জম্মুর রিয়াসি ও ডোডা জেলায় মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ইতিহাসসৃষ্ট বর্ষণে অন্তত ৪১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই বৈষ্ণো দেবী তীর্থযাত্রীরা, যারা কাটরার পথে যাত্রা করছিলেন। ২৪ ঘণ্টায় জম্মু প্রদেশে রেকর্ড সংখ্যক বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা মৃত্যু ও ধ্বংসের পথচিহ্ন রেখে গেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে আর্দকুয়ারির পথে ক্লাউডবার্স্টের ফলে ৩৪ জন নিহত হন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ বৃষ্টিপাতের সঙ্গে পাহাড়ি ঢলে ভক্তরা অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদের মুখোমুখি হন। এর আগে ডোডা জেলার পাহাড়ি এলাকায় ভোরে বন্যার কারণে চারজন প্রাণ হারান।
জম্মুর গভার্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল–এর মর্গে আনা ৩৪টি দেহের মধ্যে ১৮ জন শনাক্ত হয়েছেন। এই নিহতরা মূলত পাঞ্জাব, দিল্লি, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা।
গল্পের মূল তথ্য (Story Highlights)
আর্দকুয়ারির পথে ক্লাউডবার্স্টে ৩৪ জন নিহত।
ডোডা জেলায় ভোরে বন্যায় চারজন মারা যায়।
নিহতদের মধ্যে ১৮ জন শনাক্ত: পাঞ্জাব, দিল্লি, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তর প্রদেশ।
Lt Governor Manoj Sinha কাটরায় আহতদের খোঁজ নিয়েছেন।
যাত্রা মঙ্গলবার স্থগিত; নিহতদের পরিবারের জন্য ৯ লক্ষ টাকা প্রণোদনা ঘোষণা।
Lt Governor Manoj Sinha–এর বক্তব্য
জম্মুর লেফটেন্যান্ট গভর্নর Manoj Sinha, যিনি শ্রী মাতা বৈষ্ণো দেবী মন্দির বোর্ড–এর চেয়ারম্যানও, কাটরায় আহত ১৩ যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে বলেন:
“একটি ক্লাউডবার্স্ট হয়েছে এবং আর্দকুয়ারিতে ভক্তরা এর কবলে পড়েছেন। এটি একটি হৃদয়বিদারক প্রাকৃতিক বিপর্যয়, যেখানে আমরা মূল্যবান জীবন হারিয়েছি। আমরা তাদের পরিবারের জন্য সমস্ত ধরনের সহায়তা প্রদান করছি।”
তিনি আরও ঘোষণা করেন, বর্ষণের কারণে যাত্রা স্থগিত রাখা হয়েছে এবং নিহতদের পরিবারের জন্য ৯ লক্ষ টাকা প্রণোদনা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন
জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ নিহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করে প্রশ্ন তুলেছেন কেন সরকারী কর্মকর্তারা আবহাওয়ার সতর্কতা থাকলেও বৈষ্ণো দেবী তীর্থযাত্রীরা–কে ট্র্যাকে চলতে বাধা দেননি।
“যখন আবহাওয়ার সতর্কতা আমাদের কাছে পৌঁছেছে, তখন কি আমরা কিছু ব্যবস্থা নি জীবন বাঁচানোর জন্য? কেন মানুষগুলো ট্র্যাকে ছিলেন? কেন নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা হয়নি? বিষয়টি পরে আলোচনা করা হবে। আমরা মূল্যবান জীবন হারানোর জন্য গভীর দুঃখিত।”
ধ্বংস এবং উদ্ধার অভিযান
বর্ষণের ফলে জম্মুর বিভিন্ন অংশে বন্যার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয় এবং ১১ ও ১২ শ্রেণির পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। শুধুমাত্র মঙ্গলবারই জম্মুতে ২৪ ঘণ্টায় ৩৮০ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এটি ১৯১০ সালের পর সর্বোচ্চ রেকর্ড। এর আগের রেকর্ড ছিল ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৮৮ সালে ২৭০.৪ মিমি।
বন্যায় নিম্নাঞ্চলীয় এলাকার মানুষদের উদ্ধার করতে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (NDRF), স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (SDRF), পুলিশ ও সেনাবাহিনী নৌকা ব্যবহার করে উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে। ৫,০০০ এর বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী ২২ জন CRPF সদস্য ও ৩ জন নাগরিককে মাধোপুর হেডওয়ার্কস এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে।
উপত্যকায় সতর্কতা
শ্রীনগরে ঝিলাম নদীর জলস্তর বিপদের কাছাকাছি পৌঁছেছে। কাশ্মীরের ডিভিশনাল কমিশনার অংশুল গার্গ বলেছেন:
“সকল সহকারী কমিশনার মাটিতে রয়েছেন। সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ দল পানি স্তর পর্যবেক্ষণ করছে।”
উপত্যকায় বৃহস্পতিবার সমস্ত স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও ল্যান্ডস্লাইডের কারণে প্রধান সড়কে অপটিক্যাল ফাইবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মোবাইল ও ওয়্যারড ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে।
জম্মুতে ইতিহাসসৃষ্ট বর্ষণ ও ধসের ফলে বহু জীবন নষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে বৈষ্ণো দেবী তীর্থযাত্রীরা–এর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। Lt Governor Manoj Sinha–এর তৎপরতার কারণে আহতদের যথাযথ চিকিৎসা ও নিহতদের পরিবারের সহায়তা নিশ্চিত করা হয়েছে। কাত্রা ও আর্দকুয়ারি অঞ্চলের পরিস্থিতি এখনও মনিটর করা হচ্ছে। প্রশাসনিক তৎপরতা এবং সচেতনতার মাধ্যমে ভবিষ্যতে এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে জম্মু–র মানুষ এবং বৈষ্ণো দেবী তীর্থযাত্রীরা–কে নিরাপদ রাখা জরুরি।
আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো