শহরের রাস্তাঘাট ও ফুটপাথ জুড়ে বাঁশের ফ্রেমে টাঙানো হোর্ডিং ও ব্যানার এখন সর্বত্র চোখে পড়ছে। অথচ এ বছর Kolkata Municipal Corporation (KMC) যে নতুন Advertisement Policy প্রকাশ করেছে, সেখানে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে—অস্থায়ী বিজ্ঞাপন টাঙানো যাবে শুধুমাত্র দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে।
📌 STORY HIGHLIGHTS
Advertisement Policy অনুযায়ী বিজ্ঞাপন কেবল মহালয়ার সাত দিন আগে থেকে টাঙানো যাবে।
বিজয়া দশমীর সাত দিনের মধ্যে সব বিজ্ঞাপন সরাতে হবে।
সর্বোচ্চ উচ্চতা ২২ ফুট নির্ধারিত।
উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব কলকাতায় ইতিমধ্যেই উঠেছে বাঁশের ফ্রেম ও ডিজিটাল বিজ্ঞাপন।
শহরবাসীর অভিযোগ, Kolkata Municipal Corporation নিয়ম মানাচ্ছে না।
নীতিমালা বনাম বাস্তব ছবি
Advertisement Policy Regulations 2025 অনুযায়ী, অস্থায়ী বিজ্ঞাপন (চাই তা বিজ্ঞাপন সংস্থা বা পুজো কমিটি দ্বারা হোক) টাঙানো যাবে মহালয়ার সাত দিন আগে থেকে। এই বছর তারিখ পড়েছে ২১ সেপ্টেম্বর। বিজয়া দশমীর (২ অক্টোবর) সাত দিন পরের মধ্যে সমস্ত বিজ্ঞাপন সরিয়ে ফেলতে হবে।
কিন্তু শহরের বাস্তব ছবি একেবারেই আলাদা। দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের পাশে রাসবিহারী এভিনিউতে ইতিমধ্যেই ডিজিটাল বিজ্ঞাপন চালু হয়েছে। পূর্ব কলকাতার ইএম বাইপাসে চোখে পড়ছে একের পর এক অস্থায়ী হোর্ডিং। উত্তর কলকাতার ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ, এপিসি রোড, কলকাতা পুলিশ মিউজিয়ামের পাশে ও শোভাবাজার মেট্রোর সংলগ্ন এলাকায়ও ব্যানার টাঙানো হয়েছে। অনেক জায়গায় তো বাঁশের ফ্রেম পুরো ফুটপাত দখল করে বসেছে।
বাসিন্দাদের প্রতিক্রিয়া
রাসবিহারী এভিনিউতে লেক মলের কাছে এক বাসিন্দা জানান:
“বুধবার কিছু ব্যানার চোখে পড়েছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় আবার দেখলাম দেশপ্রিয় পার্কের সামনে স্ক্রিনে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন চলছে।”
হাজরার বাসিন্দা অজয় মিত্তল, যিনি ২০২২ সালে অনলাইনে একটি আবেদন করেছিলেন, বলেন:
“ইএম বাইপাসের ক্যাপ্টেন ভেরির কাছে যে হোর্ডিংগুলো উঠেছে, সেগুলো ২২ ফুটের অনেক বেশি উঁচু। অথচ Advertisement Policy অনুযায়ী এটিই সর্বোচ্চ সীমা।”
তিনি হতাশ গলায় বলেন:
“আগে কোনও নিয়ম ছিল না। যখন Kolkata Municipal Corporation নতুন নিয়ম বানাল, ভেবেছিলাম সমস্যা মিটবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, সবই শুধু কাগজে-কলমে।”
তিনি আরও যোগ করেন:
“একদিকে বলা হচ্ছে কিছু রাস্তা নো-হোর্ডিং জোন, অন্যদিকে নির্বিচারে ব্যানার ও হোর্ডিং উঠছে। দুর্গাপুজো যখন UNESCO থেকে intangible cultural heritage স্বীকৃতি পেয়েছে, তখন আমাদের উচিত শহরকে পরিষ্কার, সুরক্ষিত ও দৃষ্টিনন্দন রাখা।”
শোভাবাজারের এক স্থানীয় বাসিন্দার অভিমত:
“শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় থেকে ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ পর্যন্ত ফুটপাত জুড়ে বাঁশের ফ্রেমে ব্যানার টাঙানো হয়েছে। সাধারণ মানুষ হাঁটতেই পারছেন না।”
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
বিজ্ঞাপন দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়রাল কাউন্সিল সদস্য দেবাশিস কুমার জানান:
“Kolkata Municipal Corporation-এর কাছে এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে আমরা কিছু অস্থায়ী বিজ্ঞাপন সরিয়েছি।”
কিন্তু KMC-র এক আধিকারিক ভিন্ন দাবি করেন:
“এমন কোনও পদক্ষেপ সম্পর্কে আমি অবগত নই। আমরা শুধু বিজ্ঞাপন সংস্থাকে মৌখিকভাবে বলেছি এত আগে বিজ্ঞাপন টাঙানো যাবে না। বাকিটা তাদের বিবেচনার উপর নির্ভর করছে।”
এই অবস্থায় সাধারণ নাগরিকদের প্রশ্ন, যখন Advertisement Policy স্পষ্টভাবে নিয়ম তৈরি করেছে, তখন Kolkata Municipal Corporation নিজেই কেন সেগুলো কার্যকর করতে পারছে না?
শহরের পথে ছড়িয়ে থাকা বাঁশের ফ্রেম, ব্যানার ও ডিজিটাল বিজ্ঞাপন স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে Advertisement Policy এখনও কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। একদিকে নিয়ম বলছে নির্দিষ্ট সময়সীমা, উচ্চতার সীমা ও নো-হোর্ডিং জোনের কথা, অন্যদিকে বাস্তবে Kolkata Municipal Corporation নিয়ম ভাঙার বিরুদ্ধে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দুর্গাপুজো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার পর শহরের পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তা নিয়ে আরও সচেতন হওয়া জরুরি। তাই আগামী দিনে কার্যকর নজরদারি ও কঠোর প্রয়োগ ছাড়া Advertisement Policy কেবল কাগজেই থেকে যাবে, বাস্তবে নয়।
আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো