কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হোস্টেল চুরি ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ছাত্রমহলে। শনিবার গভীর রাতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় আতঙ্কিত ছাত্রীদের মধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর আস্থা আরও কমে গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এক অজ্ঞাত যুবক হোস্টেলের ঘরে প্রবেশ করে একজন ছাত্রীদের ব্যক্তিগত জিনিস চুরি করে পালিয়ে যায়।
রাতের অন্ধকারে আতঙ্কের মুহূর্ত
রবিবার সকালে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তৃতীয় বর্ষের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রী সায়ন্তনী চক্রবর্তী। তিনি জানান, শনিবার গভীর রাতে হোস্টেলের তৃতীয় তলায় নিজের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎই শব্দে তাঁর ঘুম ভাঙে।
“ঘরে ঢুকে সবকিছু এলোমেলো করে দিল”
সায়ন্তনীর কথায়,
“চারপাশে তাকাতেই দেখি কেউ একজন ঘরে প্রবেশ করেছে। সব জিনিসপত্র এদিক-ওদিক ছড়িয়ে রয়েছে। অচেনা যুবকটি আমার জিনিস হাতাচ্ছিল।”
তিনি বলেন, নিজের জিনিস বাঁচাতে চেষ্টা করলে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।
“ধস্তাধস্তির পর পাইপ বেয়ে পালাল”
অভিযোগকারীর ভাষায়,
“আমি ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে আটকানোর চেষ্টা করি। তখন ধস্তাধস্তি শুরু হয়। আমাকে জোর করে মাটিতে ফেলে দেয় সে। তারপর পাইপ বেয়ে নেমে অন্ধকারে মিলিয়ে যায়।”
ঘটনায় তাঁর একটি মোবাইল ফোন, একটি ব্যাগ এবং কিছু টাকা চুরি হয় বলে দাবি করেছেন তিনি।
হোস্টেল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের ছাত্রী সায়ন্তনী অভিযোগ করেন, ঘটনাটি তৎক্ষণাৎ হোস্টেল সুপারিন্টেনডেন্ট ও কলেজ সেক্রেটারিকে জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
“আমি বিস্তারিত জানাই। কিন্তু কেউ গুরুত্ব দেয়নি। চোর পালিয়ে যাওয়ার পরও নিরাপত্তা জোরদার হয়নি,” অভিযোগ তাঁর।
সুপারের দাবি: “রাতে দেরি হয়ে গিয়েছিল”
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হোস্টেল সুপারিন্টেনডেন্ট ছায়ারানি মুর্মু। তাঁর বক্তব্য,
“আমি জানতে চাইলে সে বলে চোর পালিয়ে গেছে। আমি তখন নিরাপত্তারক্ষীকে নিয়ে চারপাশ ঘুরে দেখি। রাত অনেক হয়ে গিয়েছিল, তাই সকালে আমরা নিজেরাই থানায় যাই। পুলিশের নম্বর আমার কাছে ছিল না।”
পুলিশের তদন্ত ও সিসিটিভি পরীক্ষা
আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার এক অফিসার জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়া মাত্র তদন্ত শুরু হয়েছে। “হোস্টেলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কে কীভাবে প্রবেশ করল, তা বের করার চেষ্টা চলছে।”
ছাত্র সংগঠনের বিক্ষোভ
ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। রবিবার সকালেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ হোস্টেলের বাইরে বিক্ষোভ দেখায়। তাঁদের দাবি, “কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হোস্টেল চুরি রুখতে অবিলম্বে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।”
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হোস্টেল চুরি শুধু একটি সাধারণ অপরাধের ঘটনা নয়, বরং নিরাপত্তা ব্যবস্থার বড়সড় ত্রুটি উন্মোচিত করেছে। ছাত্রীরা যেখানে নিজেদের সুরক্ষিত মনে করার কথা, সেখানে এমন ঘটনা তাদের ভয় ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। পুলিশের তদন্ত চললেও, ছাত্র ও অভিভাবকদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে দ্রুত ও কার্যকরী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করাই এখন সবচেয়ে জরুরি।
আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো