হাওড়া সেক্স র‍্যাকেট: পর্নে রাজি না হওয়ায় তরুণীকে বন্দি করে নির্মম অত্যাচার, ধরা পড়ল মা-ছেলে

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের মিথ্যা প্রলোভনে ফাঁদে ফেলা হয় সোপুরের এক তরুণীকে। অভিযোগ, পর্নোগ্রাফিক ভিডিওতে কাজ করতে অস্বীকার করায় তাঁকে মাসের পর মাস আটকে রেখে চলত অমানবিক নির্যাতন। ‘ইসারা এন্টারটেইনমেন্ট’-এর আড়ালে গড়ে ওঠা এই চক্রের মূল মাথা মা-ছেলে—শ্বেতা ও আরিয়ান খান। পাঁচ দিন পলাতক থাকার পর অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়েছে তারা। তরুণী বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হাওড়া ও দক্ষিণ কলকাতায়। তদন্তে উঠে আসছে আরও বিস্ফোরক তথ্য।

🟥 স্টোরি হাইলাইটস | READ BOX

  • সোপুরের ২২ বছরের তরুণীকে ৫ মাস ধরে আটকে রেখে অত্যাচার

  • কাজের প্রলোভনে হাওড়ায় নিয়ে গিয়ে বন্দি করা হয়

  • পর্ন ভিডিওতে কাজ করতে অস্বীকার করায় চালানো হয় শারীরিক নির্যাতন

  • হাওড়ার ডোমজুড়ে একটি ফ্ল্যাটে রাখা হয়েছিল তরুণীকে

  • অভিযুক্তদের প্রোডাকশন হাউজ ‘ইসারা এন্টারটেইনমেন্ট’ নিয়েও প্রশ্ন

  • একাধিক মহিলা পাচার ও দেহব্যবসার অভিযোগ

  • নির্যাতিতার অবস্থা সংকটজনক, হাসপাতালে ভর্তি

  • গ্রেফতার মা ও ছেলের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা

এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে আসে গত শুক্রবার, যখন নির্যাতিত তরুণী কোনওরকমে পালিয়ে এসে নিজের বাড়িতে পৌঁছন। তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে বিস্তারিত ঘটনা জানিয়ে সঙ্গে সঙ্গে হাওড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। মঙ্গলবারই বোনহুগলির এক পরিচিতের বাড়ি থেকে এক নাবালিকা কন্যাকে আটক করা হয়। বুধবার আরিয়ান খানকে গ্রেফতার করা হয় দক্ষিণ কলকাতার গল্ফ গ্রিন এলাকা থেকে। এরপর বিকেলে আলিপুরের একটি গোপন আস্তানা থেকে ধরা পড়ে শ্বেতা খান।

হাওড়া পুলিশ কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন,

“ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল তিন অভিযুক্তকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হয়েছে। নাবালিকাকে জুভেনাইল বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। আরিয়ান খানকে ৯ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। শ্বেতা খানকে বৃহস্পতিবার আদালতে পেশ করা হবে।”

কমিশনার আরও জানান, তদন্তের স্বার্থে মা ও ছেলেকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

জানা গিয়েছে, সোডপুরের বাসিন্দা ওই ২২ বছরের তরুণী কিছুদিন আগেও একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থায় কাজ করতেন। আরিয়ান খান নিজেকে ওই ক্ষেত্রেই জড়িত বলে পরিচয় দিয়ে মেয়েটিকে আরও ভালো কাজ ও আয় করার সুযোগের প্রতিশ্রুতি দেয়। সেই বিশ্বাসে তরুণী হাওড়ায় চলে আসেন। তারপরেই শুরু হয় বিভীষিকার জীবন। হাওড়ার ডোমজুড়ে একটি ফ্ল্যাটে তাকে আটকে রাখা হয়।

পরিবারের অভিযোগ, তাকে একটি বারে কাজ করতে বাধ্য করা হয় এবং পর্নোগ্রাফিক ভিডিওতে অংশগ্রহণ করতে চাপ দেওয়া হয়। তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁকে নির্মমভাবে প্রহার করা হয়। বর্তমানে তরুণী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাঁর শরীরে একাধিক গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে।

তদন্তে উঠে এসেছে, শ্বেতা খান এবং আরিয়ান খান ‘ইসারা এন্টারটেইনমেন্ট’ নামে একটি প্রোডাকশন হাউজ চালাতেন। পুলিশের সন্দেহ, এই প্রোডাকশন হাউজের আড়ালেই চলত বেআইনি কাজকর্ম। স্থানীয় বাসিন্দারাও অভিযোগ করেছেন, শ্বেতা ও আরিয়ান এলাকার বেশ প্রভাবশালী এবং তাঁরা একাধিক মহিলাকে ফাঁদে ফেলে দেহব্যবসায় জড় করতেন।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে নির্যাতিতার মা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আর্জি জানিয়েছিলেন। ছেলের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি চাই পুরো সত্যটা সামনে আসুক। শুধু ছেলেকে নয়, তার মাকেও যেন কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়।

এদিকে হাওড়া থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক কঠোর ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে খুনের চেষ্টা, শ্লীলতাহানির চেষ্টা, বেআইনি আটক, ষড়যন্ত্র ও অনৈতিক কাজকর্মে বাধ্য করার অভিযোগ। এখন তদন্তের পরবর্তী ধাপে উঠে আসছে আরও তথ্য, যা এই মামলার পরিধি আরও বিস্তৃত করতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো

Leave a Reply