বীরভূমের এসপি-কে সমন পাঠানো নিয়ে জাতীয় মহিলা কমিশনের পদক্ষেপ ঘিরে জমে উঠেছে আইনি লড়াই। অভিযোগ, তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল এক পুলিশ কর্তার সঙ্গে ফোনালাপে ব্যবহার করেছেন অশালীন ভাষা। কমিশনের হাজিরার নির্দেশকে কেন্দ্র করে এবার কলকাতা হাই কোর্টে পিটিশন দাখিলের অনুমতি পেলেন বীরভূমের এসপি। তাঁর অভিযোগ, চলমান তদন্তে অযথা হস্তক্ষেপ করছে কমিশন। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানিয়েছেন, শর্তসাপেক্ষে আগামীকাল শুনানি হতে পারে। প্রশাসনিক মর্যাদা বনাম সংবিধানিক দায়িত্ব—জটিলতার আবর্তে এবার নজর আদালতের রায়ে।

🔴 স্টোরি হাইলাইটস | STORY HIGHLIGHTS

  • অনুব্রত মণ্ডলের টেলিফোন কথোপকথনে কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগ

  • এনসিডব্লিউ-র সমনের বিরুদ্ধে এসপির হাই কোর্টে আবেদন

  • বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ আবেদন শুনতে সম্মত

  • এসপির আইনজীবীর দাবি, “তদন্তে হস্তক্ষেপ করছে কমিশন”

  • ১৪ জুলাই জাতীয় মহিলা কমিশনের সামনে হাজিরার নির্দেশ

প্রশাসনিক প্রেক্ষাপটে এক অনন্য মুহূর্তের সাক্ষী রইল কলকাতা হাই কোর্ট। রাজ্য রাজনীতির প্রভাবশালী নেতা অনুব্রত মণ্ডলের টেলিফোন কথোপকথনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত বিতর্কের আবহে এবার আইনি লড়াইয়ের দিকে এগোল বীরভূম জেলা পুলিশ। জাতীয় মহিলা কমিশনের (NCW) জারি করা সমনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হলেন বীরভূমের বর্তমান পুলিশ সুপার।

এই ঘটনার সূত্রপাত অনুব্রত মণ্ডল ও বোলপুর থানার অফিসার ইনচার্জের মধ্যে একটি টেলিফোন কথোপকথনের মাধ্যমে। অভিযোগ উঠেছে, সেই কথোপকথনে ব্যবহৃত ভাষা ছিল “অশালীন” ও “নারীবিদ্বেষমূলক”। বিষয়টি জাতীয় মহিলা কমিশনের নজরে আসার পর, তারা এসপিকে ব্যক্তিগতভাবে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয় ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে।

এই নির্দেশকে কেন্দ্র করেই মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে একটি গুরুত্বপূর্ণ আবেদন পেশ করা হয়। এসপির পক্ষে আইনজীবী বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে উপস্থিত হয়ে আবেদন জানান,
“কমিশনের এই পদক্ষেপ এক চলমান তদন্তের স্বাভাবিক গতিকে ব্যাহত করতে পারে”।

বিচারপতি ঘোষ ধৈর্য সহকারে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে জানান,
“আবেদনকারী যদি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে কপিটি পৌঁছে দেন, তবে আগামী বুধবার শুনানি গ্রহণযোগ্য হবে।”
এই ঘোষণার মধ্যেই ইঙ্গিত স্পষ্ট—বিচার বিভাগীয় নিরীক্ষণেই নির্ধারিত হবে কমিশনের আদেশের যথার্থতা।

আবেদনকারী পক্ষের আরও বক্তব্য,
“জাতীয় মহিলা কমিশন তাদের সাংবিধানিক সীমা ছাড়িয়ে তদন্তকারী সংস্থাকে প্রভাবিত করতে চাইছে। তারা চায়, নির্দিষ্ট ধারা সংযোজন করে কেস ডায়েরি তাদের কাছে পেশ করা হোক।”

এই আবহেই এসপির পক্ষে যুক্তি উঠে আসে যে, তদন্তে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা একপ্রকার চাপ প্রয়োগ এবং প্রশাসনিক স্বাধীনতার সঙ্গে সরাসরি সংঘাত।

উল্লেখ্য, অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। টেলিফোনে তাঁর কথাবার্তা ঘিরে যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে জেলা পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কমিশনের সদস্যরা। কমিশনের তরফে পূর্বে বলা হয়েছিল,
“এসপির জমা দেওয়া অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট আমাদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি।”

এই পরিস্থিতিতে হাই কোর্টের অনুমতি পাওয়া বীরভূম এসপির জন্য এক তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। এখন অপেক্ষা, বুধবারের শুনানিতে কোন পথে এগোয় এই আলোচিত মামলা। আদালতের নির্দেশই স্থির করবে, প্রশাসনিক প্রক্রিয়া এবং সাংবিধানিক সংস্থা—দু’য়ের ভারসাম্য কোথায় দাঁড়িয়ে থাকবে।

অনুব্রত মণ্ডলকে ঘিরে বিতর্কে প্রশাসনিক ও সংবিধানিক কর্তৃত্বের টানাপোড়েনে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিসর আরও জটিল হয়ে উঠছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের সমনের বিরুদ্ধে বীরভূম এসপির হাই কোর্টে পিটিশন দাখিলের অনুমতি নিঃসন্দেহে এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এখন নজর থাকবে বিচার বিভাগ কীভাবে এই সংঘাতের সুরাহা ঘটায় এবং তদন্তের ভবিষ্যৎ গতিপথ কোন দিকে মোড় নেয়। আদালতের পরবর্তী রায়ই নির্ধারণ করবে প্রশাসনিক স্বাধীনতা ও কমিশনের সাংবিধানিক ক্ষমতার ভারসাম্য।

আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো

Leave a Reply