ভারতে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি আবারো একটি নিত্যনতুন মোড় নিচ্ছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সক্রিয় সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যেখানে ওমিক্রনের উপ-ভ্যারিয়েন্টগুলি মূল ভূমিকায় রয়েছে। যদিও রোগীর অধিকাংশই হালকা উপসর্গ নিয়ে বাড়িতেই চিকিৎসাধীন, মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা উদ্বেগজনক। পরিস্থিতি নজরদারির আওতায় থাকলেও, এ সংকটের গহ্বরে কী লুকিয়ে আছে, তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জাগছে—আবার কি কোভিড-১৯ এক নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছে?
সূচিপত্র
Toggleকোভিড-১৯: ক্রমবর্ধমান পরিসংখ্যানের অন্দরমহল
সোমবারের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আপডেটে প্রকাশ, দেশের সক্রিয় কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩,৯৬১-এ। যদিও সংখ্যাটি তুলনামূলকভাবে ক্ষুদ্র, তবুও এর বৃদ্ধির প্রবণতা একদৃষ্টে লক্ষ্যযোগ্য। মে ২২-এ যেখানে কোভিড-১৯ সক্রিয় ছিল মাত্র ২৫৭ জনের মধ্যে, তা মাত্র চার দিনের ব্যবধানে ১০০০ ছাড়িয়ে যায় এবং এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় চারগুণ বৃদ্ধি পায়।
রাজ্যভিত্তিক ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণ
কেরালা: ১,৩৩৬
মহারাষ্ট্র: ৪৬৭
দিল্লি: ৩৭৫
গুজরাট: ২৬৫
কর্ণাটক: ২৩৪
পশ্চিমবঙ্গ: ২০৫
তামিলনাড়ু: ১৮৫
উত্তরপ্রদেশ: ১১৭
২৪ ঘণ্টার অভ্যন্তরে চতুর্মুখী মৃত্যু
গত ২৪ ঘণ্টায় চারটি ভিন্ন রাজ্যে চারটি মৃত্যুর তথ্য এসেছে। দিল্লি, কেরালা, কর্ণাটক এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে একটি করে মৃত্যুর খবর এসেছে। এই মৃত্যুসমূহ কোভিড-১৯ পরিস্থিতির একটি মৃদু সতর্ক সংকেত হিসেবেই নথিভুক্ত হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য যে, এই মৃত্যুগুলির পেছনে থাকা উপসর্গ, চিকিৎসার ধরণ কিংবা হাসপাতালের লজিস্টিকস সংক্রান্ত তথ্য সরকারি বিবৃতিতে অনুপস্থিত।
ওমিক্রন উপ-ভ্যারিয়েন্টের নেপথ্য পর্দা
ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (ICMR) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান কোভিড-১৯ বৃদ্ধির জন্য মূলত দায়ী কিছু বিশেষ ওমিক্রন উপ-ভ্যারিয়েন্ট—LF.7, XFG, JN.1 এবং NB.1.8.1। এই নামগুলি হয়তো এখনো সাধারণ মানুষের মধ্যে বহুল প্রচলিত নয়, কিন্তু জিনোম সিকোয়েন্সিং অনুসারে এদের উপস্থিতি ক্রমবর্ধমান। বিশেষ করে LF.7 ও JN.1-এর বিস্তার দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে তুলনামূলকভাবে বেশি।
ডঃ বেহেল বলেন, “আমরা পরিস্থিতি খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। এই মুহূর্তে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত, নজর রাখতে হবে, কিন্তু আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।”
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি আপাতত ভারসাম্যের পর্যায়ে থাকলেও, তার গতিশীল প্রকৃতিকে অস্বীকার করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন উপ-ভ্যারিয়েন্ট, অস্থিরতা ও সংখ্যাগত বৃদ্ধি, মিলিতভাবে একটি সচেতনতামূলক প্রশাসনিক পর্যবেক্ষণের ইঙ্গিত দেয়। এখন শুধু পর্যবেক্ষণই মূল—বাকিটা সময় বলবে।