তিস্তা নদীর অবিরাম প্রবাহ ও উত্তর-পূর্ব বৃষ্টির দুরবস্থা সিকিমে গভীর প্রভাব ফেলেছে। এই প্রবল প্রাকৃতিক শক্তির ফলে চুংথাং জলবিদ্যুৎ প্রকল্পসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সিকিম বন্যার দুঃস্বপ্ন জীবন্ত হয়েছে। পর্যটকরা আটকা পড়েছেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে, আর উদ্ধারকাজ চলমান। এই ঘটনা শুধুই এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়, বরং প্রশাসনিক ও মানবিক চ্যালেঞ্জেরও এক বড় ছবি। তিস্তা নদীর রহস্যময়ী রূপ ও তার প্রভাব নিয়ে এই প্রতিবেদন পাঠককে নিয়ে যাবে ঘটনাস্থলের গভীরে।

🌊 তিস্তা নদীর রুদ্ররূপ

তিস্তা নদীর জলস্ফীতি উত্তর সিকিমের মানগান জেলায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। চুংথাং জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, যা ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন, আগের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং পুনর্নির্মাণের কাজ চলছিল। কিন্তু আবারও তিস্তার প্রবল স্রোতে এই প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ।চলতি বছর উত্তর-পূর্ব বৃষ্টি অনেক বেশি হয়েছে। এই বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর জলস্তর বেড়ে গেছে।তিস্তা নদী উত্তর সিকিমের অন্যতম বড় নদী। এই নদীর জলস্ফীতি এখন সিকিম বন্যার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।উত্তর-পূর্ব বৃষ্টির অবিরাম হাওয়া ও জলরাশির কারণে তিস্তা নদীর জল নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

Sikkim landslides: 1500 tourists stranded, main road blocked due to heavy  rains; 8 people missing | Today News

সিকিম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো

  • ফিদাং বেইলি ব্রিজ: মানগান থেকে চুংথাং যাওয়ার পথে অবস্থিত এই ব্রিজের ভিত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ফলে যানবাহন চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

  • সাংকালাং বাঁশের সেতু: ডজংগু অঞ্চলের সঙ্গে সংযোগকারী এই সেতুটি ভেঙে পড়েছে, ফলে ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত ইউনিট সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে

🚨 পর্যটকদের দুর্দশা

তিস্তা নদীর বন্যা ও উত্তর-পূর্ব বৃষ্টির কারণে লাচেন ও লাচুং এলাকায় পর্যটক আটকে পড়েছেন।লাচেন এ ১১২ জন এবং লাচুং এ ১৩৫০ জন পর্যটক আটকে আছেন।মানগান জেলা প্রশাসন তাদের উদ্ধার ও সহায়তার চেষ্টা করছে।

চুংথাং জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের পুনর্নির্মাণে বাঁধা

২০২৩ সালের ৪ অক্টোবরেই চুংথাং জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বন্যার কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়।প্রকল্প পুনর্নির্মাণের কাজ চলছিলো, কিন্তু তিস্তা নদীর জলোচ্ছ্বাস আবারও সেখানে ধ্বংসের ঝুঁকি তৈরি করেছে।বর্তমানে প্রকল্পের আশেপাশে কাজ চলছে, পানি উঠলেও কর্মীরা ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নিচ্ছেন।

স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা

তিস্তা নদীর প্রবল স্রোত ও অবিরাম উত্তর-পূর্ব বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকর্মীরা বেশ ঝুঁকিতে রয়েছেন।মানগানের জেলা কালেক্টর অনন্ত জৈন নিজে ঘটনাস্থলে থেকে উদ্ধার কাজ তদারকি করছেন।আট জন নিখোঁজ ব্যক্তিকে খোঁজার কাজ তিস্তা নদীর বেগ বাড়ার কারণে থমকে গেছে, আবহাওয়া ঠিক হলেই পুনরায় শুরু হবে।উদ্ধারকারী দল নদীর পাড় থেকে চারটি পরিচয়পত্র এবং ছয়টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে।

Sikkim: 1,500 tourists stranded amid heavy rain, landslides

প্রশাসনের নজরদারি ও পদক্ষেপ

শুক্রবার বিকালে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়, তবে রাতে তা পুনরায় চালু করা হয়েছে।মোবাইল সংযোগ ২৪ ঘণ্টার পর দুপুর ৩ টায় ফিরে এসেছে।পানীয় জলের সরবরাহ রবিবারের মধ্যে স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।তিস্তা নদীর বর্তমান প্রবাহ ও উত্তর-পূর্ব বৃষ্টির অবস্থা প্রশাসনের কড়া নজরদারির মধ্যে আছে।জরুরি যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার ও পর্যটকদের নিরাপদ স্থানান্তর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেয়েছে।

তিস্তা নদী ও উত্তর-পূর্ব বৃষ্টির মিশেলে সিকিম বন্যার পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক।চুংথাং জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সহ অন্যান্য অবকাঠামোর সুরক্ষায় তিস্তা নদীর ওপর নজর রাখা জরুরি।স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত কাজ করছে, কিন্তু তিস্তা নদীর প্রবল জলস্রোত ও উত্তর-পূর্ব বৃষ্টির কারণে উদ্ধার কাজ এখনো বাধাগ্রস্ত।এই পরিস্থিতি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় শান্ত থাকা ও সঠিক তথ্যের উপর ভরসা রাখা কত জরুরি।

আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো

Leave a Reply