পশ্চিমবঙ্গের রেলভ্রমণের সম্ভাবনা: যা আছে, তা অনেক রাজ্যে নেই!
হেরিটেজ রেলপথের ঐতিহাসিক তাৎপর্য
দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে (DHR)
UNESCO World Heritage Site – দেশের একমাত্র ‘লিভিং হেরিটেজ রেলওয়ে’ যা এখনও কার্যকর।
বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র, তবুও রেল পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কেন উদ্যোগ নেই, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।
ভারতীয় রেল ছাড়া কোনও বেসরকারি উদ্যোগ এতে জড়িত নয় – চূড়ান্ত অবহেলা।
লুপ, রিভার্সিং স্টেশন এবং ব্ল্যাক হিল – অভূতপূর্ব রেল প্রকৌশলের নিদর্শন
বিদেশে এগুলো একাধিক তথ্যচিত্রে জায়গা পেয়েছে, অথচ রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গে গুরুত্ব পাচ্ছে না।
ভৌগোলিক বৈচিত্র্যের সঙ্গে রেল সংযোগ
সমুদ্র থেকে পাহাড় – একটি ট্রেন ভ্রমণে বাংলার রূপান্তর
শিলিগুড়ি থেকে দিঘা পর্যন্ত ভিন্ন ভৌগোলিক রূপ—এটা রেলপথ ধরে বাংলার সৌন্দর্য দেখানোর এক অনন্য পথ হতে পারত।
আদিবাসী অঞ্চল ও চা-বাগান এলাকা – অপরিচিত সৌন্দর্যের সম্ভার
বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, জলপাইগুড়ির চা-বাগান অঞ্চল দিয়ে heritage train tour চালানো যেত, কিন্তু রেল পর্যটনের ভবিষ্যৎ পশ্চিমবঙ্গে আজও অন্ধকারেই রয়েছে।
ঐতিহাসিক স্টেশনগুলোর সাংস্কৃতিক গুরুত্ব
হাওড়া, শিয়ালদহ, রানাঘাট – ব্রিটিশ আমলের অবকাঠামো
আন্তর্জাতিক মানের heritage station হিসেবে সাজানো যেত, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহাসিক ট্রেনগুলি পর্যটনে ব্যবহৃত হয় না কেন – সেই প্রশ্ন কখনও আলোচনার কেন্দ্রে আসেনি।
স্টেশন-ভিত্তিক থিম্যাটিক ট্যুর
হাওড়ায় “রেল ও কলকাতা” থিম, শিলিগুড়িতে “চা ও টয় ট্রেন” – কিন্তু বাস্তবতায় এমন কোনো পরিকল্পনা নেই।
জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে পড়ার প্রকৃত কারণ
প্রশাসনিক অসহযোগিতা ও বাজেট বরাদ্দের অভাব
প্রতিবার রেল বাজেটে নাম মাত্র বরাদ্দ, তাতে রেল পর্যটনে বিনিয়োগের অভাব পশ্চিমবঙ্গের জন্য কতটা ক্ষতিকর, তা স্পষ্ট।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের নিজস্ব পর্যটন শাখার অনুপস্থিতি
দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তর রেল পর্যটনে বিশেষ ট্যুর চালায়, অথচ পূর্বাঞ্চল রেল আজও উদাসীন।
সম্ভাব্য পরিকল্পনা ও দৃষ্টান্ত
Heritage Train Circuit – একাধিক মডেল তৈরি সম্ভব
DHR + Netaji Subhas Birthplace Tour + Coochbehar Palace Line — একটি এক্সটেন্ডেড হেরিটেজ সার্কিট।
Art on Train – বাংলার লোকশিল্প ও পটচিত্র ব্যবহার করে theme-based decoration
সরকারি সহযোগিতা না থাকায় এগুলো বাস্তবায়নের পথে আসছে না।
Eco-tourism সহ রেল ট্যুর – সুন্দরবনের দিকে স্পেশাল জঙ্গল ট্রেন
জনপ্রিয় হতে পারত আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে, যদি রেল পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কেন উদ্যোগ নেই, এই প্রশ্ন গুরুত্ব পেত।
রাজ্যের সম্ভাবনা হারানোর পথে
পশ্চিমবঙ্গের মতো বৈচিত্র্যময়, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ রাজ্য, যেখানে রেলপথ ধরে বাংলার সৌন্দর্য উপস্থাপন করা যেত সারাবিশ্বের সামনে, সেখানে রেল পর্যটনে বিনিয়োগের অভাব পশ্চিমবঙ্গের জন্য কতটা ক্ষতিকর – তা নিঃসন্দেহে ভেবে দেখা দরকার।
যতদিন না সরকার এই দিকটির গুরুত্ব অনুধাবন করে, ততদিন পর্যন্ত রেল পর্যটনের ভবিষ্যৎ পশ্চিমবঙ্গে শুধু কল্পনাতেই রয়ে যাবে।
রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গ: কাগজে-কলমে প্রচুর পরিকল্পনা, বাস্তবে শূন্য!
