বেঙ্গালুরুয় এক চরম বিভীষিকাময় ঘটনা নাড়িয়ে দিল সকলের মনোযোগ। স্ত্রী’র উপর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহে, স্বামী allegedly স্ত্রীর শিরচ্ছেদ করে মুণ্ডু স্কুটির ফুটবোর্ডে রেখে থানায় আত্মসমর্পণ করেন। মৃতা মনসা ও অভিযুক্ত শঙ্কর—দুজনেই ছিলেন কর্মরত দম্পতি। অতীতে তাদের দাম্পত্য কলহ ও বিচ্ছেদের নানা পর্বের পরেও একসাথে থাকার চেষ্টার মাঝে হঠাৎ ঘটে গেল নির্মম পরিণতি। ঘটনার গভীরতা ও বিভীষিকাময় দৃশ্য পুলিশকে হতচকিত করে তোলে। সামাজিক সম্পর্কের টানাপোড়েনে গড়ে ওঠা এই ঘটনাটি নতুন করে প্রশ্ন তোলে সম্পর্কের ভেতরের চাপা অন্ধকার নিয়ে।
🔴 STORY HIGHLIGHTS (READ BOX):
রাত ১টা নাগাদ বেঙ্গালুরুর সুর্যনগর থানায় হাজির হন এক ব্যক্তি, স্কুটির ফুটবোর্ডে স্ত্রীর কাটা মাথা।
অভিযুক্ত শঙ্কর স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহে হত্যা করেছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরে দাম্পত্যে চলছিল অশান্তি; মনসা কয়েক মাস আলাদা থেকেছিলেন।
পূর্বে শঙ্করই করেছিলেন নিখোঁজ ডায়েরি, পরে পুনর্মিলনের চেষ্টা হলেও সফল হয়নি।
ভয়াবহ এই হত্যাকাণ্ডের পর অভিযুক্ত নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।
রাত তখন প্রায় ১টা। বেঙ্গালুরুর সুর্যনগর থানায় রাতের টহল প্রস্তুতিতে ব্যস্ত কয়েকজন কনস্টেবল ও এক সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর। ঠিক তখনই থানার বাইরে একটি স্কুটি এসে থামে। তবে স্কুটির আরোহীর পরিচয় যতটা সাধারণ, তার সঙ্গে বয়ে আনা দৃশ্যটি ততটাই ভয়াবহ। স্কুটির ফুটবোর্ডে রাখা রয়েছে একটি নারীর কাটা মাথা।
যিনি স্কুটি চালিয়ে এসেছেন, তিনি নিজেই জানান, “আমি আমার স্ত্রীকে খুন করেছি। এটা তার মাথা। আমি আত্মসমর্পণ করতে এসেছি।” নির্লিপ্ত এই স্বীকারোক্তি শুনে থমকে যান পুলিশ সদস্যরা। অভিযুক্তের নাম এম শঙ্কর (২৬), এবং নিহত স্ত্রীর নাম এস মনসা (২৬)।
তাদের বিবাহিত জীবন শুরু হলেও, তা খুব বেশি দিন শান্তিপূর্ণ ছিল না। হীলালিগে এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন তারা। শঙ্কর ছিলেন বোম্মানহল্লির একটি ব্যাটারি উৎপাদন ইউনিটে সহকারী ম্যানেজার, আর মনসা কাজ করতেন একটি পার্শ্ববর্তী কারখানায়।
দাম্পত্য সম্পর্কের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল টানাপোড়েন, যার কেন্দ্রে ছিল অবিশ্বাস। শঙ্করের অভিযোগ, মনসার এক সহকর্মীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল, যা নিয়ে প্রায়ই বিবাদে জড়াতেন তারা। পরিস্থিতি চূড়ান্ত রূপ নেয় গত ৩ মে। শঙ্কর দাবি করেন, হঠাৎ করে অফিস থেকে ফিরে এসে তিনি মনসাকে এক পুরুষ সহকর্মীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরেন।
এই ঘটনার পর মনসা আর সেই বাড়িতে থাকতে চাননি। কর্মস্থলের কাছে একটি পেইং গেস্ট হোস্টেলে উঠে যান তিনি। তাদের তিন বছরের কন্যাসন্তান তখন মনসার বাবা-মায়ের কাছে, হেব্বাগোডিতে আশ্রয় নেয়।
মনসা চলে যাওয়ার পর শঙ্কর থানায় গিয়ে নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পুলিশ বিষয়টি আমলে নিয়ে মনসার সঙ্গে যোগাযোগ করে। তখন একটি মধ্যস্থতা হয় এবং মনে হয়েছিল দু’জনের মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে। মনসা ফিরে আসেন শঙ্করের কাছে, কিন্তু সম্পর্কের ভাঙন আবারও ধরা পড়ে সময়ের সঙ্গে।
শুক্রবার সন্ধ্যায়, প্রতিবেশীরা তাদের বাড়ি থেকে চিৎকার, গালিগালাজ ও পরে কিছু ভারী আওয়াজ শুনতে পান। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানেই নতুন করে বচসা শুরু হয়। একপর্যায়ে উত্তেজনার পারদ এতটাই চড়ে যে শঙ্কর রান্নাঘর থেকে ছুরি এনে মনসার গলায় আঘাত করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, তিনি এরপর স্ত্রীর দেহের পাশেই কিছুক্ষণ নিশ্চলভাবে বসেছিলেন।
এরপর যে সিদ্ধান্তটি নেন, তা এতটাই ভয়ঙ্কর যে পুলিশও স্তব্ধ হয়ে যায়। স্ত্রীর দেহ থেকে মাথা আলাদা করে স্কুটির ফুটবোর্ডে রাখেন এবং থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন।
সুর্যনগর থানায় দায়ের করা অভিযোগ অনুযায়ী, শঙ্করের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী খুনের মামলা রুজু হয়েছে এবং তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।