২০২১ সালের ভোট-পরবর্তী হিংসায় অভিজিৎ সরকার হত্যা মামলায় নতুন মোড়—সিবিআইয়ের দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে নাম উঠল বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল ও কলকাতা পুরসভার দুই কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার ও পাপিয়া ঘোষের। এই নতুন সংযোজনের পরেই সম্ভাব্য গ্রেফতারির ভয়ে তাঁরা কলকাতা হাই কোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানান। বুধবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে হতে পারে শুনানি। রাজনৈতিক উত্তেজনার আবহে এই মামলা ঘিরে শুরু হয়েছে চাপা গুঞ্জন, শাসকদলের অন্দরে বাড়ছে উদ্বেগ।

📰 স্টোরি হাইলাইটস

  • তিনজন তৃণমূল নেতার নাম রয়েছে সিবিআইয়ের দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে

  • ২০২১ সালের ২ মে ভোট পরবর্তী হিংসায় অভিজিৎ সরকার খুন হন

  • সিবিআই-র নতুন তালিকায় মোট ১৮ জন অভিযুক্ত

  • আটকের আশঙ্কায় হাই কোর্টে আগাম জামিনের আবেদন

  • বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে শুনানি হতে পারে বুধবার

রাজ্য রাজনীতিতে ফের আলোড়ন। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের পর যে ভোট-পরবর্তী হিংসার ছায়া রাজ্যজুড়ে বিস্তৃত হয়েছিল, তারই এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় — অভিজিৎ সরকার হত্যাকাণ্ড। সেই মামলায় এবার তৃণমূল কংগ্রেসের এক বিধায়ক এবং দুই পুর কাউন্সিলরের নাম উঠে এল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর চার্জশিটে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করলেন বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পাল এবং কলকাতা পুরসভার দুই কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার (ওয়ার্ড ৫৮) ও পাপিয়া ঘোষ (ওয়ার্ড ৩০)।

২০২১ সালের মে মাস। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশ ঘিরে উত্তেজনা তখন তুঙ্গে। ঠিক সেই সময়, উত্তর কলকাতার মানিকতলা এলাকায় ঘটে যায় এক মর্মান্তিক ঘটনা। স্থানীয় বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার খুন হন, এবং অভিযোগ ওঠে — এটি ছিল রাজনৈতিক হিংসারই এক অংশ।

প্রথমে রাজ্য পুলিশের তত্ত্বাবধানে তদন্ত চললেও, পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে দায়িত্ব যায় সিবিআই-এর হাতে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা একাধিক ধাপে তদন্ত চালিয়ে গত ৩০ জুন এই মামলায় দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেয় শিয়ালদহ আদালতে।

উক্ত চার্জশিটে নাম উঠে আসে ১৮ জনের। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম — বিধায়ক পরেশ পাল এবং দুই কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার ও পাপিয়া ঘোষ।

এই নতুন চার্জশিট প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়। নাম যুক্ত হওয়ার পর থেকেই চাপা আতঙ্কে ছিলেন অভিযুক্ত তিনজন। সেই কারণেই আইনজীবীদের পরামর্শে তাঁরা আগাম জামিনের আবেদন জানালেন হাই কোর্টে।

আদালত সূত্রে খবর, বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত আগামী বুধবার এই মামলার শুনানি করতে পারেন।

আইন বলছে, যেহেতু তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এখনও প্রমাণিত হয়নি, তাই প্রত্যেকের ক্ষেত্রে আলাদাভাবে বিচার করে জামিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে আদালত।

যদিও এই বিষয়ে অভিযুক্ত কেউই প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এর তরফে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় পরেশ পাল, স্বপন সমাদ্দার ও পাপিয়া ঘোষের সঙ্গে।

তবে ফোন কলের কোনও উত্তর মেলেনি। পাঠানো মেসেজেও নেই প্রতিক্রিয়া।

ঘটনার সূত্র ধরে রাজনৈতিক মহলে এখন উঠছে নানা প্রশ্ন। পরেশ পাল এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের তরফে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না এলেও, পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা — বিষয়টি নিয়ে আদালতের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত নেতারা নীরবতাই বজায় রাখবেন।

সার্বিকভাবে বিচার করলে, অভিজিৎ সরকার হত্যা মামলায় সিবিআই-এর এই নতুন পদক্ষেপ রাজ্য রাজনীতিতে এক নতুন উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। আগাম জামিন মঞ্জুর হবে কি না, এখন সেটাই দেখার।

এই মামলায় তৃণমূল বিধায়ক ও দুই কাউন্সিলরের নাম উঠে আসার পর রাজনৈতিক মহলে ফের জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। আগাম জামিনের আরজি কোন দিকে মোড় নেয়, তা আগামী দিনের বিচার প্রক্রিয়ায় স্পষ্ট হবে। ভোট-পরবর্তী হিংসার ছায়া ফের একবার আইনি লড়াইয়ের ময়দানে নতুন করে চর্চায় উঠে এল, যেখানে রাজনীতির প্রভাব ও ন্যায়বিচারের সীমানা স্পষ্ট করতে নজর থাকবে আদালতের সিদ্ধান্তের দিকেই।

আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো

Leave a Reply