পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা অভিভাবকদের মধ্যে এক নতুন আশার আলো জাগাচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, এই মাধ্যমেই রয়েছে গুণগত শিক্ষার চাবিকাঠি। তবে বাস্তব চিত্র ভিন্ন—ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম, এমন অভিযোগ দিন দিন বাড়ছে। শিক্ষক সংকট, অবকাঠামোর অভাব এবং শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। শহরের তুলনায় গ্রামীণ এলাকাগুলি রয়ে যাচ্ছে উপেক্ষিত। এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে—ইংরেজি মাধ্যম কি সত্যিই মানসম্মত শিক্ষার গ্যারান্টি, না কি এটি কেবল এক জনপ্রিয় মোহ?
সূচিপত্র
Toggleকী হচ্ছে আসলে?
পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল এখন এক ধরনের ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। চারপাশে হঠাৎ করে যেন ‘ইংরেজি মাধ্যম স্কুল’ খোলা হচ্ছে জাঁকজমকপূর্ণ বিল্ডিং আর চকচকে বিজ্ঞাপন দিয়ে। কিন্তু এই বাহ্যিক ঝলকে লুকিয়ে আছে কিছু তীব্র এবং অস্বস্তিকর প্রশ্ন।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বাড়লেও মানসম্মত শিক্ষা নেই
এই বাক্যটি এখন বাস্তবের প্রতিচ্ছবি। কেন? কারণ:
শিক্ষকের অভাব:
অধিকাংশ নতুন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে যোগ্য এবং প্রশিক্ষিত শিক্ষক নেই।
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম কারণ শিক্ষক নিজেরাই ভাষায় স্বচ্ছন্দ নন।
কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে কম বেতনে, অভিজ্ঞতা ছাড়াই।
সিলেবাস বনাম বোঝাপড়া:
ইংরেজি বই পড়ানো হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু শিক্ষার্থীরা মূল ধারণাটাই বুঝছে না।
মুখস্থ নির্ভরতা বাড়ছে—তথ্য জানে, কিন্তু বিশ্লেষণ করতে পারে না।
পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বৃদ্ধির কারণ
এই বৃদ্ধির পেছনে আছে কিছু জটিল কারণ, যা প্রথম নজরে ধরা পড়ে না:
মানসিক মোহ ও সামাজিক চাপ:
অনেক অভিভাবক বিশ্বাস করেন, ইংরেজি মাধ্যমে পড়লেই ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত।
শহরে “বাংলা মাধ্যম বনাম ইংরেজি মাধ্যম” নিয়ে এক প্রকার সামাজিক বিভাজন তৈরি হয়েছে।
বাংলা মাধ্যম স্কুলের প্রতি একটা অবমূল্যায়ন তৈরি হয়েছে।
প্রাইভেট স্কুল পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে ব্যবসার রূপ নিচ্ছে:
শিক্ষার নামে চলছে অব্যবস্থাপনা ও অদৃশ্য প্রতিযোগিতা।
অনেক স্কুল ব্যবসায়িক চিন্তায় পরিচালিত—উচ্চ ফি, ব্র্যান্ডিং, কিন্তু শিক্ষার গুণগত মান দুর্বল।
শিক্ষার নামে চলছে ব্যবসা, আর অভিভাবকরা পড়ছেন মায়াজালে।
শহরে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল, গ্রামে শিক্ষা বঞ্চনা
শহর ও গ্রামীণ শিক্ষার মাঝে তৈরি হয়েছে এক গভীর বিভাজন:
শহরে আধুনিক পরিকাঠামো, গ্রামে জরাজীর্ণ ভবন:
শহরের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে এয়ার-কন্ডিশনড ক্লাস, স্মার্ট বোর্ড, প্লে-জোন।
অথচ গ্রামে এখনও নেই ঠিকঠাক বসার জায়গা, পর্যাপ্ত শিক্ষক কিংবা শৌচালয়।
শহর বনাম গ্রামীণ শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্য:
শহরে শিক্ষকের সংখ্যা অনেক বেশি, গ্রামে এক শিক্ষককে সামলাতে হয় তিন-চারটি ক্লাস।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বাড়লেও মানসম্মত শিক্ষা নেই—বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে।
শিক্ষার গুণগত মান ও তার মূল সমস্যা
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম কেন?
ভাষা শেখা নয়, ভাষায় বোঝা জরুরি:
অনেক শিক্ষার্থী ইংরেজি পড়ছে, কিন্তু তাতে চিন্তা ও বিশ্লেষণের ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে না।
প্রশ্নফর্ম বুঝতে না পেরে পরীক্ষায় ভুল উত্তর দিচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা।
শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ:
শিক্ষাকে এখন দেখা হচ্ছে ‘সার্ভিস’ হিসেবে—যেখানে মান নয়, বিক্রি গুরুত্বপূর্ণ।
নামকরা ইংরেজি মাধ্যম স্কুলেও প্রায়শই দেখা যায় শিক্ষক বদল, কোর্স অসমাপ্ততা ও অতিরিক্ত ফি আদায়।
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম—কারণ এটা কেবল ‘মাধ্যম’, গুণগত শিক্ষা আলাদা জিনিস।
সরকারি বনাম প্রাইভেট শিক্ষা ব্যবস্থার বাস্তবতা
পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল প্রায় পুরোপুরি প্রাইভেট উদ্যোগে পরিচালিত, যেখানে:
সরকারি স্কুলগুলিতে ইংরেজি মাধ্যম শুরু হলেও সাপোর্ট সিস্টেম দুর্বল।
প্রাইভেট স্কুল পশ্চিমবঙ্গে অনেকটাই ব্র্যান্ড নির্ভর—শিক্ষা নয়, নামটাই মুখ্য।
সরকারি স্কুলে বহু ক্ষেত্রে শিক্ষক রয়েছেন, কিন্তু নেই পর্যাপ্ত পাঠদানের সুযোগ।
শিশুদের শিক্ষাগত মান কোথায় দাঁড়িয়ে?
প্রাথমিক স্তরে পড়তে শেখার আগে পড়ানো হচ্ছে ভাষাগত ‘অ্যাডভান্স’ বিষয়।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বাড়লেও মানসম্মত শিক্ষা নেই, কারণ মৌলিক বোধ গড়ে ওঠে না।
পড়া শেখার আনন্দ হারিয়ে যাচ্ছে, শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপে ভুগছে।
🔍 টুকরো তথ্য যা জানলে চমক পাবেন
এক সমীক্ষা অনুযায়ী, ৬৫% অভিভাবক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে সন্তানকে ভর্তির পর হতাশ হয়েছেন শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে।
কলকাতার বহু নামকরা ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষক বদলের হার বছরে ২৫%–৩৫% পর্যন্ত!
গ্রামীণ পশ্চিমবঙ্গে প্রতি ৫টি নতুন ইংরেজি স্কুলের মধ্যে ৩টিই ৫ বছরের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মানসম্মত শিক্ষার অভাবে।
এই পুরো বাস্তবতাই প্রমাণ করে—ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম, কারণ সমস্যাটা ‘ভাষা’ নয়, ‘দৃষ্টিভঙ্গি ও কাঠামোগত প্রস্তুতির অভাব’।
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম — কেন?
পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সংখ্যা হু-হু করে বাড়ছে, কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে উঠে আসে একাধিক সূক্ষ্ম, অথচ গুরুত্বপূর্ণ দিক, যেগুলো সাধারণ চোখে পড়ে না।
🔍 ভাষা না কি কৌশলগত বিভ্রান্তি?
