West Bengal–এর দুর্গাপুরে ঘটনার পর দিন কেটে গেলেও Durgapur Rape Case ঘিরে চাঞ্চল্য কমেনি। একের পর এক নতুন তথ্য উঠে আসছে তদন্তে। মঙ্গলবার রাতে বড় মোড় নেয় মামলাটি, যখন মেডিকেল ছাত্রীর সহপাঠী—যিনি ঘটনার রাতে তার সঙ্গে ছিলেন—তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সূচিপত্র
ToggleStory Highlights (READ BOX):
Durgapur Rape Case-এ বড় মোড়—সহপাঠী গ্রেপ্তার
পুলিশ জানাল, গ্যাংরেপের প্রমাণ মেলেনি
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ছাত্রী ও তার বন্ধু একসঙ্গে কলেজে ফিরছেন
বন্ধুর বক্তব্যে অসংগতি, তদন্তে বাড়ছে প্রশ্ন
West Bengal পুলিশের দাবি—একজন মূল অভিযুক্ত
ঘটনার সূত্রপাত ১০ অক্টোবর সন্ধ্যায়। ২৩ বছর বয়সী ওই মেডিকেল ছাত্রী তার পুরুষ সহপাঠীর সঙ্গে ক্যাম্পাসের বাইরে একটি ধাবায় খেতে গিয়েছিলেন। তারপরই অন্ধকারে মুড়ে যায় সেই সন্ধ্যা। অভিযোগ অনুযায়ী, বন্ধুটি তাকে একা ফেলে চলে যায়, এবং এরপর ছাত্রীটিকে নিকটবর্তী জঙ্গলে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়।
ঘটনার পরই West Bengal পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্রাইম সিন পুনর্গঠন করে। ঠিক কয়েক ঘণ্টা পরই গ্রেপ্তার করা হয় সহপাঠীকে।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী সংবাদমাধ্যমে বলেন,
“তদন্ত ও মেডিকেল রিপোর্টে গ্যাংরেপের কোনও প্রমাণ নেই। আপাতত দেখা যাচ্ছে, একমাত্র একজন ব্যক্তিই যুক্ত থাকতে পারেন। ভিকটিমের বন্ধুও সন্দেহের বাইরে নয়।”
এই মন্তব্যের পরেই জল্পনা আরও বেড়ে যায়। কারণ, Durgapur Rape Case-এর শুরু থেকেই পুলিশ ছ’জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে ধরে তদন্ত চালাচ্ছিল।
ছাত্রীর বাবা অভিযোগে তার মেয়ের বন্ধুকে নাম উল্লেখ করেন এবং আরও পাঁচজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করেন। তিনি জানান,
“আমার মেয়ে তার বন্ধুর সঙ্গে বেরিয়েছিল, কিন্তু তার পর যা ঘটেছে তা কোনওভাবেই কাকতালীয় হতে পারে না। আমার বিশ্বাস, এটি পূর্বপরিকল্পিত।”
CCTV ফুটেজে দেখা গেল নতুন দিক
তদন্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে সিসিটিভি ফুটেজ। কলেজ কর্তৃপক্ষের দেওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ছাত্রী ও তার বন্ধু একসঙ্গে কলেজে ফিরে আসছেন।
এক পুলিশ আধিকারিক বলেন,
“যদি কোনও মহিলাকে জঙ্গলে টেনে নিয়ে গিয়ে পাঁচজন মিলে গ্যাংরেপ করে, তার প্রমাণ থাকবেই। কিন্তু ফুটেজে দেখা গেছে, ছাত্রী শান্তভাবে কলেজে ফিরছে, তার পোশাক অক্ষত ছিল। গেটে নিরাপত্তারক্ষীরাও ছিলেন, কিন্তু তিনি কারও কাছে সাহায্য চাননি।”
এই পর্যবেক্ষণেই স্পষ্ট হয়, তদন্তের দিক একেবারে বদলে গেছে। পুলিশের দাবি, এই ফুটেজই এখন Durgapur Rape Case-এর মূল ভিত্তি হয়ে উঠেছে।
সহপাঠীর বক্তব্যে অসংগতি
