লন্ডনগামী বিমান বিপর্যয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মর্মান্তিক পরিণতি
আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিধ্বস্ত হলো এয়ার ইন্ডিয়া-র লন্ডনগামী ফ্লাইট AI 171। বিমানে ছিলেন গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি—এবং এই দুর্ঘটনাই কেড়ে নিল তাঁর প্রাণ। ২৪২ জন যাত্রী নিয়ে উড়ে যাওয়া বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের এই ভয়াবহ পরিণতি গোটা দেশে ছড়াল শোকের ছায়া। পাইলটের ‘MAYDAY’ সংকেতের পরও থেমে গেল সব যোগাযোগ। রূপানির লন্ডন যাত্রা যে এমন শেষ হয়ে যাবে, তা কেউ কল্পনাও করেননি। এ যেন বাস্তবের ছায়াচিত্রে লেখা এক রাজনৈতিক ট্র্যাজেডি।
📌 STORY HIGHLIGHTS
এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট AI 171 আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের গ্যাটউইকের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল
বিমানে ছিলেন গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি; তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পরিবার
বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার মডেলের এই বিমানটি উড্ডয়নের পাঁচ মিনিট পরই ভেঙে পড়ে
উড্ডয়নের পরপরই পাইলট ‘MAYDAY’ সংকেত পাঠালেও, দ্রুতই বিমানের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়
বৃহস্পতিবারের এই দুর্ঘটনায় জাতীয় রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটল। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি সেই সময় বিমানে ছিলেন, যেটি আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে রওনা দিয়েছিল লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে। জানা গেছে, তিনি তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে লন্ডন যাচ্ছিলেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সেই সফর আর সম্পূর্ণ হলো না। উড্ডয়নের কিছু মুহূর্তের মধ্যেই AI 171 বিপর্যয়ের শিকার হয়।
বিজয় রূপানি ছিলেন গুজরাটের ১৬তম মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৬ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি এই পদে ছিলেন। তিনি মায়ানমারের রেঙ্গুনে জন্মগ্রহণ করেন এবং দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় জনতা পার্টির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে রূপানি রাজকোটের মেয়র ছিলেন ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত। তিনি ২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন এবং ২০১৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত গুজরাট সরকারের পরিবহন, শ্রম ও জল সরবরাহ মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন।
২০১৬ সালে আনন্দীবেন প্যাটেলের পরিবর্তে রূপানিকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়। তবে ২০২১ সালে তিনি পদত্যাগ করেন। সে সময় তিনি বলেন, “আমি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পাঁচ বছর কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। দল যা দায়িত্ব দেবে, আমি তা পালন করব।”
এই বিমান দুর্ঘটনাটি আরও মর্মান্তিক হয়ে উঠেছে কারণ এটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার মডেলের মধ্যে অন্যতম প্রথম বড়সড় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। বিমানটিতে থাকা পাইলট ও ককপিট ক্রু উড্ডয়নের পরই ‘MAYDAY’ সংকেত পাঠান, যা ছিল জরুরি বিপদ সংকেত। কিন্তু সংকেত পাঠানোর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিমানটির সঙ্গে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের আশেপাশের বাসিন্দারা হঠাৎ করে আকাশে ঘন ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পান এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে সেই ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। বিমানটির পতনের খবর নিশ্চিত করে এয়ার ইন্ডিয়া। তৎক্ষণাৎ শুরু হয় উদ্ধারকাজ। বিমানবাহিনী, দমকল বিভাগ ও এনডিআরএফ একযোগে কাজ করে যায় দুর্ঘটনাস্থলে।
এই দুর্ঘটনা শুধুমাত্র একটি বিমানের বিপর্যয় নয়, এটি রাজনৈতিক ও মানবিক দিক থেকেও গভীর প্রভাব ফেলেছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মতো একজন অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয় নেতার হঠাৎ প্রয়াণ রাজ্যবাসীর হৃদয়ে গভীর শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। দেশের রাজনৈতিক মহল, বিশেষ করে বিজেপির অন্দরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
গোটা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে কেন্দ্র। নাগরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যারা দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করবে। বিমান প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বোয়িং সংস্থাকেও ইতিমধ্যে এই বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
এই দুর্ঘটনার পর, রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সবাই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। তাঁর অবদান এবং নেতৃত্বের স্মৃতি আগামীদিনে গুজরাটের রাজনৈতিক ইতিহাসে অমলিন থাকবে।
আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো