ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি আজ বিশ্ব রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। অর্থনৈতিক প্রভাব, সামরিক শক্তি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নিরিখে ভারত এখন একটি উদীয়মান বিশ্ব শক্তি। অথচ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এখনও ভারতের স্থায়ী আসন নেই—এটাই পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ডের প্রতিফলন। জাতিসংঘ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বারবার। ভোটাধিকার ও নেতৃত্বে বৈষম্য আজ বিশ্ব নেতৃত্বের ভারসাম্য নষ্ট করছে। এই অন্যায্য সমালোচনা যেন ভারতের ন্যায্য দাবি ও ভূমিকাকে প্রতিনিয়ত বাধাগ্রস্ত করছে। সময় এসেছে নতুন বিশ্ব বাস্তবতার স্বীকৃতির।

সূচিপত্র

বিষয়টা কী? — ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি নতুন নয়, কিন্তু এর গুরুত্ব এখন আগের থেকে অনেক বেশি। ভারত এখন শুধু একটি দেশ নয়—এটি এক উদীয়মান বিশ্ব শক্তি, যা অর্থনীতি, সামরিক, কূটনীতি—সব দিক থেকেই দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। তাহলে প্রশ্ন উঠছেই—এই দাবি কি অযৌক্তিক? নাকি এটা পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ডের বলি?

India as a permanent member of the UNSC

চলুন একটু গভীরে দেখা যাক—

 জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের গঠন এবং ভারতের অবস্থান

▪ বর্তমান কাঠামো:

  • জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এখন পাঁচটি স্থায়ী সদস্য: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, ও যুক্তরাজ্য।

  • এদের হাতে ভেটো শক্তি—মানে, যেকোনো সিদ্ধান্ত আটকানোর পূর্ণ অধিকার।

▪ ভারতের অবদান:

  • ভারত ৮ বার অস্থায়ী সদস্য হিসেবে কাজ করেছে, সর্বশেষ ২০২1-22 সালে।

  • বিশ্বে সর্বাধিক শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণকারী দেশগুলির মধ্যে ভারত অন্যতম।

  • জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক সময় থেকেই ভারতের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল।

➡️ অথচ, এত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও, ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি আজও বাস্তবায়িত হয়নি—এটাই চরম অন্যায্য সমালোচনা

 অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তির দিক থেকে ভারতের অবস্থান

▪ অর্থনৈতিক প্রভাব:

  • ভারত এখন বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি

  • GDP, প্রযুক্তি, ও বৈশ্বিক বাণিজ্য-এর বিচারে ভারত এক প্রবল শক্তি।

▪ সামরিক শক্তি:

  • ভারত পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র

  • বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সেনাবাহিনী রয়েছে ভারতের হাতে।

➡️ তা সত্ত্বেও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ থেকে বঞ্চিত—এটাই স্পষ্ট পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড

 পশ্চিমা দেশগুলির দ্বৈতনীতি ও ভোটাধিকার নিয়ে প্রশ্ন

▪ কেন এই দ্বৈতনীতি?

  • অনেক পশ্চিমা দেশ মনে করে, ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ পেলে তাদের আধিপত্য কমে যাবে

  • চীন তো প্রকাশ্যে ভারত-বিরোধিতা করে এই দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে।

▪ ভোটাধিকার নিয়ে বৈষম্য:

  • নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো শক্তি ব্যবহার করে স্থায়ী সদস্যরা নিজেরা নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়।

  • ভারতের মত গণতান্ত্রিক দেশের কোনও স্থায়ী ভোটাধিকার নেই—অথচ বহু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে অংশ নেয়।

➡️ এই সবই স্পষ্ট অন্যায্য সমালোচনা, যা ভারতের নেতৃত্বকে বিশ্বপরিসরে যথাযথ মর্যাদা পেতে বাধা দিচ্ছে।

 জাতিসংঘ সংস্কার: সময়ের দাবি

▪ বর্তমান কাঠামো সময়োচিত নয়:

  • জাতিসংঘের গঠনতন্ত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের জন্য উপযুক্ত ছিল।

  • কিন্তু আজকের বিশ্ব একেবারে ভিন্ন—নতুন বিশ্ব নেতৃত্ব, নতুন আর্থ-রাজনৈতিক বাস্তবতা তৈরি হয়েছে।

▪ ভারতের দাবি যৌক্তিক:

  • ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্র।

  • আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, জলবায়ু, সন্ত্রাসবাদ, উন্নয়ন—সব ক্ষেত্রেই ভারতের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে।

➡️ এইসব বাস্তবতাকে উপেক্ষা করা মানেই পশ্চিমা দেশগুলির অন্যায্য সমালোচনা ও দ্বৈতনীতি বজায় রাখা।

 সাধারণ মানুষের চোখে এর তাৎপর্য

▪ কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ বাঙালির জন্য?

  • ভারতের আন্তর্জাতিক মর্যাদা বাড়লে, বাঙালি ছাত্র-ছাত্রী, চাকরিপ্রার্থী, ব্যবসায়ী—সবাই উপকৃত হবে।

  • বিদেশে ভারতীয়দের গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে।

▪ নেতৃত্বের প্রশ্ন:

  • ভারত যদি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হয়, তাহলে দক্ষিণ এশিয়ার স্বার্থ আরও ভালোভাবে প্রতিনিধিত্ব পাবে।

  • পশ্চিমা দেশগুলির চাপ ও দ্বৈতনীতি কমবে।

➡️ তাই এই দাবি শুধু কূটনৈতিক নয়—এটা জাতীয় গর্বের প্রশ্ন। আর এই দাবির প্রতি অন্যায্য সমালোচনা মানেই দেশের মর্যাদাকে খাটো করা।

কেন এই ইস্যু এখন এত গরম?

ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি নতুন নয়, কিন্তু ২০২৫-এর প্রেক্ষাপটে এটি একেবারে বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রে এসে পড়েছে। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ইস্যু যেন আগুনে ঘি ঢালার মতোই। পশ্চিমা দেশগুলির পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড, ভোটাধিকার সংক্রান্ত বৈষম্য, এবং ক্রমবর্ধমান অন্যায্য সমালোচনা-ই এই দাবিকে এখন আরও স্পষ্ট ও শক্তিশালী করে তুলছে।

Why India Deserves a Permanent Seat in the UNSC ?

 বৈশ্বিক সংঘাত ও জাতিসংঘের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

▪ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ:

  • জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এই যুদ্ধে কার্যকর কোনও ভূমিকা নিতে পারেনি।

  • রাশিয়ার ভেটো শক্তি ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত আটকে দেওয়া জাতিসংঘের অকার্যকারিতার বড় উদাহরণ।

➡️ প্রশ্ন উঠছে—এই পরিষদ কতটা প্রাসঙ্গিক? আর যখন ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি সামনে আসে, তখন স্পষ্ট বোঝা যায়—নতুন শক্তির প্রয়োজন।

▪ গাজা-ইজরায়েল সংঘাত:

  • বহু দেশ মানবিক হস্তক্ষেপ চাইলেও, নিরাপত্তা পরিষদ আবারও নিস্ক্রিয়।

  • ভারত, এইসব ইস্যুতে স্পষ্ট, ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান রেখেছে।

➡️ অথচ অন্যায্য সমালোচনা ভারতকেই ঘিরে! কেন?

 বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারতের উত্থান

▪ IMF ও World Bank-এর তথ্য:

  • ভারত এখন বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি

  • ২০৩০ সালের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির জায়গা নিতে পারে।

▪ ভারতের নেতৃত্বে G20:

  • ২০২৩-এ ভারতের G20 প্রেসিডেন্সি বিশ্বকে দেখিয়েছে নেতৃত্বের দক্ষতা।

  • ‘Global South’-এর পক্ষে ভারতের সজাগ অবস্থান প্রশংসিত হয়েছে।

➡️ অথচ, এমন নেতৃত্ব থাকা সত্ত্বেও ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি উপেক্ষিত—এটাই চূড়ান্ত পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড এবং অন্যায্য সমালোচনা

 প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা খাতে ভারতের অগ্রগতি

▪ প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে:

  • ভারতের নিজস্ব সুপারসনিক মিসাইল BrahMos এখন বিশ্বের বহু দেশে রপ্তানির পথে।

  • Agni সিরিজের পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের শক্তি বৃদ্ধি করেছে।

▪ প্রযুক্তিতে:

  • ISRO-এর চন্দ্রযান ৩ এবং আদিত্য-L1 মিশন আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের মর্যাদা বাড়িয়েছে।

  • ডিজিটাল ইন্ডিয়া উদ্যোগে ভারত এখন AI ও Quantum Computing-এও এগিয়ে।

➡️ এ রকম বিশ্ব শক্তি কেন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী আসন পাবে না? উত্তর একটাই—অন্যায্য সমালোচনা এবং পশ্চিমা দেশগুলির দ্বৈতনীতি

 আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনৈতিক ভারসাম্য

▪ ভারত-ইউরোপ সম্পর্ক:

  • ফ্রান্স, জার্মানি ইতিমধ্যেই ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি সমর্থন করেছে।

▪ Quad ও Indo-Pacific:

  • ভারত এখন Quad-এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, যার লক্ষ্য Indo-Pacific অঞ্চলে স্থিতিশীলতা।

▪ ব্রিকস (BRICS) সম্প্রসারণে ভারত:

  • ভারত চায় একটি বহুমাত্রিক বিশ্ব নেতৃত্ব—একক আধিপত্য নয়।

➡️ তবুও জাতিসংঘে ভারতের ন্যায্য স্থান নেই—এটা অন্যায্য সমালোচনা ছাড়া আর কিছুই নয়।

📌 কিছু গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু অচর্চিত তথ্য:

  • জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হওয়া সত্ত্বেও, ভারতকে স্থায়ী আসনের বাইরে রাখা হয়েছে।

  • জাপান, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে G4 গোষ্ঠীতে ভারত বরাবরই সক্রিয় থেকেছে।

  • চীন একমাত্র দেশ যারা প্রকাশ্যে ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি-র বিরোধিতা করে আসছে।

➡️ কিন্তু বাস্তবতা হল, ভারতের উপস্থিতি ছাড়া জাতিসংঘের বিশ্ব নেতৃত্ব অসম্পূর্ণ।

🧨 তাহলে কেন এখন এত চাপ?

  1. বৈশ্বিক অস্থিরতা: যুদ্ধ, জলবায়ু সংকট, সন্ত্রাসবাদে জাতিসংঘের ব্যর্থতা।

  2. ভারতের নেতৃত্বের সাফল্য: G20, জলবায়ু চুক্তি, প্রতিরক্ষা, বিজ্ঞান।

  3. নতুন প্রজন্মের সচেতনতা: তরুণরা এখন বুঝতে পারছে, কীভাবে অন্যায্য সমালোচনা ভারতের অগ্রগতিকে রোধ করছে।

  4. পশ্চিমা দেশগুলির দ্বৈতনীতি প্রকাশ্যে আসছে: একদিকে গণতন্ত্রের কথা বলে, আরেকদিকে ভারতকে পিছিয়ে রাখে।

এই সব মিলিয়ে ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি আজ রাজনৈতিক দাবির গণ্ডি পেরিয়ে এক জাতীয় আত্মমর্যাদার প্রশ্ন হয়ে উঠেছে। আর সেই কারণেই এই ইস্যু এখন এত গরম, এত আলোচিত।

কে কে এই দাবির পক্ষে? — ‌বেশি গভীরে তাকালেই বোঝা যায়, শুধু ভারত একা নয়!

ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি আজ আর শুধু ভারতের একক উচ্চারণ নয়, বরং একাধিক বিশ্ব শক্তি, পশ্চিমা দেশ এমনকি বহু উন্নয়নশীল দেশেরও সক্রিয় সমর্থন আছে। অথচ তবুও, বারবার অন্যায্য সমালোচনা–ই যেন এই দাবিকে আড়াল করে রাখছে। এবার একে একে দেখে নেওয়া যাক, কারা কারা সত্যিই ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে, এবং কেন।

4 of 5 UNSC member nations support India's bid for permanent seat: Centre -  India Today

 ফ্রান্স — অকপট সমর্থন, বারবার

  • ফ্রান্স সবসময় ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি-কে “ন্যায্য এবং সময়োপযোগী” বলে স্বীকার করে এসেছে।

  • তারা মনে করে, বর্তমান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কাঠামো বিশ্ব রাজনীতি-র বাস্তব চিত্রকে উপস্থাপন করতে পারছে না।

  • ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বারবার বলেছেন, “ভারত ছাড়া বিশ্ব নেতৃত্ব অসম্পূর্ণ।”

📌 মজার তথ্য: ফ্রান্স একমাত্র P5 দেশ যারা কোনও পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড ছাড়াই ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে আছে।

 জাপান — এশিয়ার কণ্ঠস্বর

  • জাপান ও ভারত একসঙ্গে G4 গোষ্ঠী গঠন করেছে — যা মূলত জাতিসংঘ সংস্কারস্থায়ী সদস্যপদ দাবি নিয়ে কাজ করে।

  • জাপান মনে করে, এশিয়ার মতো বিশাল ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের সত্যিকারের প্রতিনিধি হিসেবে ভারত ছাড়া কেউ নয়।

📌 অদ্ভুত বাস্তবতা: জাপান ভারতের দাবিকে সমর্থন করলেও, চীনের অন্যায্য সমালোচনা এবং বাধার জন্য তা বাস্তবায়ন হয় না।

 ব্রাজিল ও  দক্ষিণ আফ্রিকা — গ্লোবাল সাউথ-এর প্রতিনিধি

  • ব্রাজিলদক্ষিণ আফ্রিকা-ও G4 সদস্য এবং বরাবরই ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ চাওয়া দাবিকে সমর্থন করে।

  • তারা মনে করে, পশ্চিমা দেশগুলির আধিপত্যমূলক গঠন ভেঙে এখন একটি গণতান্ত্রিক ও বৈচিত্র্যপূর্ণ বিশ্ব নেতৃত্ব গঠনের সময় এসেছে।

📌 তথ্যচমক: G4 গোষ্ঠীর চারটি দেশই নিজেদের নিজ নিজ অঞ্চলের নেতৃত্বে অগ্রগণ্য — অথচ একমাত্র অন্যায্য সমালোচনা-র কারণেই তারা এখনও স্থায়ী আসন পায়নি।

 রাশিয়া — শর্তসাপেক্ষে সমর্থন

  • রাশিয়া কখনো সরাসরি বিরোধিতা করেনি, আবার প্রকাশ্যে ১০০% সমর্থনও দেয়নি।

  • তারা মাঝে মাঝে বলে, ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি “পর্যবেক্ষণের যোগ্য”।

📌 বাস্তব দিক: রাশিয়া ভারতের ঘনিষ্ঠ হলেও, তাদের চীনের সঙ্গে জোট রক্ষার প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত — আর এখানেই আবার পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড

 আফ্রিকার বহু দেশ — নিঃশব্দ অথচ বাস্তব সমর্থন

  • অনেক আফ্রিকান দেশ জাতিসংঘের সংস্কারের পক্ষে। তারা ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি-কে বৈশ্বিক সমতার প্রতীক হিসেবে দেখে।

  • আফ্রিকার এই সমর্থন প্রকাশ্যে না এলেও, আন্তর্জাতিক ফোরামে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়।

📌 উদাহরণ: ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, কেনিয়া জাতীয় দেশগুলি UNGA-তে ভারতের পক্ষে ভোট দিয়েছে।

❌ কে বিপক্ষে?

🇨🇳 চীন — স্থায়ী বিরোধিতা

  • চীন বরাবর ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি-র বিরোধিতা করে আসছে

  • তাদের যুক্তি—এশিয়ার প্রতিনিধিত্ব চীন করছে, অতএব ভারত অপ্রয়োজনীয়।

📌 বাস্তব চিত্র: চীন আসলে নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে চায়। ভারতের উত্থানে তারা আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখছে।

➡️ চীনের এই অবস্থান অন্যায্য সমালোচনা-র এক নির্মম উদাহরণ।

ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি এখন আর একা ভারতের আওয়াজ নয়, এটি হয়ে উঠেছে একটি বৈশ্বিক স্বীকৃতির দাবি

যেখানে ফ্রান্স, জাপান, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রমুখ বিশ্ব শক্তি ও উন্নয়নশীল দেশগুলি ভারতের পাশে, সেখানে পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড ও কিছু চীনঘেঁষা কূটনীতি আজও এই দাবিকে আটকায়।

আর সেই কারণেই, অন্যায্য সমালোচনা‌ এখন এ বিষয়ে সবচেয়ে বড় অন্তরায়।

India and UNSC | Medium

কেন ভারত এই দাবিতে একদম যোগ্য?

ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি নিছক আত্মমর্যাদার প্রশ্ন নয়, এটি এখন বিশ্ব রাজনীতি, জাতিসংঘ সংস্কার, এবং ভোটাধিকার সংক্রান্ত এক গভীর ন্যায়ের প্রশ্ন। চলুন দেখি, কেন এই দাবি একদম যৌক্তিক, সময়োপযোগী, এবং বারবার অন্যায্য সমালোচনা সত্ত্বেও অগ্রাহ্য করা যায় না।

  বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র

  • ভারত বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র — ৯০ কোটির বেশি ভোটার নিয়ে।

  • গণতন্ত্রে বিশ্বাস ও চর্চা জাতিসংঘের মূখ্য নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

  • জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ-এ গণতন্ত্রের প্রতিনিধিত্বে ভারতের ভূমিকা অপ্রতিদ্বন্দ্বী।

📌 তথ্যচমক: বর্তমান স্থায়ী সদস্যদের মধ্যে মাত্র দুটি দেশই প্রকৃত গণতান্ত্রিক, বাকিরা তথাকথিত পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড মেনে চলে।

  অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক পরাক্রম

  • ভারতের অর্থনীতি এখন বিশ্বের ৫ম বৃহত্তম

  • IMF ও World Bank উভয়েই ভারতের প্রবৃদ্ধিকে ভবিষ্যতের চালিকা শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

  • অর্থনৈতিক প্রভাব বিবেচনায় ভারত ছাড়া আর কেউই এত বড় বাজারের প্রতিনিধি হতে পারে না।

📌 অদ্ভুত তথ্য: ভারত বর্তমানে G20 প্রেসিডেন্সি সামলেছে, অথচ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ-এ স্থায়ী সদস্য নয় — কী নিদারুণ অন্যায্য সমালোচনা!

  সামরিক শক্তি ও পরমাণু ক্ষমতা

  • ভারত বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম সামরিক শক্তি

  • নিজস্ব পরমাণু নীতি থাকা সত্ত্বেও ‘No First Use’ নীতিতে অটল — যা বিশ্বশান্তির বার্তা দেয়।

  • জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে ভারতের ভূমিকা দীর্ঘদিনের ও সুপ্রতিষ্ঠিত।

📌 গুরুত্বপূর্ণ: যে দেশ শান্তিরক্ষায় সর্বোচ্চ অবদান রাখে, সে দেশে ভোটাধিকার না থাকা মানেই আবার এক পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড

 কূটনৈতিক ভারসাম্য ও নিরপেক্ষতা

  • ভারত সব সময় “Strategic Autonomy”-এর ধারক — কোনও জোটে পুরোপুরি গলা না মেলালেও বিশ্ব শান্তির পক্ষে সক্রিয়।

  • ইরান, ইসরায়েল, রাশিয়া, আমেরিকা — সবার সঙ্গেই ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক ব্যালান্সড।

📌 ব্যতিক্রমধর্মী তথ্য: ভারতের মতো বৈপরীত্য সামলাতে সক্ষম দেশ বিশ্ব নেতৃত্ব-এ থাকা অত্যাবশ্যক — কিন্তু তবুও অন্যায্য সমালোচনা বারবার বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

  আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও জিও-পলিটিক্সে ক্রমবর্ধমান প্রভাব

  • Quad, BRICS, SCO, G20 — প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ফোরামে ভারত মুখ্য ভূমিকায়।

  • ভারত এখন জিও-পলিটিকাল ব্যালান্সার — বিশেষত এশিয়া ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে।

📌 ব্যতিক্রমী বিষয়: চীন যেখানে একতরফা আগ্রাসী নীতি নেয়, ভারত সেখানে সমঝোতার কূটনীতি চর্চা করে — আর এতেই হয় পশ্চিমা দেশ গুলোর দোদুল্যমান মনোভাব, ও বাড়ে অন্যায্য সমালোচনা

  জনসংখ্যার ভারসাম্য — মানবজাতির বৃহত্তম কণ্ঠ

  • আজকের দিনে ভারত বিশ্বের সর্বাধিক জনসংখ্যাযুক্ত দেশ।

  • জাতিসংঘে যদি বিশ্বের কণ্ঠস্বর প্রতিফলিত হয়, তাহলে সেই কণ্ঠের সর্ববৃহৎ অংশ কেন নীরব থাকবে?

📌 যুক্তির ছুরিকাঘাত: ১০০ কোটির বেশি মানুষের প্রতিনিধিত্ব নেই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে — এটাই কি নয় এক নির্মম অন্যায্য সমালোচনা?

 সাংস্কৃতিক গ্রহণযোগ্যতা ও নৈতিক অবস্থান

  • ভারত বহু ধর্ম, ভাষা, জাতি ও সংস্কৃতির সহাবস্থানের নিদর্শন — যা জাতিসংঘের মূল আদর্শ।

  • Soft Power-এ (Bollywood, Yoga, Ayurveda) ভারতের স্থান অনন্য।

📌 চমকপ্রদ তথ্য: UNESCO-এর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ভারতের স্থান তৃতীয় — অথচ স্থায়ী সদস্য পদে ‘তৃতীয় বিশ্বের’ তকমা?

ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি একটি দেশের নয়, একটি যুগান্তকারী বিশ্বদর্শনের প্রতিনিধিত্ব করে। যেখানে সমতা, শান্তি, শক্তি, ও কূটনীতি মিলেমিশে ভবিষ্যতের রাস্তা দেখাতে পারে — তবুও বারবার পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড আর অন্যায্য সমালোচনা এই দাবিকে জোর করে পিছিয়ে রাখছে।

🧭 সময় এসেছে প্রশ্ন তোলার — “ভারত কী জাতিসংঘের ভবিষ্যত নয়?” নাকি আবারও রাজনীতির নামে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হবে?

Why is China a Permanent Member of the U.N. Security Council? - Newsweek

পশ্চিমা দেশের দ্বৈতনীতি: ভদ্রভাবে অন্যায্যতা

যখন কথায় কথায় গণতন্ত্র, মানবাধিকার আর আন্তর্জাতিক ভারসাম্যের বুলি কপচানো হয়, তখনই দেখা যায় পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড-এর সবচেয়ে সূক্ষ্ম অথচ নির্মম রূপ। এই দ্বৈতনীতি-ই আজ ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি-কে বারবার পিছিয়ে দেয়। চলুন পয়েন্ট ধরে বোঝা যাক, এই ভদ্র অন্যায্যতা আসলে কতটা গভীরে গেঁথে আছে।

  গণতন্ত্রের মুখোশ ও বাস্তব দ্বিধা

✅ দাবি করা হয়—

  • জাতিসংঘে নেতৃত্ব সেই দেশই দেবে, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে।

  • জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ-এর স্থায়ী সদস্য হিসেবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অংশগ্রহণ জরুরি।

❌ কিন্তু বাস্তবে—

  • চীন, রাশিয়া — এই দুই অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র স্থায়ী সদস্য।

  • আর ভারত, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র হওয়া সত্ত্বেও, শুধুমাত্র “প্রশাসনিক নীতিগত অজুহাত”-এর নামে বাতিল হয়ে যায়।

📌 এই দ্বৈতনীতি-র প্রয়োগেই তৈরি হয় অন্যায্য সমালোচনা, যা নীরব আগ্রাসনের সমান।

 অর্থনৈতিক মাপকাঠিতে পক্ষপাতিত্ব

✅ যুক্তি দেওয়া হয়—

  • যেসব দেশের অর্থনৈতিক প্রভাব বেশি, তারাই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ-এ মুখ্য হোক।

❌ বাস্তবে—

  • ভারত এখন বিশ্ব অর্থনীতির ৫ম স্থানে, অথচ স্থান নেই স্থায়ী আসনে।

  • ফ্রান্স বা যুক্তরাজ্য, যাদের জিডিপি বা বাজার কম, তারা নিরঙ্কুশ ক্ষমতায়।

📌 এই বৈষম্যই হলো সেই পশ্চিমা দেশ গুলোর প্রাতিষ্ঠানিক পক্ষপাত — যা শান্ত ভাবে অন্যায় করে।

 শান্তিরক্ষায় সর্বোচ্চ অবদান, কিন্তু নীরবতা

✅ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় অবদান মানে বিশ্ব নেতৃত্বে শক্ত অবস্থান।

❌ কিন্তু—

  • ভারত জাতিসংঘের অন্যতম বৃহৎ শান্তিরক্ষী বাহিনী সরবরাহকারী দেশ।

  • তবুও নেই ভোটাধিকার, নেই স্থায়ী সদস্যপদ

📌 এখানে অন্যায্য সমালোচনা ঠিক সেই জায়গায় আসে, যেখানে কর্তব্য পালন সত্ত্বেও সম্মান পাওয়া যায় না।

 ভূ-রাজনৈতিক সংলাপে চুপচাপ অবজ্ঞা

✅ ভারত Quad, BRICS, G20-এর মত সংগঠনে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

❌ কিন্তু—

  • জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ-এ ভারতকে এখনও “অবজারভার” হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।

  • পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড অনুযায়ী “শক্তিশালী কিন্তু সুবিধাজনক না” মানেই দূরে রাখা।

📌 ভারতের এই জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি-র ইচ্ছেকে বিশ্ব নেতৃত্ব থেকে আলগা করা মানেই কূটনৈতিক অস্বীকার, আর সেটাই গোপন অন্যায্য সমালোচনা

 সংস্কার প্রশ্নে স্থবিরতা ও হঠকারিতা

✅ জাতিসংঘের নিজস্ব দলিল অনুযায়ী “বিশ্ব বাস্তবতা অনুযায়ী গঠন বদলানো জরুরি”।

❌ অথচ—

  • জাতিসংঘ সংস্কার-এর প্রশ্নে পশ্চিমা দেশ গুলো বারবার পিছিয়ে পড়ে।

  • তারা ভয় পায়— ভারতের নেতৃত্ব বৃদ্ধি পেলে তাদের আধিপত্য কমে যাবে।

📌 এটিই হলো আধুনিক কূটনৈতিক রাজনীতির ছদ্মবেশী অন্যায্য সমালোচনা

 প্রচার ও প্রভাবের খেলা

✅ পশ্চিমা মিডিয়া ও নীতিনির্ধারকরা “বৈশ্বিক সমতা”র কথা বলেন।

❌ কিন্তু—

  • ভারতের প্রতিটি কূটনৈতিক পদক্ষেপে খুঁত ধরা হয়।

  • আবার চীনের আগ্রাসী নীতি বা আমেরিকার একচেটিয়া সিদ্ধান্তে কৌশলী নীরবতা।

📌 এই দ্বৈত আচরণ-ই ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি-কে বিশ্বজুড়ে অন্যায্য সমালোচনা-র জালে জড়িয়ে রাখে।

পশ্চিমা দেশ গুলোর এই সুশীল অথচ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দ্বৈতনীতি-ই আজ ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি-র সবচেয়ে বড় বাধা। একদিকে তারা “সমতা”র কথা বলে, অন্যদিকে বাস্তবে এমন এক ভোটাধিকার কাঠামো ধরে রাখে যেখানে ভারত নেই।

📣 এবার সময় এসেছে সোজা প্রশ্ন তোলার —
কেন ভারতকে জাতিসংঘের মূল কেন্দ্রে আনা হবে না, বারবার অন্যায্য সমালোচনা করেই বা কী অর্জন হচ্ছে?

UN Security Council Reform: What the World Thinks | Carnegie Endowment for  International Peace

ভারতের নেতৃত্ব মানেই নতুন বিশ্বনীতি!

ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি কেবলমাত্র রাজনৈতিক উচ্চারণ নয়—এটি এক নতুন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সূচনা, যেখানে ভারসাম্য, ন্যায়, ও বৈচিত্র্য হবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের মূল স্তম্ভ।

 একমেরু বিশ্বের অবসান

▪️ বর্তমান চিত্র:

  • জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এখনও পাঁচটি পশ্চিমী বা ঐতিহাসিক ক্ষমতাধর রাষ্ট্র-ই সিদ্ধান্তের কেন্দ্রবিন্দু।

  • এই কাঠামোতে ভারতসহ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলো বারংবার অন্যায্য সমালোচনা-র সম্মুখীন হয়।

▪️ ভারতের নেতৃত্বে সম্ভাব্য পরিবর্তন:

  • ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি পূরণ হলে এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার জন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক কণ্ঠস্বর সৃষ্টি হবে।

  • পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ডের বিরোধিতা করে ভারসাম্যপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্তে নেতৃত্ব দেবে ভারত।

 ন্যায়নির্ভর কূটনীতি

▪️ কীভাবে পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড কার্যকর হয়:

  • এক দেশের পরমাণু অস্ত্রকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, অন্যটির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়।

  • এক অঞ্চলের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রচার হয়, অন্যটির চেপে যাওয়া হয়।

▪️ ভারতের নেতৃত্বে প্রস্তাবিত রূপ:

  • ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি সফল হলে এমন কূটনীতিকে চ্যালেঞ্জ জানানো যাবে—যেখানে সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে বাস্তব ও ন্যায়ের উপর।

  • ভারতের বহুধর্মীয়, বহুভাষিক, গণতান্ত্রিক অভিজ্ঞতা নতুন বিশ্বনীতি তৈরিতে কার্যকর হবে।

 উন্নয়নশীল বিশ্বে উন্নয়নের বৈশ্বিক মানচিত্র

▪️ ভারতের ভূমিকা:

  • কোভিডের সময় “ভ্যাকসিন মৈত্রী” কর্মসূচির মাধ্যমে ভারত ৭০টিরও বেশি দেশকে সহায়তা করেছিল—যা স্থায়ী সদস্যদের অনেকের পক্ষে সম্ভব হয়নি।

  • এই ঘটনা ভারতের নেতৃত্ব-কে বাস্তব পরিসরে কার্যকর বলে প্রমাণ করে।

▪️ ভবিষ্যৎ ফলাফল:

  • ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি পূরণ হলে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তার নতুন মডেল তৈরি হবে।

  • পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ডের প্রতিস্থানে সহযোগিতানির্ভর বিশ্বনীতি রূপ নেবে।

 অর্থনীতি ও প্রযুক্তির ভারসাম্যপূর্ণ বণ্টন

▪️ সমস্যা:

  • বর্তমান বিশ্বনীতিতে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও তথ্যপ্রবাহের ওপর একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর কর্তৃত্ব রয়েছে।

▪️ ভারতীয় নেতৃত্বের প্রভাব:

  • ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি স্বীকৃতি পেলে প্রযুক্তি-বণ্টনের ক্ষেত্রে “ডিজিটাল ন্যায়বিচার” প্রতিষ্ঠা হতে পারে।

  • উদাহরণস্বরূপ, “ডিজিটাল পাবলিক ইন্ফ্রাস্ট্রাকচার”-এর মতো ভারতীয় মডেল বৈশ্বিক নীতি হয়ে উঠতে পারে।

 🕊️ সংঘর্ষ নয়, সংলাপের রাজনীতি

▪️ পাশ্চাত্য শক্তির কৌশল:

  • সামরিক শক্তির ব্যবহারকে বহুক্ষেত্রে সমাধান হিসেবে তুলে ধরা হয়, যা বহু রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

▪️ ভারতের অবস্থান:

  • ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি একটি শান্তিকামী রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক সংলাপকে উৎসাহ দেবে।

  • “ভসুধৈব কুটুম্বকম্‌” দর্শনের মাধ্যমে ভারত নতুন বিশ্বনীতি-র শান্তিময় ভিত্তি গড়বে।

ভারতের নেতৃত্ব মানেই নতুন বিশ্বনীতি—এই বক্তব্য শুধুমাত্র ভাববাদ নয়, বরং বাস্তবতায় ভিত্তিপ্রাপ্ত একটি সুসংবদ্ধ ধারণা। পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড যেখানে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চায়, সেখানে ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি বিশ্বকে দেয় সমানাধিকার, মানবিকতা ও যৌক্তিকতার পথ।

📌 ভারতকে নেতৃত্ব দিতে দিলে বিশ্বনীতি নতুন আকার পাবে, যেখানে অন্যায্য সমালোচনা-র পরিবর্তে থাকবে বাস্তব ন্যায় ও অংশগ্রহণমূলক সিদ্ধান্ত।

ভবিষ্যতের দিশা কী?

বিশ্ব রাজনীতি ক্রমশ পরিবর্তনশীল এবং তার প্রভাব অত্যন্ত গভীর। ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবিপশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড এর প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতের দিশা একেবারে নতুন করে সংজ্ঞায়িত হতে যাচ্ছে। আসুন, দেখে নেওয়া যাক এই বিষয়টি কিভাবে বিশ্ব রাজনীতির পরবর্তী অধ্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

 আন্তর্জাতিক ক্ষমতার পুনঃবণ্টন

▪️ পশ্চিমী বিশ্বের একক আধিপত্যের অবসান:

  • বর্তমানে, পশ্চিমী দেশগুলোই আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে প্রধান ভূমিকা পালন করে। কিন্তু ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি সফল হলে, বিশ্বের ক্ষমতার কাঠামো এক নতুন দিশায় অগ্রসর হবে।

  • বিশ্ব শক্তি হিসেবে ভারতের উত্থান পশ্চিমী ধারা পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেবে।

▪️ ভারতের নেতৃত্বে বিশ্ব রাজনীতি:

  • ভারতের নেতৃত্ব মেনে চললে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভারসাম্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের নতুন যুগ শুরু হবে।

  • পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড এখন থেকেই একটি পুরনো ধারণা, যেখানে নতুন বিশ্বনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভারত নেতৃত্ব প্রদান করবে।

 জাতিসংঘের সংস্কার: একটি নয়া দিশা

▪️ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার:

  • ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি শুধু ভারতীয় উপমহাদেশের জন্য নয়, বরং গোটা বিশ্বে একটি নতুন গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি আনবে।

  • জাতিসংঘের সংস্কার প্রক্রিয়া ভারতকে কেবল ক্ষমতার অংশীদার করবে না, বরং বিশ্ব নেতৃত্ব হিসেবে তার অবস্থান আরও দৃঢ় করবে।

▪️ দ্বৈতনীতির অবসান:

  • পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড যেখানে ক্ষমতাশালী দেশগুলো এককভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, সেখানে ভারতের প্রভাব, মতামত এবং সুরক্ষা সবকিছুই বিশ্বজুড়ে বিচারিক হবে।

  • এই পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড মূলত ছোট রাষ্ট্রগুলোর জন্য অনুকূল নয়, এবং ভারত প্রমাণ করবে যে বিশ্ব রাজনীতি ভারতের নেতৃত্ব ছাড়া অগ্রসর হতে পারে না।

 অর্থনৈতিক প্রভাব ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পুনর্গঠন

▪️ ভারতের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শক্তি:

  • ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি প্রমাণ করবে যে একটি শক্তিশালী অর্থনীতি কেবল স্থানীয় নয়, আন্তর্জাতিক সম্পর্কও প্রভাবিত করতে সক্ষম।

  • ভারত যখন বিশ্ব শক্তি হিসেবে উত্থিত হবে, তখন অর্থনৈতিক প্রভাব তার বৈশ্বিক সম্পর্কের ভিত্তি হয়ে উঠবে।

▪️ বিশ্ব নেতাদের সহযোগিতা:

  • পশ্চিমী দেশগুলোর সাথে ভারতের নেতৃত্ব অনেক ক্ষেত্রেই শত্রুতা নয়, বরং সহযোগিতামূলক হতে পারে। কারণ, বিশ্বজুড়ে ভারতের নেতৃত্ব মানবিক সহায়তা, প্রযুক্তির বিতরণ এবং অর্থনৈতিক উন্নতি নিয়ে কাজ করবে।

  • ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে।

 বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা: ভারত এক নতুন দিশার দিশারি

▪️ শান্তির প্রসার:

  • ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি শুধু আর্থিক বা কূটনৈতিক লক্ষ্য নয়, এটি একটি শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়।

  • ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি শান্তির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠবে, যেখানে শক্তির বদলে কূটনীতি, সহাবস্থান ও সমঝোতা থাকবে।

▪️ বিশ্ব শক্তির পালাবদল:

  • পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড যে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করেছে, তা ভবিষ্যতে অনেকাংশেই ধ্বংস হতে পারে।

  • ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও শান্তি রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে।

 ভারতের ভবিষ্যত নেতৃত্ব: সমৃদ্ধ বিশ্ব গঠনে দিশা

▪️ নতুন পৃথিবী:

  • ভারতের নেতৃত্ব একটি অধিক সমৃদ্ধ, প্রগতিশীল ও পরিবেশবান্ধব পৃথিবীর দিকে এগিয়ে যাবে।

  • বিশ্ব নেতৃত্ব হিসেবে ভারত তার আদর্শ ও নীতির মাধ্যমে এক নতুন দিশা প্রস্তাব করবে—যেখানে উন্নয়ন, ন্যায়, পরিবেশ রক্ষা এবং সামাজিক শান্তি একীভূত হবে।

▪️ দ্বৈতনীতির অবসান:

  • পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড এক যুগের সমাপ্তি ঘটিয়ে ভারতের নতুন বিশ্বনীতি তথা বিশ্ব রাজনীতি পুনর্গঠন করবে।

এখন যদি ভারতের জাতিসংঘ স্থায়ী সদস্যপদ দাবি পূর্ণ হয়, তবে আমরা দেখতে পাবো এক নতুন যুগের সূচনা, যেখানে পশ্চিমী দ্বৈত মানদণ্ড ভেঙে পড়বে এবং ভারতের নেতৃত্ব বিশ্ব রাজনীতির সত্যিকার ধারক ও বাহক হবে। এটি শুধু ভারতের জন্য নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি নতুন দিশার সূচনা। ভারত যখন বিশ্ব শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে, তখন নতুন বিশ্বনীতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি হবে।

আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো

Leave a Reply