বাংলার মন্দিরে কি শুধুই দেব-দেবীর বাস, নাকি লুকিয়ে আছে শতাব্দীর ইতিহাস আর শিল্পের অপূর্ব নিদর্শন? তারাপীঠের অলৌকিক শক্তি, দক্ষিণেশ্বরের গঙ্গাবক্ষে নৌকা-বিহার, কিংবা বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা মন্দিরের নিপুণ কারুকাজ—প্রতিটি মন্দিরে মিশে আছে ধর্ম, সংস্কৃতি আর শিল্পের অপূর্ব সমন্বয়। চলুন, বাংলার মন্দির পর্যটনে হারিয়ে যাই আধ্যাত্মিকতার এক অনন্ত যাত্রায়!

সূচিপত্র

মন্দিরে পা রাখলেই কি সত্যিই মন শান্ত হয়?

আপনি কি কখনও মন্দিরের নিরিবিলি পরিবেশে দাঁড়িয়ে মনকে হালকা অনুভব করেছেন? বাংলার মন্দির পর্যটন শুধু ধর্মীয় বিশ্বাস নয়, এটি এক অনন্য আধ্যাত্মিক যাত্রাও বটে। পশ্চিমবঙ্গের তারাপীঠ, দক্ষিণেশ্বর, বেলুড় মঠের মতো বিখ্যাত তীর্থস্থান ছাড়াও গ্রামবাংলার ছোট ছোট মন্দিরে লুকিয়ে আছে অজানা ইতিহাস আর মুগ্ধতা।

এই ব্লগে আমরা জানবো – বাংলার মন্দির পর্যটনের খুঁটিনাটি, বিখ্যাত তীর্থস্থানের তথ্য, খরচের পরিকল্পনা, এবং আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার কিছু টিপস!

বাংলার মন্দির পর্যটনের আকর্ষণ: কেন এত জনপ্রিয়?

বাংলার মন্দির পর্যটন শুধুমাত্র ধর্মীয় বিশ্বাসের সীমাবদ্ধ গণ্ডিতে আবদ্ধ নয়, বরং এটি ইতিহাস, শিল্প আর সংস্কৃতির এক অপূর্ব মেলবন্ধন। মন্দিরে পা রাখলেই যেন অনুভব করা যায় অতীতের নিঃশ্বাস, শিল্পীদের নিখুঁত ছোঁয়া আর আধ্যাত্মিকতার অনির্বচনীয় স্পর্শ। চলুন, পয়েন্ট ধরে ধরে বাংলার মন্দির পর্যটনের জনপ্রিয়তার কারণ বিশ্লেষণ করি।

 ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যশৈলীর টান

বাংলার মন্দির পর্যটনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ এর ঐতিহাসিক মূল্য এবং স্থাপত্যশৈলী। প্রতিটি মন্দিরে লুকিয়ে আছে যুগ যুগান্তরের কাহিনি এবং শিল্পের অপরূপ নিদর্শন।

বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা মন্দির:

  • লাল মাটির নিপুণ কারুকাজে মোড়া বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা মন্দির বাংলার মন্দির পর্যটনের অন্যতম রত্ন।

  • বিষ্ণুপুরের রসমনচ, জোড়বাংলা মন্দির, মদনমোহন মন্দিরে টেরাকোটার শিল্পকলা এতটাই নিখুঁত যে মনে হয়, মাটির ওপর প্রাণ ফুটে উঠেছে।

  • বিষ্ণুপুরের মন্দির স্থাপত্য আজও বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উজ্জ্বল সাক্ষী।

শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহ:

  • বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গড়া শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহ শুধুই উপাসনার কেন্দ্র নয়, এটি বাংলার আধ্যাত্মিক যাত্রার এক অনন্য ঠিকানা।

  • রবিবারের প্রার্থনাসভার সময় শান্তিনিকেতনের প্রকৃতি আর প্রার্থনার পরিবেশ এক অনন্য আধ্যাত্মিক অনুভূতি সৃষ্টি করে।

Visva Bharati University | Students of Visva Bharati angry as Upasana Griha  is closed for 3 weeks - Anandabazar

 আধ্যাত্মিক শক্তির সন্ধানে তীর্থযাত্রা

বাংলার মন্দির পর্যটন মানে শুধু স্থাপত্য দর্শন নয়, বরং আত্মশুদ্ধির এক অন্তর্দৃষ্টি। ধর্মপ্রাণ মানুষ বিশ্বাস করেন, বাংলার মন্দিরে দেব-দেবীর কৃপায় তাদের ইচ্ছা পূরণ হয়।

তারাপীঠ মন্দিরের অলৌকিক শক্তি:

  • বাংলার মন্দির পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ তারাপীঠ।

  • লোককথা বলে, এখানে মা তারার কৃপায় ভক্তরা অলৌকিক উপকার লাভ করেন।

  • রাতের তারাপীঠ মন্দির ভ্রমণ এক রহস্যময় অভিজ্ঞতা।

মায়াপুর ইসকন মন্দিরের প্রশান্তি:

  • নদীয়ার নবদ্বীপে অবস্থিত মায়াপুর ইসকন মন্দির বাংলার ধর্মীয় ভ্রমণের এক উজ্জ্বল গন্তব্য।

  • মন্দিরের কীর্তন, আরতি ও যোগসাধনা পর্যটকদের আধ্যাত্মিক যাত্রাকে সমৃদ্ধ করে।

  • মায়াপুরে থাকাকালীন মন্দির প্রাঙ্গণে বসে গঙ্গার ধারে সূর্যাস্ত দেখার অভিজ্ঞতা চিরস্মরণীয়।

 উৎসবের আড়ম্বরে মন্দির দর্শন

বাংলার মন্দিরে শুধু পুজো নয়, বিভিন্ন উৎসবের সময় এক অন্যরকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়, যা পর্যটকদের মোহিত করে।

দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরে কালীপুজোর রাত:

  • দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির পুজোর রাতে এক অন্যরকম আলোয় ভরে ওঠে।

  • মন্দির চত্বরজুড়ে দীপ, ধূপ আর কাঁসর-ঘণ্টার সুরে তৈরি হয় এক অলৌকিক পরিবেশ।

  • দক্ষিণেশ্বর থেকে বেলুড় মঠ নৌকা ভ্রমণ রাতের আকাশের নিচে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।

নবদ্বীপে রাসযাত্রা:

  • নবদ্বীপের রাধা-কৃষ্ণ মন্দির এবং রাসযাত্রা বাংলার মন্দির পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ।

  • রাসের সময় গোটা নবদ্বীপ আলোয় ঝলমল করে ওঠে।

  • রাধা-কৃষ্ণের ঝুলন দর্শনে মুগ্ধ হন পর্যটকেরা।

নবদ্বীপের রাসযাত্রা : রিঙ্কি সামন্ত

 অজানা গ্রাম্য মন্দিরের আধ্যাত্মিকতা

বাংলার গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য অজানা মন্দির, যেগুলোর আধ্যাত্মিক শক্তি পর্যটকদের মনকে ছুঁয়ে যায়।

বাঁকুড়ার টেরাকোটা মন্দির:

  • বাঁকুড়ার গ্রাম্য পরিবেশে অবস্থিত টেরাকোটা মন্দির বাংলার স্থাপত্য ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের নিদর্শন।

  • এখানকার নিস্তব্ধ মন্দিরে বসে থাকা মানে প্রকৃতি আর আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে একাত্ম হওয়া।

বীরভূমের কঙ্কালীতলা:

  • শান্তিনিকেতনের কাছে অবস্থিত কঙ্কালীতলা মন্দির বাংলার মন্দির পর্যটনের একটি কম পরিচিত কিন্তু শক্তিশালী তীর্থস্থান।

  • এটি সতীপীঠ হওয়ায় ভক্তদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র স্থান।

18th episode of tirther jhnak by kaushik dutta। Robbar

 আধ্যাত্মিক রিট্রিট ও যোগসাধনা

বাংলার মন্দির পর্যটন শুধুই দর্শন নয়, অনেক স্থানে আধ্যাত্মিক রিট্রিট ও যোগসাধনার সুযোগ থাকে।

মায়াপুরে যোগ ক্যাম্প:

  • মায়াপুর ইসকন মন্দিরে থাকার ব্যবস্থা এবং যোগ প্রশিক্ষণ পর্যটকদের মানসিক শান্তি দেয়।

  • এখানে কয়েক দিনের রিট্রিটে যোগসাধনা, ধ্যান এবং প্রার্থনার মাধ্যমে পর্যটকেরা এক অনন্য আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা পান।

রামকৃষ্ণ মিশনের রিট্রিট:

  • বেলুড় মঠের রামকৃষ্ণ মিশনে থাকা ও ধ্যানের সুযোগ থাকে।

  • এখানে ধ্যান করার সময় মনে হয়, যেন ঈশ্বরের একান্ত সান্নিধ্যে আছি।

বাংলার মন্দির পর্যটন শুধু ধর্মীয় ভ্রমণ নয়, এটি এক অনন্য আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক যাত্রা। বিষ্ণুপুরের টেরাকোটা মন্দির থেকে তারাপীঠের অলৌকিক শক্তি—প্রতিটি মন্দিরে মিশে আছে ইতিহাস, সংস্কৃতি আর শিল্পের অপূর্ব সমন্বয়। বাংলার মন্দিরে আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা পাওয়া মানে, হৃদয় জুড়ে শান্তির আশ্রয় খুঁজে পাওয়া।

বাংলার বিখ্যাত মন্দির ও তীর্থস্থান তালিকা: ইতিহাস, রহস্য আর আধ্যাত্মিকতার মেলবন্ধন

বাংলার মন্দির পর্যটন মানে শুধুই ইট-কাঠ-পাথরের গাঁথুনি দেখা নয়, বরং প্রতিটি মন্দিরে লুকিয়ে আছে ইতিহাসের নিঃশ্বাস, কিংবদন্তির গল্প আর অলৌকিক বিশ্বাস। এই অংশে আমরা বাংলার বিখ্যাত মন্দির ও তীর্থস্থানগুলিকে বিশদে তুলে ধরব, যাতে ভ্রমণপিপাসু আর আধ্যাত্মিক পর্যটকেরা নতুন কিছু জানতে পারেন।

. দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির: ঈশ্বরের স্পর্শে আধ্যাত্মিক আলো

কলকাতার গঙ্গার তীরে অবস্থিত দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় তীর্থস্থান। মন্দিরে প্রবেশ করলেই অনুভূত হয় মা কালীর অলৌকিক শক্তি।

মন্দিরের স্থাপত্য ও আধ্যাত্মিকতা:

  • দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের নব-গোথিক স্থাপত্যশৈলী ও নবরত্ন নকশা দর্শকদের মুগ্ধ করে।

  • মা কালীর কৃপা পেতে দক্ষিণেশ্বর মন্দির দর্শন বহু ভক্তের কাছে এক আবেগের বিষয়।

  • গঙ্গার তীরে বসে প্রার্থনা করা মানে প্রকৃতি আর আধ্যাত্মিকতার মিলন অনুভব করা।

রামকৃষ্ণের স্মৃতি:

  • এই মন্দিরেই ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব সাধনায় লীন হয়েছিলেন।

  • ভক্তরা দক্ষিণেশ্বরে এসে রামকৃষ্ণের স্মৃতি বিজড়িত স্থানে ধ্যান করেন।

  • মন্দির চত্বর থেকে গঙ্গায় নৌকা করে বেলুড় মঠে যাওয়ার অনুভূতি একেবারে স্বর্গীয়।

দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি - উইকিপিডিয়া

দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির ভ্রমণসূচি:

📍 অবস্থান: কলকাতা, গঙ্গার তীরে (বারানগর স্টেশনের কাছে)

👉 মন্দির দর্শনের সময়:

  • প্রভাতকাল: ৬:০০ AM – ১২:৩০ PM

  • সন্ধ্যাকাল: ৩:০০ PM – ৮:৩০ PM

  • বিশেষ দিন: অমাবস্যা ও শনিবারে ভিড় বেশি থাকে, তাই সকাল সকাল যাওয়াই ভালো।

🚉 যাতায়াত পরিকল্পনা:

  • রেলপথ: হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে বারানগর স্টেশন পর্যন্ত লোকাল ট্রেনে যান, তারপর অটো বা রিকশায় মাত্র ১০ মিনিট।

  • মেট্রো: দমদম বাদক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশন থেকে নেমে অটো ধরে মন্দিরে পৌঁছানো যায়।

  • বাস: কলকাতা শহর থেকে সরাসরি দক্ষিণেশ্বরগামী বাস পাওয়া যায় (রুট: S9, S11, 201)।

  • ফেরি: বাগবাজার ঘাট থেকে ফেরিতে গঙ্গা পার হয়ে সরাসরি দক্ষিণেশ্বর পৌঁছানো যায়।

🏨 থাকার ব্যবস্থা:

  • কম বাজেট: দক্ষিণেশ্বরের আশেপাশে বেশ কিছু ধর্মশালা আছে (প্রতি রাত ৫০০-৮০০ টাকা)।

  • মধ্যম বাজেট: বারানগর ও দমদম অঞ্চলে হোটেল (প্রতি রাত ১৫০০-২৫০০ টাকা)।

  • উচ্চবাজেট: কলকাতার পার্ক স্ট্রিট বা সল্টলেক অঞ্চলের বিলাসবহুল হোটেল (প্রতি রাত ৫০০০+ টাকা)।

🍽️ খাবার ও বিশেষত্ব:

  • মন্দিরের বাইরে বিখ্যাত “ভোগ প্রসাদ” পাওয়া যায়।

  • দক্ষিণেশ্বর ঘাটের ধারে বসে চা, খেজুর গুড়ের রসগোল্লা ও ফুলকো লুচি খেতে ভুলবেন না।

Profile for দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির ।। Dakshineswar Kali Mandir

তারাপীঠ: অলৌকিক শক্তির তীর্থক্ষেত্র

তারাপীঠ মন্দির পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায় অবস্থিত। এটি শুধু এক তীর্থস্থান নয়, বাংলার মন্দির পর্যটনের এক অন্যতম অলৌকিক কেন্দ্র।

মন্দিরের বৈশিষ্ট্য:

  • তারাপীঠে মা তারার প্রতিমা এক অনন্য রূপে পূজিত হন—মায়ের রূপ নীল ও ভীতিপ্রদ।

  • জনশ্রুতি অনুযায়ী, এখানে সাধক বামাক্ষ্যাপা মা তারার কৃপা লাভ করেছিলেন।

  • রাত্রির তারাপীঠ মন্দির দর্শন ভক্তদের মনে অদ্ভুত শিহরণ জাগায়।

অলৌকিক ঘটনা ও কাহিনি:

  • কথিত আছে, তারাপীঠে মা তারার কৃপায় বহু ভক্তের ইচ্ছাপূরণ হয়েছে।

  • সাধক বামাক্ষ্যাপার আশ্রমে ধ্যান করলে মানসিক শান্তি লাভ হয়।

  • মন্দির সংলগ্ন শ্মশানে বিশেষ সময়ে আয়োজিত পুজোয় অংশগ্রহণ করলে অনেকেই আধ্যাত্মিক শক্তি অনুভব করেন।

Tarapith Temple : দীর্ঘ ৫ মাস পরে খুলল পাঁশকুড়ার 'দ্বিতীয়' তারাপীঠ মন্দির

তারাপীঠ মন্দির ভ্রমণসূচি:

📍 অবস্থান: বীরভূম জেলা, পশ্চিমবঙ্গ

👉 মন্দির দর্শনের সময়:

  • প্রভাতকাল: ৬:০০ AM – ১:০০ PM

  • সন্ধ্যা: ৩:৩০ PM – ৯:০০ PM

  • বিশেষ দিন: অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় বিশেষ পুজোর আয়োজন হয়, ভিড় থাকে বেশি।

🚍 যাতায়াত পরিকল্পনা:

  • রেলপথ: হাওড়া স্টেশন থেকে রামপুরহাট লোকাল ট্রেন ধরুন (সময়: ৩-৪ ঘণ্টা)।

  • রামপুরহাট স্টেশন থেকে তারাপীঠের দূরত্ব মাত্র ৯ কিমি, টোটো বা অটোতে পৌঁছে যাবেন।

  • বাসপথ: কলকাতা থেকে সরাসরি তারাপীঠগামী বাস পাওয়া যায় (সময়: ৫-৬ ঘণ্টা)।

🏨 থাকার ব্যবস্থা:

  • কম বাজেট: তারাপীঠ মন্দিরের আশেপাশে ধর্মশালা বা লজে থাকতে পারেন (প্রতি রাত ৫০০-১০০০ টাকা)।

  • মধ্যম বাজেট: ১০০০-২০০০ টাকার হোটেল রয়েছে (AC রুমের জন্য ২৫০০ টাকা পর্যন্ত)।

  • উচ্চ বাজেট: বিলাসবহুল রিসর্ট (Tarapith Inn, Anandamayee Hotel) – প্রতি রাত ৪০০০+ টাকা।

🍽️ খাবার ও বিশেষত্ব:

  • মন্দিরের কাছে ছোট ছোট দোকানে “কচুরি-আলুর তরকারি” ও বিখ্যাত “মিষ্টি দই” খেতে ভুলবেন না।

  • তারাপীঠে সন্ধ্যায় ভোগ প্রসাদ খেলে মানসিক শান্তি অনুভব হবে।

Kali Pujo 2021: তারাপীঠ কি শক্তিপীঠ না সিদ্ধপীঠ? অজানা রহস্যেভরা ইতিহাস  জানলে শিউরে উঠবেন - Bengali News | Why is tarapith called mahapith and  saktipith - TV9 Bangla News

মায়াপুর ইসকন মন্দির: আধ্যাত্মিক প্রশান্তির ঠিকানা

নদীয়ার মায়াপুর ইসকন মন্দির বাংলার মন্দির পর্যটনের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। এখানে আধ্যাত্মিকতা আর আভিজাত্যের অপূর্ব সংমিশ্রণ দেখা যায়।

মন্দিরের বিশেষত্ব:

  • বিশাল আকৃতির ইসকন মন্দিরের স্থাপত্যশৈলী ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করে।

  • প্রতিদিন সন্ধ্যায় কীর্তন আর আরতির মাধ্যমে তৈরি হয় এক আধ্যাত্মিক পরিবেশ।

  • মন্দির প্রাঙ্গণে বসে গঙ্গার বাতাসে মন জুড়িয়ে যায়।

আবাসন ও যোগ শিবির:

  • মায়াপুরে পর্যটকদের জন্য রয়েছে ধর্মীয় আবাসন।

  • এখানে যোগশিবির, ধ্যান কর্মশালা ও সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।

  • মায়াপুর মন্দির দর্শন মানে শুধু পুজো নয়, মানসিক প্রশান্তি খুঁজে পাওয়া।

Bhromon: ইস্কন মায়াপুর ভ্রমণের সম্পূর্ণ গাইড (ISKON Mayapur travel)

মায়াপুর ইসকন মন্দির ভ্রমণসূচি:

📍 অবস্থান: নদীয়া জেলা, পশ্চিমবঙ্গ

👉 মন্দির দর্শনের সময়:

  • প্রভাতকাল: ৫:০০ AM – ১২:৩০ PM

  • বিকেল: ৩:৩০ PM – ৮:৩০ PM

  • প্রতিদিন সন্ধ্যায় আরতি ও কীর্তন হয়, যা মিস করা উচিত নয়।

🚎 যাতায়াত পরিকল্পনা:

  • রেলপথ: কৃষ্ণনগর স্টেশনে নেমে টোটোতে বা গাড়িতে মাত্র ১০ কিমি পথ যেতে হবে।

  • বাসপথ: কলকাতা থেকে ইসকনগামী সরাসরি বাস পাওয়া যায় (সময়: ৪-৫ ঘণ্টা)।

  • গাড়ি: কলকাতা থেকে ১৩০ কিমি পথ (সময়: ৩-৪ ঘণ্টা)।

🏨 থাকার ব্যবস্থা:

  • কম বাজেট: ইসকনের অতিথিশালা (রাত ৫০০-১০০০ টাকা)।

  • মধ্যম বাজেট: স্থানীয় হোটেল (প্রতি রাত ১৫০০-৩০০০ টাকা)।

  • উচ্চ বাজেট: বিলাসবহুল রিসর্ট (প্রতি রাত ৪০০০+ টাকা)।

🍽️ খাবার ও বিশেষত্ব:

  • ইসকনে সাত্ত্বিক নিরামিষ খাবার পাওয়া যায়।

  • মন্দির প্রাঙ্গণে সুস্বাদু “খিচুড়ি প্রসাদ” আর রসমালাই খেতে ভুলবেন না।

ISKCON, Mayapur

বেলুড় মঠ: রামকৃষ্ণের শান্তি ও সেবা কেন্দ্র

বেলুড় মঠ হুগলির গঙ্গার তীরে অবস্থিত, যা শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের স্মৃতিবিজড়িত। এটি শুধু একটি মন্দির নয়, বরং আধ্যাত্মিক সাধনার কেন্দ্র।

মঠের স্থাপত্যশৈলী:

  • বেলুড় মঠের স্থাপত্যে হিন্দু, মুসলিম ও খ্রিস্টান স্থাপত্যশৈলীর সমন্বয় দেখা যায়।

  • সন্ধ্যায় গঙ্গার ধারে বসে থাকা মানে প্রকৃতি আর আধ্যাত্মিকতার মিলন অনুভব করা।

সেবা ও শিক্ষা:

  • মঠে নিত্যদিন বহু দরিদ্র মানুষের সেবা করা হয়।

  • রামকৃষ্ণের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ভক্তরা এখানে সেবাকার্য করেন।

  • বেলুড় মঠে ধ্যান করা মানে আত্মিক শান্তির পথ খুঁজে পাওয়া।

বেলুড় মঠ মন্দির | হাওড়া জেলার ওয়েবসাইট | ভারত

বেলুড় মঠ ভ্রমণসূচি:

📍 অবস্থান: হাওড়া জেলার বেলুড়, গঙ্গার তীরে

👉 মন্দির দর্শনের সময়:

  • গ্রীষ্মকাল: সকাল ৬:০০ AM – ১১:৩০ AM এবং বিকেল ৪:০০ PM – ৭:০০ PM

  • শীতকাল: সকাল ৬:৩০ AM – ১১:৩০ AM এবং বিকেল ৩:৩০ PM – ৬:০০ PM

🚉 যাতায়াত পরিকল্পনা:

  • রেলপথ: হাওড়া স্টেশন থেকে বেলুড় স্টেশন মাত্র ১৫ মিনিট, তারপর টোটো ধরে মঠে পৌঁছানো যায়।

  • ফেরি: কলকাতা থেকে ফেরি ধরে বেলুড় ঘাটে নেমে হাঁটতে হাঁটতে মঠে পৌঁছানো যায়।

  • গাড়ি: কলকাতা থেকে মাত্র ৩০-৪০ মিনিটের পথ।

🏨 থাকার ব্যবস্থা:

  • আশেপাশে হোটেল বা লজ (প্রতি রাত ১০০০-৩০০০ টাকা)।

  • গঙ্গার ধারে রিসর্টও পাওয়া যায়।

🍽️ খাবার ও বিশেষত্ব:

  • বেলুড় মঠের প্রাঙ্গণে “সাত্ত্বিক প্রসাদ” পাওয়া যায়।

  • আশেপাশের খাবারের দোকানে বাংলার ঐতিহ্যবাহী “মিষ্টি দই”“রসগোল্লা” খেতে ভুলবেন না।

Sri Ramakrishna Birth Anniversary Celebration At Belur Math: ভক্তদের চেনা  ভিড়ে বেলুড় মঠে পালিত শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের জন্মতিথি

কীর্ণহরী মন্দির (মালদা)

Leave a Reply