পরিকল্পনার সংখ্যা অনেক, বাস্তবায়ন নেই বললেই চলে
IRCTC-র পর্যটন প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গের নেই উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি
প্রতি বছর কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রক ও IRCTC একাধিক হেরিটেজ রেলভ্রমণ ও থিম-ভিত্তিক ট্রেন চালু করে।
অথচ রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গ থেকে কার্যত অনুপস্থিত।
“Desert Circuit”, “Temple Circuit”, “North-East Explorer” চললেও পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহাসিক ট্রেনগুলি পর্যটনে ব্যবহৃত হয় না কেন – এ নিয়ে কোনও বিশ্লেষণ নেই।
( রাজ্য পর্যায়ের ‘Tourism Master Plan’-এ রেল পর্যটনের গুরুত্ব নেই
পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাদের পর্যটন নীতিতে দিঘা, সুন্দরবন, ডুয়ার্সের কথা বললেও রেল পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কেন উদ্যোগ নেই – এই বিষয়টি বরাবর এড়িয়ে চলেছে।
ঘোষণামাত্রেই সীমাবদ্ধ একাধিক প্রকল্প
Toy Train Revival Project – প্রতিশ্রুতি, কিন্তু কাজ শূন্য
নিউ জলপাইগুড়ি-দার্জিলিং লাইন আপগ্রেডের ঘোষণা হয় ২০১৮ সালে, বাজেটও বরাদ্দ হয়েছিল।
আজও তা কেবল কাগজেই, বাস্তবে কোনও আধুনিকীকরণ হয়নি। ফলে রেল পর্যটনের ভবিষ্যৎ পশ্চিমবঙ্গে অন্ধকারেই।
Heritage Station Beautification – থেমে থাকা কল্পনাচিত্র
শিয়ালদহ, হাওড়া, মালদহ, আসানসোল স্টেশনকে হেরিটেজ হাব বানানোর প্রস্তাব এসেছিল, কিন্তু রেল পর্যটনে বিনিয়োগের অভাব পশ্চিমবঙ্গের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা প্রমাণ করে কিছুই শুরু হয়নি।
কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ের অভাব
আলাদা পর্যটন কর্পোরেশন গঠনের অভাব
অন্যান্য রাজ্য যেমন রাজস্থান, গুজরাট বা মধ্যপ্রদেশে রয়েছে পর্যটন-রেল কর্পোরেশন, সেখানে রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গে পরিচালনার জন্য এমন কোনও পৃথক সংস্থা নেই।
রাজনৈতিক টানাপোড়েনের ফলে প্রকল্পে বিলম্ব
কেন্দ্র-রাজ্যের রাজনৈতিক বিভেদে অনেক রেল পর্যটন প্রকল্প থমকে থাকে। যার ফলে রেল পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কেন উদ্যোগ নেই, তা অনেকটাই পরিষ্কার।
তথ্য ও প্রচারের অভাব
বিদেশি পর্যটকের কাছে রেলভ্রমণ পণ্য হিসেবে উপস্থাপন হয় না
দক্ষিণ ভারতে যেখানে Nilgiri Mountain Railway, Palace on Wheels–কে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে প্রচার করা হয়, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের DHR বা কাটওয়াগামী লোকাল ট্রেনের নিজস্ব ইতিহাস আজও প্রচারহীন।
সরকারি ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত তথ্য নেই
পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন দফতরের অফিশিয়াল পোর্টালে রেলভ্রমণ সম্পর্কিত আলাদা ক্যাটাগরি নেই। রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গ এভাবে শুরুই হয়নি।
কীভাবে এগোতে পারত পশ্চিমবঙ্গ?
Public-Private Partnership (PPP) মডেল
IRCTC বা ইন্ডিগো ট্র্যাভেলস-এর সঙ্গে যৌথভাবে থিম ট্রেন চালু করে রাজ্য।
পুরুলিয়া-ঝালদা বা শান্তিনিকেতন-শিলাইদহকে যুক্ত করে সাংস্কৃতিক রুট – কিন্তু এগুলো আজও ভাবনার বাইরে।
Seasonal Heritage Rides
পুজোর সময় হেরিটেজ ট্রেন, বসন্ত উৎসবে ট্রেন-ভ্রমণ – এমন পরিকল্পনা গৃহীত হলেও রেল পর্যটনের ভবিষ্যৎ পশ্চিমবঙ্গে রূপ পায়নি।
“কাজ চলিতেছে” – এই চিরাচরিত ব্যাখ্যায় আটকে থাকা পশ্চিমবঙ্গের রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন আজ এক মৃত ধারণায় পরিণত হয়েছে।
রেল পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কেন উদ্যোগ নেই, এই প্রশ্ন যদি উপেক্ষিতই থাকে, তবে ভবিষ্যতে এই খাত থেকে আয়ের যে বিপুল সুযোগ তা চিরতরে হারানো শুধু সময়ের অপেক্ষা।
সরকারি অবহেলা রেল পর্যটনে: কিসের জন্য থেমে আছে সব?
প্রশাসনিক উদাসীনতা: যেটি ‘নীতিগত খামতি’ রূপে বহমান
পর্যটন নীতির মধ্যে রেলভিত্তিক পর্যটন অনুপস্থিত
পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন নীতিপত্রে রেল সংক্রান্ত পর্যটনের উল্লেখ ন্যূনতম।
রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গ-এ দীর্ঘকালীন নীতিগত কোনও পরিকল্পনা নেই।
পরিকল্পনা গ্রহণ হলেও নেই পর্যাপ্ত বাস্তবায়ন
মুর্শিদাবাদ, শান্তিপুর, কাটওয়া—এই রেল রুটগুলো ঐতিহাসিক হলেও সেগুলিকে পর্যটনের সাথে যুক্ত করার উদ্যোগ নেই।
রেল পর্যটনের ভবিষ্যৎ পশ্চিমবঙ্গে তখনই সুদৃঢ় হবে যখন এইসব ঐতিহাসিক রুটকে কার্যকরভাবে সংযুক্ত করা হবে।
বাজেট বরাদ্দ ও অর্থনৈতিক উদাসীনতা
বাজেটে রেল পর্যটনের জন্য নির্দিষ্ট ফান্ড অনুপস্থিত
রাজ্য বাজেটে পর্যটন খাতে বরাদ্দ বাড়লেও, রেল পর্যটনে বিনিয়োগের অভাব পশ্চিমবঙ্গের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা বোঝা যায় – কারণ আলাদা বরাদ্দ নেই।
কেন্দ্রীয় প্রকল্পেও রাজ্যের উৎসাহের অভাব
IRCTC-এর “Bharat Gaurav” প্রকল্পে রাজস্থান, গুজরাটের অংশগ্রহণ থাকলেও পশ্চিমবঙ্গ নেই।
রেল পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কেন উদ্যোগ নেই, এর একটি বড় কারণ এই অর্থনৈতিক অনাগ্রহ।
রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিকাঠামোর সংকট
হেরিটেজ ট্রেন ও স্টেশনের ন্যূনতম রক্ষণাবেক্ষণ
দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের (DHR) স্টিম ইঞ্জিনের একাধিক অংশ আজও মেরামত হয়নি।
পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহাসিক ট্রেনগুলি পর্যটনে ব্যবহৃত হয় না কেন – এর পেছনে রয়েছে যন্ত্রাংশের অনুপলব্ধতা ও অব্যবস্থাপনা।
স্টেশন পরিবেশ পর্যটন-বান্ধব নয়
পুরনো স্টেশনগুলি যেমন কৃষ্ণনগর, বোলপুর—এ পর্যটকদের জন্য শৌচাগার, তথ্যকেন্দ্র, নির্দেশনা বোর্ড কিছুই নেই।
এই সংকট রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গ-এ সরকারি ব্যর্থতার নিদর্শন।
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সমন্বয়ের অভাব
রাজ্য-কেন্দ্র দ্বন্দ্বে প্রকল্প থমকে
কেন্দ্রীয় মন্ত্রণালয় প্রকল্প প্রস্তাব পাঠালেও রাজ্য তা অনুমোদনে দেরি করে।
যেমন ‘Ganga Heritage Train Route’—২০১৯ সালে প্রস্তাব হয়েছিল, কিন্তু আজও নেই কোনও অগ্রগতি।
যৌথ প্রকল্পে নেই আন্তঃবিভাগীয় সমন্বয়
রেল, পর্যটন, সংস্কৃতি দফতরের মধ্যে সহযোগিতা প্রায় অদৃশ্য।
এর ফলে রেল পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কেন উদ্যোগ নেই, তা সহজেই অনুমান করা যায়।
প্রচার ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের অভাব
IRCTC বা Rajya Tourism Portal-এ নেই রেলভ্রমণের আলাদা বিভাগ
রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গ-এর কোনও দৃশ্যমান ডিজিটাল রূপরেখা নেই।
ট্রেনভিত্তিক অভিজ্ঞতা আন্তর্জাতিক পর্যটকের কাছে অচেনা
Nilgiri, Shimla-এর মত প্রচারের অভাবে DHR-এর আসল গল্প হারিয়ে যাচ্ছে।
সংরক্ষণে বেসরকারি অংশীদারিত্বের সুযোগ নেই
Private Tour Operators-দের অংশগ্রহণ নেই
ইন্টারেস্টেড কোম্পানিগুলিকে উদ্বুদ্ধ করে heritage ট্রেন পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
মিউজিয়াম বা থিম স্টেশন তৈরির উদ্যোগ অনুপস্থিত
ইন্ডোর-স্টাইল railway museums, যেগুলো মহারাষ্ট্র বা গুজরাটে জনপ্রিয়, তা রেল পর্যটনের ভবিষ্যৎ পশ্চিমবঙ্গে কেন নেই, সেটাও প্রশ্নযোগ্য।
সরকারি স্তরে পরিকল্পনা, বরাদ্দ, রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রচারের যে ঘাটতি তা স্পষ্টভাবেই রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গ-এর সর্বনাশ ডেকে আনছে।
রেল পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কেন উদ্যোগ নেই, এই প্রশ্নের পেছনে একাধিক সুস্পষ্ট, অথচ উপেক্ষিত কারণ রয়েছে – যা দূর না হলে, পশ্চিমবঙ্গের রেল পর্যটনের সম্ভাবনা কেবল ইতিহাসেই রয়ে যাবে।
চরম বিপরীতে অন্য রাজ্য কী করছে?
রাজস্থান: ঐতিহ্যের রাজকীয় প্রদর্শন
Palace on Wheels – রেল পর্যটনের এক জীবন্ত প্রতীক
১৯৮২ সাল থেকে চালু, ভারতের প্রথম বিলাসবহুল রেলভ্রমণ প্রকল্প।
প্রতিটি কোচ সাজানো রাজপুত সভ্যতার অনুকরণে – যেন চলন্ত রাজপ্রাসাদ।
৭ রাত ৮ দিনের সফরে জয়পুর, যোধপুর, উদয়পুর, চিত্তৌড় – সব ঐতিহাসিক গন্তব্য।
এই মডেল রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গ-এ প্রয়োগযোগ্য হলেও, পশ্চিমবঙ্গে এমন কোনও উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্প নেই।
রাজস্ব, কর্মসংস্থান, বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহ
প্রতিবছর গড়ে ৩০০০+ বিদেশি পর্যটক।
রেল পর্যটনের ভবিষ্যৎ পশ্চিমবঙ্গে এমন সম্ভাবনার চিত্র আঁকতে ব্যর্থ, যেখানে রাজস্থান সেটিকে সোনার খনিতে পরিণত করেছে।
মহারাষ্ট্র: Deccan Odyssey – অভিজাতদের রেলস্বপ্ন
Deccan Odyssey – ভারতের ‘মুভিং হেরিটেজ হোটেল’
চালু: ২০০৪।
ট্রেন রুটে – মুম্বই, আগা খান প্যালেস, এলোরার গুহা, কোঙ্কণ উপকূল।
কোচের প্রতিটি সেকশন একেকটি ঐতিহাসিক থিমে নির্মিত।
ওয়াইন ট্যুর, মিউজিয়াম ভিজিট, স্পা সার্ভিস — একাধিক এক্সক্লুসিভ প্যাকেজ।
সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ
Maharashtra Tourism Development Corporation ও Indian Railways-এর সফল সহযোগিতা।
অথচ রেল পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কেন উদ্যোগ নেই, সেই প্রশ্ন বারবার জাগে — কারণ এখানে এমন যৌথ প্রয়াস অনুপস্থিত।
দক্ষিণ ভারত: Southern Splendour – ইতিহাস ও প্রকৃতির নিপুণ জুটি
‘Golden Chariot’ ট্রেনের ‘Southern Splendour’ রুট
কর্ণাটক, তামিলনাড়ু ও কেরল অতিক্রম করে – মহাবলিপুরম থেকে কুমারকম পর্যন্ত বিস্তৃত।
Unesco World Heritage Site ভ্রমণ, আয়ুর্বেদিক থেরাপি, সংস্কৃতি সন্ধ্যা – প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত।
ট্রেনের প্রতিটি কামরার নাম – প্রাচীন দক্ষিণ রাজবংশের নামে।
দক্ষিণ রাজ্যগুলির সমন্বিত পর্যটন রূপরেখা
মাল্টি-স্টেট টুরিস্ট বোর্ডের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত।
রেল পর্যটনের ভবিষ্যৎ পশ্চিমবঙ্গে এমন সাংগঠনিক কাঠামোর অভাবে আজও দিকহারা।
আর ওদিকে আমরা?
দার্জিলিং টয় ট্রেন – জর্জরিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে
UNESCO হেরিটেজ ট্যাগ থাকা সত্ত্বেও DHR প্রতিদিনের টিকিট সমস্যা, লোকোমোটিভ সংকট ও সিগন্যাল ব্যর্থতায় জর্জরিত।
রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গ-এ এই গৌরবময় সম্পদ কার্যত অবহেলিত।
পাহাড়ি রেলপথ – ভূমিধসে ক্ষতবিক্ষত, পুনর্গঠনে পরিকল্পনার অভাব
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঘুম পর্যন্ত লাইনে একাধিক স্থানে ভূমি ধসের ঝুঁকি, কিন্তু ট্র্যাক পুনর্নির্মাণে নেই সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি।
তুলনায় কালকা-শিমলা রেলপথে প্রতি বছর ১০০+ কোটি রুপির রক্ষণাবেক্ষণ বরাদ্দ হয়।
পশ্চিমবঙ্গের রেল পর্যটন কেবল পরিকল্পনার খাতায়
রেল পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কেন উদ্যোগ নেই – এর উত্তর হয়ত মিলবে সরকারি ফাইলের ধুলোয় চাপা পড়ে থাকা প্রকল্প রিপোর্টে।
রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গ-এ আজও কেবল কথার পর্যায়ে, যখন অন্যান্য রাজ্য সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ও আন্তর্জাতিক মানের সেবার মাধ্যমে নিজেদের তুলে ধরছে।
রেল পর্যটনের ভবিষ্যৎ পশ্চিমবঙ্গে তখনই নিশ্চিত হবে, যখন এই সজাগ উদাহরণগুলিকে শুধু কাগজে নয়, বাস্তব রূপরেখায় রূপান্তর করা হবে।
হেরিটেজ ট্রেন পশ্চিমবঙ্গে: শুধুই Nostalgia, বাস্তবে কিছু নেই!
দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে (DHR): ইতিহাসের ভারে নুইয়ে পড়া গৌরব
UNESCO হেরিটেজ ট্যাগ – বিশ্বজোড়া পরিচিতি, কিন্তু?
১৯৯৯ সালে UNESCO World Heritage স্বীকৃতি।
রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গ-এর এটি হতে পারত কেন্দ্রীয় সম্পদ।
বাস্তবে দিনে ২-৩টি Toy Train রুট, যা বহুবার বাতিল হয় আবহাওয়া, যান্ত্রিক গোলযোগ বা লোকোমোটিভ স্বল্পতার কারণে।
টিকিটিং সিস্টেম – আধুনিকতা বর্জিত
অনলাইন পোর্টাল প্রায়ই ব্যর্থ হয়।
বিদেশি পর্যটকদের অভিযোগ: দাম ও পরিষেবার মধ্যে বিরাট অসামঞ্জস্য।
রেল পর্যটনের ভবিষ্যৎ পশ্চিমবঙ্গে এরকম একটি সিস্টেম দিয়ে আদৌ গড়ে উঠবে কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ।
ইতিহাসপ্রেমের নামে আবেগমূলক প্রচার
Heritage Train Tours – নামেই হেরিটেজ, পরিষেবায় নয়
নিউ জলপাইগুড়ি–দার্জিলিং ও রঙ–ঘুম রুটে ট্রেন চললেও, এতে হেরিটেজের ছোঁয়া নেই – নেই ঐতিহ্যবাহী কোচ বা ইন-ট্রেন গাইডেড ভ্রমণ।
রেল পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কেন উদ্যোগ নেই, এই প্রশ্ন প্রকট যখন দেখা যায়, কোচ গুলি রঙচটা, জানালায় ধুলো ও সিটে ছেঁড়া কাপড়।
অন্য রাজ্যে হেরিটেজ ট্রেন মানেই অভিজাততা
রাজস্থানে Palace on Wheels, দক্ষিণ ভারতে Golden Chariot – প্রত্যেকেই রেল পর্যটনের ব্র্যান্ড আইকন।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন শুধুই ব্যানার, পোস্টার, উৎসবমুখীন শোভাযাত্রায় সীমাবদ্ধ।
আঞ্চলিক হেরিটেজ লাইন: অব্যবহৃত ও অবহেলিত
Howrah–Amta Narrow Gauge Line
একসময় এই লাইন ছিল ব্রিটিশ-নির্মিত সবচেয়ে পুরনো ট্র্যাকের একটি।
বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে ভাঙা এবং রক্ষণাবেক্ষণহীন, অথচ এটি রেল পর্যটনের ভবিষ্যৎ পশ্চিমবঙ্গে এক অপার সম্ভাবনা ছিল।
কোন সংরক্ষণ নেই, নেই রিভাইভাল প্ল্যান।
Katwa–Burdwan লাইন – ‘হেরিটেজ’ বলা হলেও ন্যূনতম পর্যটন সুবিধা নেই
স্টেশনের কাঠামো ব্রিটিশ আমলের, কিন্তু ভেঙে পড়ছে – দর্শনার্থী নেই, প্রচার নেই, রেল কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।
রেল পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কেন উদ্যোগ নেই – এর নিখুঁত প্রতিচ্ছবি।
গাইডেড ট্রেন ট্যুরের অভাব
Heritage Walks আছে, Heritage Train নেই!
কলকাতায় স্টেট ট্যুরিজম অথরিটি পরিচালিত হেরিটেজ হাঁটার (walk) প্যাকেজ থাকলেও, রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গ এই ঘরানায় একেবারেই নিষ্ক্রিয়।
ভিক্টোরিয়া–প্রিন্সেপ ঘাট ঘোরার ব্যবস্থা আছে, কিন্তু শিয়ালদহ থেকে বনগাঁ বা মালদা পর্যন্ত কোনও হেরিটেজ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ট্রেন নেই।
অন্যান্য রাজ্যে গাইডেড ভ্রমণ – একাডেমিক ও পর্যটন উভয়ের সংমিশ্রণ
মহারাষ্ট্রে Deccan Odyssey ট্যুরে ইতিহাসবিদ ও রিসার্চাররা onboard explanation দিয়ে থাকেন।
রেল পর্যটনের ভবিষ্যৎ পশ্চিমবঙ্গে এই মডেল অনুসরণ করলে ঐতিহাসিক রেললাইন পুনরুজ্জীবিত হতে পারত।
প্রশাসনিক নির্বাকতা ও ‘বিচারাধীন’ প্রকল্প
ঘোষণার পরে হিমঘরে পাঠানো প্রকল্প
২০১৭ সালে মুর্শিদাবাদ–নবদ্বীপ Heritage Rail Route ঘোষণা হলেও আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গ বারবার আটকে যায় বাণিজ্যিক লাভ-ক্ষতির হিসাবে।
কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বের ফাঁদে পর্যটনের ভবিষ্যৎ
বাজেট বরাদ্দ নেই, নেই সমন্বিত প্ল্যান।
ফলে, রেল পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কেন উদ্যোগ নেই, তার প্রকৃত কারণ – ইচ্ছার অভাব ও আমলাতান্ত্রিক নিষ্ক্রিয়তা।
রেলভিত্তিক পর্যটন উন্নয়ন পশ্চিমবঙ্গ-এ যে এখনো ‘nostalgia’-র আবরণে ঢাকা পড়ে আছে, তা স্পষ্ট। অথচ, বাস্তব পরিকল্পনা, গাইডেড অভিজ্ঞতা, রক্ষণাবেক্ষণ ও বুদ্ধিদীপ্ত প্যাকেজিং ছাড়া রেল পর্যটনের ভবিষ্যৎ পশ্চিমবঙ্গে কেবল এক অলীক কল্পনা হয়ে থাকবে।
রেল পর্যটনের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে কেন উদ্যোগ নেই – এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে উঠে আসে এক নির্মম বাস্তব: এখানে ‘ঐতিহ্য’ কেবল কথার অলংকার, কাজের নয়।
তাহলে উপায় কী? কীভাবে বাংলার রেলপথ পর্যটনের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে?
বাংলার রেলপথ পর্যটনের জন্য ব্যবহার অত্যন্ত সম্ভাবনাময়, কিন্তু দুঃখজনকভাবে এটি এখনও যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। তবে, এর সম্ভাবনা একেবারে নিঃশেষিত নয়। নিম্নে রেলপথের ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো, যাতে বাংলার রেলপথ পর্যটনের জন্য ব্যবহার করার পথ পরিষ্কার হয়।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক রেলপথ রুটগুলি চিহ্নিত করা
ঐতিহাসিক রেলপথগুলির পুনঃউন্নয়ন
রেলপথ পর্যটন বাংলায় ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে ঐতিহাসিক রেলপথগুলির পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের মাধ্যমে।
উদাহরণ হিসেবে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে (DHR) কে পুনঃউন্নয়নের জন্য সংস্কারের প্রয়োজন। এটি বাংলার রেলপথ পর্যটনের জন্য ব্যবহার করার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে, যেখানে পর্যটকরা পুরানো ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারেন।
শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং রেলপথ
এই রুটটি, যেটি দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে হিসাবে পরিচিত, একসময়ের জনপ্রিয় রেলপথ। এটি এখনও অনেক পর্যটকের আকর্ষণ।
বাংলার রেলপথ পর্যটনের জন্য ব্যবহার এই রুটটিতে বিশেষ সংস্কৃতি ও ইতিহাসের মাধ্যমে বাড়ানো যেতে পারে।
ভারতীয় ট্রেন ট্যুরিজমের মডেল অনুসরণ
Palace on Wheels এর ধারণা
রাজস্থানের “Palace on Wheels” এর মতো অভিজ্ঞান, যা অভিজাত ট্রেন পর্যটন, বাংলায় রেলপথ পর্যটনের জন্য ব্যবহার করার জন্য উপযোগী হতে পারে।
এই ধরনের ট্রেনসেখানে রাজকীয় অভিজ্ঞতা, বিলাসবহুল খাবার এবং বিশেষ সেবা দিতে পারে, যা আধুনিক পর্যটকদের আকৃষ্ট করবে।
Luxury Train Services
দক্ষিণ ভারতীয় ট্রেন ট্যুর যেমন “Golden Chariot” – এগুলি বাংলার জন্যেও একটি আদর্শ মডেল হতে পারে।
বাংলার রেলপথ পর্যটনের জন্য ব্যবহার করার জন্য লাক্সারি ট্রেন পরিষেবা চালু করা গেলে, পর্যটনখাতের বড় পরিবর্তন আসতে পারে।
উন্নত ট্রেন ভ্রমণ অভিজ্ঞতা
আধুনিক প্রযুক্তি ও পরিষেবা
বাংলার রেলপথ পর্যটনের জন্য ব্যবহার করার জন্য অত্যাধুনিক ট্রেন পরিষেবা প্রয়োজন, যেখানে Wi-Fi, প্রাইভেট লাউঞ্জ, এবং আধুনিক সেফটি ব্যবস্থা থাকবে।
