“যেখানে শিক্ষক নিয়োগে মেধা ও যোগ্যতা প্রাধান্য পাওয়া উচিত, সেখানে যদি নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত হয় আত্মীয়তা ও রাজনৈতিক প্রভাব দিয়ে — তা কি আদৌ গ্রহণযোগ্য?”
বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ এখন একটি গুরুতর এবং পুনরাবৃত্ত সমস্যায় পরিণত হয়েছে, যা নিয়োগের স্বচ্ছতা ও শিক্ষার গুণমানকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে।
সূচিপত্র
Toggleশুরুতেই প্রশ্ন: “আপনি কি জানেন, বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ কতটা গভীর?”
➡️ এই প্রশ্নটা যতটা সরল শোনায়, তার উত্তর ঠিক ততটাই জটিল ও অন্ধকারময়।
বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ এখন আর কেবল বিতর্ক নয়—এটা এক নির্মম বাস্তবতা, যা শিক্ষক নিয়োগে পক্ষপাতিত্বের জটিল বুনোট তৈরি করছে। আসুন, একটু গভীরে ডুব দিই…
আত্মীয়তার অলিখিত নীতিনিয়ম: “আপন লোক, আপন জায়গা”
শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, যেন এক প্রাচীন রীতিনীতি।
বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা এখানে এতটাই স্পষ্ট, যে অনেক ক্ষেত্রে খালি পদ আগে থেকেই “নির্ধারিত” থাকে — যোগ্যতা, মেধা এসব কেবল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।
অনেক সময় দেখা যায়, একই পরিবারে একাধিক সদস্য এক বিভাগের শিক্ষক! গবেষণাপত্রের মান বা শিক্ষাদানের দক্ষতা নয়, সম্পর্কই হয়ে দাঁড়ায় নিয়োগের ভিত্তি।
📌 উদাহরণ: একটি প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়ে, তিনজন অধ্যাপকের পদে পরপর নিয়োগ পান উপাচার্যের আত্মীয়—নিয়ম মেনেও এই ধরনের ‘সংগঠন’ হয়তো বৈধ, কিন্তু নৈতিকভাবে?
রাজনৈতিক প্রভাবের ছায়া: “দল মানেই নিয়োগের চাবিকাঠি?”
শিক্ষক নিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাব এখন ওপেন সিক্রেট।
বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা এতটাই গভীর, যে শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের সুপারিশ ছাড়া অনেক সময় সিলেকশন বোর্ড চলেই না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি নতুন কোনো গল্প নয়—এটা এখন প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি।
📌 বিশেষ তথ্য: বিগত পাঁচ বছরে ৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে RTI-এর ভিত্তিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে—কোনও প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়েও মৌখিক পরীক্ষায় অতিরিক্ত নম্বর পেয়ে নিয়োগ পান।
মেধার অপমান, স্বপ্নের অবমূল্যায়ন
শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণের ফলে মেধাবীদের অবহেলা বারবার প্রমাণিত হয়েছে।
মেধা যেখানে থাকতে পারত শিক্ষার মেরুদণ্ড, সেখানে আজ তা হয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ।
ফলত, বাংলা শিক্ষাব্যবস্থার সংকট এখন নিতান্তই কাঠামোগত নয়, এটা এক মানসিক পচনের ফল।
📌 বাস্তব চিত্র: UGC NET বা SET পাশ করা অনেক প্রতিভাবান প্রার্থী বছরের পর বছর ধরে অপেক্ষা করেও সুযোগ পাচ্ছেন না, যেখানে তুলনামূলক কম যোগ্য ব্যক্তিরা আত্মীয়তার জোরে প্রবেশ করছেন।
ছাত্রছাত্রীদের কণ্ঠস্বর: প্রতিবাদের নতুন ভাষা
বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ এখন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সরাসরি ক্যাম্পাসে পৌঁছেছে।
“No Nepotism in Campus”, “Say No to Political Patronage” — এমন স্লোগানে মুখর হচ্ছে প্রজন্ম।
📌 গত বছর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগে স্বজনপোষণ নিয়ে ছাত্র সংসদের অনশন ৪ দিন চলেছিল — সংবাদে না এলেও, শিক্ষাক্ষেত্রে এই সাড়া গুরুত্বপূর্ণ।
টেকঅ্যাওয়ে: তাই প্রশ্ন থেকে যায়…
বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ কি আমাদের ভবিষ্যৎ শিক্ষকদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে?
শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ কিভাবে শিক্ষার মান নষ্ট করছে — এই প্রশ্নের উত্তর যতটা জরুরি, তার চেয়ে বেশি জরুরি এই ব্যবস্থার সংস্কার।
কীভাবে শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ কাজ করে?
➡️ এখানেই লুকিয়ে আছে দুর্নীতির গোপন দরজাগুলো। বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা কীভাবে ‘সিস্টেম’কে মেরুদণ্ডহীন করেছে, সেটা ধাপে ধাপে বুঝলেই বোঝা যাবে— বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ ঠিক কতখানি গভীর আর কাঠামোগত।
“নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি” যেন নির্দিষ্ট কারও জন্য বানানো চিঠি!
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি এমনভাবে তৈরি করা হয়, যাতে সেটি ঠিক একজন নির্দিষ্ট প্রার্থীর প্রোফাইলে ফিট করে।
যেমন, PhD এর বিষয়ে অদ্ভুত নির্দিষ্টতা, বা নির্দিষ্ট গবেষণা অভিজ্ঞতা—যা ৯০ শতাংশ মেধাবী প্রার্থীকে স্বাভাবিক ভাবেই ছেঁটে দেয়।
📌 উদাহরণ: এক কলেজের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিল — “Research experience in post-structural Bengali literary theory from 2007–2010” — এমন সময়সীমা, এমন থিম, যা দেশের মাত্র এক বা দুইজনের প্রোফাইলেই মেলে!
➡️ এটা হলো বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা, যেটা শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ-এর পথ প্রশস্ত করে।
ইন্টারভিউ বোর্ডের নাট্যনাটক!
অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি এই পর্যায়েই বেশি প্রকট হয়।
বোর্ডে কাদের ডাকা হবে, কারা থাকবেন—সবটাই আগে থেকেই জানাজানি।
শিক্ষক নিয়োগে পক্ষপাতিত্ব বোর্ডে এমনভাবে কাজ করে, যাতে আত্মীয় বা “নিজের লোক” হয় ‘Highest Rated’, আর বাকি প্রার্থীরা হতোদ্যম হয়ে ফিরে যায়।
📌 RTI অনুযায়ী, এক বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায়, মৌখিক পরীক্ষায় ১৮ জনের মধ্যে আত্মীয় প্রার্থীকে ৯৮/১০০, অন্যদের ৪৫–৫৫ এর মধ্যে রাখা হয়।
➡️ প্রশ্ন থেকেই যায়—বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ কি শুধুই নৈতিক ব্যর্থতা, না এটা শিক্ষাব্যবস্থার ক্যান্সার?
নিয়োগে রাজনৈতিক ছত্রছায়া — “যদি দলের লোক হও, তবে ঠিক জায়গায় আছো!”
শিক্ষক নিয়োগে রাজনৈতিক প্রভাব হল এক নীরব নিয়োগ-কৌশল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে বোর্ডের সদস্য, এমনকি গেস্ট ফ্যাকাল্টি নিয়োগেও দেখা যায় — দলের সুপারিশই আসল মানদণ্ড।
📌 এক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে ছাত্রসংগঠনের পোস্টারে লেখা ছিল — “আমাদের সুপারিশ করা ৭ জন প্রার্থী নিয়োগ পেয়েছেন — এটাই আমাদের জয়!”
➡️ অথচ একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ জন NET-SET পাশ করা প্রার্থীকে একবার ইন্টারভিউ পর্যন্ত ডাকাও হয়নি।
➡️ এটাই বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা, যেটা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতির মূল উৎস।
আড়ালে চলা “গেট টুগেদার” — চাকরির চুক্তি ও সম্পর্কের লেনদেন
অঘোষিত নিয়ম—চাকরি পাওয়ার জন্য দরকার “সঠিক লোকের সাথে সঠিক সময়ে যোগাযোগ”।
অনেক সময় শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণের ফলে মেধাবীদের অবহেলা হয় শুধু এই কারণে যে, তাঁরা “কাউকে চেনেন না”।
পদের ঘোষণা, ইন্টারভিউয়ের তারিখ, এমনকি স্কোরশিট—সব কিছুর ‘আগাম খবর’ থাকে অল্প কজনের হাতে।
📌 ফ্যাক্ট: একাধিক RTI ও সোশ্যাল মিডিয়া রিপোর্টে এসেছে — কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারভিউ-এর আগে থেকেই চূড়ান্ত তালিকা ফাঁস হয়ে যায়।
➡️ এটা কি নিছক কাকতাল? নাকি সুপরিকল্পিত শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ?
শেষে কী হয়? শিক্ষার মান পড়ে যায় নিচে
যখন মেধা নয়, স্বজনপোষণই নিয়োগের চালিকাশক্তি হয়, তখন শিক্ষক শুধু পদে থাকেন, শিক্ষায় নয়।
ক্লাসরুমে পড়ে থাকে পাঠ্যবই, আর শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ পড়ে থাকে ঝুঁকির মুখে।
📌 গবেষণায় দেখা গেছে—যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা বেশি, সেখানে NAAC গ্রেড, প্লেসমেন্ট, এবং রিসার্চ আউটপুট—সব কিছুই নিম্নমুখী।
➡️ এভাবেই শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ কিভাবে শিক্ষার মান নষ্ট করছে, সেটার চিত্র ফুটে ওঠে।
অদৃশ্য জালের ছায়ায় শিক্ষা
বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ কেবল শিক্ষক নিয়োগকে নয়, পুরো শিক্ষাপদ্ধতিকেই দুর্বল করে তুলছে।
বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা যতদিন থাকবে, ততদিন মেধা কোণঠাসা হবে, আর ছাত্রদের ভবিষ্যৎ ধোঁয়াশায় ঢেকে যাবে।
চাইলে এবার পরের অংশ—“জনগণের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যতের করণীয়” নিয়ে শুরু করি? বললেই লিখে দিচ্ছি, একই ঘরানায়, SEO-সমৃদ্ধ করে।
মেধার অবমূল্যায়ন: কাদের জন্য?
সোজা ভাষায় বললে, বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ শুধু চাকরি দেয় “চেনা লোককে”—আর সেই সুযোগে মেধা পড়ে থাকে অবহেলায়, ক্লাসরুমের বাইরে। এখন একটু গুছিয়ে দেখি, কাদের কাদের ওপর এটার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে।
NET-SET পাশ করা যোগ্য প্রার্থীরা — যাঁরা থেকেও নেই
বছরের পর বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ চলে আসছে এমনভাবে, যে একাধিক NET-SET ক্যান্ডিডেট, যারা গবেষণাতেও নাম করেছে, তাদের ডাকা হয় না ইন্টারভিউতেই।
কারণ? তাঁরা কারও আত্মীয় নন, কারও রাজনৈতিক অনুগামী নন, কারও খাতায় ‘বিশেষ’ নাম নয়।
📌 উদাহরণ: ২০২৩সালে এক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫টি পদে আবেদনের পর দেখা যায়—প্রার্থী তালিকার শীর্ষে থাকা চারজনই “পরিচিত মুখ”; অথচ সেই তালিকায় ৭ বার UGC-JRF প্রাপ্ত একজনকেও ডাকা হয়নি।
➡️ এইভাবেই শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণের ফলে মেধাবীদের অবহেলা ঘটে।
গবেষণা-ভিত্তিক প্রার্থীরা — যাঁদের কাগজ অনেক, কাজের দাম নেই
বাংলার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই দেখা যায়, যাঁদের গবেষণা আন্তর্জাতিক জার্নালে ছাপা হয়েছে, যাঁদের Google Scholar বা Scopus ইনডেক্স ভালো—তাঁরাই পড়ে থাকেন তালিকার নিচে।
কারণ একটাই—বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা তাদের গুরুত্ব দেয় না।
📌 গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৮-২০২২ সালের মধ্যে যেসব প্রার্থীর SCI/Scopus প্রকাশনা ছিল, তাঁদের মধ্যে ৬০% কোনো নিয়োগ পাননি; অথচ তাঁদের থেকে অনেক কম যোগ্য প্রার্থীরা নিযুক্ত হয়েছেন।
➡️ এটাই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি—মেধা হারায়, সম্পর্ক জেতে।
আঞ্চলিক পক্ষপাত — ‘বাড়ির ছেলে’ বনাম ‘বাইরের লোক’
এক অদ্ভুত ট্রেন্ড দেখা যায়—নিজ জেলার বা এলাকার প্রার্থী হলে অনেক বেশি সুবিধা পাওয়া যায়।
“আমাদের লোক”, “আমার চেনা” — এই ধারণা শিক্ষক নিয়োগে পক্ষপাতিত্ব-এর শেকড়কে গভীর করেছে।
📌 বিশেষ রিপোর্টে দেখা গেছে, ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭০%-এর বেশি শিক্ষকই সংশ্লিষ্ট জেলার বা পার্শ্ববর্তী জেলার বাসিন্দা।
➡️ এটা নিছক কাকতাল নয়, বরং বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা-র এক করুণ দৃষ্টান্ত।
বিদেশে পড়াশোনা করা ছাত্রছাত্রীরা — যাঁরা ফিরেই ভুল করলেন!
অনেক প্রতিভাবান ছাত্রছাত্রী বিদেশে পড়ে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশে ফিরে আসেন স্বপ্ন নিয়ে।
কিন্তু এখানে এসে তাঁদের জন্য অপেক্ষা করে হতাশার দেওয়াল—বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ যেখানে বাইরের যোগ্যতা ‘অতিরিক্ত যোগ্যতা’ হয়ে দাঁড়ায়।
📌 ২০২২ সালে এক বিশ্ববিদ্যালয়ে PhD (Oxford) করা প্রার্থীকে “too overqualified” বলে বাদ দেওয়া হয়—তাঁর জায়গায় নেওয়া হয় এক প্রাক্তন ছাত্রনেতাকে।
➡️ এইভাবেই শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ কিভাবে শিক্ষার মান নষ্ট করছে, সেটাই স্পষ্ট হয়ে যায়।
ফলাফল? শিক্ষার্থীরা হারায় গাইড, হারায় ভবিষ্যৎ
মেধাবী শিক্ষক না এলে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জন থেমে যায়, প্রশ্ন তোলার অভ্যাস কমে, গবেষণার মান পড়ে যায়।
বাংলা শিক্ষাব্যবস্থার সংকট তখন শুধু ভিতরে নয়—চিহ্নিত হয় বাইরেও, ন্যাশনাল অ্যাক্রেডিটেশনে, র্যাঙ্কিং-এ, প্লেসমেন্টে।
📌 RTI থেকে জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে NAAC B গ্রেড পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ৮৫%-এ নিয়োগে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বারবার।
বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ কেবল নিয়োগের এক ব্যাধি নয়—এটা হলো একটি মেধাহীন ব্যবস্থার ভিত্তি।
যতদিন না বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা দূর হচ্ছে, ততদিন মেধার অবমূল্যায়ন চলবে—নীরবে, অন্ধকারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি: ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ
“চেনা মুখ, অচেনা যোগ্যতা” – এই নিয়েই ক্ষোভ
একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি সামনে আসার পর, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে শুরু হয় চাপা গর্জন।
শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হচ্ছেন এমন মানুষ, যাঁদের ক্লাস নেওয়ার অভিজ্ঞতা নেই, গবেষণা নেই, এমনকি ইংরেজি বা বাংলা ঠিকমতো বলতে পারেন না।
📌 উদাহরণ: কলকাতার এক বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ-এর অভিযোগ উঠে আসে, যখন দেখা যায়—একজন সদ্য সদ্য পোস্টগ্র্যাজুয়েট হওয়া ছাত্র নেতাকে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে!
➡️ স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণের ফলে মেধাবীদের অবহেলা এখানে ভয়াবহভাবে স্পষ্ট।
ছাত্রদের প্রতিবাদের ধরণ:
ঘেরাও ও ধর্ণা
অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঘেরাওয়ের মাধ্যমে।
বিক্ষোভ চলে উপাচার্যের দফতরের সামনে—“মেধা চাই, দল নয়” স্লোগানে।
RTI দায়ের ও তথ্য প্রকাশ
ছাত্র ইউনিয়ন বা সাধারণ পড়ুয়ারা RTI দিচ্ছেন, জানতে চাইছেন — কী ভিত্তিতে নিয়োগ হল? কারা ইন্টারভিউ নিলেন? কী নম্বর পেলেন প্রার্থীরা?
📌 একাধিক RTI-তে প্রকাশ, অনেক ক্ষেত্রেই নির্বাচিত প্রার্থীদের নম্বর দেখানোই হয়নি! আবার কারও নামের পাশে লেখা “special consideration” — মানে বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ-এর স্পষ্ট স্বাক্ষর!
“মেধার অপমান মানি না” – সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাত্রদের রেজিস্টার
ফেসবুক, এক্স (সাবেক টুইটার), ইনস্টাগ্রাম—সবখানে ছাত্রছাত্রীরা সরব।
হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করে #NiyogerNaamGolmal, #MediocracyKillsMerit
তারা প্রশ্ন তোলে, বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা কবে বদলাবে?
➡️ এটাই নিয়োগে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয় সোশ্যাল স্পেসেও।
কীভাবে এ প্রভাব পড়ছে ছাত্রজীবনে?
❌ ক্লাস হয় না সময়মতো
নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক অনেক সময়ই অনুপস্থিত, ফলে ছাত্রছাত্রী ক্লাসে পান না কাঙ্ক্ষিত গাইডেন্স।
❌ গবেষণায় পিছিয়ে পড়ছে ছাত্ররা
অভিজ্ঞ প্রফেসরের অভাবে থিসিস/প্রজেক্টে সঠিক দিকনির্দেশ মিলছে না।
➡️ এর ফল, বাংলা শিক্ষাব্যবস্থার সংকট শুধু বাড়ছেই।
নতুন প্রজন্মের কিছু ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
কিছু ছাত্রছাত্রী স্বাধীনভাবে প্ল্যাটফর্ম খুলে যোগ্য ও বঞ্চিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করছে।
অনেকে জনস্বার্থ মামলা (PIL) করেছে কোর্টে, শিক্ষক নিয়োগে পক্ষপাতিত্ব বন্ধ করতে।
📌 ২০২৪সালে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে এক PIL-এর পর অন্তত ২টি নিয়োগ বাতিল হয়, এবং আবার বিজ্ঞাপন দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন।
ছাত্ররাই ভবিষ্যতের চালিকাশক্তি। আর যদি তারা বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ-এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়, তবে এই দুর্নীতির দেয়ালও একদিন ভাঙবে।
তবেই বদলাবে বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা।
বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা
বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ কি কেবল একটা অভিযোগ? নাকি এটা প্রশাসনিক চুপচাপ অনুমোদিত এক ‘অদৃশ্য বিধি’?
প্রশ্নটা গভীর, কারণ বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা আসলে এক নিঃশব্দ মহামারীর মতো—দেখা যায় না, অথচ এর ছায়া পড়ে ছাত্রজীবন, গবেষণা আর ভবিষ্যতের উপর।
নিয়োগের নীতিগত ফাঁকফোকর
⏳ আদর্শ আছে, বাস্তব নেই:
-UGC, NAAC-এর মতো সংস্থা স্পষ্ট নিয়ম দিয়েছে—
শিক্ষক নিয়োগে প্রকাশ্য বিজ্ঞাপন
নিরপেক্ষ বোর্ড
মৌখিক পরীক্ষার রেকর্ড রাখা
➡️ কিন্তু বাংলার বাস্তব চিত্র—বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি-র ছায়া ঘোরাফেরা করে নিয়মের ফাঁক গলে।
❌ নিরীক্ষাহীন নিয়োগ:
বহু বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণের অভিযোগ রয়েছে যেখানে যোগ্যতার যাচাই না করেই স্বজনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
🎯 উদাহরণ: এক বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায়, পাঁচজন প্রার্থী ইন্টারভিউয়ে গিয়ে নম্বরই পাননি—সরাসরি নিযুক্ত করা হয়েছে ‘নিজেদের লোক’কে।
“নিয়োগ নীতি না, যোগাযোগ নীতি”
💬 মৌখিক পরীক্ষাই ভাগ্য নির্ধারণ করে!
লিখিত পরীক্ষার নম্বর গোপন, যোগ্যতার ভিত্তি অস্পষ্ট—শেষ কথাটা বলে মৌখিক ইন্টারভিউ।
সেখানে থাকে রাজনৈতিক বা পারিবারিক “লবি”, যেখানে শিক্ষক নিয়োগে পক্ষপাতিত্ব হয় ন্যায়ের চোখে ধুলো দিয়ে।
➡️ এইসব ঘটনার ফলে আরও জোরালোভাবে উঠে আসে — বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা প্রশ্নের মুখে।
নিয়োগ বোর্ডের গঠনেও লুকিয়ে আছে পক্ষপাত
👥 বোর্ডে কারা?
বোর্ডে যাঁরা আছেন, তাঁরা অনেক সময় নিজের বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র, রাজনৈতিক সংগঠনের পরিচিত মুখ বা ব্যক্তিগত ‘পছন্দের’ প্রার্থীকে প্রাধান্য দেন।
📃 প্রতিবেদন গায়েব!
কোনও বোর্ডের রিপোর্ট বা স্কোরশিট অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশই হয় না।
➡️ যা আবারও প্রমাণ করে, নিয়োগে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন অবশ্যম্ভাবী।
গবেষণাকে অবজ্ঞা – যোগ্যতার আসল সূচক উপেক্ষিত
🧠 পিএইচডি থাকা সত্ত্বেও বঞ্চিত
যোগ্য গবেষকরা বাদ পড়ছেন শুধু রাজনৈতিক সংযোগ না থাকায়। ফলে শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণের ফলে মেধাবীদের অবহেলা দিনকে দিন বাড়ছে।
📊 গবেষণার মান পড়ছে নীচে
যাঁরা গবেষণা করে আসেননি, তাঁরাই এখন শিক্ষক—যার প্রভাব পড়ছে থিসিস ও প্রজেক্ট গাইডেন্সে।
➡️ এমন নিদর্শন বাংলা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এতটাই সাধারণ হয়ে গেছে যে বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা আজকের শিক্ষাক্ষেত্রের এক কালো অধ্যায়।
আদালতের মন্তব্য ও তদন্ত
⚖️ কোর্ট বারবার প্রশ্ন তুলেছে
কলকাতা হাই কোর্ট বিভিন্ন মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছে।
একাধিক ক্ষেত্রে নিয়োগ বাতিল হয়েছে, কিন্তু প্রশাসনিক জবাবদিহি এখনও নেই।
🔍 দুর্নীতি দমন ব্যর্থ
অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি অনেক সময় পক্ষপাতদুষ্ট হয়, কারণ তারাও “নিজেদের লোক”।
ফলাফল: শিক্ষার মানের অবনতি
ক্লাসে যোগ্য শিক্ষক নেই
গবেষণায় নতুনত্ব হারাচ্ছে
আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে পিছিয়ে পড়ছে বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়
➡️ যার মূলে রয়েছে বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা ও শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ।
বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ কি আমাদের ভবিষ্যৎ শিক্ষাব্যবস্থার মৌল কাঠামো নাড়িয়ে দিচ্ছে?
প্রশ্নটা শুধু প্রশাসনের নয়—এটা সমাজের প্রতিটি সচেতন নাগরিকের।
বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা নিয়ে আর চোখ বন্ধ রেখে চললে, হয়তো আর কয়েক বছরের মধ্যেই “মেধার মরুভূমি”তে দাঁড়াবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
ভবিষ্যতের পথ: কী করা উচিত?
“নিয়োগে ন্যায় নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধার গলা টিপে ধরছে পক্ষপাত” — এই অভিযোগ আজ আর শুধুই চাপা গুঞ্জন নয়, এটি বাংলার উচ্চশিক্ষার এক তীক্ষ্ণ বাস্তব।
বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা দূর করতে গেলে দরকার সার্বিক ও সাহসী রূপান্তর। এক্ষেত্রে কিছু কার্যকর ও গভীর পদক্ষেপ আলোচনা করা যাক—
নিয়োগে সর্বাঙ্গীণ স্বচ্ছতা আনতে হবে
🔍 ডিজিটালাইজড নিয়োগ প্রক্রিয়া:
প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ বন্ধ করতে স্বয়ংক্রিয় স্কোরিং সিস্টেম চালু করা হোক।
স্ক্রিনিং থেকে ইন্টারভিউ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ রেকর্ড করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশযোগ্য করতে হবে।
🔁 ফলাফল:
স্বজন নয়, যোগ্য ব্যক্তি নিয়োগ পাবেন
বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ-এর অভিযোগ কমবে
বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা রোধে বাস্তব পদক্ষেপ
একাধিক পর্যায়ে নিরীক্ষা ও আপিল পদ্ধতি চালু করা দরকার
স্বাধীন নিয়োগ নিরীক্ষা কমিশন:
বিশ্ববিদ্যালয় চুক্তিভিত্তিক নয়, স্থায়ী ও কেন্দ্রের অনুমোদিত স্বচ্ছ নিরীক্ষা কমিশন দ্বারা নিয়োগের সার্বিক পর্যবেক্ষণ করুক।
নিয়োগে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেই দ্রুত তদন্ত:
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রিপোর্ট ও অ্যাকশন নিতে হবে।
নিয়োগ প্রার্থীদের জন্য আপিল করার সুযোগ রাখতে হবে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি প্রতিরোধ হয়।
মেধাকেই করতে হবে একমাত্র মানদণ্ড
পিএইচডি, রিসার্চ ও শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা প্রাধান্য পাক:
শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণের ফলে মেধাবীদের অবহেলা বন্ধ করতে কঠোরভাবে গবেষণার গুণগত মান বিচার করা হোক।
লেখাপড়া ও গবেষণায় ফলাফলভিত্তিক মূল্যায়ন:
জোর দিয়ে বলা যায়, বাংলার বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে হলে পারিবারিক পরিচিতি নয়, শুধুই মেধা প্রাধান্য পাক।
ছাত্রছাত্রীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি
নিয়োগে ছাত্র প্রতিনিধিদের পর্যবেক্ষণ:
ছাত্রদের একটি নিরপেক্ষ কমিটি নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ যেন লোকচক্ষুর আড়ালে না যায়:
সোশ্যাল মিডিয়া, কনসালটেশন ফোরাম, ওয়েব পিটিশনের মতো ডিজিটাল মাধ্যমেও প্রতিবাদ হোক।
নতুন নিয়োগ নীতি গড়ে তোলা প্রয়োজন
📝 রাজ্যস্তরে একটি সর্বজনগ্রাহ্য “Recruitment Code”:
শিক্ষক নিয়োগের জন্য আলাদা “Bengal University Recruitment Code” প্রণয়ন হোক যেখানে স্পষ্টভাবে বলা থাকবে:
কোন যোগ্যতা লাগবে
কীভাবে ইন্টারভিউ হবে
ফলাফল কোথায় প্রকাশিত হবে
🔄 নিয়ম প্রতি ৫ বছরে আপডেট করতে হবে:
শিক্ষা বদলাচ্ছে, তাই বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা দূর করতে নীতিও হালনাগাদ হওয়া দরকার।
“জাগো, এখনই সময়!”
একটা কথা মনে রাখা দরকার—বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে জাতির মস্তিষ্ক, আর যদি সেখানে শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ চালু থাকে, তবে ভবিষ্যতের চিন্তা করাও দুরূহ।
প্রতি নিয়োগে, প্রতি ক্লাসে, প্রতি রিসার্চ পেপারে প্রতিফলিত হয় বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা।
এই দুর্বলতা যেন জাতীয় দুর্বলতায় পরিণত না হয়, তার দায় আমাদের সকলের।
📌 এখনই সময়, সাহস নিয়ে প্রশ্ন তোলা, সিস্টেম বদলানো, আর স্বজন নয়, মেধার স্বীকৃতি দেওয়া।
“স্বজন নয়, সত্যিই যোগ্য কে?”
একবার ভাবুন—যে ছাত্র আজ স্বপ্ন দেখে অধ্যাপক হবার, সে যদি জানে বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপোষণ তার স্বপ্নের দরজাই বন্ধ করে দিচ্ছে, তবে সে কি আর সেই স্বপ্ন দেখতে পারবে?
শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণ এখন আর শুধু গুজব নয়, এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি যেন একটা নীরব মহামারী।
🔁 মেধা যখন বঞ্চিত হয়, তখন শুধু একজন ছাত্র বা প্রার্থী নয়, গোটা সমাজই হেরে যায়।
👉 বাংলায় এখন দরকার:
সত্যিকারের নিয়োগে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা
বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা চিহ্নিত করে নতুন পথ খোঁজা
রাজনীতির রং নয়, মেধার আলোকে নিয়োগ প্রক্রিয়া সাজানো
যতদিন না এই দুর্বল নীতির শিকড় উপড়ে ফেলা যাচ্ছে, ততদিন শিক্ষক নিয়োগে পক্ষপাতিত্ব চলতেই থাকবে।
আর যতদিন এই পক্ষপাত থাকবে, ততদিন শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণের ফলে মেধাবীদের অবহেলা ঘটতেই থাকবে।
আজ বাংলার প্রতিটি শিক্ষার্থী, প্রতিটি মেধাবী, প্রতিটি অভিভাবকের একটাই দাবি—
“বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপোষণের অভিযোগ” বন্ধ হোক,
বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ যেন বাস্তব পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
💭 শেষ কথা?
বিশ্ববিদ্যালয় শুধু পড়ানোর জায়গা নয়—এটি একটি মূল্যবোধ তৈরির কারখানা।
যেখানে বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ নীতির দুর্বলতা আছে, সেখানে শিক্ষকতা নয়, রাজনীতি শেখানো হয়।
👉 এবার আপনিই বলুন—স্বজন না যোগ্য, কাকে আপনি আপনার সন্তানের শিক্ষক হিসেবে চান?