দেশের কোভিড পরিস্থিতি ফের উদ্বেগের ছায়া ফেলেছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ৫ জুন ২০২৫-এ পর্যন্ত দেশে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪৮৬৬-এ, এবং মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫১। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৬৪টি নতুন সংক্রমণ ও ৭টি মৃত্যু রিপোর্ট হয়েছে। দিল্লি, কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্র থেকে এসেছে মৃত্যুর খবর। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র ও রাজ্য স্তরে চলছে প্রস্তুতির জোরদার তৎপরতা, মক ড্রিল থেকে শুরু করে অক্সিজেন সরবরাহ পর্যালোচনা পর্যন্ত। মহামারির ছায়া কি আবার ঘনাচ্ছে? প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে রয়েছে পরিসংখ্যানে।

🧠 AI QUICK READ (AI-Generated Summary Box)

🔹 সক্রিয় আক্রান্ত: ৪৮৬৬
🔹 গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমণ: ৫৬৪
🔹 সুস্থ হয়েছেন: ৬৭৪
🔹 মোট মৃত: ৫১
🔹 মৃত্যু হয়েছে: দিল্লি (২), কর্ণাটক (২), মহারাষ্ট্র (৩)
🔹 প্রধান রোগীদের অবস্থা: বহুসংখ্যক কোমর্বিডিটি (ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ক্যান্সার, কিডনি সমস্যা)
🔹 মক ড্রিল: ২-৫ জুন, অক্সিজেন ও বেড প্রস্তুতি পর্যালোচনা

 ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণে নতুন করে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮৬৬। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৬৪ জন নতুন সংক্রমিত হয়েছেন এবং ৬৭৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। দেশের মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৫১।

রাজ্যে রাজ্যে মৃত্যুর বিবরণ

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আবারও কোভিডে মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। দিল্লি, কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্র—এই তিন রাজ্য মিলিয়ে মোট ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সূত্রে জানা গেছে।

দিল্লি

 রাজধানী দিল্লিতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। পাঁচ মাসের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে জিডিডি (গ্লোবাল ডেভেলপমেন্টাল ডিলে), সিজার ডিসঅর্ডার, নিউমোনিয়া, সেপসিস ও রেসপিরেটরি ফেইলিওরের কারণে। অপরদিকে, ৮৭ বছরের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যা এবং সিভিয়ার এআরডিএস-এর প্রেক্ষিতে কোভিড নিউমোনিয়া, সেপসিস ও সেপটিক শকের কারণে।

কর্ণাটক:

কর্ণাটকেও মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ, যিনি হাইপারটেনশন, ইসকেমিক হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত ছিলেন এবং কোলন ক্যান্সারের জন্য কেমোথেরাপিতে ছিলেন, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, ৪২ বছরের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে আইলিয়াল অবস্ট্রাকশনের ফলে সেপটিক শক ও টাইপ-১ রেসপিরেটরি ফেইলিওর থেকে, এবং তিনি কোভিড-১৯ পজিটিভ ছিলেন।

মহারাষ্ট্র:

মহারাষ্ট্রে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তিনজনের। ৭৬ বছরের এক বৃদ্ধ, যিনি অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরিতে ভুগছিলেন, তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আরেকজন ৭৬ বছরের বৃদ্ধ, যিনি কোভিড-১৯ পজিটিভ ছিলেন এবং অ্যাটিপিকাল ভাইরাল নিউমোনিয়া, অ্যাকিউট করোনারি সিনড্রোম ও কার্ডিওজেনিক শকে আক্রান্ত ছিলেন, তিনিও মারা গেছেন। ৭৯ বছরের এক বৃদ্ধা, যিনি মাল্টি অর্গান ডাইসফাংশন সিনড্রোমে ভুগছিলেন এবং কোভিড-১৯ আক্রান্ত ছিলেন, তিনিও মৃত্যুবরণ করেছেন।

স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে কো-মর্বিডিটি বা একাধিক রোগের জটিলতা মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। কোভিড সংক্রমণের সঙ্গে সেই জটিলতা মিলেই মৃত্যুর আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।

প্রস্তুতিতে তৎপরতা বাড়াচ্ছে সরকার: মক ড্রিল এবং পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত

দেশে সাম্প্রতিক কোভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে ২ এবং ৩ জুন, ২০২৫ তারিখে একাধিক টেকনিক্যাল রিভিউ মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিষেবার মহাপরিচালক ডাঃ সুনীতা শর্মার নেতৃত্বে এই বৈঠকগুলিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট সেল, ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট রেসপন্স (ইএমআর) সেল, ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (এনসিডিসি), ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর), ইন্টিগ্রেটেড ডিজিজ সার্ভেইলেন্স প্রোগ্রাম (আইডিএসপি) এবং দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালগুলি। এছাড়াও, দেশের সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে মূলত বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রস্তুতি মূল্যায়ন করা হয়।

রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন, আইসোলেশন বেড, ভেন্টিলেটর এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের মজুত নিশ্চিত করা যায়। ২ জুন একটি মক ড্রিলের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থার (পিএসএ প্ল্যান্ট, এলএমও ট্যাঙ্ক, এমজিপিএস লাইন) কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর প্রস্তুতির আরও মূল্যায়নের জন্য ৪ ও ৫ জুন স্থানীয় পর্যায়ে মক ড্রিলের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র সরকার ও রাজ্য প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে এই কার্যক্রম স্বাস্থ্যব্যবস্থার সক্ষমতা যাচাই ও দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি জোরদার করতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক তথ্যচিত্রে স্পষ্ট, কোভিড-১৯ এখনও পুরোপুরি বিদায় নেয়নি। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা কম হলেও, অসতর্কতা বিপদের দিকেই ইঙ্গিত করে। কেন্দ্র ও রাজ্যের সমন্বয়ে যেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে, তা প্রশংসনীয়। তবে জনসচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া এই লড়াই সম্ভব নয়। প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব সচেতন থাকা ও সতর্কতা অবলম্বন করা। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার যেন সামান্য ঢিলেমিও ভবিষ্যতের বড় ক্ষতির কারণ না হয়—এটাই সময়ের দাবি।

আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো

Leave a Reply