রেকর্ড রাজস্ব, তবু ধাঁধা বহাল
২০২৫-র মে মাসে GST সংগ্রহ টানা দ্বিতীয়বারের জন্য ₹২ লক্ষ কোটির ঊর্ধ্বে পৌঁছেছে—একটি শক্তিশালী আর্থিক সংকেত। তবে, রাজস্ব বৃদ্ধির এই ঢেউ মূলত আমদানিনির্ভর, যেখানে ঘরোয়া লেনদেনের গতি তুলনায় ধীর। একদিকে পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্য চাঙ্গা, অন্যদিকে গুজরাট-তেলেঙ্গানা পিছিয়ে। একইসাথে, রফতানি ফেরতের হারও নিম্নমুখী। ফলে প্রশ্ন উঠছে—GST সংগ্রহ বৃদ্ধির প্রকৃত চালিকা শক্তি কী? RBI-এর আসন্ন নীতি বৈঠকের প্রাক্কালে এই পারস্পরিক বৈপরীত্য অর্থনীতির পরিমাপে নতুন দিক খুলে দিচ্ছে।
মে ২০২৫-এ GST সংগ্রহের সামগ্রিক চিত্র
মে ২০২৫-এ GST সংগ্রহ মে ২০২৫-এ ₹২.০১ লক্ষ কোটি টাকার মধ্যে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের মে মাসের ₹১.৭২ লক্ষ কোটি থেকে ১৬.৪ শতাংশ বৃদ্ধি নির্দেশ করে।
এপ্রিল ২০২৫-এ এই সংগ্রহ ছিল রেকর্ড ₹২.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা, যা সাম্প্রতিক সময়ের সর্বোচ্চ।
রিফান্ডের পর নিট রাজস্ব ছিল ₹১.৭৪ লক্ষ কোটি টাকা, যা মে ২০২৪-এর ₹১.৪৪ লক্ষ কোটি থেকে ২০.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই তথ্যাদি “GST সংগ্রহ মে ২০২৫” এবং “GST রাজস্ব বৃদ্ধি” এর ওপর সরাসরি আলোকপাত করে।
GST সংগ্রহ মে ২০২৫-এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব
পুনরুদ্ধারের সূচক
এই শক্তিশালী GST রাজস্ব বৃদ্ধি অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত প্রদান করে। GST সংগ্রহ মে ২০২৫-এ বৃদ্ধি মানে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে সচলতা আছে।
একই সঙ্গে, GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের বড় বড় রাজ্য থেকে ভালো সংগ্রহ দেখা যাচ্ছে, যা অর্থনৈতিক বিচিত্রতার দিক নির্দেশ করে।
আমদানি ও অভ্যন্তরীণ ভোগদরের পার্থক্য
GST রাজস্ব বৃদ্ধি মূলত আমদানি চালিত। আমদানি থেকে GST রাজস্ব ২৫.২ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে, অভ্যন্তরীণ ভোগদরের GST রাজস্ব বৃদ্ধির হার ছিল ১৩.৭ শতাংশ।
এই পার্থক্য “অভ্যন্তরীণ ভোগদর বৃদ্ধি” ও “আমদানি চালিত প্রবৃদ্ধি” নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
আমদানি চালিত GST রাজস্ব বৃদ্ধি: মৌলিক চিত্র
মে ২০২৫-এ GST সংগ্রহের প্রধান চালিকা শক্তি ছিল আমদানি। আমদানি থেকে প্রাপ্ত GST রাজস্ব ২৫.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ₹৫১,২৬৬ কোটি টাকা রেকর্ড করেছে।
এটি “GST সংগ্রহ মে ২০২৫”-এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণকারী হিসাবে উঠে এসেছে, যা সামগ্রিক GST রাজস্ব বৃদ্ধির ২৫ শতাংশেরও বেশি অংশ।
অন্যদিকে, অভ্যন্তরীণ লেনদেন বা “অভ্যন্তরীণ ভোগদর বৃদ্ধি” থেকে প্রাপ্ত GST রাজস্ব ছিল ₹১.৫০ লক্ষ কোটি, যা মাত্র ১৩.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই তুলনামূলক পার্থক্য “GST রাজস্ব বৃদ্ধি” ও “অভ্যন্তরীণ ভোগদর বৃদ্ধি” সম্পর্কিত প্রবণতা বুঝতে সাহায্য করে।
আমদানি চালিত GST রাজস্ব বৃদ্ধি: মৌলিক চিত্র
মে ২০২৫-এ GST সংগ্রহের প্রধান চালিকা শক্তি ছিল আমদানি। আমদানি থেকে প্রাপ্ত GST রাজস্ব ২৫.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ₹৫১,২৬৬ কোটি টাকা রেকর্ড করেছে।
এটি “GST সংগ্রহ মে ২০২৫”-এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণকারী হিসাবে উঠে এসেছে, যা সামগ্রিক GST রাজস্ব বৃদ্ধির ২৫ শতাংশেরও বেশি অংশ।
অন্যদিকে, অভ্যন্তরীণ লেনদেন বা “অভ্যন্তরীণ ভোগদর বৃদ্ধি” থেকে প্রাপ্ত GST রাজস্ব ছিল ₹১.৫০ লক্ষ কোটি, যা মাত্র ১৩.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই তুলনামূলক পার্থক্য “GST রাজস্ব বৃদ্ধি” ও “অভ্যন্তরীণ ভোগদর বৃদ্ধি” সম্পর্কিত প্রবণতা বুঝতে সাহায্য করে।
অভ্যন্তরীণ ভোগদর বৃদ্ধির মন্দ গতি: অর্থনৈতিক ছবি ও বিশ্লেষণ
১। মে ২০২৫-এ GST সংগ্রহে অভ্যন্তরীণ ভোগদর বৃদ্ধির তুলনামূলক দুর্বলতা
“GST সংগ্রহ মে ২০২৫” পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায় যে, আমদানি চালিত GST রাজস্ব প্রায় ৭৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও অভ্যন্তরীণ লেনদেনে রাজস্ব বৃদ্ধি অনেক কম।
অভ্যন্তরীণ ভোগদর বৃদ্ধির এই মন্দ গতি “GST রাজস্ব বৃদ্ধি” বিশ্লেষণে এক গুরুত্বপূর্ণ সংকেত প্রদান করে, যেখানে ভোক্তা ও শিল্প খাতের ক্রয়ক্ষমতা ও চাহিদার পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
২। অভ্যন্তরীণ ভোগদরের নিম্নগতির সম্ভাব্য কারণসমূহ
(ক) বাজারে অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা: অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ চেইনের দুর্বলতা, উৎপাদন ব্যাঘাত এবং অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা ভোগদর বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে।
(খ) ভোক্তা আচার ও সঞ্চয়ের প্রবণতা: অস্পষ্ট অর্থনৈতিক পরিবেশে ভোক্তারা সংযমী হচ্ছে, যা “অভ্যন্তরীণ ভোগদর বৃদ্ধি” ধীর করে।
(গ) শিল্প ও সেবার সেক্টরে সঙ্কট: কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ক্ষেত্রে উৎপাদন ও বিক্রয় হ্রাস পাওয়া গেছে, যা GST রাজস্বে প্রভাব ফেলেছে।
৩। রপ্তানির রিফান্ডের হ্রাস: মন্দ ভোগদরের ইঙ্গিত
রপ্তানি ক্ষেত্রে “GST সংগ্রহ মে ২০২৫” এর সাথে তুলনায় রিফান্ডের পরিমাণ কমে যাওয়া, অর্থাৎ “রপ্তানির রিফান্ড হ্রাস” অভ্যন্তরীণ চাহিদার মন্দতা ও ব্যবসায়িক সতর্কতার প্রমাণ।
রিফান্ড হ্রাসের ফলে বাণিজ্য চক্রে অস্থিরতা দেখা দেয়, যা অভ্যন্তরীণ ভোগদর বৃদ্ধিকে আরও চাপের মুখে ফেলে।
৪। রাজ্য ভিত্তিক ভিন্নতার প্রভাব
“GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ” সহ বিভিন্ন রাজ্যে অভ্যন্তরীণ ভোগদর বৃদ্ধির গতি সমান নয়। পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে কিছুটা দ্রুত হলেও অন্যান্য রাজ্যে তা কম।
এই পার্থক্য “রাজ্য ভিত্তিক GST সংগ্রহ পার্থক্য” তৈরি করে, যা দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ভিন্ন মাত্রার প্রভাব ফেলে।
৫। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতিপ্রকৃতিতে প্রশ্ন
“অভ্যন্তরীণ ভোগদর বৃদ্ধি” ধীরগতিতে ভারতীয় অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের ধারাবাহিকতা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
“GST রাজস্ব বৃদ্ধি” মূলত আমদানি নির্ভর হলেও অভ্যন্তরীণ ভোগদরের মন্দ গতি অর্থনৈতিক কার্যক্রমে সংকেত পাঠাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ ও অন্যান্য রাজ্যে GST রাজস্ব: পরিসংখ্যানের দ্বন্দ্ব ও অন্তর্নিহিত ছায়া
২০২৫ সালের মে মাসে GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ-এর প্রেক্ষিতে একটি উল্লেখযোগ্য উত্থান লক্ষ্য করা গেছে। GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ-সহ মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তামিলনাড়ুর মতো কয়েকটি রাজ্যে ১৭-২৫ শতাংশ হারে রাজস্ব বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়েছে। কিন্তু এই বৃদ্ধির উৎস, গঠন এবং তুলনামূলক প্রেক্ষাপটে কিছু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের GST রাজস্ব বৃদ্ধি: অঙ্কের পেছনের কাঠামো
GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ-এ প্রায় ২০% বৃদ্ধি রেকর্ড হয়েছে। এই বৃদ্ধির কিছু নির্দিষ্ট কারণ নিচে দেওয়া হল:
শিল্প ও পরিষেবা খাতের অবদান
রাজ্যে MSME (Small & Medium Enterprises) খাত আগের তুলনায় অধিক সংখ্যায় GST নথিভুক্ত হয়েছে।
পরিষেবা খাতে বিশেষত ই-কমার্স ও অনলাইন অ্যাগ্রিগেটর সংস্থাগুলি GST-র আওতায় আনা হয়েছে, যা GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ বৃদ্ধির প্রাথমিক চালক হিসেবে কাজ করছে।
শুল্ক কর্তৃপক্ষের নজরদারি বৃদ্ধি
২০২৪-এর দ্বিতীয়ার্ধে পশ্চিমবঙ্গের বাণিজ্য দপ্তর ৩,২০০টিরও বেশি অডিট ও চেক চালিয়েছে।
কর ফাঁকি রোধে E-way bill সিস্টেমের ব্যবহারে কড়াকড়ি হয়েছে, যা GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
অন্যান্য রাজ্যের তুলনামূলক পরিসংখ্যান
মহারাষ্ট্র:
ভারতের সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী রাজ্য হিসেবে মে মাসে ₹৩৮,২০০ কোটির উপরে রাজস্ব রেকর্ড করেছে।
অথচ GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ-এর বৃদ্ধির হার (২০%) মহারাষ্ট্রের বৃদ্ধির হারের (১৬%) তুলনায় অধিক।
গুজরাট:
শিল্প-নির্ভর রাজ্য হলেও গুজরাটে শুধুমাত্র ৯% বৃদ্ধি হয়েছে GST সংগ্রহে।
স্থানীয় বাজারে চাহিদার স্থবিরতা ও আমদানি-কেন্দ্রিক প্রবণতা এই হারকে সীমিত করেছে।
তেলেঙ্গানা ও ওডিশা:
তেলেঙ্গানায় GST রাজস্ব মাত্র ৭% বৃদ্ধি পেয়েছে।
ওডিশা খনিজ-নির্ভর অর্থনীতির কারণে রফতানি ফেরতের পরিমাণে সঙ্কোচন দেখা দিয়েছে, যার ফলে GST রাজস্বে প্রভাব পড়েছে।
ভৌগোলিক ও বাণিজ্যিক অবস্থানের প্রভাব
বন্দর ও সীমান্ত সুবিধা
GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ বৃদ্ধির পেছনে শুল্ক প্রশাসন মনে করছে, কলকাতা ও হলদিয়া বন্দর ঘিরে আমদানি কার্যক্রম বৃদ্ধির ভূমিকা রয়েছে।
রাজ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রবেশদ্বার থাকায় আমদানি-নির্ভর GST প্রবাহ বেশি।
তবে ঘরোয়া চাহিদা বৃদ্ধির দৃষ্টিভঙ্গি নেই।
আন্তঃরাজ্য বাণিজ্য
বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির সঙ্গে আন্তঃরাজ্য বাণিজ্য সম্প্রসারিত হয়েছে।
এই বাণিজ্যের ফলে GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ-এ কিছু অতিরিক্ত পরিবহণমূল্য ও সাপ্লাই চেইন কর উঠে আসছে।
কিছু নজরকাড়া পর্যবেক্ষণ
খুচরো বাজার বনাম বড় শিল্প
বড় করদাতারা (₹৫ কোটির ওপরে বার্ষিক ব্যবসা) পশ্চিমবঙ্গের GST রাজস্ব বৃদ্ধির ৬৫% যোগান দিচ্ছে।