পুলিশ সূত্রে খবর, ছাত্রী এবং তার বন্ধুর বক্তব্যে একাধিক অসংগতি ধরা পড়েছে। সহপাঠীকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার উত্তর ছিল অসংলগ্ন। সিসিটিভি অনুযায়ী দেখা যায়, সন্ধ্যা ৭টা ৫৮ মিনিটে দু’জন একসঙ্গে ক্যাম্পাস ছাড়েন। রাত ৮টা ৪২-এ বন্ধুটি একা ফিরে আসে এবং কিছুক্ষণ পর আবার বাইরে যায়। ৯টা ২৯-এ দু’জনকে আবার একসঙ্গে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেখা যায়।
এক সিনিয়র পুলিশ অফিসার বলেন,
“প্রথম থেকেই আমরা তার বক্তব্যে ফাঁকফোকর খুঁজে পাচ্ছিলাম। তাই জিজ্ঞাসাবাদে অসংগতি ধরা পড়তেই গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
অন্য পাঁচজনও পুলিশের হেফাজতে
বন্ধুর গ্রেপ্তারের সঙ্গে সঙ্গে মোট ছয়জন এখন পুলিশের হেফাজতে। অন্য পাঁচজন—শেখ সাফিকুল, শেখ নাসিরুদ্দিন, আপু বাউরি (২১), ফিরদৌস শেখ (২৩) ও শেখ রিয়াজউদ্দিন (৩২)—তাদের Bharatiya Nyaya Sanhita–র ৭০(১) (gang rape) ও ৩(৫) (criminal act with common intention) ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, এদের কারও পূর্ব অপরাধের রেকর্ড নেই। ভিকটিমও তার অভিযোগে কারও নাম সরাসরি উল্লেখ করেননি। ফোন কল রেকর্ড ও পরিস্থিতিগত প্রমাণের ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে West Bengal পুলিশ।
অপেক্ষা এখন আদালতের নির্দেশের
তদন্ত এখন এক নতুন পথে এগোচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রীর জবানবন্দি এখনও ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে রেকর্ড হয়নি। ১১ অক্টোবর থেকে বারবার অনুরোধ করা হলেও তিনি তা করেননি। তদন্তের পরবর্তী ধাপ সেই জবানবন্দির উপর নির্ভর করছে।
Durgapur Rape Case–এর প্রতিটি দিক এখন আদালতের নজরে। West Bengal পুলিশ জানিয়েছে, “আমরা প্রতিটি প্রমাণ সতর্কভাবে যাচাই করছি। সত্য প্রকাশ পাবে।”
মোটের ওপর, একের পর এক নতুন তথ্য এবং ফুটেজের সূত্রে Durgapur Rape Case এখন পুরো রাজ্যের নজর কেড়েছে। পুলিশের বক্তব্যে যেমন স্পষ্টতা আসছে, তেমনি প্রশ্নও বাড়ছে—এই ঘটনার পেছনে আসলে কতজন, আর কার ভূমিকা কতটা গভীর?
Durgapur Rape Case এখন শুধুমাত্র একটি অপরাধ তদন্ত নয়, বরং West Bengal–এর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সমাজে নারীর নিরাপত্তা এবং বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থার এক বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ, অসংগতি পূর্ণ জবানবন্দি এবং পুলিশের ধাপে ধাপে তদন্ত—সব মিলিয়ে মামলাটি এখন এক জটিল পথে এগোচ্ছে। যদিও West Bengal Police জানিয়েছে যে সত্য উদ্ঘাটনের জন্য প্রতিটি প্রমাণ গভীরভাবে যাচাই করা হচ্ছে, তবে এই Durgapur Rape Case সমাজে নারী সুরক্ষা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। এখন সকলের দৃষ্টি আদালতের পরবর্তী নির্দেশ ও তদন্তের ফলাফলের দিকে।