পটেটো চিপস চুরির অভিযোগ ঘিরে আত্মহত্যার ঘটনায় নতুন মোড়। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁসকুড়ায় এক ১৩ বছরের কিশোরের মৃত্যুর জেরে অবশেষে গ্রেফতার হলেন দোকানদার ও সিভিক ভলান্টিয়ার শোভনকর দীক্ষিত। অভিযোগ, দোকানের বাইরে পড়ে থাকা চিপসের প্যাকেট তুলতেই চুরির অপবাদে অপমানিত হয় কিশোরটি। অপমানে বিষপান করে তার মৃত্যু ঘটে তমলুকে। ঘটনার পর অভিযুক্ত গা ঢাকা দিলেও পুলিশি তৎপরতায় ধরা পড়ে সে। আদালতের নির্দেশে তাকে ১৪ দিনের হেফাজতে রাখা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় ফের উত্তপ্ত জেলা।
🟠 স্টোরি হাইলাইটস
চিপস চুরির অভিযোগে অপমানিত হয়ে বিষ খায় ১৩ বছরের কিশোর
অভিযুক্ত দোকানদার শোভনকর দীক্ষিত, এক সিভিক পুলিশ স্বেচ্ছাসেবক
ঘটনাস্থল পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁসকুড়া
পুলিশি হেফাজতে অভিযুক্ত, পাঁসকুড়া থানায় দায়ের হয় এফআইআর
তমলুক হাসপাতালে মৃত্যু, দীক্ষিতের বাড়িতে জনতার ভাঙচুর
পূর্ব মেদিনীপুরের এক মর্মান্তিক ঘটনায় আলোড়ন ছড়াল রাজ্যে। একটি সামান্য চিপসের প্যাকেটকে ঘিরে শুরু হয় এক অপমানের কাহিনি, যার পরিণতিতে ঘটে এক কিশোরের করুণ মৃত্যু। শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত দোকানদারকে।
ঘটনাটি শুরু হয়েছিল মে মাসের ১৮ তারিখ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁসকুড়া এলাকার এক ছোট বাজারে। ১৩ বছর বয়সি এক কিশোর, প্রতিদিনের মতো, চিপস কিনতে গিয়েছিল বাজারে। অভিযোগ, দোকান বন্ধ থাকলেও বাইরে একটি প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখে সেটি সে তুলে নেয়। সেই দোকানটি ছিল শোভনকর দীক্ষিত নামে এক ব্যক্তির, যিনি শুধু দোকানদারই নন, পাশাপাশি পাঁসকুড়া থানায় নিযুক্ত একজন সিভিক পুলিশ স্বেচ্ছাসেবক।
ঘটনাটির পর, দীক্ষিত মোটরসাইকেলে করে কিশোরটির পেছনে যান এবং প্রকাশ্যে চুরির অভিযোগে কিশোরটিকে ধমক দেন। এই অপমানজনক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছান কিশোরের মা, যিনি নিজের সন্তানকে ওই পরিস্থিতিতে দেখে চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর কিশোরটি মানসিকভাবে এতটাই ভেঙে পড়ে যে সে বিষ খেয়ে ফেলে বলে অভিযোগ পরিবারের। এরপর তড়িঘড়ি করে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, অবস্থার অবনতি হলে স্থানান্তর করা হয় তমলুক জেলা হাসপাতালে। ২২ মে, সেই হাসপাতালেই মৃত্যু হয় ওই কিশোরের।
এই ঘটনার পরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত শোভনকর দীক্ষিতের বাড়িতে হামলা চালায় ও ভাঙচুর করে। দীক্ষিত এরপর গা ঢাকা দেন। প্রায় দুই সপ্তাহ পর রবিবার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
একজন পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, “এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পাঁসকুড়া থানায় এফআইআর দায়ের হয় এবং তদন্তের ভিত্তিতে শোভনকর দীক্ষিতকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” সোমবার তাকে তমলুক আদালতে পেশ করা হলে আদালত ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
এই ঘটনার মাধ্যমে ফের একবার প্রশ্ন উঠছে—একজন সিভিক পুলিশ স্বেচ্ছাসেবকের আচরণ কতটা সংবেদনশীল হওয়া উচিত, বিশেষ করে একজন নাবালকের ক্ষেত্রে। পাশাপাশি সমাজে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব এবং অপমানজনিত আত্মহত্যার প্রবণতা নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে।
এই গ্রেফতার শুধু আইনি দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতিচ্ছবিও বটে। এক শিশুমনের উপর অপমানের চাপ কতটা মারাত্মক হতে পারে, তা ফের একবার প্রমাণিত হল এই ঘটনায়। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ যেমন প্রশংসনীয়, তেমনই সমাজকে এ ঘটনা ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে দিল। প্রতিটি শিশুর নিরাপত্তা ও সম্মানের অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখাই এখন সময়ের দাবি।
আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো