দক্ষিণ ২৪ পরগণার মহেশতলায় একটি অজানা রহস্যের ঘোর ছড়িয়েছে। ছোট বয়সী এক কিশোর শ্রমিককে মোবাইল চুরি সন্দেহে কারখানা মালিকের হাতে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগে স্থানীয় জনজীবন স্তব্ধ। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি তদন্তের নতুন মোড় এনেছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে এবং বিস্তারিত অনুসন্ধান চলছে। ঘটনাস্থল ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুসারে, দক্ষিণ ২৪ পরগণার মহেশতলা এলাকায় এই ঘটনা গভীর প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কি সত্য এবং কি কল্পনা, সে তথ্য সামনে আসার অপেক্ষায়।
মহেশতলার একটি কারখানায় কিশোর নির্যাতনের বিস্তৃত তথ্য
দক্ষিণ ২৪ পরগণার মহেশতলা এলাকায় গত কয়েক দিনে ঘটে যাওয়া এক অস্বাভাবিক ঘটনা নেটিজেনদের মাঝে আলোড়ন তুলেছে। মহেশতলার কাঁখুলি পূর্বপাড়া এলাকায় অবস্থিত একটি জিন্স রঙের কারখানায় ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরকে কারখানার মালিকের দ্বারা নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ ২৪ পরগণার মহেশতলা এলাকার ওই কারখানায় কাজ করত ওই কিশোর। মোবাইল চুরি সন্দেহে কারখানা মালিক শাহেনশাহ কিশোরটিকে উল্টে ঝুলিয়ে মারধর করেন এবং বিদ্যুৎ শক দিয়ে নির্যাতন চালান। ঘটনা ভয়াবহ হলেও ভিডিওর মাধ্যমে তা সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে মহেশতলা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণার স্থানীয়রা ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ভিডিওটি দেখার পর পরিবারটি ইসলামপুর থানায় যোগাযোগ করে এবং মহেশতলার রবীন্দ্রনগর থানাতেও অভিযোগ দায়ের করে। পাশাপাশি, তারা ইসলামপুর থানার অন্তর্গত পাটাগোড়া ফাঁড়িতেও যান এবং দ্রুত পুলিশি পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাদের ছেলেকে নিরাপদে বাড়ি ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
দক্ষিণ ২৪ পরগণা, মহেশতলার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভুক্তভোগী কিশোরের পরিবার মিথ্যা অভিযোগের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। তারা পুলিশ ও অন্যান্য প্রশাসনিক দফতরে বহুবার অভিযোগ করেছেন, যাতে কিশোরকে অবিলম্বে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়।
মহেশতলা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত দুজনেই ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা। এই অঞ্চলটির ভৌগোলিক ও সামাজিক কাঠামো বিচার করলে দেখা যায়, শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যেই এই ধরনের ঘটনা বেশ কনিষ্ঠ প্রাপ্তবয়স্ক ও কিশোরদের মাঝে ঘটার আশঙ্কা থাকে।
দক্ষিণ ২৪ পরগণা ও মহেশতলার এই কারখানায় ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। প্রশাসনের পদক্ষেপ এবং তদন্তের গতি নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের কৌতূহল রয়েছে।
ওই কিশোরের পরিবার দাবি করেছে, তাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে এবং তারা ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। “তদন্ত করে দেখা গেছে, ও মোবাইল চুরি করেনি। শুধুমাত্র বদনাম করে ওকে এইভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি,” সাংবাদিকদের জানান ওই কিশোরের কাকা।
দক্ষিণ ২৪ পরগণার মহেশতলায় ঘটে যাওয়া এই ঘটনা সামাজিক ও আইনগত দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্ব বহন করে। তদন্ত চলমান থাকা সত্ত্বেও, ঘটনার পরবর্তী অগ্রগতি এবং ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া জনসাধারণের নজর কাড়ে থাকবে। পরিস্থিতির যথাযথ মূল্যায়ন ও সময়োপযোগী পদক্ষেপই ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সহায়ক হবে।