পশ্চিমবঙ্গের শিল্পনগরী Durgapur, West Bengal-এ শুক্রবার (১০ অক্টোবর, ২০২৫) রাতে ঘটে যাওয়া এক নৃশংস গণধর্ষণের অভিযোগে রীতিমতো তোলপাড় রাজ্য। এক বেসরকারি মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এমবিবিএস পড়ুয়া তরুণী, যিনি Odisha রাজ্যের বাসিন্দা, তাঁর উপর এই নির্মম অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই ছাত্রসমাজ থেকে রাজনৈতিক মহল—সবাই একসঙ্গে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে।

প্রধান সংক্ষিপ্ত তথ্য (STORY HIGHLIGHTS)

  • Odisha থেকে আগত এক মেডিকেল শিক্ষার্থীকে Durgapur-এর মেডিকেল কলেজের কাছে গণধর্ষণের অভিযোগ।

  • আক্রান্ত তরুণী দ্বিতীয় বর্ষের এমবিবিএস ছাত্রী; ঘটনা ঘটেছে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে।

  • তিনজন অভিযুক্ত গ্রেপ্তার, তদন্ত অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।

  • বিজেপি, সিপিএমOdisha মুখ্যমন্ত্রীর তরফে তীব্র রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া।

  • আক্রান্ত শিক্ষার্থী বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ও কাউন্সেলিং পাচ্ছেন।

ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাতে। ওই তরুণী তাঁর এক পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে কলেজ থেকে বেরিয়ে যান। পুলিশ সূত্রে খবর, কলেজ ক্যাম্পাসের কাছেই অজ্ঞাতপরিচয় কিছু দুষ্কৃতী তাঁদের পথ রোধ করে এবং তরুণীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

শনিবার সকালে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভিকটিমের medical examination সম্পন্ন হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ঘটনায় যুক্ত সন্দেহভাজনদের খোঁজে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চলছে।

ওই তরুণীর বাবার কণ্ঠে ক্ষোভ ও অসহায়তা স্পষ্ট—

“আমার মেয়ের এক বন্ধু ফোন করে জানায়, ওকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ওরা মোবাইল ফোন আর টাকা নিয়ে গেছে,” বলেন তিনি।
“যে বন্ধুটি সঙ্গে ছিল, সে কিছু করল না কেন? আমার মেয়েকে রক্ষা করতে পারল না কেন?”— প্রশ্ন তোলেন তিনি।

ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ ও উত্তেজনা

শনিবার সকাল থেকেই মেডিকেল কলেজ চত্বরে ছাত্রছাত্রীদের ভিড় জমে যায়। “আমাদের সহপাঠীর জন্য ন্যায় চাই,” এই দাবিতে ফেটে পড়ে তারা। এক শিক্ষার্থী বলেন—

“কলেজের বাইরে একজন মেয়ে নিরাপদ নয়, এটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে। প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।”

অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিতে তারা প্রিন্সিপালকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায়।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক অঙ্গনেও শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। বিজেপি রাজ্য নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল বলেন—

“আমরা লজ্জিত, মর্মাহত কিন্তু অবাক নই। কারণ এই ধরনের অপরাধ এখন প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে Durgapur, West Bengal সহ গোটা রাজ্যে। এটা প্রমাণ করছে, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা কতটা ভেঙে পড়েছে।”

বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন,

“West Bengal has turned into a nightmare for women.”

অন্যদিকে, সিপিএম রাজ্য সভাপতি মহম্মদ সেলিম জানান—

“আমরা আমাদের কর্মীদের হাসপাতালে পাঠিয়েছি যাতে কোনো প্রমাণ নষ্ট না হয় এবং তদন্তের দিক ঘোরানো না যায়।”

সরকারি প্রতিক্রিয়া ও প্রশাসনের আশ্বাস

নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পান্জা এই ঘটনাকে “অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক” বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন—

“ভিকটিমকে চিকিৎসা ও মানসিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে এই ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে দেখা ঠিক নয়। কিছু দল এই ধরনের ঘটনা রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে।”

শনিবারই জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যা অর্চনা মজুমদার হাসপাতালে গিয়ে আক্রান্ত তরুণীর সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁর চিকিৎসার অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ নেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—

“ভিকটিমের যন্ত্রণা আমাদেরও যন্ত্রণা। অপরাধীদের কেউই রেহাই পাবে না। দ্রুত তদন্ত এগোচ্ছে।”

পুলিশ আরও অনুরোধ করেছে যেন কেউ সামাজিক মাধ্যমে অযাচিত বা ভুয়ো তথ্য প্রচার না করে।

তদন্ত ও গ্রেপ্তার

রবিবার সকালে পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান,

“আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদে রয়েছেন। তদন্তের স্বার্থে এখনই তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।”

তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়েছে mobile tower dumping method ব্যবহার করে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই দুষ্কৃতীরা ভিকটিমের মোবাইল ফোন ব্যবহার করেই একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল।

ফরেনসিক দল ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। কলেজের আশপাশের এলাকায় একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে।

Odisha মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া ও আন্তঃরাজ্য উদ্বেগ

ঘটনার জেরে Odisha রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মজিহি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন—

“এই ঘটনা আমাদের রাজ্যের এক কন্যাকে নিয়ে ঘটেছে। আমি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে।”

এই মন্তব্যের পর আন্তঃরাজ্য প্রশাসনিক সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।

পটভূমি ও প্রেক্ষাপট

উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই ২০২৩ সালের NCRB রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে টানা চতুর্থবারের মতো কলকাতাকে দেশের “সবচেয়ে নিরাপদ শহর” ঘোষণা করা হয়। তৃণমূল নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের “দূরদর্শী নেতৃত্ব”-এর প্রশংসা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়েছিল।

তবে বাস্তব চিত্র কিছুটা ভিন্ন। গত এক বছরে West Bengal জুড়ে একাধিক ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা সামনে এসেছে। ২০২৪ সালের আগস্টে কলকাতার আর.জি. কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। এ ছাড়াও, ২০২৫ সালে দুটি কলেজ ক্যাম্পাস ও একটি সরকারি হাসপাতালে যৌন নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে।

এই প্রেক্ষাপটে দুর্গাপুরের medical student gang rape ঘটনার গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে।

রাজ্য প্রশাসন বলছে, দোষীরা শাস্তি পাবে—কিন্তু মানুষের মনে প্রশ্ন, কবে নিরাপদ হবে পশ্চিমবঙ্গের রাস্তাঘাট, কলেজ, হাসপাতাল? Durgapur, West Bengal-এর এই ঘটনা শুধু এক তরুণীর নয়, সমাজের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে। Odisha-র কন্যার ওপর এই নির্দয়তা আমাদের সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেয়—নারী সুরক্ষা এখন আর শুধু রাজনীতি নয়, এটা এক মানবিক দায়িত্ব।

আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো

Leave a Reply