পশ্চিমবঙ্গে আবারও চোখ রাঙাচ্ছে কোভিড সংক্রমণ। মোট ৭৪৭ জন আক্রান্ত ও এক জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে সোমবার সকালে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্যে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, বরং সতর্ক থাকা জরুরি। সরকারি হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো যথেষ্ট মজবুত ও প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, সরকার অতীতেও পাশে ছিল, বর্তমানেও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। রাজ্যের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন—এই মুহূর্তে সংক্রমণ বাড়লেও তা ভয় পাওয়ার মতো নয়, কিন্তু গা-ছাড়া মনোভাব চলবে না।
📌 STORY HIGHLIGHTS
– পশ্চিমবঙ্গে সক্রিয় কোভিড আক্রান্ত ৭৪৭ জন
– এক জনের মৃত্যু রিপোর্ট হয়েছে
– সরকারি হাসপাতালে পরিকাঠামো প্রস্তুত
– মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস: আতঙ্ক নয়, সতর্কতাই মুখ্য
– ফুসফুস ও বুকে সংক্রমণ থাকলে বেশি সতর্কতার বার্তা
রাজ্যের মানুষকে আশ্বস্ত করে এবং একই সঙ্গে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, করোনা নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। রাজ্যের প্রস্তুতি নিয়ে সোমবার নবান্নে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকে স্বাস্থ্য দপ্তরের শীর্ষ কর্তারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সরকারের মুখ্যসচিব মনোজ পান্ত, কলকাতা পুরসভার প্রতিনিধি ও পঞ্চায়েত দপ্তরের আধিকারিকরা।
রাজ্যে বর্তমানে সক্রিয় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪৭, এবং এক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই, তবে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন,
“সরকারি হাসপাতালগুলিতে যথাযথ পরিকাঠামো রয়েছে। আমরা আগে যেমন পাশে ছিলাম, এখনও আছি, ভবিষ্যতেও থাকব।”
বৈঠক শেষে তিনি জানান,
“সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। তবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।”
মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে বহু মানুষ সাধারণ কাশি-সর্দির সমস্যায় ভুগছেন।
“এটা একধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ছাড়া কিছু নয়। বর্ষাকাল বা শীতকাল এলেই সর্দি-কাশি দেখা যায়, সেটাই এখন হচ্ছে। তবে এখন যেহেতু আমরা অতীতের অভিজ্ঞতা নিয়ে এগোচ্ছি, তাই কাশি-সর্দির ক্ষেত্রেও আমরা কোভিড হিসেবে দেখে প্রাথমিক পদক্ষেপ নিচ্ছি।”
বিশেষ করে বয়স্ক মানুষ, ফুসফুস বা বুকে দীর্ঘদিনের সংক্রমণ যাঁদের রয়েছে বা যাঁদের শরীরে অন্য কোনও সহ-রোগ (comorbidity) রয়েছে, তাঁদের আরও বেশি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন,
“আশা করি, অতীতের মতো ফের বড় পরিসরে কোভিড ছড়িয়ে পড়বে না। তবে আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। অহেতুক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হলে, পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। সতর্কতা ছাড়া এই মুহূর্তে কোনও বড় পদক্ষেপের প্রয়োজন নেই।”
সরকারি স্তরে সমস্ত হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পুরসভাগুলিকে পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, “যদি প্রয়োজনে কিছু করতে হয়, আমরা সবরকমভাবে প্রস্তুত রয়েছি। তবে এখন রাজ্যের পরিস্থিতি স্থিতিশীল।”
রাজ্যের সাধারণ মানুষদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, নিজের শরীরের খেয়াল রাখুন এবং যেকোনও উপসর্গ দেখা দিলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বতোভাবে সচেষ্ট রয়েছে, তবুও সচেতনতা ছাড়া কোনও মহামারীকে আটকানো যায় না।
শেষ কথা,
“আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি, কারণ পরিস্থিতি মোটেও খারাপ নয়। এটি এক ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ছাড়া কিছু নয়। বর্ষাকাল এবং শীতকালে কাশি-সর্দি দেখা যায়, যা একেবারেই স্বাভাবিক ঘটনা।”
বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী তা উদ্বেগজনক নয়। রাজ্য প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে এবং প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো ও পরিষেবা যথাযথভাবে প্রস্তুত রয়েছে। তাই এখন প্রয়োজন গুজবে কান না দিয়ে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং নিজের ও আশপাশের মানুষের প্রতি দায়িত্বশীল থাকা। সতর্কতা ও সচেতনতাই ভবিষ্যতের সুরক্ষার চাবিকাঠি।