সিসিলি দ্বীপে আচমকা প্রকৃতির বিষমতা—মাউন্ট এটনার আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একবারে আকাশচুম্বী ছাই, লাভা ও গরম গ্যাসে ঢেকে দিয়েছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল।রাতের নিঃশব্দতা চিরে ধ্বনিত হয়েছে বিস্ফোরণের শব্দ, আতঙ্কে পর্যটকদের পালানো, আকাশপথে বাধা, পরিবেশে চিন্তার ছায়া।ইউরোপের সর্বাধিক সক্রিয় স্ট্র্যাটোভলক্যানো এবার যেন ক্ষণিকের শ্বাসে ছড়িয়ে দিল জলবায়ু নিয়ে নতুন প্রশ্ন।সিসিলির স্থানীয়রা অভ্যস্ত হলেও, এই অগ্ন্যুৎপাত ২০১৪-র পর সবচেয়ে প্রবল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।সব মিলিয়ে, প্রাকৃতিক থ্রিলার যেন বাস্তব পর্দায় ফিরে এলো।
কী ঘটেছে মাউন্ট এটনাতে?
মাউন্ট এটনার আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছে সোমবার গভীর রাতে।এই অগ্ন্যুৎপাত এতটাই শক্তিশালী ছিল যে তাওরমিনা আর কাটানিয়া শহর থেকেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে – প্রায় ৪০-৫০ কিলোমিটার দূর থেকে।আকাশে কয়েক কিলোমিটার উচ্চতায় উঠে যায় ছাই, ধোঁয়া আর শিলাখণ্ডের স্তম্ভ।গরম লাভার স্রোত নেমে আসে আগ্নেয়গিরির ঢাল বেয়ে।
সিসিলি দ্বীপ ও পর্যটনঃ
সিসিলি দ্বীপের এই মাউন্ট এটনা প্রতি বছর ১৫ লাখ পর্যটককে আকর্ষণ করে।অগ্ন্যুৎপাতের সময় প্রায় ৪০ জন পর্যটক আগ্নেয়গিরির ঢালে উপস্থিত ছিলেন।ভিডিওতে দেখা যায়, অনেকেই আতঙ্কে দৌড়ে নিচে নেমে আসছেন।একটানা ছাই, ধোঁয়া, লাভা আর গরম গ্যাস বের হতে থাকে কয়েক কিলোমিটার উচ্চতায়।তাওরমিনা আর কাটানিয়া – দুই শহর থেকেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।মাউন্ট এটনার আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত যখন শুরু হয়, তখন প্রায় ৪০ জন পর্যটক ছিল আগ্নেয়গিরির ঢালে।সিসিলি দ্বীপে এই আগ্নেয়গিরি ঘিরে পর্যটনের কদর খুব বেশি – বছরে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ যান।
বৈজ্ঞানিক দিক ও আগ্নেয়গিরির প্রকৃতিঃ
মাউন্ট এটনা ইউরোপের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি।এটি একটি স্ট্র্যাটোভলক্যানো, যা কয়েক হাজার বছর ধরে স্তরে স্তরে লাভার মাধ্যমে তৈরি হয়েছে।ক্রমাগত অগ্ন্যুৎপাত এই আগ্নেয়গিরিকে আরো অস্থিতিশীল করে তুলেছে।জাতীয় ভূকম্পন ও আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ ইনস্টিটিউট জানায়, এটি ছিল পাইরোক্লাস্টিক অগ্ন্যুৎপাত।মাউন্ট এটনার আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের সময় দক্ষিণ-পূর্ব দিকের ক্রেটারে আংশিক ধস নামে।লাভা, ছাই, গ্যাস আর পাথরের টুকরো মিশে ঢাল বেয়ে নামে মৃত্যুঝড়ের মত।
ফ্লাইটে প্রভাব ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
সিসিলি দ্বীপের মাউন্ট এটনার আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের পর VONA জারি হয়েছে (Volcanic Observatory Notice for Aviation)।কাটানিয়া ও পালেরমো বিমানবন্দর খোলা থাকলেও কিছু ফ্লাইট ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।তবে সিসিলি দ্বীপের প্রশাসন বলেছে, এখনই পুরোপুরি বিপদের কিছু নেই, কারণ লাভা containment zone-এর বাইরে যায়নি।
সিসিলি দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, “এই মাউন্ট এটনার আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত নতুন নয়, কিন্তু এবারে বেশ বড় ধরণের ছিল।”কেউ কেউ ফোনে ক্যামেরা চালু রেখে লাভার স্রোতের ভিডিও তুলেছেন।প্রশাসন জানিয়েছে, ক্ষতি না হলেও সতর্কতা বজায় রাখা জরুরি।
জলবায়ু পরিবর্তনের দিকেও একপলক
সিসিলি দ্বীপে মাউন্ট এটনার আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একদিনেই এত কার্বন আর সালফার ছেড়ে দিয়েছে, যা ব্রিটেনের এক বছরের কৃষিকাজে উৎপন্ন কার্বনের থেকেও বেশি।
কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যঙ্গ করে লিখেছেন,
“কিন্তু চিন্তার কিছু নেই, আরও ট্যাক্স দিন, বড় বড় কর্পোরেটকে ভর্তুকি দিন, তাহলেই তো পৃথিবী বাঁচবে!”
মাউন্ট এটনার আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একদিকে সিসিলি দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিচিতিকে আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, অন্যদিকে পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে নতুন করে ভাবার দরজা খুলে দিল। যদিও কোনো বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই, তবুও এই অগ্ন্যুৎপাত প্রমাণ করল—প্রকৃতি মাঝে মাঝে তার শক্তি মনে করিয়ে দেয়। সতর্কতা, সচেতনতা ও বৈজ্ঞানিক নজরদারি এখন সময়ের দাবি।
আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো