কলকাতায় রবিবার রাজ্য-প্রযোজিত Durga Puja Carnival আয়োজনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। একদিকে উত্তরবঙ্গ জুড়ে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ২৩ জনের প্রাণহানি, অন্যদিকে মহানগরে উজ্জ্বল আলো আর সুরের কার্নিভাল—এই বৈপরীত্য নিয়েই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, দুর্যোগের সময় রাজ্য সরকার সহমর্মিতার চেয়ে প্রদর্শনীকে প্রাধান্য দিয়েছে।
STORY HIGHLIGHTS (READ BOX)
- উত্তরবঙ্গে বন্যা ও ভূমিধসে মৃত অন্তত ২৩ জন
- কলকাতায় Durga Puja Carnival ঘিরে বিরোধীদের ক্ষোভ
- মুখ্যমন্ত্রী Mamata Banerjee-র দাবি, বাতিল করলে খারাপ দেখাত
- সোমবার দুপুর ৩টার মধ্যে উত্তরবঙ্গ পৌঁছবেন মুখ্যমন্ত্রী
- বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে সরব
মুখ্যমন্ত্রী Mamata Banerjee রবিবার নিজেই এই কার্নিভালে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন,
“প্রায় ১০০টি পুজো কমিটি অংশ নিয়েছে এই Durga Puja Carnival-এ। আমি না গেলে খারাপ লাগত। দুর্গতদের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি ও মুখ্যসচিব সোমবার দুপুর তিনটের মধ্যে উত্তরবঙ্গে পৌঁছে যাব।”
কিন্তু বিরোধীরা এই বক্তব্য মানতে রাজি নয়। বিজেপির বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ করে বলেন,
“ওনার কাছে আগে আসে কার্নিভাল, পরে জরুরি। এত বড় বিপর্যয়ের সময় তিনি দার্জিলিং যাওয়া এড়িয়ে শুধু কার্নিভালে যোগ দিলেন। এটা কি জরুরি ছিল?”
তিনি সামাজিক মাধ্যমে আরও প্রশ্ন তোলেন,
“প্রশাসনিক চাপে আয়োজন করা এই দেরি হওয়া ইমারশন র্যালিকে কিভাবে Tradition of Bengal বলা যায়? এবারে দোষ চাপানোর জন্য কোনো DVC নেই। তাহলে কি বলবেন বিপর্যয় এসেছে চিন, ভুটান বা নেপাল থেকে?”
অধিকারীর অভিযোগ,
“Mamata Banerjee বোঝেন না কোনটা অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। কলকাতার জলাবদ্ধতায় যখন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মানুষ মারা গিয়েছিল, তখনও তিনি পুজো উদ্বোধনে ব্যস্ত ছিলেন। এখন আবার Durga Puja Carnival। তিনি চান মানুষ বিভ্রান্ত থাকুক, যাতে প্রশ্ন না ওঠে।”
সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিমও তীব্র সমালোচনা করে বলেন,
“উত্তরবঙ্গে যখন মৃত্যুমিছিল চলছে, তখন কলকাতায় এই কার্নিভাল আয়োজন অসংবেদনশীলতার প্রতিফলন। এটি নিছক রুচিহীন।”
তিনি জানান, সিপিএম-এর রেড ভলান্টিয়ার্স এবং কর্মীরা দুর্গতদের সাহায্যে ইতিমধ্যেই কাজ করছে।
অন্যদিকে, কংগ্রেসও একই সুর তোলে। রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি শুভাঙ্কর সরকার বলেন,
“উত্তরবঙ্গের মানুষ বরাবরই অবহেলিত বলে মনে করে এসেছে। আজ তা আবার প্রমাণিত। মৃতদেহ ভেসে যাচ্ছে জলে আর কলকাতায় আমরা উদ্যাপন করছি। আমরা Durga Puja Carnival-এর বিরুদ্ধে নই, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে অবিলম্বে উত্তরবঙ্গে যাওয়া উচিত ছিল।”
তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলেন যে, বিজেপি-শাসিত কেন্দ্র দার্জিলিংয়ের এই বিপর্যয়কে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করতে দেরি করছে।
এদিকে, শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিয়ে বলেন,
“মুখ্যমন্ত্রী Mamata Banerjee তাঁর দায়িত্ব সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন। রবিবার তিনি শারীরিকভাবে উত্তরবঙ্গে না থাকলেও সবকিছু তিনি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। সোমবার তিনি উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন। বিরোধীদের উচিত দুর্গতদের সাহায্যে নামা, উপদেশ দেওয়া নয়।”
রাজ্যের একদিকে চলেছে Durga Puja Carnival-এর রঙিন উৎসব, অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতলে চলছে মৃত্যু ও আতঙ্কের ছায়া। এই বৈপরীত্য নিয়েই রাজনৈতিক তরজা এখন চরমে।
সব মিলিয়ে স্পষ্ট হচ্ছে, উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ পরিস্থিতি আর কলকাতার Durga Puja Carnival একইসঙ্গে রাজ্যের রাজনৈতিক আঙিনায় প্রবল আলোড়ন তুলেছে। একদিকে বিরোধীরা অভিযোগ করছে যে Mamata Banerjee দুর্যোগ মোকাবিলার চেয়ে উৎসবের জৌলুসে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন, অন্যদিকে শাসক দল দাবি করছে মুখ্যমন্ত্রী সব পরিস্থিতি নজরে রেখেই কাজ করছেন এবং প্রতিশ্রুতি মতো দুর্গত এলাকায় যাচ্ছেন। এখন দেখার বিষয়, উত্তরবঙ্গের মানুষের কাছে কার বার্তা বিশ্বাসযোগ্য হয়—উৎসবের রঙিন ছবি নাকি দ্রুত সহায়তার আশ্বাস।
আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো