কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এ জাহ্নবী কাপুরের আত্মপ্রকাশ ছিল সৌন্দর্য, আত্মবিশ্বাস ও শৈল্পিকতার এক অপূর্ব মেলবন্ধন। ব্যাকলেস সবুজ গাউনে তাঁর উপস্থিতি শুধু ফ্যাশন দুনিয়ায় নয়, চলচ্চিত্রমঞ্চেও নতুন আলো ফেলেছে। নীরজ ঘেওয়ানের Homebound ছবির গর্বিত সহঅভিনেত্রী হিসেবে জাহ্নবী কাপুর দর্শকদের মন জয় করেন ৯ মিনিটের স্ট্যান্ডিং ওভেশনে। মাতৃস্মৃতিতে বিভোর, সমালোচনার ঊর্ধ্বে থাকা এই অভিনেত্রী যেন পুরনো হলিউড ও আধুনিক বলিউডের এক স্বপ্নময় সংযোগ। কানস ২০২৫-এ জাহ্নবী কাপুরই যেন হয়ে উঠেছেন এক চলমান কাব্যের নাম।
🎬 ‘Homebound’ চলচ্চিত্রের কানস ২০২৫-এ প্রিমিয়ার: এক শিল্পসাংঘাতিক মুহূর্ত
জাহ্নবী কাপুরের কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এ অংশগ্রহণ শুধুই গ্ল্যামারের খাতিরে নয়—এটি ছিল এক অন্তর্নিহিত শিল্পসত্তার উন্মোচন। ‘Homebound’ প্রিমিয়ার ঘিরে ঘটে গেল এমন কিছু যা ভারতীয় চলচ্চিত্রে দীর্ঘকাল মনে রাখার মতো।
🔻‘Un Certain Regard’ বিভাগে প্রবেশ: নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে সাফল্যের সূচনা
কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এর মর্যাদাপূর্ণ ‘Un Certain Regard’ বিভাগে ‘Homebound’-এর অন্তর্ভুক্তি এক বিশাল কৃতিত্ব।
এই বিভাগে শুধুমাত্র সেই চলচ্চিত্রগুলিকে নির্বাচিত করা হয় যেগুলি সাহসী দৃষ্টিভঙ্গি এবং মৌলিক ভাষা দিয়ে চলচ্চিত্রভাষাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করে।
জাহ্নবী কাপুর অভিনীত এই ছবি একটি নারীকেন্দ্রিক মানসিক যাত্রার গল্প, যা অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে পরিচালিত।
🔻 শিল্পীসত্তার বিস্ফোরণ: জাহ্নবী কাপুরের সংবেদনশীল অভিনয়
জাহ্নবী কাপুর, যাঁকে বহুদিন শুধুমাত্র গ্ল্যামার দুনিয়ার অংশ হিসেবে দেখা হত, তিনি কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এ প্রমাণ করলেন—তিনি এক শক্তিশালী পারফর্মার।
চরিত্রে তাঁর মানসিক জটিলতা এবং সংযত অভিব্যক্তি তাঁকে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র বিশ্লেষকদের নজরে আনতে বাধ্য করেছে।
‘Homebound’ ছবিতে জাহ্নবী কাপুর-এর উপস্থিতি যেন এক অনবদ্য আত্মপ্রকাশ—একটি আন্তর্জাতিক ক্যানভাসে ভারতীয় নারীকণ্ঠের সূক্ষ্ম প্রতিচ্ছবি।
🔻 ৯ মিনিটের স্ট্যান্ডিং ওভেশন: কানস ২০২৫-এ ভারতীয় গর্বের মুহূর্ত
কানস প্রেক্ষাগৃহে ৯ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে করতালি এক বিরল দৃশ্য, যা ‘Homebound’ প্রিমিয়ারে বাস্তব হয়ে ধরা দেয়।
এ যেন জাহ্নবী কাপুর-এর কর্মজীবনের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত, যেখানে ফ্যাশন নয়—অভিনয়ই হয়ে ওঠে মুখ্য পরিচয়।
এই অভাবনীয় সম্মান ভারতীয় চলচ্চিত্রশিল্পের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার এক সার্থক প্রমাণ।
🔻 সহ-অভিনেতা ও পরিচালকের নিখুঁত সমন্বয়
ইশান খট্টর ও বিশাল জেঠওয়া—দুই দক্ষ অভিনেতার সঙ্গে জাহ্নবী কাপুর-এর দৃশ্যসমূহ ছবিটিকে আরও গভীরতা দিয়েছে।
পরিচালক নীরজ ঘেওয়ান, যিনি ‘Masaan’-এর পর বহু বছর বাদে এই ছবি নিয়ে হাজির হন, কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এ আবার তাঁর শৈল্পিক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেন।
🔻 ‘Homebound’-এর সংকেত: ঘর, স্মৃতি ও নারীর অন্তর্জগত
ছবিটির নাম ‘Homebound’-এর মধ্যে নিহিত এক গূঢ় প্রতীক—ফিরে যাওয়া, শিকড়ের খোঁজ, অতীতের ভার।
জাহ্নবী কাপুর-এর চরিত্র এই যাত্রাকে অন্ধকার ও আলোয় মেশানো এক স্মৃতিকথার রূপ দেয়।
কানস চলচ্চিত্র উৎসব-এর আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই ধরনের বিষয়ে আলোচনা নিজেই এক সাংস্কৃতিক চ্যালেঞ্জ।
এক কানস, এক জাহ্নবী, এক ভারতীয় গর্ব
‘Homebound’ চলচ্চিত্রের প্রিমিয়ার এবং জাহ্নবী কাপুর-এর দুর্দান্ত অভিনয় এই বার্তা দেয়—কানস ২০২৫ শুধুমাত্র একটি ফ্যাশন প্রদর্শনী নয়, বরং শিল্প, আবেগ ও এক আত্মপ্রকাশের শৈল্পিক উত্তরণ। কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এ জাহ্নবী কাপুর-এর এই উপস্থিতি প্রমাণ করে দিয়েছে, তিনি কেবল এক গ্ল্যামার আইকন নন, বরং ভারতীয় অভিনয়শিল্পের এক নতুন অভিমুখ।
ফ্যাশনে পুরনো হলিউডের গ্ল্যামার: জাহ্নবী কাপুরের কানস ২০২৫ লুকের রহস্য উদঘাটন
জাহ্নবী কাপুর যখন কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এর লাল গালিচায় পা রাখেন, তখন শুধু আলো নয়, ফ্যাশনের অতীত ইতিহাসও যেন পুনর্জন্ম নেয় তাঁর সৌন্দর্যে। পুরনো হলিউডের গ্ল্যামার, আধুনিক বলিউডের আত্মবিশ্বাস, আর ভারতীয় শৈলীর সংমিশ্রণ—এই তিনের মোহনায় তৈরি হয় এক যুগান্তকারী লুক। নিচে রইল সেই ‘গ্রীন ম্যাজিক’-এর গভীর বিশ্লেষণ:
🔻 সবুজ গাউনের প্রতীকী তাৎপর্য: একটি রঙ, অনেক অর্থ
জাহ্নবী কাপুর-এর পরা সবুজ ব্যাকলেস গাউনটি কেবল রঙ নয়—এটি জীবনীশক্তি, নারীশক্তি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতীক।
সবুজ রঙ প্রায়শই কানসের লাল গালিচায় এড়ানো হয়, কারণ এটি চোখে তেমন “পপ” করে না। কিন্তু জাহ্নবী কাপুর ব্যতিক্রমী স্টাইলিং দিয়ে সেই নিয়ম ভেঙে ফেলেন।
এটি ছিল Gauri & Nainika-র কাস্টম ডিজাইন, যেখানে পুরনো হলিউডের Marilyn Monroe বা Elizabeth Taylor-এর অনুপ্রেরণা স্পষ্ট, তবে তাকে ভারতীয় রুচিতে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
🔻 ব্যাকলেস ডিজাইন ও কাটিংয়ের সিম্বলিক ভাষা
এই ব্যাকলেস গাউনটি কানস ২০২৫-এর আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে শুধুমাত্র তার সাহসী নকশার জন্য নয়, বরং তার সূক্ষ্ম কাঁধ-উন্মোচনের মধ্য দিয়েও এক ‘self-reclamation’-এর বার্তা ছড়িয়ে দেয়।
জাহ্নবী কাপুর তাঁর শরীরকে যেমনভাবে ক্যারি করেন, তাতে স্পষ্ট—এটি কোনো শো অফ নয়, বরং নিজের শরীর ও সত্তার উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের এক আত্মপ্রকাশ।
🔻 অলংকারের সংযত সৌন্দর্য: ফ্যাশনের জ্যামিতিক কাব্য
জাহ্নবী কাপুর-এর গাউনের সাথে ম্যাচিং করে থাকা emerald drop earrings ও স্লিক বান—এই দুইয়ের সংমিশ্রণ ছিল অত্যন্ত পরিমিত অথচ অভিজাত।
পুরনো হলিউড গ্ল্যামারে যেভাবে মুখের ওপর জোর দেওয়া হতো, ঠিক তেমনি জাহ্নবী কাপুর তাঁর চোখ ও ঠোঁটের মেকআপে ‘minimalism’-এর চরম ব্যবহার দেখান।
🔻 স্টাইলের পিছনে গল্প: মা শ্রীদেবী ও উত্তরাধিকারের ছায়া
অনেকেই জানেন না, জাহ্নবী কাপুর-এর এই ফ্যাশনচয়ন কোনো কাকতালীয় নয়—এটি তাঁর মা শ্রীদেবী-র প্রতি এক নিঃশব্দ শ্রদ্ধা।
শ্রীদেবী একবার ১৯৮৯ সালে ফ্রান্সে একটি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সবুজ শিফন শাড়ি পরে অংশ নিয়েছিলেন। জাহ্নবী কাপুর যেন সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় ‘গ্লোবাল ফ্যাশন’ আর ‘পারিবারিক স্মৃতি’র এক মেলবন্ধন রচনা করলেন কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এ।
🔻 চলমান ফ্যাশনের চলচ্চিত্ররূপ: ছবি নয়, যেন এক চলমান পোস্টার
জাহ্নবী কাপুর-এর চলন, ভঙ্গিমা এবং লুক—সব মিলিয়ে যেন এক চলন্ত ছবির মতো। ফ্যাশন এখানে থেমে নেই, বরং চলেছে, বেঁচে আছে।
এমনকি বহু আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ব্লগ Vogue, Elle, Harper’s Bazaar তাঁকে Cannes 2025 Best-Dressed Celebrities তালিকার অন্যতম হিসেবে স্থান দিয়েছে।
পুরনো গ্ল্যামারের নতুন সংজ্ঞা
জাহ্নবী কাপুর-এর কানস ২০২৫-এর ফ্যাশনচয়ন শুধু পোশাক নয়—এটি এক সাংস্কৃতিক বিবৃতি, যা পুরনো হলিউডের গ্ল্যামার, ভারতীয় উত্তরাধিকার ও আধুনিক নারী আত্মবিশ্বাসকে একসূত্রে বেঁধে নতুন সংজ্ঞা দেয়। কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এ তিনি প্রমাণ করলেন, সৌন্দর্য কেবল বাহ্যিক নয়—তা একটি অবস্থান, এক রাজনৈতিক ঘোষণা, এক শিল্পীসত্তার উত্থান।
ব্যাকলেস সবুজ গাউনে নজরকাড়া উপস্থিতি: জাহ্নবী কাপুরের আত্মবিশ্বাসের শৈল্পিক বিস্ফোরণ
জাহ্নবী কাপুর যখন কানস ২০২৫-এর লালগালিচায় পা রাখেন, তখন তিনি কেবল একজন অভিনেত্রী ছিলেন না—তিনি হয়ে ওঠেন এক চলমান শিল্প। সেই মুহূর্তের কেন্দ্রে ছিল তাঁর ব্যাকলেস সবুজ গাউন, যা শুধুমাত্র ফ্যাশনের প্রকাশ নয়, বরং নারীর আত্মপ্রকাশ, সাহস এবং নান্দনিক অভিজ্ঞান।
নিচে বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হল তাঁর এই ব্যাকলেস সবুজ গাউন নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ, যা কানস চলচ্চিত্র উৎসব-এ তাঁকে করে তোলে আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু:
🔻 ডিজাইনের সূক্ষ্ম কৌশল: গাউনের নির্মাণে নিখুঁত সাযুজ্য
জাহ্নবী কাপুর-এর এই ব্যাকলেস সবুজ গাউনটি ছিল Gauri & Nainika-এর বিশেষ ডিজাইন, যা কাস্টমাইজ করা হয়েছিল শুধুমাত্র তাঁর শারীরিক কাঠামো ও উপস্থিতি মাথায় রেখে।
এই গাউনের ব্যাকলেস কাট ছিল আর্কিটেকচারের মতো নিখুঁত—যেখানে প্রতিটি কার্ভ একেকটি ভিজ্যুয়াল রিদম তৈরি করেছিল।
গাউনটির ট্রেইন অংশে সূক্ষ্ম স্যাটিন টেক্সচার এমনভাবে ছড়ানো ছিল, যা আলো পড়লেই সবুজের মাঝে উজ্জ্বল জ্যোতি প্রতিফলিত করছিল।
🔻 গ্রীন কালারের প্রাসঙ্গিকতা: নিছক রঙ নয়, প্রতিবাদের প্রতীক
সবুজ গাউন-এর ব্যবহার কেবল ফ্যাশন ট্রেন্ডের অনুবর্তিতা নয়; এটি একটি রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বার্তা।
হলিউড ও ইউরোপীয় ফ্যাশনে সবুজ প্রায়শই “difficult colour” হিসেবে পরিচিত, কারণ এটি ত্বকের উপর সহজে মানানসই হয় না। অথচ জাহ্নবী কাপুর সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে কানস ২০২৫-এর দর্শকদের চমকে দেন।
গাউনটি ছিল একধরনের প্রতিবাদ—”ফ্যাশনে সাহসের নামে কেবল সোনালী নয়, সবুজও রাজত্ব করতে পারে।”
🔻 ব্যাকলেস স্টাইলিং: শরীর নয়, ভঙ্গিমার বাহাদুরি
এই ব্যাকলেস ডিজাইনটি ছিল চরম ব্যালেন্সযুক্ত—একদিকে সাহসিকতা, অন্যদিকে মার্জিততা।
জাহ্নবী কাপুর-এর কাঁধ, ঘাড় ও পিঠের ওপর ভর করে সাজানো ছিল এমনভাবে, যা তাঁকে একাধারে আধুনিক ও চিরন্তন করে তোলে।
শারীরিক উন্মোচন এখানে কখনোই অশ্লীলতা নয়, বরং নিজস্বতাকে গ্রহণ করার এক শিল্পময় রূপান্তর।
🔻 অলংকারের ন্যূনতমতা ও প্রভাব
গাউনের সঙ্গে তাঁর emerald green earrings ছিল একমাত্র উজ্জ্বল উপাদান, যা সবুজ রঙের সাথে টোনাল হ্রোমোনি বজায় রেখেছিল।
চুল বাঁধা ছিল স্লিক বান-এ, যা সম্পূর্ণ লুকটিকে আরও ঐশ্বর্যপূর্ণ করে তোলে এবং গাউনের ব্যাকলেস ডিজাইনকে পুরোপুরি উন্মুক্ত রেখেছিল।
🔻 কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এ মিডিয়া প্রতিক্রিয়া
আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় জাহ্নবী কাপুর-এর এই গাউন ছিল অন্যতম আলোচিত বিষয়। Harper’s Bazaar থেকে Vogue France—সবখানেই তাঁকে উল্লেখ করা হয়েছে “A statement in emerald.”
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে যেমন WION রিপোর্ট করেছে, এটি ছিল “bold and classy”—এক ফ্রেমে দুই বিপরীতধর্মী ধারণার সম্মিলন।
সবুজ গাউনের ছায়ায় এক সাহসী ইতিহাস
জাহ্নবী কাপুর-এর ব্যাকলেস সবুজ গাউন শুধু একটি পোশাক নয়, এটি ছিল এক দৃঢ় বার্তা—”সৌন্দর্য মানেই গোলাপী নয়, আত্মবিশ্বাস মানেই চেঁচিয়ে বলা নয়।” কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এ তাঁর এই উপস্থিতি প্রমাণ করে দিল, ভারতীয় নারী এখন কেবল ফ্যাশন অনুসরণ করে না, ফ্যাশন সংজ্ঞায়িত করে।
সমালোচনার জবাবে আত্মবিশ্বাসী জাহ্নবী: কানস ২০২৫-এ এক তীক্ষ্ণ পাল্টাঘাত
জাহ্নবী কাপুর, যাঁর কানস ২০২৫-এর অভিষেক নিয়ে কিছু অংশে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে, সেই সমস্ত কটাক্ষের জবাব দিলেন একধরনের রাজকীয় আত্মবিশ্বাসে। তাঁর সংক্ষিপ্ত উত্তর—“কিন্তু কে পাত্তা দেয়?”—ছিল কেবল কথার খোঁচা নয়, বরং এক তীক্ষ্ণ মানসিক অবস্থান, যা তাঁকে বাকি থেকে আলাদা করে।
এখানে এই বিষয়টির বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করা হলো:
🔻 সমালোচনার প্রকৃতি: “প্লাস্টিক” থেকে “অভিনেত্রী নয়” পর্যন্ত টিপ্পনী
অনেকেই জাহ্নবী কাপুর-এর কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এর লুক এবং ব্যক্তিত্ব নিয়ে ট্রোল করেছিল, বিশেষ করে তাঁকে “প্লাস্টিক” বলেও আখ্যা দেয়।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়ে মন্তব্য:
“স্টারকিড বলে পেয়েছে সুযোগ।”
“সাহস আছে, কিন্তু গভীরতা কোথায়?”
কিন্তু এতো সমালোচনার মধ্যেও জাহ্নবী কাপুর যে ভাবে বিষয়টি হ্যান্ডেল করেছেন, তা আজকের তরুণ প্রজন্মের কাছে অনুকরণীয়।
🔻 “কিন্তু কে পাত্তা দেয়?” – এই বাক্যের অন্তর্নিহিত শক্তি
এই সংক্ষিপ্ত উত্তর জাহ্নবী কাপুর-এর একধরনের আত্মবিস্মৃত অহংকার নয়, বরং এক গভীর আত্মবিশ্বাস ও আত্মচেতনার প্রকাশ।
এটি একটি সাংস্কৃতিক বার্তাও বটে, যেখানে নারীরা বারবার ব্যাকল্যাশের শিকার হলেও, তাঁর মত কেউ সামনে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট বলেন, “তোমার দৃষ্টিভঙ্গি আমার পথ নির্ধারণ করে না।”
🔻 আত্মবিশ্বাসের পেছনের প্রস্তুতি: ফ্যাশনের বাইরেও সংগ্রাম
কানস ২০২৫-এ ব্যাকলেস সবুজ গাউন পরে উপস্থিত হওয়া কেবল বাহ্যিক প্রকাশ নয়, এটি ছিল দীর্ঘ মানসিক প্রস্তুতির ফল।
জাহ্নবী কাপুর বহুদিন ধরেই নিজেকে প্রমাণ করতে চেয়েছেন ‘স্টারকিড’ ট্যাগ ছাড়িয়ে—সোশ্যাল মিডিয়াতে সমালোচনার মুখেও নিজস্ব কণ্ঠ বজায় রাখার জন্য তাঁকে মানসিকভাবে কঠিন সময় পার করতে হয়েছে।
🔻 ফ্যাশনের মাধ্যমে প্রতিবাদ: চুপ করে থাকা নয়, চকমকে জবাব
তাঁর ব্যাকলেস সবুজ গাউন-এর প্রতিটি কাটা যেন একেকটি বাক্য, যা বলে—”আমার শরীর, আমার সাহস, আমার শর্তে।”
জাহ্নবী কাপুর-এর লুককে “অতিরিক্ত” বলা হলেও, তাতেই তিনি সবাইকে বোঝাতে চেয়েছেন—“কানস ২০২৫”-এর মঞ্চে আমি কেবল সাজিয়ে বসিনি, দাঁড়িয়েছি নিজের পরিচয়ে।
🔻 ভারতীয় তারকারা ও সামাজিক চাপ: ব্যতিক্রম হয়ে ওঠা এক চ্যালেঞ্জ
অন্য অনেক ভারতীয় তারকা যেখানে সমালোচনার ভয়ে মুখ বন্ধ রাখেন, সেখানে জাহ্নবী কাপুর-এর এই মন্তব্য একধরনের সামাজিক ব্যতিক্রম।
কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এর এই পরিবেশে তাঁর বক্তব্য সামাজিক মিডিয়া সংস্কৃতির বিরুদ্ধে এক তীক্ষ্ণ প্রতিরোধ। Troll সংস্কৃতিতে যেখানে “ignore” করা হয়, সেখানে তিনি বলেন “I see you, and still, I don’t care.”
আত্মবিশ্বাস, দৃঢ়তা আর এক নতুন ধারা
জাহ্নবী কাপুর কেবল গাউন পরে আলোচনায় আসেননি—তাঁর মুখের দুটি শব্দই যথেষ্ট প্রমাণ করেছে যে, কানস ২০২৫-এর মঞ্চে তিনি নিছক একজন স্টাইল আইকন নন, বরং এক চিন্তাশীল, আত্মসচেতন শিল্পী। এই মন্তব্য আজ সামাজিকভাবে সচেতন ভারতীয় নারীর প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি: কানস ২০২৫-এ এক আত্মমগ্ন আবেগের বিস্ফোরণ
জাহ্নবী কাপুর-এর কানস ২০২৫-এর যাত্রা কেবল ফ্যাশনের জয়গাথা নয়, এটি ছিল এক গভীর ব্যক্তিগত অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ। এই আন্তর্জাতিক মঞ্চে তিনি তাঁর মা শ্রীদেবী-র প্রতি যে আন্তরিক শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, তা অশ্রুসিক্ত আবেগের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই অধ্যায়টি নিছক এক বক্তব্য নয়, বরং এক প্রজন্মান্তরের সংযোগ ও মানসিক উত্তরাধিকার।
🔻 মায়ের ছায়া: কানস ২০২৫-এ উপস্থিত থেকেও অনুপস্থিত
জাহ্নবী কাপুর বলেন, “এটা অদ্ভুত লাগছে…” — এই বাক্য কেবল একটি অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং এক অভ্যন্তরীণ শূন্যতার প্রতিধ্বনি।
শ্রীদেবী, যিনি নিজেও আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ও চলচ্চিত্র উৎসবের অংশ ছিলেন, তাঁর মেয়ে আজ সেই একই লাল গালিচায়। কিন্তু অনুপস্থিত মায়ের উপস্থিতি যেন ছায়ার মতো ঘিরে রয়েছে।
🟣 তথ্যবিশেষ:
২০০৭ সালে শ্রীদেবী প্রথম ফ্রান্সের একটি ফিল্ম-ফ্যাশন ইভেন্টে উপস্থিত হয়েছিলেন, এবং তিনি বলিউড থেকে ইউরোপীয় র্যাম্পে স্থান করে নিয়েছিলেন বহু আগেই। তাঁর কন্যা জাহ্নবী কাপুর-এর কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এ আগমন যেন এই ঐতিহ্যের উত্তরসূরী হওয়া।
🔻 গাউনের গোপন বার্তা: ‘ট্রিবিউট’ পোশাকে লুকনো এক ভাষ্য
জাহ্নবী কাপুর-এর ব্যাকলেস সবুজ গাউন কেবল সাহসী ফ্যাশন নয়, বরং তার নকশা, রঙ এবং সিলুয়েট ছিল একধরনের নিঃশব্দ শ্রদ্ধাঞ্জলি।
🟣 স্টাইলের ব্যাখ্যা:
সবুজ রঙ — শ্রীদেবী-র একাধিক আইকনিক ফিল্মে ব্যবহৃত প্রধান রঙ।
ফ্লোয়িং স্যাটিন — ‘Chandni’ ও ‘Mr. India’-র পোশাকের ছায়া।
ব্যাকলেস ডিজাইন — নারীর আত্মবিশ্বাস ও স্বাধীনতার প্রতীক, যেটি শ্রীদেবী নিজেই লালন করতেন।
🔻 প্রেস ইন্টারভিউ: চোখের ভাষায় বলেছিলেন সব
জাহ্নবী কাপুর-এর কানস ২০২৫-এর এক সাংবাদিক সম্মেলনে, যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয় মাকে নিয়ে, তখন তাঁর কণ্ঠ হালকা কেঁপে ওঠে।
