আগামী ১৫ আগস্ট আলাস্কায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এক নীতিগত বৈঠক, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট Donald Trump ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট Vladimir Putin মিলিত হবেন। আলোচনার মূল বিষয় Russia-Ukraine ceasefire, যা দীর্ঘ তিন বছর ধরে অব্যাহত যুদ্ধে এক শিথিলতার দিশা দেখাতে পারে। এই আলোচনায় উঠে আসছে ভূখণ্ড বিনিময়সহ নানা সংবেদনশীল বিষয়, যা আন্তর্জাতিক মঞ্চে উত্তেজনার সুর সৃষ্টি করেছে। যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে নানা আশাবাদ ও সংশয় মিশ্রিত চিত্র রচিত হচ্ছে, যা বিশ্ববাসীর নজর কাড়বে।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এই যুদ্ধবিরতি আলোচনার আগুন যেন আরও জ্বলে উঠেছে। ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে স্পষ্ট করে জানান, “এই Russia-Ukraine ceasefire চুক্তি প্রায় নিশ্চিত এবং এরই মধ্যে উভয় পক্ষ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।” তার এই আশাবাদ বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন একটা সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছে।
সূচিপত্র
Toggle“কিছু ভূমি বিনিময় হবে, যা দুই পক্ষের জন্য লাভজনক হবে” — ট্রাম্পের ভাষণে কূটনৈতিক ইঙ্গিত
সফলের আশায় ট্রাম্পের আশা প্রকাশ পায় হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক সম্মেলনে। তিনি জানান, “এখানে কিছু territorial swap হতে পারে যা উভয় দেশের জন্য ‘betterment’ নিয়ে আসবে।” এই মন্তব্যটি স্পষ্টতই যুদ্ধবিরতি চুক্তির জটিলতা এবং কূটনৈতিক সমঝোতার একটি সূক্ষ্ম ইঙ্গিত বহন করে।
তবে এই ভূখণ্ড বিনিময়ের বাস্তবতা সহজ নয়। কারণ, উভয় দেশের রাজনৈতিক ও জাতীয় গৌরবের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই বিষয়। এর ফলে, Russia-Ukraine ceasefire হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহের ছায়াও মেলে।
জেলেনস্কির প্রত্যাশা ও বিশ্ব নেতাদের ভূমিকা
অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাতের ভাষণে জানিয়েছেন, “যুদ্ধবিরতি সম্ভব যদি রাশিয়ার ওপর যথাযথ আন্তর্জাতিক চাপ আরোপিত হয়।” তিনি তার দলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন বলেও উল্লেখ করেন।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শান্তি প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা জানান পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, যুদ্ধবিরতি, যদিও পূর্ণ সমাপ্তি নয়, তবে অন্তত একটি স্থগিতাদেশ নিকটবর্তী।”
এই উচ্চ পর্যায়ের আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হচ্ছে যে, Russia-Ukraine ceasefire শুধুমাত্র দুই দেশের মধ্যে নয়, বরং আন্তর্জাতিক বহু পক্ষের সহযোগিতায় সম্ভব।
পুতিনের ভূখণ্ড দাবির অবস্থান
রাশিয়া প্রেসিডেন্ট Vladimir Putin বর্তমানে চারটি ইউক্রেনীয় অঞ্চল—লুহানস্ক, ডোনেটস্ক, জাপোরিজ়্জিয়া, এবং খেরসন—সহ ২০১৪ সালে দখলকৃত ক্রিমিয়ার ওপর কঠোর দাবিদার। কিন্তু এই অঞ্চলের পুরো অংশে তার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এখনও নেই।
এই প্রেক্ষাপটে, মার্কিন ও রাশিয়ার মধ্যবর্তী আলোচনা এমন এক চুক্তির দিকে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছে যা মস্কোর দখলকৃত অঞ্চলগুলোর অধিকারকে বৈধতা দেবে। তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এর কঠিন প্রত্যাখ্যানের প্রস্তুতি রয়েছে।
শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ছায়ায় যুদ্ধবিরতি
ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়ার তেলের আমদানিকারক দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জোরদার করেছে। ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ, যার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো মস্কোকে আর্থিকভাবে লক্ষ্য করা হয়েছে।
শুক্রবার ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে তিন ঘণ্টার গঠনমূলক বৈঠক করেছেন। এই কথোপকথন Russia-Ukraine ceasefire নিয়ে আশাবাদ তৈরি করেছে।
আলাস্কায় নতুন আলোচনার পটভূমি
আলাস্কায় এর আগে ২০২১ সালে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল, যা খুবই উত্তপ্ত পরিবেশে শেষ হয়। এবার Donald Trump ও Vladimir Putin এর বৈঠক একই স্থানে অনুষ্ঠিত হওয়ায় তা বিশ্ব রাজনীতির নজর কেড়ে নিয়েছে।
এই বৈঠক যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়ন কতটা সফল হবে, তা আন্তর্জাতিক মহলের জন্য এখনও প্রশ্নবিদ্ধ।
ভবিষ্যতের সম্ভাবনা
বিশ্লেষকরা মনে করেন, Russia-Ukraine ceasefire কার্যকর হলে এটি ইউরোপে দীর্ঘদিনের সবচেয়ে বিধ্বংসী সংঘাতের শান্তির সূচনা হবে। তবে রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। জেলেনস্কির সরকারকে তাদের জনগণের কাছে কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হতে পারে।
আন্তর্জাতিক চাপ ও দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মেলবন্ধনে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি বিশ্বের শান্তির জন্য এক নতুন অধ্যায় হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।