একটি ভ্রমণ সিস্টেমের মধ্যে উন্নত সিস্টেম যেমন ট্রেন ট্র্যাকিং, পেমেন্ট সিস্টেম ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
স্মার্ট ট্রেনের ব্যবহার
বাংলার পর্যটকদের জন্য উন্নত স্মার্ট ট্রেন পরিষেবার ব্যবস্থাপনাও করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, স্মার্ট ট্রেনগুলি পর্যটকদের জন্য রুটে গাইড প্রদান করবে এবং বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক স্থান সম্পর্কে তথ্য দেবে।
স্থানীয় বাজার ও সম্প্রদায়ের উন্নয়ন
স্থানীয় বাজারে প্রচার
বাংলার রেলপথ পর্যটনের জন্য ব্যবহার শুধুমাত্র পর্যটকদের নিয়ে আসা নয়, এটি স্থানীয় বাজারের বিকাশেও সাহায্য করতে পারে।
বিভিন্ন অঞ্চলের ট্রেন রুটের সঙ্গে স্থানীয় বাজার, খাবার, এবং সংস্কৃতি সংযুক্ত করে ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্ব তুলে ধরা যেতে পারে।
স্থায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি
রেলপথ পর্যটন বাংলা অঞ্চলের জন্য বৃহৎ পরিমাণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে। ট্রেন পরিষেবা, গাইড, ট্যুর অপারেটর, এবং অন্যান্য সমর্থনকারী পরিষেবার মাধ্যমে স্থানীয় মানুষের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব।
এডভেঞ্চার ট্যুরিজম এবং নান্দনিক রেলপথ
পাহাড়ি রেলপথে অ্যাডভেঞ্চার
বাংলার রেলপথ পর্যটনের জন্য ব্যবহার আরও নান্দনিক অভিজ্ঞতা প্রদান করতে পারে যদি পাহাড়ি রেলপথ এবং তাতে অ্যাডভেঞ্চার ভ্রমণ ব্যবস্থা চালু করা যায়।
উদাহরণস্বরূপ, পাহাড়ি রুটের মাধ্যমে ভ্রমণ করা হলে, ট্রেনের জানালা থেকে সবার সামনে ক্যানভাস হয়ে উঠবে বিস্তীর্ণ পাহাড়ি দৃশ্য। এটি বাংলার রেলপথ পর্যটনের জন্য ব্যবহার এর অংশ হতে পারে।
সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যসম্পন্ন ভ্রমণ
বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং রেলপথের ইতিহাস সমৃদ্ধ স্থানগুলি যেমন কলকাতার প্রাচীন রেলস্টেশন, হাওড়া ব্রিজ ইত্যাদি ভ্রমণযোগ্য করা যেতে পারে, যাতে এটি নান্দনিক অভিজ্ঞতার সঙ্গে সংস্কৃতির সম্মিলন ঘটে।
গ্লোবাল পোর্টফোলিওতে বাংলার উপস্থিতি
আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য সেশন
বাংলার রেলপথ পর্যটনের জন্য ব্যবহার আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় ফ্যাক্টর হতে পারে, যদি এটি একাগ্রভাবে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের লক্ষ্য রেখে পরিকল্পিত হয়।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলার রেলপথ পরিষেবা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা যেতে পারে।
বাংলার রেলপথ পর্যটনের জন্য ব্যবহার একটি সম্ভাবনাময় ও উন্নয়নশীল ক্ষেত্র, যেখানে ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রণ ঘটানোর সুযোগ রয়েছে। ঐতিহাসিক রেলপথগুলি পুনঃউন্নয়ন, লাক্সারি ট্রেন সার্ভিস, এবং নতুন পরিষেবা গ্রহণে বাংলার রেলপথকে একটি বিশ্বমানের পর্যটন গন্তব্যে পরিণত করা যেতে পারে। তবে, একটি সুসংগঠিত ও কার্যকরী পরিকল্পনা প্রয়োজন, যাতে বাংলার রেলপথ পর্যটনের জন্য ব্যবহার করে দেশের পর্যটন খাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা সম্ভব।