খুচরো বাজার ও ক্ষুদ্র ব্যবসা থেকেও ধাপে ধাপে রাজস্ব উঠছে—অথচ তারা আগেও আংশিকভাবে করের বাইরে ছিল।
রফতানি ফেরতের হার হ্রাস
রফতানির ওপর ভিত্তি করে ফেরত দেওয়া GST রাশি মে মাসে ৫.৮% কমেছে।
এই কমতির ফলে রাজ্যে মোট GST সংগ্রহে আপাত বৃদ্ধি দেখা গেলেও, প্রকৃত অর্থপ্রবাহ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
প্রযুক্তি ও সংযুক্ত প্রশাসনের ভূমিকা
AI-ভিত্তিক নজরদারি
GSTIN-এর সঙ্গে আধার ও প্যান সংযুক্তিকরণ বাধ্যতামূলক করায় জাল পরিচয়ে ব্যবসার পরিমাণ কমেছে।
GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ বৃদ্ধিতে এই ধরনের প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারির প্রভাব অস্বীকারযোগ্য নয়।
রিটার্ন ফাইলিং ও অডিট
পশ্চিমবঙ্গে মে মাসে ৯২% করদাতা সময়মতো রিটার্ন জমা দিয়েছে, যা পূর্ববর্তী মাসের তুলনায় ৪% বেশি।
রাজস্ব রিফান্ড কমে যাওয়া: GST সংগ্রহ মে ২০২৫-এ অর্থনৈতিক সংকেত
মে ২০২৫-এ রাজস্ব রিফান্ডের পরিসংখ্যান
“GST সংগ্রহ মে ২০২৫” পরিসংখ্যান অনুসারে মোট রিফান্ড ₹২৭,২১০ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময় থেকে প্রায় ৪ শতাংশ কম।
রিফান্ড কমে যাওয়ার এই প্রবণতা “GST রাজস্ব বৃদ্ধি” তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে আমদানি ও রপ্তানি খাতের উপর।
রিফান্ড হ্রাস ও রপ্তানি খাতের পরিস্থিতি
রিফান্ড কমে যাওয়া প্রাথমিকভাবে রপ্তানি খাতের সংকট নির্দেশ করে। কারণ রপ্তানিকারকরা সাধারণত প্রাপ্ত GST রিফান্ডের ওপর নির্ভরশীল।
“GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ” ও অন্যান্য রাজ্যের রপ্তানি নির্ভর ব্যবসায় এই পরিবর্তন সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে, যার ফলে অভ্যন্তরীণ ভোগদর বৃদ্ধিতে বাধা আসতে পারে।
রিফান্ড হ্রাস ও ব্যবসায়িক অর্থপ্রবাহ
“রাজস্ব রিফান্ড কমে যাওয়া” ব্যবসার কার্যক্রমে সরাসরি প্রভাব ফেলে। কারণ, রিফান্ড বিলম্বিত হলে কোম্পানির ক্যাশ ফ্লো সংকুচিত হয়, যা বিনিয়োগ এবং উৎপাদন ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করে।
ফলস্বরূপ, “GST সংগ্রহ মে ২০২৫” এর এই দিকটি অর্থনীতির মন্দ গতি এবং ভোগদরের নিম্নমুখী অবস্থার কারণ হিসেবে দেখা যায়।
আমদানি বৃদ্ধি ও রিফান্ডের পার্থক্য
“GST রাজস্ব বৃদ্ধি” আমদানি ভিত্তিক হলেও রিফান্ডের পরিমাণ কমে যাওয়া একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। সাধারণত আমদানি বাড়লে রিফান্ডের পরিমাণও সমানুপাতিকভাবে বাড়ে।
এই পার্থক্য ব্যবসায়িক খরচ এবং বাণিজ্য চক্রে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে, যা “GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ” সহ দেশের বিভিন্ন অংশে প্রভাব ফেলতে পারে।
অর্থনীতিতে রিফান্ডের সামগ্রিক প্রভাব
“অর্থনীতিতে রিফান্ডের প্রভাব” বহুস্তরীয়। এটি সরাসরি ব্যবসার আর্থিক স্বাস্থ্যের সংকেত এবং পরোক্ষভাবে ভোগদরের গতিবিধি নির্ধারণ করে।
রিফান্ড হ্রাসের ফলে ব্যবসায়িক আস্থা কমে যেতে পারে, যা ভবিষ্যতে “GST রাজস্ব বৃদ্ধি” কে ধাক্কা দিতে পারে।
ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও তার প্রভাব: GST সংগ্রহ মে ২০২৫-এ নতুন চিত্র
১। বিশ্ব বাণিজ্যের অবস্থা ও তার অস্থিরতা
সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, যেমন চীন-আমেরিকা বাণিজ্য সংঘাত, ইউক্রেন যুদ্ধ, ও মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা, বিশ্ব বাণিজ্যের গতিপ্রকৃতিকে জটিল করে তুলেছে।
এই “বিশ্ব বাণিজ্যের পরিবর্তন” সরাসরি ভারতীয় আমদানি-বিতরণের উপর প্রভাব ফেলে, যা “GST সংগ্রহ মে ২০২৫” তে প্রতিফলিত হচ্ছে।
২। আমদানি চালিত প্রবৃদ্ধির কারণ
“GST সংগ্রহ মে ২০২৫” এর প্রায় ২৫.২% বৃদ্ধির পেছনে মূলত আমদানি বৃদ্ধি বড় ভূমিকা রাখছে। এই “আমদানি চালিত প্রবৃদ্ধি” ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এক ধরনের সাপ্লাই চেইন পুনর্গঠনের ফলাফল।
বিশেষ করে, ইউরোপ ও আমেরিকায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায়, ভারতীয় বাজারে আমদানি বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্যণীয়, যা “GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ” সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে প্রভাব ফেলছে।
৩। ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বাণিজ্য নীতিমালা
বেশ কিছু দেশ নিজেদের কাস্টমস নীতি ও কর হার সমন্বয় করছে, যা আমদানি খরচ ও গুণগত মানে পরিবর্তন আনে।
এর ফলে, “GST সংগ্রহ মে ২০২৫” তে আমদানি থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব বৃদ্ধি হলেও এর দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
৪। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতীয় বাণিজ্যের পরিবর্তন
ভারতের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পরিবর্তন দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য প্রবাহে সরাসরি প্রভাব ফেলছে।
বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের পরিবর্তন “GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ” ও অন্যান্য সীমান্তবর্তী রাজ্যে অর্থনৈতিক গতিশীলতা প্রভাবিত করছে।
৫। ভবিষ্যত প্রবণতা ও GST সংগ্রহের প্রভাব
“GST সংগ্রহ মে ২০২৫” এর আমদানি চালিত প্রবৃদ্ধি চলমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ধারাবাহিক হতে পারে বলে ধারণা।
তবে, এই প্রবৃদ্ধি কতদিন টিকবে এবং এর ফলশ্রুতিতে “GST রাজস্ব পশ্চিমবঙ্গ” সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কী ধরনের অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে, তা গভীর পর্যবেক্ষণের বিষয়।
শক্তিশালী GST তথ্য ও নিম্নমুখী মুদ্রাস্ফীতি: RBI-এর জুন MPC বৈঠকের কেন্দ্রবিন্দু
২০২৫ সালের জুনে অনুষ্ঠিতব্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (RBI) MPC বৈঠক একাধিক মৌলিক অর্থনৈতিক নির্দেশকের ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত বিবেচনার মুখোমুখি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দুইটি পরিসংখ্যানগত পরিবর্তন আলোচনার মূল স্রোত তৈরি করেছে—একদিকে শক্তিশালী GST রাজস্ব, অন্যদিকে নিম্নমুখী মুদ্রাস্ফীতি।
GST রাজস্ব: প্রবাহ ও প্রতিফলন
GST রাজস্ব মে মাসে ₹১.৭২ লক্ষ কোটি অতিক্রম করেছে। এই পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ শুধু পরিসংখ্যানগত রেকর্ড নয়, বরং অর্থনৈতিক গতি ও লেনদেনের ধারাবাহিকতার একটি সূচক।
বিনিয়োগের তৎপরতা: উচ্চ GST সংগ্রহ বিনিয়োগচক্রে সক্রিয়তা এবং উৎপাদন ও পরিষেবা খাতে লেনদেন বৃদ্ধির প্রতিফলন।
ব্যাপক করদাতা বিস্তার: MSME খাত থেকে শুরু করে বৃহৎ কর্পোরেট সেক্টর—সব ক্ষেত্রেই কর পরিশোধে অনুশাসন বেড়েছে।
RBI-এর দৃষ্টিভঙ্গি: শক্তিশালী GST রাজস্ব অর্থনীতির অভ্যন্তরীণ গঠনের উপর একটি নিরপেক্ষ ভরসা তৈরি করে।
মুদ্রাস্ফীতি: নিম্নগামী রেখাচিত্রের তাৎপর্য
এপ্রিল ২০২৫-এ ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) ৩.২ শতাংশে এসে পৌঁছেছে, যা ৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এই হার RBI-র স্থির ৪ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার (±২%) মধ্যেই রয়ে গেছে।
খাদ্য ও জ্বালানি মূল্য নিয়ন্ত্রণ: গত কয়েক মাসে ভোজ্যতেল, শাকসবজি, পেট্রোল-ডিজেলের দামে সাময়িক ভারসাম্য পরিলক্ষিত হয়েছে।
মূল্যস্ফীতির চাপ হ্রাস: পাইকারি ও খুচরো স্তরে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকায় ভোক্তাদের খরচ সামর্থ্য বজায় রয়েছে।
নীতি নির্ধারকদের জন্য সংকেত: এমন নিম্ন মুদ্রাস্ফীতি নীতি নির্ধারকদের জন্য রেপো রেট হ্রাসের সম্ভাবনা তৈরি করে।
MPC বৈঠকের সিদ্ধান্ত কাঠামো: হার হ্রাসের পরিপ্রেক্ষিত
৬ সদস্যের RBI MPC বৈঠক-এ সম্ভাব্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব—রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট হারে হ্রাস করে ৬.০০% থেকে ৫.৭৫% করা। এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল প্রভাবক:
শক্তিশালী GST রাজস্ব
সরকারের আর্থিক সক্ষমতা ও রাজস্ব ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, যার ফলে ঋণ জোগানের জন্য আর্থিক ব্যবস্থায় চাপ কম।
নিম্নমুখী মুদ্রাস্ফীতি
রেট কমালে ভোক্তা ব্যয় বৃদ্ধি পায়, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রণোদনা জোগায়।
আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা
FY26 সালে বাজার ৫০ বেসিস পয়েন্ট রেপো কাট প্রত্যাশা করছে, যার ফলে EBLR (External Benchmark Lending Rate) হ্রাসের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।
রেপো রেট হ্রাসের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া
ব্যাংক ঋণের সুদে পরিবর্তন
গৃহ ঋণ, অটোমোবাইল ঋণ, ও ব্যক্তিগত ঋণের সুদের হার কমার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।
EBLR কমলে ঋণগ্রহীতাদের মাসিক EMI-ও হ্রাস পেতে পারে।
বাজারে তরলতার প্রবাহ
রেপো রেট হ্রাস মানে ব্যাংকগুলির ঋণ গ্রহণে খরচ কম, ফলে বাজারে আরও বেশি মূলধন প্রবাহিত হতে পারে।
শিল্প খাতে উৎসাহ
উৎপাদন খাত, নির্মাণ ও আবাসন ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারী আগ্রহ বৃদ্ধি পেতে পারে, যার ফলস্বরূপ কর্মসংস্থানেরও সম্ভাবনা।
RBI-এর বার্ষিক প্রতিবেদনের প্রাসঙ্গিক বার্তা
RBI-এর ২০২৫ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ—
“নিম্নমুখী মুদ্রাস্ফীতি ও মাঝারি প্রবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে মুদ্রানীতি অনুকূল হওয়া উচিত, তবে বৈশ্বিক আর্থিক চাপে সতর্কতা অপরিহার্য।”
এই মন্তব্য একটি সম্ভাব্য ইঙ্গিত হতে পারে যে RBI সাময়িকভাবে নমনীয় মুদ্রানীতির দিকে অগ্রসর হতে পারে, তবে স্থায়ী নয়।