ইংরেজি কোনও ম্যাজিক নয়:
ইংরেজি মাধ্যম স্কুল মানেই ভালো শিক্ষা—এই ধারণা আদতে এক সামাজিক মোহ।
বাস্তব হচ্ছে, মাধ্যম বদলালে মান বদলায় না।
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম, কারণ ভাষা নয়, কনসেপ্ট বোঝার দিকেই ঘাটতি।‘Spoken English’ বনাম ‘Academic English’:
বহু ছাত্র ইংরেজি বলতে পারলেও, পাঠ্যবিষয়ের গভীরতা বুঝতে পারে না।
ক্লাসে আলোচনার সময় ‘communication gap’ তৈরি হয় শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উভয়ের মধ্যেই।
📊 ডেটা বলছে ভিন্ন কথা
ASER 2023 রিপোর্ট (Annual Status of Education Report):
পশ্চিমবঙ্গে শহরের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ুয়া ৫ম শ্রেণির ৪৭% ছাত্র গাণিতিক সমস্যা সঠিকভাবে বুঝতে পারে না।
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম, কারণ মৌলিক ধারণা পরিষ্কার নয়।
ইংরেজি বই পড়ে গেলেও উত্তর লেখার সময় প্রশ্নটাই ভুল বোঝে ছাত্রছাত্রীরা।
NASSCOM-Linked Research (2022):
কলেজে ওঠার পর ৬৫% ছাত্র বলে তারা স্কুলজীবনে পড়া বিষয়গুলো শুধুই মুখস্থ করেছিল, বোঝেনি।
এই তথ্য মূলত ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্রদের ক্ষেত্রেই বেশি সত্যি।
📉 স্কুলে শিক্ষক-প্রশিক্ষণের ঘাটতি
শিক্ষকের দক্ষতা ও প্রস্তুতির অভাব:
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম কেন? কারণ অনেক ক্ষেত্রেই শিক্ষকেরা ভাষায় স্বচ্ছন্দ নন।
পাঠদানের সময় ভুল উচ্চারণ, ব্যাকরণগত ত্রুটি, আর দুর্বল ব্যাখ্যার ফলে শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্ত হয়।নতুন স্কুলে অপ্রশিক্ষিত শিক্ষক:
বহু নতুন প্রাইভেট ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ হয় কম বেতনে, তাই অভিজ্ঞ বা দক্ষ শিক্ষক যোগ দেন না।
ফলাফল: শিক্ষার মান কম, ক্লাসের গভীরতা কম।
⚠️ শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ও ফলাফল
“Education is a Service” না “Education is a Product”?
পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি স্কুল এখন একধরনের ব্র্যান্ড তৈরি করে ফেলেছে।চকচকে ইউনিফর্ম, বড় বিল্ডিং, ফ্যান্সি প্রজেক্ট—এইসব দেখিয়ে অভিভাবকদের মন জয় করা হচ্ছে।
কিন্তু ভিতরে নেই শিক্ষার কাঠামোগত গুণমান।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বাড়লেও মানসম্মত শিক্ষা নেই—এই সত্য এখানে সবচেয়ে স্পষ্ট।
‘ফি’ বাড়ছে, মান কমছে:
একাধিক নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে বছরে গড়ে ₹৮০,০০০–₹১,৫০,০০০ পর্যন্ত খরচ।
অথচ অনেক ক্ষেত্রেই একাধিক শ্রেণিতে শিক্ষক সংখ্যা অপর্যাপ্ত।
🧠 কনসেপ্ট শেখা নয়, কেবল রেজাল্ট-চিন্তাই মুখ্য
মুখস্থনির্ভর শিক্ষা:
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম, কারণ বোঝার পরিবর্তে পরীক্ষার ফল নিয়েই বেশি উদ্বেগ।
স্কুলগুলোতে প্রশ্নব্যাংক, সাজেশন, গাইড বই—এই তিনেই সীমাবদ্ধ প্রস্তুতি।
ক্রিটিকাল থিঙ্কিং নেই:
শিক্ষার্থীরা সমস্যা বিশ্লেষণ করতে পারে না, শুধু তথ্য মনে রাখে।
ফলে উচ্চশিক্ষায় গিয়ে বারবার ব্যর্থতা আসে।
📌 বিভ্রান্ত অভিভাবক, চাপে পড়ুয়া
অভিভাবকরা জানেন না ভিতরের বাস্তবতা:
ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বললেই তাঁরা ধরে নেন মান ভালো।
কিন্তু একাধিক ক্ষেত্রেই তারা খরচ করছেন গড়ের চেয়ে বেশি, অথচ প্রাপ্ত ফল শূন্য।
ছাত্রদের মানসিক চাপ:
ভাষা বুঝতে না পেরে পড়াশোনায় আগ্রহ হারিয়ে যাচ্ছে।
দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হচ্ছে ভয়ভিত্তিক, আনন্দের জায়গা নেই।
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম, কারণ শিক্ষাকে তারা বোঝেনি, কেবল মুখস্থ করেছে।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুল মানেই উন্নত শিক্ষা—এই বিশ্বাস এখন প্রশ্নের মুখে।
পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বাড়লেও মানসম্মত শিক্ষা নেই, কারণ শিক্ষা মানে শুধু ভাষা নয়, চিন্তনশীলতা, বিশ্লেষণক্ষমতা ও দৃষ্টিভঙ্গি গঠনের প্রক্রিয়া। ভাষা একটি মাধ্যম, শিক্ষা একটি দৃষ্টিভঙ্গি—এই গুরুত্বপূর্ণ সত্যটি যতদিন না বোঝা যাবে, ততদিন ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম—এই বাস্তবতা অটুট থাকবে।
সরকারি বনাম প্রাইভেট স্কুল – বাস্তব চিত্র ও বিভ্রান্তিকর মোহ
বর্তমান সময়ে পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ক্রমাগত বেড়ে চলেছে, বিশেষ করে প্রাইভেট খাতে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম কেন? এর পেছনে এক বড় ভূমিকা নিচ্ছে সরকারি বনাম প্রাইভেট শিক্ষা ব্যবস্থার সাংঘর্ষিক কাঠামো।
🔍 প্রাইভেট স্কুল: চমক আছে, ভিত নেই
▪️ বাহ্যিক গ্ল্যামার ও অভিভাবকের বিভ্রান্তি
চকচকে বিল্ডিং, এসি ক্লাসরুম, ডিজিটাল বোর্ড—এসব দেখে অভিভাবকরা ধরে নেন স্কুলটি মানসম্মত।
কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই শিক্ষক স্নাতকোত্তর ডিগ্রি-যুক্ত হলেও নেই যথাযথ প্রশিক্ষণ।
ফলাফল: ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম—ছাত্ররাও বোঝে না, শিক্ষকও গাইড করতে অক্ষম।
▪️ “Fee Driven Quality” একটি মিথ
২০২4 সালের এক সমীক্ষা বলছে, কলকাতার বেশিরভাগ প্রাইভেট ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে বছরে ফি ₹৯০,০০০–₹১,৮০,০০০ পর্যন্ত।
এই খরচ সত্ত্বেও শিক্ষার গুণগত মান প্রশ্নাতীত নয়।
প্রাইভেট স্কুল মানে কি সত্যিই ভালো শিক্ষা? উত্তর: নয় সবক্ষেত্রে।
📉 সরকারি স্কুল: মূল্যবান, অথচ উপেক্ষিত
▪️ অভিজ্ঞ শিক্ষক, কিন্তু অভাব অবকাঠামোর
অধিকাংশ সরকারি স্কুলে TET / CTET উত্তীর্ণ শিক্ষক রয়েছেন, যাঁদের পেশাগত প্রশিক্ষণ অনেক বেশি।
কিন্তু স্কুল বিল্ডিং, টয়লেট, লাইব্রেরি ও ল্যাবের অবস্থা করুণ।
এমনকি অনেক ক্ষেত্রে পাঠ্যবই সরবরাহও সময়মতো হয় না।
▪️ ভাষার সীমাবদ্ধতা এবং গ্রহণযোগ্যতা
বাংলা মাধ্যমে পড়ানো হচ্ছে বলেই অনেক অভিভাবক এই স্কুল বেছে নিচ্ছেন না।
অথচ শিক্ষার্থীদের কনসেপ্ট ক্লিয়ার হচ্ছে এখানেই বেশি।
তবুও, ভুল ধারণা ছড়িয়ে আছে যে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেই শিক্ষার মান উন্নত হয়—যা বাস্তবে ঠিক নয়।
📊 শিক্ষার গুণগত মানে কোনটা এগিয়ে?
সূচক | সরকারি স্কুল | প্রাইভেট ইংরেজি মাধ্যম স্কুল |
---|---|---|
শিক্ষক প্রশিক্ষণ | ✅ বেশিরভাগই প্রশিক্ষিত | ⚠️ বহু শিক্ষক অপ্রশিক্ষিত |
ভাষার দখল | ✅ মাতৃভাষায় স্পষ্ট বোঝা | ⚠️ ভাষা ফ্লোয়েন্ট, তবে কনসেপ্ট দুর্বল |
অবকাঠামো | ⚠️ দুর্বল | ✅ শক্তিশালী |
পরীক্ষার প্রস্তুতি | ✅ কনসেপ্ট বেসড | ⚠️ মুখস্থনির্ভর সাজেশন |
👉 স্পষ্ট যে, ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম—বিশেষত যখন শিক্ষার মূল লক্ষ্য বোঝা নয়, কেবল ব্র্যান্ডিং।
⚠️ প্রাইভেট বনাম সরকারি: বিভ্রান্তিকর ব্যালান্স
▪️ শহরে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল, গ্রামে শিক্ষা বঞ্চনা
কলকাতা ও অন্যান্য শহরে পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি স্কুল বেড়েছে প্রাইভেট খাতে।
কিন্তু গ্রামাঞ্চলে এখনো ছাত্ররা শিক্ষার মূল সমস্যা যেমন—শিক্ষক অভাব, টিচিং এইডের অভাব, বইয়ের অভাব—এর মধ্যে পড়াশোনা চালাচ্ছে।
▪️ সরকারি বনাম প্রাইভেট শিক্ষা মানেই অসম যুদ্ধ
অভিভাবকেরা ধারণা করেন: সরকারি মানেই খারাপ, প্রাইভেট মানেই ভালো।
কিন্তু ডেটা বলছে ভিন্ন কথা—NIEPA (2023)-র রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকারি স্কুলে শিক্ষার্থীর মৌলিক ভাষা ও গণিত দক্ষতা ১১% বেশি প্রাইভেটের তুলনায়।
আর এখানেই আবার প্রমাণিত—ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম, যদি শিকড় না থাকে শিক্ষার।
সরকারি ও প্রাইভেট স্কুলের এই অসম প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বৃদ্ধির কারণ মূলত অভিভাবকসমাজের এক ভ্রান্ত ধারণা।
কিন্তু ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম—এই কঠিন বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে যতই বাহ্যিক চাকচিক্যকে গুরুত্ব দেওয়া হোক না কেন, শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুতি ঘটছে।
সমাধান একটাই—ভাষা নয়, মানই আসল।
কিছু তথ্য: বাস্তব চিত্রে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ও শিক্ষার গুণগত মান
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বেড়ে চলেছে এক দুর্বার গতিতে। কিন্তু তথ্য বলছে এক জটিল বাস্তবতা—ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম, এবং এই সমস্যাটি শুধু ভাষার নয়, বরং গুণগত কাঠামোর।
📈 স্কুলের সংখ্যা বনাম মান: পরিসংখ্যানে বিভ্রাট
▪️ পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সংখ্যা:
2010 সালে ছিল প্রায় 2,500টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল, যার মধ্যে মাত্র 18% সরকারি অনুমোদিত ছিল।
2024 সালের মধ্যে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে প্রায় 7,800-এর বেশি, যার 70%-রও বেশি প্রাইভেট।
✅ এই বৃদ্ধির মূল কারণ:
বাজারভিত্তিক চাহিদা বৃদ্ধি
মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত অভিভাবকের ভাষাকেন্দ্রিক প্রবণতা
ইংরেজি মাধ্যম মানেই ভালো ভবিষ্যৎ—এই প্রচলিত ধারণা
⚠️ কিন্তু গবেষণা বলছে—ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম, কারণ অধিকাংশ স্কুলে শিক্ষকের দক্ষতা ও মান নিরীক্ষার কোন মডেল নেই।
📉 ASER রিপোর্টে উদ্বেগজনক তথ্য
(Annual Status of Education Report 2023 – পশ্চিমবঙ্গ অধ্যায়)
▪️ গ্রামীণ ও শহরের বৈষম্য:
শহরে প্রাইভেট ইংরেজি মাধ্যম স্কুল-এর ছাত্রীদের মধ্যে ক্লাস ৫-এর ৪৩% শিক্ষার্থী নিজের ক্লাস অনুযায়ী ইংরেজি পাঠ সঠিকভাবে পড়তে অক্ষম।
গ্রামে, যেখানে বাংলামাধ্যম স্কুল বেশি, ৪৮% শিক্ষার্থী ইংরেজিতে দুর্বল হলেও গাণিতিক ধারণায় এগিয়ে।
👉 এই পরিসংখ্যান থেকেই প্রমাণিত হয়:
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম, বিশেষত যদি শিক্ষাদান কেবলমাত্র ভাষা আর পোশাকি কাঠামোয় সীমাবদ্ধ থাকে।
🧑🏫 শিক্ষকের যোগ্যতা ও প্রশিক্ষণ – আসল ব্যর্থতা কোথায়?
▪️ প্রাইভেট ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে:
বহু শিক্ষক B.Ed বা D.El.Ed-এর কোনও স্বীকৃত প্রশিক্ষণ ছাড়াই নিয়োগ পাচ্ছেন।
দক্ষতার চেয়ে প্রাধান্য পাচ্ছে উচ্চারণ ও সাজসজ্জা।
২০২3 সালের WBBSE রিপোর্টে বলা হয়েছে:
শহুরে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ৩৫% শিক্ষক কোনও প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ছাড়াই শিক্ষকতা করছেন।
▪️ সরকারি বাংলামাধ্যম স্কুলে:
অধিকাংশ শিক্ষক TET উত্তীর্ণ, এবং B.Ed / M.Ed করা।
কিন্তু অবকাঠামোগত অভাব ও কম সংখ্যক ছাত্রছাত্রী স্কুলটিকে পিছিয়ে রাখে।
👉 বাস্তবতা: ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম, যদি শিক্ষক নিজেই ক্লাস কনটেন্ট আয়ত্তে না আনেন।
💸 শিক্ষা এখন “বিনিয়োগ”—ব্যবসা নয় তো?
▪️ খরচের তুলনায় মান:
প্রাইভেট স্কুলে বার্ষিক ফি ₹৫০,০০০ থেকে ₹২,০০,০০০ পর্যন্ত।
কিন্তু ক্লাসের মধ্যে রিডিং, রাইটিং, অ্যানালিটিক্যাল স্কিলের ঘাটতি প্রবল।
বিপরীতে, সরকারি স্কুলে নামমাত্র খরচে অনেক শিক্ষার্থী মৌলিক ধারণা বেশি আয়ত্ত করছে।
▪️ শিক্ষার নামে ব্যবসা চলছে স্কুলে:
অধিকাংশ প্রাইভেট ইংরেজি মাধ্যম স্কুল এখন Co-branding বা Franchising-এর মডেলে চলছে (উদাহরণ: Euro Kids, Mount Litera, DPS – স্পনসরড ব্রাঞ্চ)।
কিন্তু বোর্ড পরীক্ষায় ফলাফল অনেকসময়ই প্রশ্নবিদ্ধ।
👉 এই ব্যবস্থায় শিক্ষার মান কোথায়?—ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম, শুধুমাত্র লেবেল চেঞ্জ করলে শিক্ষার গভীরতা তৈরি হয় না।
📚 শিক্ষার্থীদের বাস্তব দক্ষতা: ফাঁক কোথায়?
▪️ ভাষা বনাম কনসেপ্ট:
একাধিক স্কুলে ইংরেজি বই মুখস্থ করানো হচ্ছে, কিন্তু “Why”-based প্রশ্নে পড়ুয়ারা থমকে যাচ্ছে।
ভাষাগত ফ্লুয়েন্সি দিয়ে চাকরি বা উচ্চশিক্ষা পাওয়া যায় না, যদি বেসিক না থাকে।
▪️ সফট স্কিল বনাম একাডেমিক স্ট্রেন্থ:
কলকাতার একটি Top 10 প্রাইভেট স্কুলে 2023 সালের বোর্ড পরীক্ষায় ১১৫ জনের মধ্যে ৫৭ জন ৭০%-এর নিচে পেয়েছে—যা ইঙ্গিত দেয় ভিতরের দুর্বলতা।
👉 এই উদাহরণগুলোই প্রমাণ করে—ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম বারবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে।
শুধু ভাষা নয়, প্রয়োজন বাস্তব শিক্ষা কাঠামো
যদি পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বৃদ্ধির কারণ হয় পুঁজিনির্ভর চাহিদা, তবে শিক্ষার মান তার বলি হচ্ছে।
শিক্ষার মূল লক্ষ্য—চিন্তাশক্তি, বিশ্লেষণ ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা—তা হারিয়ে যাচ্ছে শুধুমাত্র মিডিয়াম পরিবর্তনের চক্করে।
শিক্ষার ভাষা ইংরেজি হলেই যে মান ভালো হবে—এই ধারণা ভেঙে ফেলা দরকার।
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম—এই সত্য যদি উপেক্ষিত হয়, তাহলে ভবিষ্যতের একটি অন্ধ গলি অপেক্ষা করছে।
তাহলে উপায় কী?
