বিকাশ ভবন, যেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা নীতির মূল হৃদয় স্পন্দিত, আজ এক অদ্ভুত নীরবতার আবেশে আবৃত। সরকারি কর্মীদের উপস্থিতি কমে যাওয়া এবং শিক্ষকদের দীর্ঘ দিনের প্রতিবাদের ঢেউ এই প্রাচীন প্রশাসনিক গূড়ের গোপন দ্বন্দ্বকে তুলে ধরেছে। ‘যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ’ শুধু একটি আন্দোলন নয়, বরং একটি সংকট ও প্রত্যাশার প্রতিচ্ছবি, যা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্তৃপক্ষকে জোরালোভাবে বিবেচনার পথে পরিচালিত করছে। এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কেন্দ্রে বিকাশ ভবন—শিক্ষা ব্যবস্থার এক অদৃশ্য যুদ্ধক্ষেত্র।
সূচিপত্র
Toggleবিকাশ ভবনে শিক্ষকদের প্রতিবাদের সূচনা
ইতিহাসের ধারায় ‘যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ’ – এক বিস্ফোরণ আগুনের
বিকাশ ভবন বহু দশক ধরে পশ্চিমবঙ্গ সরকার-এর শিক্ষা প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু।
২০২৫ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) নিয়োগ দুর্নীতির জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে এক ভয়াবহ সত্য—অযোগ্যদের চাকরি, আর যোগ্য শিক্ষকদের বঞ্চনা।
এই পরিস্থিতিতে প্রায় ২৫,৭৫৩ জন চাকরি হারানো শিক্ষক একসঙ্গে রাস্তায় নামেন, তাঁদের প্রতিবাদের কেন্দ্রে বিকাশ ভবন।
“এই আন্দোলন শুধুই চাকরির জন্য নয়, আত্মমর্যাদার জন্য” — এক বঞ্চিত শিক্ষকের তীক্ষ্ণ কণ্ঠ।
প্রথম ধাক্কা: বিকাশ ভবনে প্রবেশের চেষ্টায় উত্তেজনা
১৫ মে, ২০২৫—সকাল থেকেই বিকাশ ভবন চত্বর উত্তপ্ত।
যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ ভেঙে দেয় পুলিশের ব্যারিকেড, ছিঁড়ে ফেলে প্রশাসনের নির্লিপ্ত মুখোশ।
পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, লাঠিচার্জ ও গ্রেপ্তারের মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার ছিল দৃশ্যত নীরব।
ব্যতিক্রমী তথ্য: প্রতিবাদকারীরা সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়েছেন একটি মাত্র বোতল জলের উপর নির্ভর করে।
সামাজিক মাধ্যমে আগুন ছড়ানো: বিকাশ ভবনের পরিস্থিতি ভাইরাল
বিকাশ ভবন চত্বর থেকে প্রতিবাদকারীদের লাইভ ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউব-এ।
হ্যাশট্যাগ #যোগ্য_শিক্ষকদের_প্রতিবাদ ট্রেন্ড করতে থাকে ৪৮ ঘণ্টা একটানা।
জনগণের মধ্যে প্রশ্ন: পশ্চিমবঙ্গ সরকার কী সত্যিই এই অসন্তোষকে গুরুত্ব দিচ্ছে?
বিকাশ ভবনের ভবিষ্যৎ মুখোমুখি সংকটে
যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ শুধুই এক দিনের আন্দোলন নয়—এটা এখন এক ধারাবাহিক চাপের কাহিনি।
বিকাশ ভবন এখন শুধু প্রশাসনিক ভবন নয়—এটা এক প্রতীক, যেখানে সরকার ও জনগণের মুখোমুখি সংঘর্ষ চলছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার-এর নির্লিপ্ততা শিক্ষিত সমাজে তৈরি করছে এক গভীর অবিশ্বাস।
প্রশাসনিক ঢিলেমি ও নৈতিক প্রশ্ন
প্রতিবাদের মধ্যেই সামনে আসে বিস্ময়কর তথ্য—বিকাশ ভবনে ১৬ মে তারিখে ৩০%-এর বেশি কর্মী অনুপস্থিত ছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার যদিও দাবি করে “নিয়মিত কর্মব্যবস্থা চলছে”, বাস্তব বলছে ভিন্ন কথা।
প্রতিটি দরজায় পুলিশ, প্রতিটি ফাইলে ধূলি, আর প্রতিটি যোগ্য শিক্ষকের হৃদয়ে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ।
বিকাশ ভবন এখন আর শুধু এক প্রশাসনিক ঠিকানা নয়—এটা এখন যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ-এর এক জীবন্ত প্রতীক। আর পশ্চিমবঙ্গ সরকার যদি সময় থাকতে না শোনে, তবে এই আন্দোলন হতে পারে এক নতুন শিক্ষাবিপ্লবের সূচনা।
বিকাশ ভবনে কর্মীদের উপস্থিতি কমে যাওয়া
হঠাৎ করেই ফাঁকা হয়ে গেল বিকাশ ভবন!
১৬ মে, ২০২৫—যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ-এর ঠিক পরদিন বিকাশ ভবনে কর্মীদের উপস্থিতি কমে যাওয়া এক চমকপ্রদ ঘটনা।
এই দিনটিতে, সরকারি হিসেব অনুযায়ী, ৩০ শতাংশের বেশি কর্মী অনুপস্থিত ছিলেন।
যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের অনেকেই সময়ের আগেই অফিস ছেড়ে চলে যান—যার ব্যাখ্যা প্রশাসন দিতে পারেনি।
অজানা তথ্য: সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বিকাশ ভবনে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত কর্মী উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ১৬ মে-তে অধিকাংশ টেবিল ছিল ফাঁকা।
‘আন্দোলনের ভয়’ না কি ‘প্রশাসনিক অসহায়তা’?
পশ্চিমবঙ্গ সরকার যদিও দাবি করেছে যে এটি “সাধারণ অনুপস্থিতি”, কিন্তু বাস্তব অনেক গভীর।
যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ-এর চাপেই কি বিকাশ ভবনে কর্মীদের উপস্থিতি কমে যাওয়া?
অনেক কর্মী নীরবে স্বীকার করেছেন—“এই পরিস্থিতিতে অফিসে এসে বসে থাকা মানে নিজেকে প্রশ্নের মুখে ফেলা।”
ফাঁকা করিডর, বন্ধ দরজা—বিকাশ ভবনের গোপন চিত্র
১৬ মে, সকাল ১১টা: সাংবাদিকেরা যখন বিকাশ ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন, বেশিরভাগ দপ্তরের দরজা ছিল তালাবদ্ধ।
স্টাফ রেজিস্টারে স্বাক্ষরের সংখ্যা ছিল আগের দিনের তুলনায় ৪৩% কম।
যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ-এর অভিঘাত এতটাই প্রবল ছিল যে কর্মচারীরা ‘সাময়িক অসুস্থতা’ বা ‘ব্যক্তিগত কারণ’-এর অজুহাতে ছুটি নেন।
বিকাশ ভবনে ভয়ের বাতাবরণ – এক প্রহসনের প্রতিচ্ছবি
বিকাশ ভবন এখন শুধু প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের জায়গা নয়, এক মানসিক আতঙ্কের কেন্দ্র।
যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ যে স্তরে পৌঁছেছে, তাতে অনেক সরকারি কর্মী নিজেকে “লক্ষ্যবস্তু” হিসেবে ভাবছেন।
এমনকি, অনেক উচ্চপদস্থ কর্মী “মিটিং”-এর নামে বাইরে থাকছেন, যা আদতে এক ধরণের নীরব প্রতিবাদ বা আত্মরক্ষা।
তথ্যসূত্র: বিকাশ ভবনের ভিতরে কাজ করা এক জুনিয়র অফিসার স্বীকার করেছেন—“আমরা জানি, এই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার।”
বিকাশ ভবনে কর্মীদের উপস্থিতি কমে যাওয়া: প্রশাসনিক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি
পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই ঘটনার ব্যাখ্যায় স্পষ্টতা আনতে ব্যর্থ হয়েছে।
সরকারিভাবে কোনও তদন্ত বা উপযুক্ত কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি।
যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ যে শুধুই বাইরের আন্দোলন নয়, তা বোঝা গেল বিকাশ ভবনের ভিতরের এই অদ্ভুত নীরবতায়।
বিকাশ ভবনে কর্মীদের উপস্থিতি কমে যাওয়া নিছক একটি পরিসংখ্যান নয়, এটি এক গভীর সংকেত—যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ এবার প্রশাসনের ভিতরে ঢুকে গেছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার যদি এই বার্তাকে অবহেলা করে, তবে আগামী দিনে বিকাশ ভবন আর শুধু ইট-পাথরের স্থাপনা থাকবে না, হয়ে উঠবে প্রতিরোধের ক্যালেন্ডারে এক কালো পাতার নাম।
শিক্ষকদের দাবিসমূহ
বহুদিনের অবহেলা: দাবির শিকড় কোথায়?
যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ শুধু সাম্প্রতিক নয়—এর গোড়া ২০১৪ সালের টেট (TET) পরীক্ষার পর থেকেই।
প্রায় ১১,০০০ সফল পরীক্ষার্থী পশ্চিমবঙ্গ সরকার-এর কাছে নিয়োগপত্র চেয়ে বছরের পর বছর আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
এই শিক্ষকদের দাবিসমূহ-এর মধ্যে অন্যতম ছিল:
দ্রুত নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা
রাজ্য স্তরে নিরপেক্ষ বোর্ড গঠন
বিকাশ ভবন থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত দলিল প্রকাশে বিলম্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
🔍 অজানা তথ্য: RTI-তে প্রকাশ, গত ৮ বছরে মাত্র ২৬% টেট-যোগ্য প্রার্থীকে চাকরি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
দাবির ভাষা যখন চোখে জল আর পায়ে ধুলো
যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ-এ অংশ নেওয়া অনেকেই দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তায় বসে আছেন—বৃষ্টিতে, রোদে, এমনকি রোগে আক্রান্ত হয়েও।
অনেকের মতে, এটি শুধুই চাকরির লড়াই নয়, এটি “সম্মানের অধিকার আদায়”।
শিক্ষকদের দাবিসমূহ:
যে টেট পাস করেছে, তার নিয়োগ অবিলম্বে হোক
নিয়োগে ‘তালিকা ঝুলিয়ে রাখা’র প্রবণতা বন্ধ হোক
বিকাশ ভবন যেন প্রতিনিয়ত তালা-ঝুলন্ত আতঙ্কের প্রতীক না হয়ে ওঠে
🎓 প্রতীকী তথ্য: একজন আন্দোলনকারী প্রার্থী নিজের পোস্টারে লিখেছিলেন—
“টেট পাশ করেছি, মায়ের ওষুধের খরচ চালাতে পারিনি।”
দাবির মুখোমুখি প্রশাসন: নীরবতা না কি প্রতিরোধ?
পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা দিতে পারেনি নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে।
বিকাশ ভবন হয়ে উঠেছে “শুধু প্রস্তাব জমার ঠিকানা”, বাস্তবায়নের নয়।
একাধিক বৈঠক হলেও যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ থেকে সরে আসেননি আন্দোলনকারীরা।
সরকারি প্রতিক্রিয়ার ত্রুটি:
প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বাস্তবায়নে বিলম্ব
শিক্ষকদের সঙ্গে মুখোমুখি সংলাপের অভাব
নিয়োগপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা রক্ষায় প্রশাসনিক অনীহা
দাবির গায়ে রাজনৈতিক তকমা?
যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ-কে কিছু মহল রাজনৈতিক চক্রান্ত বলেও তুলে ধরছে।
কিন্তু বাস্তব বলছে—এই শিক্ষকদের দাবিসমূহ একেবারে ভিত্তিসম্পন্ন ও ন্যায়সঙ্গত।
শিক্ষাক্ষেত্রে সংকটকালীন সময়ে এই দাবিগুলো মানা না হলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার-এর দায় অস্বীকার করা যাবে না।
🔎 সংবেদনশীল বিশ্লেষণ: আন্দোলনকারীদের মতে, “চাকরি চাই মানেই রাজনীতি নয়, বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদই রাজনীতি।”
যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ আর শুধুই মিছিল নয়, তা হয়ে উঠেছে এক কণ্ঠহীন শিক্ষিত তরুণ সমাজের জ্বলন্ত আবেদন।
শিক্ষকদের দাবিসমূহ অস্বীকার করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যদি নীরব থাকে, তাহলে বিকাশ ভবন-এর দেয়ালে একদিন লেখা থাকবে—“আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ব্যর্থতার নাম ছিল নীরবতা।”
এখন সময় সিদ্ধান্তের, নয়তো ইতিহাস রচনা করবে শিক্ষার্থীরা, কলমের কালি নয়, বঞ্চনার ছাই দিয়ে।
বিকাশ ভবনের ভবিষ্যৎ
বিকাশ ভবন: কাগজে পরিকল্পনা, বাস্তবে বিষণ্নতা
বিকাশ ভবন, একদা পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা-পরিকাঠামোর প্রাণকেন্দ্র, আজ ক্রমশ পরিণত হচ্ছে একটি “প্রতিবাদের প্রতীক” এ।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার-এর শিক্ষা নীতির সিদ্ধান্তমূলক কার্যনির্বাহী কেন্দ্র হওয়ার বদলে আজ তা নিয়োগে জট, ফাইল ঠেলাঠেলি আর প্রশাসনিক অসাড়তার মূর্ত রূপ।
🗂️ তথ্যসূত্র অনুযায়ী, গত এক বছরে ৭৬% ফাইল এখনও নিষ্পত্তিহীন, যার মধ্যে ৩৬% সরাসরি যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ-সংশ্লিষ্ট।
ভবিষ্যতের ছায়া: বিকাশ ভবনের ভিতরে কী হতে পারে?
প্রশাসনিক সংস্কার: শুধু মুখে নয়, কাজে চাই কাঠামোগত পরিবর্তন
বিকাশ ভবনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে কতটা দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করা যায় তার উপর।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার চাইলে স্বতন্ত্র শিক্ষা নিয়োগ কমিশন গঠন করে যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ-এর শেষ টানতে পারে।
ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন: ফাইল নয়, ফাইবারে সমাধান
বিকাশ ভবন-এর অভ্যন্তরে আজও বেশিরভাগ কাজ হয় ম্যানুয়াল ফাইলিং সিস্টেমে।
একটি পুরোপুরি ডিজিটাল ট্র্যাকিং পোর্টাল চালু হলে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগের স্বচ্ছতা আসতে পারে।
💡 অপ্রচলিত প্রস্তাব: প্রতিটি যোগ্য শিক্ষকের নিয়োগ ফাইল একটি “ওপেন ট্র্যাকিং সিস্টেম”-এ রাখা যেতে পারে যা বিকাশ ভবন-এর কাজের গতিশীলতা বাড়াবে।
বিকাশ ভবনের গণছবি: ভবিষ্যৎ মুখে প্রতিবাদের মুখাবয়ব?
যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ-এর নিয়মিত ভিড় বিকাশ ভবন-এর সামনে এখন প্রশাসনিক অস্বস্তির কারণ।
ভবিষ্যতে এই ভবন রয়ে যাবে শুধুই অফিস ভবন, নাকি শিক্ষার রাজনৈতিক রণক্ষেত্র—তা নির্ভর করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার-এর পরবর্তী পদক্ষেপের উপর।
বিকাশ ভবনের কর্মীদের মনোভাব
TOI-এর রিপোর্টে প্রকাশ, বিকাশ ভবন-এ কর্মীদের উপস্থিতির হার প্রতিবাদের পরদিনই ৩২% কমে গিয়েছে।
এটি শুধুই নিরাপত্তার অভাব নয়, বরং “সিস্টেমিক ইনসিকিউরিটি”-র প্রতিফলন, যা ভবনের ভবিষ্যতের জন্য উদ্বেগজনক।
বিকাশ ভবনের ভবিষ্যৎ: স্বপ্ন না স্মারক?
যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ যতদিন চলবে, ততদিন বিকাশ ভবন থাকবে নজরে, প্রশ্নের মুখে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার যদি নিস্ক্রিয় থাকে, তবে এই ভবন হয়ে উঠবে ব্যর্থ প্রতিশ্রুতির জাদুঘর।
আর যদি সরকার সময়োচিত পদক্ষেপ নেয়, তাহলে বিকাশ ভবনের ভবিষ্যৎ হতে পারে রাজ্যের শিক্ষানীতির নবযাত্রার সূচনা।
🧭 সতর্ক ইঙ্গিত: ভবিষ্যতের ইতিহাস রচিত হবে বা বিকৃত হবে, সেটি ঠিক করবে বিকাশ ভবন-এর প্রতিটি দেরি হওয়া ফাইল।
বিকাশ ভবনের ভবিষ্যৎ শুধুই ভবনের গঠন বা কর্মীসংখ্যা নয়, এটি একটি ভাবনার প্রতীক।
যেখানে যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ-এর প্রতিধ্বনি আজ ছড়িয়ে পড়ছে গোটা রাজ্যে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার-এর উচিত নিরবতা নয়, দায়িত্ব গ্রহণ।
নইলে ভবিষ্যতের ইতিহাস বইয়ে লেখা থাকবে—“একদা শিক্ষার দুর্গ ছিল, পরে রইল প্রতিক্রিয়াহীন এক কাঠামো—বিকাশ ভবন”।
বিকাশ ভবন এখন আর কেবল একটি প্রশাসনিক ভবন নয়, এটি পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থার বর্তমান সংকট ও যোগ্য শিক্ষকদের প্রতিবাদ-এর প্রতীক। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক নিয়োগে বিলম্ব, স্বচ্ছতার অভাব এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার-এর নিরবতা এক গভীর অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বিকাশ ভবনের ভবিষ্যৎ প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড়াবে। সময় এসেছে প্রশাসনের জবাবদিহি নিশ্চিত করে, প্রতিটি যোগ্য প্রার্থীর ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার। নইলে বিকাশ ভবন হয়ে উঠবে শিক্ষার নয়, বরং প্রতিহত সম্ভাবনার স্তব্ধ স্মারক।