকৃত সত্য চাপা পড়ে যায়।

  • ফলত, স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতিতে রাজনৈতিক প্রভাব স্পষ্ট, কিন্তু কারো বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

🧾 সাধারণ মানুষের সমস্যা–একটি তালিকা

🧨 জটিল নিয়মকানুন

  • অধিকাংশ মানুষ জানেন না কীভাবে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ব্যবহার করতে হয়।

  • হাসপাতাল গাইডলাইন না মেনে, ইচ্ছেমতো রোগী ফিরিয়ে দেয়।

🔕 গোপনীয়তা ও তথ্যহীনতা

  • সরকারি পোর্টালে তালিকাভুক্ত হাসপাতালের তালিকা হালনাগাদ হয় না।

  • স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে দুর্নীতির তথ্য গোপন করে জনগণকে অন্ধকারে রাখা হয়।

🛑 পরিষেবা পেতে হয় “চেনা লোকের সাহায্য”

  • অনেকক্ষেত্রে দেখা গেছে, পরিচিত কাউকে না জানলে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা পাওয়া অসম্ভব।

  • চিকিৎসার সময় রাজনীতি ও লবির গুরুত্ব বাড়ছে, যা সম্পূর্ণ অনৈতিক।

📣 স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়ে মানুষের অভিযোগ – আর শুধু অভিযোগ নয়

  • আজ স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়ে মানুষের অভিযোগ হয়ে উঠেছে সমাজের আর্তনাদ।

  • স্বাস্থ্য সাথী অনিয়মে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি যেন একটা নিয়মে পরিণত হয়েছে।

  • রোগীর পরিবার বলছে, “এই কার্ড থাকলে বরং বিপদ বাড়ে, ভরসা কমে।”

  • স্বাস্থ্য খাতে জবাবদিহিতা নেই বলেই, কেউ এর জন্য দায় নেয় না।

 প্রকল্পে সেবা নয়, হয়রানি

স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতি, স্বাস্থ্য সাথী অনিয়ম, এবং স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে কারা জবাবদিহি করছে না—এই প্রশ্নগুলি ঘুরে ফিরে আসে প্রতিটি ভুক্তভোগীর অভিজ্ঞতায়। প্রকল্পের গৌরবময় প্রচারের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা, যেখানে জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলে মানুষের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এক অদৃশ্য লড়াই।

👉 এই ধরণের কথিত “উপকারমূলক” প্রকল্প যখন বাস্তব জীবনে অপমান আর অবহেলার প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়, তখন সত্যিই প্রশ্ন ওঠে—এই প্রকল্প কাদের জন্য?

স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসনের ভূমিকা: দায় এড়ানো নাকি চক্রান্ত?

যেখানে স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতি এবং স্বাস্থ্য সাথী অনিয়মে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দিনের আলোর মতো স্পষ্ট, সেখানে প্রশাসনের ভূমিকা যেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিরবতা। এটি শুধুই অবহেলা নয়—একটি সুপরিকল্পিত ব্যর্থতার কাহিনি, যেখানে মানুষ শুধু প্রতিশ্রুতির দাস হয়ে রয়ে যাচ্ছে।

 প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়ার নাটকীয়তা

 তদন্তের ঘোষণা: সংবাদমাধ্যমে প্রচার, বাস্তবে নিস্ক্রিয়তা

  • স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এলে হঠাৎ করে “তদন্ত কমিটি গঠন” ঘোষণা হয়।

  • কিন্তু সেই কমিটির নাম, সদস্য, কাজের অগ্রগতি বা চূড়ান্ত রিপোর্টের খোঁজ আজও অজানা।

  • প্রশাসন কৌশলে এই স্বাস্থ্য সাথী অনিয়ম তদন্তের দাবি ধামাচাপা দেয়।

🧠 দৃশ্যত, এটি একটি কৌশল—সমস্যাকে ধীরে ধীরে জনগণের মন থেকে সরিয়ে দেওয়া।

🔍 বাস্তব কাহিনি: রিপোর্ট নেই, দায় নেই

উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা রত্না ঘোষকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল।

  • স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেখানোর পর হাসপাতাল তাদের নাম ‘লিস্টে নেই’ বলে ফিরিয়ে দেয়।

  • রোগীকে পরে ওই একই হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়—কিন্তু ব্যক্তিগত খরচে।

  • এ নিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও, কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।

👉 স্থানীয় BDO অফিস জানায়: “আমাদের কিছু করার নেই, উঁচু মহলে পাঠানো হয়েছে।”
এই ধরনের দায়সারা মনোভাব স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বড় প্রশ্ন তোলে।

📉 ভ্রান্ত ব্যবস্থাপনা ও নীতি-অপব্যবহার

 তথাকথিত নিরীক্ষা ও রিভিউ মেকানিজম

  • স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে দুর্নীতি রোধে কোনও রিয়েল-টাইম মনিটরিং সিস্টেম নেই

  • প্রতিটি ক্লেমের জন্য কাগজের উপর ভিত্তি করে অনুমোদন হয়, যার মধ্যে ঘুষ ও জালিয়াতির প্রবল সম্ভাবনা থাকে।

  • হাসপাতালের একাংশ অল্প অর্থের বিনিময়ে ভুয়ো রোগী বানিয়ে বিল পাশ করায়।

🗨️ কোথাও না কোথাও “উর্ধ্বতন স্তরের নীরব সম্মতি” না থাকলে এই বিশৃঙ্খলা সম্ভব নয়।

 “নো অ্যাকাউন্টেবিলিটি” সংস্কৃতি

 কারো বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না

  • আজও স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কোনো আধিকারিককে বরখাস্ত বা শাস্তি দেওয়ার নজির নেই

  • প্রশাসন বরং সেই হাসপাতাল বা কর্পোরেট ক্লিনিকের পাশে দাঁড়ায় যারা পরিষেবা দিতে অস্বীকার করে।

  • এটি এমন এক উদাহরণ, যেখানে “জনগণের করের টাকা” শুধু অপচয় নয়—লোক দেখানো নীতির চরম অপমান।

🧨 রাজনৈতিক প্রভাব: প্রকল্প না উন্নয়নের, বরং প্রচারের হাতিয়ার

 প্রশাসনের গায়ে দলীয় রং

  • অনেকসময় দেখা গেছে, স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা দলীয় স্বার্থ রক্ষা করা ছাড়া আর কিছু নয়।

  • প্রকল্পকে একটি “ভোটবিজ্ঞান” হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, জনগণের বাস্তব চাহিদা না বুঝেই।

  • কর্মকর্তারা রাজনৈতিক নেতার নির্দেশ ছাড়া কোনো অভিযোগ নিতে চান না।

 স্বাস্থ্য সাথী অনিয়ম তদন্তের দাবি ঘিরে সুনির্দিষ্ট ব্যর্থতা

  • স্বাস্থ্যসাথী ক্লেম ফ্রড, ঘন ঘন হাসপাতাল কর্তৃক কার্ড প্রত্যাখ্যান—এই বিষয়ে RTI-এর মাধ্যমে তথ্য চাইলে উত্তর আসে না।

  • জনস্বার্থ মামলাও বারবার আটকে যায় প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রতায়।

  • কিছু রিপোর্ট বলছে, স্বাস্থ্য সাথী অনিয়মের তদন্ত করতে চাওয়া আধিকারিকদের অন্য দপ্তরে বদলি করা হয়েছে।

👉 এই পরিস্থিতি “truth management” না হলে আর কী?

 সমাধানহীন নীরবতা নাকি সচেতন কৌশল?

পরিস্থিতি স্পষ্ট করে দেয়, স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসনের ভূমিকা কেবল সীমাবদ্ধ নয়, সন্দেহজনক।

  • প্রশ্ন হচ্ছে: এই নীরবতা কী প্রশাসনিক অক্ষমতা, নাকি ইচ্ছাকৃত চক্রান্ত?

  • স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে দুর্নীতি যখন বারবার সংবাদ শিরোনাম হয়, তখন সরকারের নিরবতা আর ন্যায়ের প্রতীক হতে পারে না।

স্বেচ্ছাচার বনাম জনসেবা

স্বাস্থ্য সাথী অনিয়ম তদন্তের দাবি এখন সময়ের দাবি।

  • প্রশাসনের একাংশের অন্ধ আনুগত্য, রাজনৈতিক প্রভাব ও দায়হীন সংস্কৃতি প্রকল্পটিকে এক বিভ্রান্তিকর মডেলে পরিণত করেছে।

  • প্রকল্পের মৌলিক উদ্দেশ্য—সুলভ ও সার্বজনীন চিকিৎসা—আজ প্রশ্নবিদ্ধ।

👉 প্রশাসনের এই ভূমিকাকে প্রশ্ন না করলে শুধু স্বাস্থ্য নয়, জনগণের অধিকারই রোগগ্রস্ত হয়ে উঠবে।

Crore of poor patients get free medical benefits under Swasthya Sathi Scheme

স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতিতে রাজনৈতিক প্রভাব: গণস্বাস্থ্য না কি গোপন প্রচার কৌশল?

যখন স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতি ঘিরে প্রশ্ন উঠে, তখন এর কেন্দ্রবিন্দুতে এসে দাঁড়ায় এক বেমানান বিষয় — রাজনৈতিক প্রভাব। স্বাস্থ্যসাথীর আদলে যে জনকল্যাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, বাস্তবে তা হয়ে উঠেছে একটি দলীয় প্রচারের হাতিয়ার। স্বাস্থ্য সাথী অনিয়মে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি যেমন বাস্তব, তেমনি প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থান রাজনীতির ছায়াকেই স্পষ্ট করে তোলে।

 প্রকল্পের রাজনৈতিক প্যাকেজিং: মানুষের নয়, দলের স্বার্থে

 স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি — প্রচার না জনসেবা?

  • প্রতিটি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে সরকারি প্রতীক নয়, বরং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মুখচ্ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।

  • এটি কোনো আন্তর্জাতিক বা জাতীয় স্বাস্থ্য প্রকল্পে বিরল, যেখানে ব্যক্তিকে নয়, প্রতিষ্ঠানকে তুলে ধরা হয়।

  • কার্ডটি চিকিৎসা সেবার চেয়ে দলীয় প্রচারের উপকরণ বলেই অনেকেই মন্তব্য করেছেন।

📌 এখানে প্রশ্ন—এই কার্ড কি দরিদ্রদের চিকিৎসার চাবিকাঠি, না কি ভোটবাক্সের চাবি?

 প্রকল্প বিতরণে দলীয় পক্ষপাত: দল না করলে সুযোগ নেই?

 স্থানীয় স্তরে প্রকল্পের সুবিধা বণ্টনে একচোখা নীতি

  • একাধিক গ্রামে অভিযোগ উঠেছে, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড বিতরণে দলভিত্তিক প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

  • বিরোধী রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষদের আবেদন আটকে যাচ্ছে “নথি অসম্পূর্ণ” বা “অপ্রমাণিত” এই অজুহাতে।

  • স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যদের হাতে বিতরণ ব্যবস্থা থাকায় স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতি অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রিত রাজনৈতিক স্তর থেকে।

🗨️ জনস্বার্থে চালু হওয়া প্রকল্পে দলীয় বাধা, গণতন্ত্রের পরিহাস নয় কি?

 অভিযোগ দমনে রাজনৈতিক শাসন: গণতন্ত্র নাকি গ্যাগ অর্ডার?

 অনিয়মের অভিযোগ তুললেই “বিরোধী ষড়যন্ত্র”

  • স্বাস্থ্য সাথীর পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগ করলেই অনেক সময় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়।

  • জনস্বার্থ মামলা বা সাংবাদিক প্রতিবেদনকে “রাজনৈতিক প্ররোচনা” বলা হয় — অথচ তদন্ত হয় না।

  • স্বাস্থ্য সাথী অনিয়ম তদন্তের দাবি ঘিরে প্রশাসন এমনভাবে প্রতিক্রিয়া দেয় যেন অভিযোগই অপরাধ।

📌 এই সংস্কৃতি যদি গণতন্ত্রে স্বীকৃত হয়, তবে দুর্নীতি রোধে আর কোন রাস্তা থাকে?

 স্বাস্থ্যসাথীর পেছনে কর্পোরেট-রাজনীতি আঁতাত

 রাজনৈতিক আনুগত্যসম্পন্ন কর্পোরেট হাসপাতাল ও কমিশন পলিসি

  • একাধিক কর্পোরেট হাসপাতাল শুধুমাত্র দলীয় অনুগত এলাকা থেকে রেফার আসলেই স্বাস্থ্য সাথী কার্ড গ্রহণ করে

  • এমনকি কিছু রিপোর্টে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট জনপ্রতিনিধির রেফারেল ছাড়া কার্ড কার্যকর হয় না।

  • চিকিৎসার টাকায় কমিশন ভাগ হওয়া ও হাসপাতাল-বিধায়ক-প্রশাসনের অশুভ আঁতাত — স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে দুর্নীতি চরমে পৌঁছেছে।

🧠 এখানে প্রশ্ন—এই প্রকল্প কি জনগণের স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য, না রাজনৈতিক ক্ষমতার অর্থনীতির জন্য?

 প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ: স্বচ্ছতা কোথায়?

 নিরীক্ষণ কমিটিতে নিরপেক্ষতা অনুপস্থিত

  • স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের মূল্যায়ন কমিটিতে স্বাস্থ্য অর্থনীতি বা সামাজিক বিশেষজ্ঞদের বদলে রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা থাকেন।

  • ফলে প্রকৃত সমস্যার মূল্যায়ন হয় না, বরং ‘সব ঠিক আছে’ রিপোর্ট তৈরি হয়।

  • স্বাস্থ্য সাথী অনিয়মে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি অব্যাহত থাকে।

📌 যেখানে বিচারকের আসনে বসেন অভিযুক্তের আত্মীয়, সেখানে ন্যায় কোথায় দাঁড়াবে?

🎯 বাস্তব কাহিনি: ছাতনা, বাঁকুড়ার ‘প্রতীক’

ছাতনার একজন চিকিৎসা সহায়ক কর্মী প্রতীক দত্ত, যিনি একাধিক রোগীকে স্বাস্থ্যসাথীর মাধ্যমে হাসপাতালে পাঠান।

  • তিনি একদিন নিজেই দুর্ঘটনায় পড়লে স্থানীয় হাসপাতাল জানায়—“আপনার নাম তালিকায় নেই।”

  • অথচ তিনি জানতেন, নিজের আবেদন তিন মাস আগেই জমা দিয়েছেন।

  • পরে জানা যায়, তার এলাকার নেতার সঙ্গে রাজনৈতিক দূরত্ব থাকার জন্য তার ফর্ম “হারিয়ে গেছে”।

🧨 এই ঘটনা শুধু প্রতীকের নয়—এটাই বাংলার প্রান্তিকদের বাস্তব।

সেবা না প্রচার, সিদ্ধান্ত জনগণের

স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতিতে রাজনৈতিক প্রভাব এখন আর গুজব নয়—এ এক বাস্তব, দলীয় প্রভাবিত শাসনব্যবস্থার নৈতিক ব্যর্থতা।

  • স্বাস্থ্য প্রকল্প একটি মৌলিক মানবাধিকার কার্যক্রম, তা দলীয় সুবিধা অর্জনের মাধ্যম হতে পারে না।

  • স্বাস্থ্য সাথী অনিয়ম তদন্তের দাবি আজ সময়ের দাবি, এবং তার নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনিক নয়, বিচার বিভাগীয় স্তর থেকে।

📣 এই মুহূর্তে প্রয়োজন সাহসী প্রশ্ন, কারণ নিঃশব্দতা শুধু ভোগান্তি ডেকে আনে না—তাতে প্রজন্ম হারায় ন্যায়বিচারের আশ্বাস।

How Healthy is Health Insurance? | The India Forum

স্বাস্থ্য খাতে জবাবদিহিতা নেই: কীভাবে প্রভাব পড়ছে?

স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতি এবং স্বাস্থ্য সাথী অনিয়মে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি এই দুইয়ের মাঝখানে রয়েছে এক নিষ্ক্রিয় ও প্রশ্নবিদ্ধ ব্যবস্থা — স্বাস্থ্য খাতে জবাবদিহিতার অভাব। সরকার যতই সাফল্যের স্লোগান আওড়াক, বাস্তব চিত্র বলে দেয়, এখানে তথ্যের বদলে তোষণ, নীতির বদলে নীরবতা চলছে।

 নথিপত্রের অস্বচ্ছতা: কাগজে সেবা, বাস্তবে গোলকধাঁধা

 তথ্যের অদৃশ্য খেলা

  • স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে খরচের হিসাব প্রকাশে স্বচ্ছতা নেই — সরকারি পোর্টালে প্রকৃত খরচ ও বেনিফিশিয়ারির সংখ্যা মাঝে মাঝেই মেলে না।

  • RTI (তথ্য জানার অধিকার)-এর মাধ্যমে প্রশ্ন করলেই উত্তর আসে বিলম্বিত বা অসম্পূর্ণ আকারে।

 কোনো থার্ড-পার্টি নিরীক্ষা নেই

  • দেশের অন্য রাজ্যগুলিতে যেখানে স্বাস্থ্য প্রকল্পের নিরীক্ষা করে স্বাধীন সংস্থা, বাংলায় স্বাস্থ্য সাথী অনিয়ম তদন্তের দাবি বারবার অগ্রাহ্য হয়েছে।

  • এমনকি CAG-এর (Comptroller and Auditor General) পর্যবেক্ষণও এই প্রকল্পে সীমিত।

📌 “জনসেবার নামে যদি আর্থিক ধোঁকাবাজি চলে, তবে প্রকল্পের উদ্দেশ্যই প্রশ্নের মুখে পড়ে।”

 অভিযোগ শোনার ব্যবস্থা — নামমাত্র, বাস্তবে শূন্য

 স্বাস্থ্য সাথী হেল্পলাইন: অভিযোগের কফিন?

  • অনেক ভুক্তভোগী জানান, স্বাস্থ্যসাথী হেল্পলাইনে অভিযোগ জানালেও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলে না, শুধু টোকেন নম্বর ধরিয়ে দেওয়া হয়।

  • একটি মামলা অনুযায়ী, একজন গর্ভবতী মহিলা কলকাতার একটি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেখিয়েও ভর্তি পাননি, হেল্পলাইনে অভিযোগ করেও ফল হয়নি।

 অভিযোগ নিষ্পত্তির কমিটি ‘স্বজনপোষণ’ নির্ভর

  • জেলা স্তরে গঠিত অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটিতে থাকেন স্থানীয় নেতারা ও প্রশাসনিক ঘনিষ্ঠরা — ফলে অভিযোগ খারিজ হয় ‘প্রমাণ নেই’ বলেই।

📌 “যেখানে অভিযোগকারীই হয় সন্দেহভাজন, সেখানে বিচারের আশা দুরাশা।”

 প্রতিবেদন ম্যানিপুলেশন: বাস্তবকে পর্দার আড়ালে রাখা

 “সব ঠিক আছে” নীতি

  • স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে ত্রৈমাসিক রিপোর্টে প্রায় সব জায়গাতেই “সন্তোষজনক” সেবার উল্লেখ থাকে, অথচ সংবাদপত্রে উঠে আসে বহু অনিয়ম ও ভোগান্তির ছবি

  • জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা অভ্যন্তরীণ চাপে নেতিবাচক তথ্য লুকাতে বাধ্য হন, এমন অভিযোগও সামনে এসেছে।

📌 “যদি চিকিৎসা হয় কাগজে, আর রোগী ঘুরে বেড়ায় অ্যাম্বুলেন্সে—তবে কীসের সাফল্য?”

 স্বার্থসংশ্লিষ্ট হাসপাতাল — সুবিধাপ্রাপ্ত গুটিকয়েক

 সরকারি অনুমোদনের ছাপ মেলেনা বহু হাসপাতালে

  • স্বাস্থ্যসাথী কার্ডধারীরা বহু হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন, হাসপাতাল প্রকল্পে তালিকাভুক্ত নয়, যদিও সরকারি তালিকায় নাম রয়েছে।

  • কিছু হাসপাতাল কার্ড গ্রহণ করলেও আংশিক চিকিৎসার পরে জানিয়ে দেয় — “বাকিটা নিজের খরচে করুন”।

 রোগী রেফারাল = কমিশন, নাকি বাণিজ্য?

  • অনেক ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মী নির্দিষ্ট হাসপাতালে রেফার করলে কমিশন পান, এমন স্বীকারোক্তি তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে।

  • এতে প্রকৃত চিকিৎসা নয়, লাভজনক চিকিৎসা হয় — ফলভোগ করে রোগী।

📌 “স্বাস্থ্য যখন বাজারে পরিণত হয়, তখন নৈতিকতার দাম পড়ে সবচেয়ে কম।”

 বাস্তব কাহিনি: শ্রীপর্ণার অপারেশন এবং এক ফাঁকা কার্ড

শ্রীপর্ণা মজুমদার, পূর্ব মেদিনীপুরের একজন প্রাথমিক শিক্ষিকা। তার মায়ের জরুরি ক্যান্সার অপারেশনের জন্য তিনি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন।

  • স্থানীয় হাসপাতালে তাকে জানানো হয় — “আপনার সীমা শেষ, ৫ লক্ষ টাকা আগেই ব্যবহার হয়ে গেছে।”

  • অথচ গত ৩ বছরে তিনি এই কার্ড ব্যবহারই করেননি।

  • RTI করলে দেখা যায়, ভুয়ো ক্লেইমের মাধ্যমে তার কার্ড দিয়ে অন্য কেউ পরিষেবা নিয়েছে

  • অভিযোগের পরেও কোনও তদন্ত হয়নি, কেবল একটি টোকেন নম্বর দেওয়া হয়।

📌 এই ঘটনা প্রমাণ করে, “কার্ডে নাম থাকলেই সুরক্ষা নেই, আর প্রকল্পে নাম থাকলেই দায়বদ্ধতা আসে না।”

Report on SWASTHYA SATHI SCHEME- স্বাস্থ্য সাথী - WBCS,PSC CLERK, MISC, SSC  CGL TIER 3, BANK PO - YouTube

 তথ্য যেখানে নীরব, দুর্নীতি সেখানে সর্বগ্রাসী

স্বাস্থ্য খাতে জবাবদিহিতা নেই — এই কথাটি আজ আর অনুমান নয়, এটি বাংলার স্বাস্থ্য বাস্তবতার ছায়াচিত্র।

  • স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতি যত না অর্থনৈতিক, তার চেয়ে অনেক বেশি নৈতিক বিপর্যয়

  • এখন প্রয়োজন প্রকল্পে স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষ নিরীক্ষা এবং স্বাস্থ্য সাথী অনিয়ম তদন্তের দাবি-কে সাংবিধানিক গুরুত্ব দেওয়া।

📣 কারণ স্বাস্থ্যের নামে দুর্নীতি হলে, মৃত্যু শুধু এক ব্যক্তির নয় — সেটি গোটা নীতির।

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়ে মানুষের অভিযোগ: কীভাবে সমাধান সম্ভব?

যে প্রকল্পকে বলা হয় ‘জনগণের স্বাস্থ্যসাথী’, বাস্তবে তা যেন হয়ে উঠেছে দুর্বোধ্য এবং বৈষম্যমূলক চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতীক। মানুষের অভিজ্ঞতা, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের অকার্যকারিতা এবং প্রশাসনিক উদাসীনতা মিলে এই প্রকল্পকে একরকম মুনাফাভিত্তিক প্রতারণার কাঠামোয় রূপান্তরিত করেছে।

 স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়ে মানুষের অভিযোগ: কোন কোনটি সবচেয়ে উদ্বেগজনক?

 তালিকাভুক্ত হাসপাতালের তালিকা ‘জটিল ও বিভ্রান্তিকর’

  • বহু মানুষই জানতে পারেন না কোন হাসপাতাল সত্যিকারের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। সরকারি পোর্টালে থাকা তালিকা অনেক সময় পুরনো, অসংলগ্ন কিংবা অকার্যকর

  • কোনো কোনো হাসপাতালে পৌঁছে জানা যায়, “আমরা আগে ছিলাম, এখন নেই” — অথচ ওয়েবসাইটে নাম এখনও আছে।

📌 “ডিজিটাল ভার্সন ঠিক না থাকলে ডিজিটাল ইন্ডিয়াও শুধু শ্লোগান হয়ে দাঁড়ায়।”

 রোগীকে হাসপাতালে ঘোরানো হয়, অথচ পরিষেবা মেলে না

  • স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের ব্যবহারযোগ্যতা নিয়ে প্রায় ৬০% অভিযোগ চিকিৎসা না পাওয়া

  • হাসপাতালগুলির অন্যতম অজুহাত: “এই রোগটার জন্য স্বাস্থ্যসাথী প্রযোজ্য নয়।”

  • এমনকি, কোনও কোনও হাসপাতাল রোগীকে জেনারেল ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়ে পরে বলেছে—“আপনার রোগের কোড প্যাকেজে নেই।”

 স্বাস্থ্য সাথী অনিয়মে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি: ঠিক কীভাবে?

 প্যাকেজ বিভ্রাট: চিকিৎসা আছে, কোড নেই

  • স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতি-র অন্যতম মোড়ল — “প্যাকেজ কোড”-এর গেম।

  • সরকার নির্ধারিত রোগের প্যাকেজ অনুযায়ী হাসপাতালগুলি টাকা পায়, কিন্তু সেখানে দুর্নীতি হয় কোড নিয়ে।

  • একই রোগের জন্য এক হাসপাতালে কোড থাকলেও, অন্য হাসপাতালে সেটা “অনুপস্থিত” দেখিয়ে রোগীকে ক্যাশ পেমেন্টে বাধ্য করা হয়

 টাকার লেনদেনের অভিযোগ

  • সরকার ঘোষণা করলেও, বাস্তবে অনেক হাসপাতাল ‘অফ দ্য রেকর্ড’ টাকা দাবি করে, নাহলে পরিষেবা স্থগিত থাকে।

  • পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা চয়ন দত্ত অভিযোগ করেছিলেন—মায়ের বাইপাস সার্জারির জন্য স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকার পরেও হাসপাতাল ৬০ হাজার টাকা দাবি করে

  • টাকা না দিলে অপারেশন পিছিয়ে যায় — ‘নো রিস্ক টুডে’, এই অজুহাতে।

📌 “স্বাস্থ্য সুরক্ষা যদি ‘পেমেন্ট কনফার্মেশন’ দেখে কাজ করে, তবে সেটা সুরক্ষা নয়, সেটা বাণিজ্য।”

 অভিযোগ ব্যবস্থা—নির্বাক ও নিষ্ক্রিয়

 হেল্পলাইন কেবল একটি ‘ডিজিটাল ঢাকনা’

  • মানুষ অভিযোগ করেন, কিন্তু হেল্পলাইনে ফোন করে শুধুই নম্বর পাওয়া যায়, ফল নয়

  • একটি RTI জবাব অনুযায়ী, গত এক বছরে প্রায় ১৭ হাজার অভিযোগ জমা পড়লেও নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ১২%

 অভিযোগ করলেই হয়রানি

  • অনেকে অভিযোগ জানানোর পরে উল্টে তাদের ফাইল হারিয়ে যায় বা বিলম্বিত হয় চিকিৎসা

  • যেমন উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা মিতা চক্রবর্তী অভিযোগ করেছিলেন: “আমি অভিযোগ করেছিলাম, এরপর আমার বাবার কাগজ ফেরত পেতে ১২ দিন লেগেছে।”

📌 “অভিযোগ জানালে যদি অসুবিধা আরও বাড়ে, তবে সেটা গণতান্ত্রিক কাঠামো নয়, বরং একটি শোষণমূলক পদ্ধতির প্রতিচ্ছবি।”

 কীভাবে সমাধান সম্ভব? কেবল নামমাত্র সংস্কার নয়

 স্বতন্ত্র নিরীক্ষা সংস্থা

  • স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সব হাসপাতাল ও খরচের নিরীক্ষা স্বতন্ত্রভাবে করানো আবশ্যক, যা CAG-এর অন্তর্ভুক্ত নয়।

  • এমনকি মাসিক ভিত্তিতে অনলাইন রেটিং সিস্টেম চালু করা যেতে পারে, যাতে রোগীরাই হাসপাতালের আচরণ ও সেবার মান স্কোর করে দিতে পারেন।

 ডিজিটাল ‘ট্র্যাকিং সিস্টেম’

  • স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের ব্যবহার ইতিহাস রোগী ও সরকারি পর্যায়ে উন্মুক্ত রাখা দরকার—যাতে কেউ ভুয়ো ক্লেইম না করতে পারে।

  • প্যাকেজ কোড, তার অবস্থা ও টাকা প্রদান সমস্ত তথ্য SMS বা অ্যাপের মাধ্যমে রোগীকে জানানো উচিত।

 অভিযোগ নিষ্পত্তি সংস্থা — সরকারি নয়, বেসরকারি উদ্যোগে

  • যেহেতু সরকারি পর্যায়ে অভিযোগ নিষ্পত্তি প্রায় অকার্যকর, তাই একটি ত্রিপাক্ষিক কমিশন (স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, আইনজীবী ও সমাজকর্মী) গঠন করা জরুরি।

📌 “সরকারি বৃত্তের ভেতরে সমাধান খুঁজলে সমস্যা আরও জটিল হয়। দরকার বাইরে থেকে চাপ এবং নিরপেক্ষতা।”

 অনুপ্রবেশের বিপদ: প্রকৃত সুবিধাভোগীরা বাদ পড়ে

  • স্বাস্থ্য সাথী কার্ড অনেক সময় পলিটিক্যাল লিঙ্ক বা ঘুষ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।

  • যাঁরা প্রকৃত দরিদ্র, তাঁরা কাগজপত্র জোগাড় করতে না পারায় বঞ্চিত হন।

  • একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে—প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত ২৫% নামই যাচাইযোগ্য নয়।

📌 “যেখানে দরকার প্রমাণ করতে হয় দরিদ্রতা, সেখানে দুর্নীতির রাস্তায় স্বাস্থ্য হয়ে পড়ে গুমনামী।”

 সংস্কার না হলে, স্বাস্থ্য সাথী হবে ইতিহাস

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়ে মানুষের অভিযোগ আজ শুধু কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়—এটি একটা সুসংবদ্ধ চিত্র, যা নির্দেশ করে প্রকল্পের কাঠামোগত দুর্বলতা ও রাজনৈতিক ‘দখলদারি’।

  • যদি সত্যিই সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসাথী অনিয়মে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমাতে হয়, তবে দরকার কঠোর জবাবদিহি, ডিজিটাল স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষ সংস্থা দ্বারা তদারকি।

📣 “স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পকে যদি বাঁচাতে হয়, তবে শুধুই প্রচার নয়—প্রয়োজন ন্যায়, তথ্য এবং জনতার সরাসরি অংশগ্রহণ।”

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী? — চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প, যা পশ্চিমবঙ্গের জনগণের জন্য এক সময় স্বপ্ন হয়ে উঠেছিল, বর্তমানে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে সেই রূপের বাস্তবায়ন থেকে অনেক দূরে। স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতি এবং স্বাস্থ্য সাথী অনিয়ম গুলি প্রকল্পের ভবিষ্যতকে এক ধরনের ধোঁয়াশায় পরিণত করেছে। যদি এই প্রকল্পের সত্যিকারের উপকারিতা মানুষের কাছে পৌঁছানোর সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তবে এর ভবিষ্যৎ চরম সংকটে পড়বে।

Swasthya Sathi: ভাঁড়ারে টান, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে ভাতার পরিমাণ দুইগুণ  কমাল পশ্চিমবঙ্গ সরকার | Government Of West Bengal Reduce Allowances In Swasthya  Sathi Travel Scheme | India ...

স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের ভবিষ্যতের সম্ভাবনা: কীভাবে সংশোধন সম্ভব?

 স্বচ্ছতা এবং তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার

  • স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতি ঠেকাতে ডিজিটাল ব্যবস্থা, যেমন ব্লক চেইন প্রযুক্তি বা স্বচ্ছ অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেম চালু করা আবশ্যক।

  • প্রত্যেক রোগীকে তাদের স্বাস্থ্য সাথী অনিয়ম তদন্তের দাবি করা এবং সমস্ত তথ্য খোলামেলা এবং যাচাইযোগ্য রাখতে হবে, যাতে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসনের ভূমিকা শক্তিশালী হয়।

 অভিযোগ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা

  • প্রতিটি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ব্যবহারকারীর জন্য একটি নিরপেক্ষ সেলফ-চেকিং সিস্টেম তৈরি করা উচিত, যেখানে জনগণ তাদের সেবা সংক্রান্ত প্রতিটি সমস্যা সমাধান করতে পারবেন।

  • যে সকল হাসপাতাল বা চিকিৎসক স্বাস্থ্য সাথী সুবিধা অস্বীকার করবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

  • স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে কারা জবাবদিহি করছে না এবং তাদের জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি।

📌 “স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের ভবিষ্যৎ জবাবদিহির মধ্যে, মানুষ যদি নিরাপত্তা অনুভব করতে না পারে, তবে তার অর্থ প্রকল্পটি পুরোপুরি ব্যর্থ।”

 ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা: অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সুবিধা

 উন্নত স্বাস্থ্যব্যবস্থার পথে

  • যদি স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসনের ভূমিকা শক্তিশালী করা যায় এবং প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়, তবে এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব।

  • আগামী ৫ বছরে, প্রকল্পটি যদি কার্যকরী হয়, তাহলে তা পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য খাতে জবাবদিহিতা এবং স্বাস্থ্য সাথী সুবিধা না পাওয়া সঙ্কটের সমাধান হতে পারে।

 বিনিয়োগ এবং সঠিক স্বাস্থ্যসেবা

  • এটি ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যর্থতা দূর করে পশ্চিমবঙ্গে স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করবে।

  • স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে দুর্নীতি রোধ এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা চালু হলে, এটি প্রতিটি সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানোর একটি শক্তিশালী পথ হতে পারে।

যদি স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে কিছু ইতিবাচক ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতে হয়, তবে তার একমাত্র উপায় হলো প্রতিটি স্তরের জন্য স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং প্রমাণের ভিত্তিতে কাজ করা। স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে স্বাস্থ্য সাথী অনিয়ম এবং স্বাস্থ্য সাথী দুর্নীতি অব্যাহত থাকলে, এটি কেবল দুর্নীতি আর প্রশাসনিক ব্যর্থতা-এর প্রতীক হয়ে দাঁড়াবে। আর এর ভবিষ্যৎ, হুমকির মুখে পড়বে।

📣 “স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প যদি সত্যিকার অর্থে জনগণের উপকারে আসে, তবে এর কাঠামো ও বাস্তবায়নকে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার হাত থেকে মুক্ত করতে হবে।”

আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো

Leave a Reply