👉 “ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম”—এই উদ্বেগজনক সত্য বদলাতে হলে প্রয়োজন একগুচ্ছ যুগোপযোগী, যুক্তিনির্ভর পদক্ষেপ, যেগুলি শুধু ভাষার পরিবর্তে শিক্ষার কাঠামোগত উন্নয়ন ঘটাবে।
📚 দ্বিভাষিক শিক্ষণ (Bilingual Pedagogy): যুক্তিবাদী পন্থা
▪️ কেন প্রয়োজন:
অধিকাংশ পশ্চিমবঙ্গে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল-এর শিক্ষার্থী ইংরেজি বুঝে না, মুখস্থ করে।
বিশ্বব্যাপী শিক্ষা বিশেষজ্ঞেরা বলছেন: মাতৃভাষা + ইংরেজি হল আদর্শ সংমিশ্রণ।
▪️ কীভাবে বাস্তবায়ন:
বিষয়ভিত্তিক ক্লাসে প্রথমে বাংলা ব্যাখ্যা, তার পর ইংরেজি অনুবাদ ও প্রয়োগ।
উদাহরণ: গণিতের Problem Solving অংশ আগে বাংলায় ব্যাখ্যা করে পরে ইংরেজিতে বোঝালে ছাত্রদের গড় সাফল্য ১৮%-২৮% পর্যন্ত বেড়েছে (সূত্র: NCF 2023 Draft Report)।
📌 ফলাফল: দ্বিভাষিক পদ্ধতি মানে ভাষাগত বিভ্রান্তি নয়—বরং এটি শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য এক পরীক্ষিত রণকৌশল।
🧑🏫 শিক্ষক প্রশিক্ষণে রূপান্তর: শুধু Degree নয়, Delivery-ও জরুরি
▪️ সমস্যা:
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম, কারণ শিক্ষকরা নিজেই ভাষা আয়ত্তে আনতে অক্ষম।
▪️ সমাধান:
শিক্ষকদের জন্য বাধ্যতামূলক CLIL (Content and Language Integrated Learning) প্রশিক্ষণ।
বছরে দু’বার রিফ্রেশার ট্রেনিং, যেখানে ভাষার পাশাপাশি Pedagogy ও Technology ব্যবহারের কৌশল শেখানো হবে।
📊 তথ্য: 2023 সালে Kerala Government-এ CLIL ট্রেনিং চালু হওয়ার পর, ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়াদের পঠনদক্ষতা ৩৭% বেড়েছে।
💡 মূল্যায়ন ব্যবস্থায় সংস্কার: মুখস্থ নয়, বিশ্লেষণ জরুরি
▪️ বর্তমান ব্যবস্থা:
একরকম প্রশ্ন, একরকম উত্তর মুখস্থ করানোই বেশিরভাগ ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষা মডেল।
▪️ করণীয়:
প্রশ্নপত্রে Bloom’s Taxonomy অনুসারে সমস্যা-ভিত্তিক প্রশ্ন বৃদ্ধি।
বার্ষিক পরীক্ষার পাশাপাশি মাসিক পারফরম্যান্স রিপোর্ট চালু করে দুর্বলতা চিহ্নিত করা।
📌 উদ্দেশ্য: শিক্ষার্থী মুখস্থ না করে বুঝে লেখে কি না, সেটাই হোক মানদণ্ড।
🏫 স্কুল অ্যাক্রিডিটেশন ও মান যাচাই ব্যবস্থা: অনুমোদন পেতে হলে মান দেখাও
▪️ সমস্যা:
পশ্চিমবঙ্গের বহু ইংরেজি মাধ্যম স্কুল কোন স্বীকৃতি ছাড়াই চলছে (যেমন CBSE / ICSE বোর্ডভুক্ত নয়, কিন্তু তা দাবী করছে)।
▪️ সমাধান:
প্রতিটি স্কুলকে State Accreditation Council থেকে Grade নিতে হবে (A+, A, B ইত্যাদি), যা পঠনপাঠনের মান অনুযায়ী নির্ধারিত হবে।
প্রতি ২ বছরে একবার মান মূল্যায়ন বাধ্যতামূলক।
📌 ফলাফল: অভিভাবকরা বুঝতে পারবেন—কোন স্কুলে শুধু “ইংরেজি” আছে, আর কোন স্কুলে “ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষার মান” আছে।
🧾 ডেটা-চালিত শিক্ষা (Data-Driven Schooling): যুক্তিবাদী সিদ্ধান্তের দিশা
▪️ বাস্তবতা:
সিদ্ধান্ত এখনো গ্রহণ হচ্ছে আবেগ বা বিজ্ঞাপন দেখে—not learning outcomes.