তিনি উত্তর দেন,
“মায়ের হাত ধরে যদি এই পথ পেরোতে পারতাম, তা হলে অনেক সহজ হতো।”
🟣 প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ:
এই সংবেদনশীল উত্তরটি সঙ্গে সঙ্গে ভাইরাল হয়ে যায়, এবং #JanhviKapoorAtCannes2025 হ্যাশট্যাগে হাজার হাজার মানুষ তাঁদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। অনেকেই বলেন, এই জেনারেশন অবশেষে তার ‘স্মার্ট কিন্তু সংবেদনশীল’ প্রতিমূর্তি খুঁজে পেয়েছে।
🔻 ভারতীয় সংস্কৃতির আত্মপ্রকাশ: বিশ্বমঞ্চে মায়ের স্মৃতিকে শ্রদ্ধা
জাহ্নবী কাপুর-এর এই আবেগঘন শ্রদ্ধাঞ্জলি আমাদের ভারতীয় সংস্কৃতির অন্যতম মূল্যবান দিককে তুলে ধরে—“মায়ের স্মৃতি, গৌরবের ভিত্তি।”
🟣 উল্লেখযোগ্য দিক:
যেখানে পশ্চিমা মিডিয়া সাধারণত শুধু ফ্যাশন নিয়েই আলোচনা করে, সেখানে জাহ্নবী কাপুর-এর বক্তব্য ও আবেগ কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এর প্রচলিত ছক ভেঙে দেয়।
🔻 শ্রীদেবীর উত্তরাধিকার: এক প্রজন্মের সংবেদন
অনেকেই বলছেন, জাহ্নবী কাপুর আসলে নিজের অভিনয় জীবনের এক নব্য অধ্যায় শুরু করলেন এই কানস ২০২৫ থেকেই।
এই অভিষেক ছিল কেবল তারকাখ্যাতির নয়, বরং এক মানসিক উত্তরাধিকারের প্রকাশ—যেখানে একটি কন্যা তার মায়ের স্বপ্নকে বিশ্বমঞ্চে বহন করে।
অশ্রু, আলো আর আত্মচেতনার মুহূর্ত
জাহ্নবী কাপুর-এর কানস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫-এর যাত্রা কেবল ক্যামেরা ও আলোয় সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং তা এক হৃদয়স্পর্শী শ্রদ্ধার কথা বলে। ব্যাকলেস সবুজ গাউন-এ তিনি যেন নিজের শরীর নয়, মায়ের স্মৃতিকে আবৃত করেছিলেন, আর বিশ্বের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন—“আমি এসেছি, কিন্তু আমি একা আসিনি।”
জাহ্নবী কাপুর-এর কানস ২০২৫-এ উপস্থিতি শুধুমাত্র গ্ল্যামার নয়, বরং এটি ছিল এক সার্থক সাংস্কৃতিক ও আবেগঘন আত্মপ্রকাশ। তাঁর ব্যাকলেস সবুজ গাউন, আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতি এবং মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব মিলে তিনি প্রমাণ করেছেন—ভারতীয় শিল্প ও উত্তরাধিকার কিভাবে বিশ্বমঞ্চে জয়গান গাইতে পারে। কানস চলচ্চিত্র উৎসব-এর রূপালি গালিচায় এই পদচারণ এক নতুন বলিউড অধ্যায়ের সূচনা, যেখানে ফ্যাশন আর আবেগ সমানভাবে কথা বলে।