▪️ করণীয়:
প্রতিটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের Learning Analytics চালু করতে হবে।
প্রতি ছয় মাসে প্রকাশ্যভাবে রিপোর্ট করতে হবে:
Reading Level
Logical Ability
Concept Mastery
📊 USA-তে এই মডেল চালু করার পর ৪ বছরের মধ্যে গ্রেড ৫-৮ পর্যায়ে গড় সাফল্য বেড়েছে ২১%।
🎓 কারিকুলামে বাস্তব জীবনের সংযোগ: ভাষা শেখাও, বাস্তবেও প্রয়োগ শেখাও
▪️ বর্তমানে কী হচ্ছে:
Shakespeare শেখানো হচ্ছে ক্লাস ৪-এ, অথচ নিজে Interview দিতে গেলে বাচ্চা থেমে যাচ্ছে।
▪️ কী করা উচিত:
কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত হোক:
Soft Skills
Problem Solving through Language
Practical Communication Techniques
📌 লক্ষ্য: ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম এই অভিযোগ দূর করতে হলে কেবল সাহিত্য নয়, জীবনোপযোগী ভাষা শিক্ষা জরুরি।
✅ সারাংশে উপায় – এক নজরে
সমস্যার ধরন | কার্যকর সমাধান |
---|---|
ভাষা-নির্ভর চাপ | দ্বিভাষিক শিক্ষণ পদ্ধতি |
শিক্ষক দক্ষতা | CLIL প্রশিক্ষণ ও যাচাইকরণ |
পরীক্ষার মান | বিশ্লেষণমূলক প্রশ্ন ও ধারাবাহিক মূল্যায়ন |
স্কুলের বৈধতা ও মান | অ্যাক্রিডিটেশন ও পাবলিক রেটিং সিস্টেম |
শিক্ষার গুণগত পরিমাপ | ডেটা-চালিত এনালাইসিস ও রিপোর্টিং |
জীবন-নির্ভর শিক্ষা | বাস্তব জীবনের ভাষা প্রয়োগ অন্তর্ভুক্ত |
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম—এই সমস্যাটি শুধুই ভাষা ভিত্তিক নয়, এটি এক দৃষ্টিভঙ্গির বিচ্যুতি। ভাষাকে বাহন হিসেবে রেখে শিক্ষার গভীরতা তৈরি করলেই আসবে গুণগত পরিবর্তন। তা না হলে, ইংরেজি মাধ্যমে ডিগ্রি থাকবে—কিন্তু মন থাকবে ফাঁকা।
ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেও শিক্ষার মান কম—এই বাস্তবতা আর অস্বীকার করার সুযোগ নেই। শুধু ভাষা বদলে, মান বদলায় না। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল-এর উচিত শিক্ষার কাঠামোগত রূপান্তর, যেখানে ভাষা নয়, বোঝাপড়ার গভীরতা প্রাধান্য পাবে। সময় এসেছে—ভাষার মোহ ছেড়ে, শিক্ষার মান নিয়ে কঠোর প্রশ্ন তোলার। কারণ শিক্ষার নামে যদি কেবল ইংরেজি মাধ্যমে মুখস্থবিদ্যা শেখানো হয়, তবে তার চেয়ে বড় প্রতারণা আর নেই।
আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো