পূর্ব বর্ধমানের নিঃশব্দ প্রান্তে আতঙ্ক ছড়াল গোপন দেশদ্রোহের ছায়া। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) দুই ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে, যাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর কাছে তথ্য পাচারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আড়ালে ছদ্মবেশে চলছিল দেশের গোপন তথ্যের লেনদেন। সিম কার্ডের ওটিপি ভাগাভাগি করে এই চক্র গোপনে কাজ চালাত বলে অভিযোগ। গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রাজ্যের নিরাপত্তার পর্দা তুলে দিল এসটিএফ, যা ঘনাচ্ছে নতুন সন্দেহের ছায়া।
🔎 স্টোরি হাইলাইটস
• পূর্ব বর্ধমান থেকে দুই ব্যক্তি গ্রেপ্তার
• আইএসআই-র সঙ্গে সম্ভাব্য যোগসূত্র
• সিম কার্ড ওটিপি পাচার করে তথ্য সরবরাহ
• ভুয়ো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নাম ব্যবহার
• একে ধরা হল নার্সিং হোম থেকে, অপরকে ভাড়া বাড়ি থেকে
• কলকাতা আদালতে হাজির করে ৭ দিনের হেফাজতে এসটিএফ
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) রাজ্যের পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে, যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর সঙ্গে যোগসাজশে গুপ্তচরবৃত্তির। শনিবার গভীর রাতে জেলা জুড়ে দু’টি পৃথক স্থানে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ধৃতদের নাম মুকেশ রজক এবং রাকেশ কুমার গুপ্তা। মুকেশ পানাগড়ের ক্যানাল রোড এলাকার বাসিন্দা, যিনি মেমারির এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে দাবি। অন্যদিকে, রাকেশ কলকাতার ভবানীপুর এলাকার বাসিন্দা হলেও দীর্ঘদিন ধরে মেমারিতে এক ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছিলেন। পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই একই সংগঠনের আড়ালে তিনি মূলত গুপ্তচর হিসেবে কাজ করতেন।
তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, এই চক্রের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় মোবাইল সিম কার্ডগুলোর ওটিপি সংগ্রহ করা এবং তা নির্দিষ্ট সূত্রে পাচার করা। একাধিক ওটিপি, অর্থ লেনদেন এবং যোগাযোগের তথ্য বিশ্লেষণ করে তদন্তকারীরা মনে করছেন, এর মাধ্যমে আইএসআই ভারতীয় সাইবার এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পাচারের লক্ষ্যে কাজ করছিল।
অভিযোগ অনুযায়ী, এই অপারেশন বেশ কিছু দিন ধরেই গোপনে চলছিল। অভিযুক্তরা বর্ধমান জেলার বিভিন্ন স্থানে ভাড়া বাড়িতে থাকত এবং সেখান থেকেই সক্রিয়ভাবে এই কার্যকলাপ চালাত বলে সন্দেহ। মোবাইল সিম ও ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত কার্যকলাপে যে পদ্ধতিতে ওটিপি ব্যবহার করা হয়, তা ব্যবহার করে তারা গোপন চ্যানেলে তথ্য সরবরাহ করত বলে পুলিশ অনুমান করছে।
এই গ্রেফতারির পেছনে রয়েছে একটি “গোপন সূত্রে পাওয়া” তথ্য, যা এসটিএফ-এর কাছে পৌঁছানোর পর থেকেই তৎপরতা শুরু হয়। শনিবার রাতে মুকেশ রজককে মেমারির একটি নার্সিং হোম থেকে গ্রেফতার করা হয়, যেখানে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। অন্যদিকে, রাকেশকে ধরা হয় মেমারিরই এক ভাড়া বাড়ি থেকে।
সোমবার কলকাতার আদালতে তাদের হাজির করা হলে বিচারক তাদের সাত দিনের জন্য এসটিএফ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তদন্তে আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসতে পারে বলে মনে করছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই ধৃতদের ফোন ও নথিপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনও বৃহত্তর চক্র এর সঙ্গে যুক্ত কিনা, তা জানার চেষ্টা চলছে।
এখন পুলিশের একমাত্র লক্ষ্য, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে গোটা চক্রটির পর্দাফাঁস করা এবং এই ধরনের আন্তর্জাতিক গুপ্তচরবৃত্তির প্রচেষ্টা দমন করা। গোটা ঘটনায় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যেও তীব্র সতর্কতা দেখা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে আইএসআই-র কার্যকলাপের এই ধরনের উপস্থিতি প্রশাসনিক মহলে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ! ❤️আমরা সবসময় চেষ্টা করি আপনাদের জন্য তথ্যসমৃদ্ধ, আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট তৈরি করতে, যাতে আপনি নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা আমাদের সঙ্গে আপনার মতামত শেয়ার করতে চান, তাহলে “যোগাযোগ করুন” ফর্ম ব্যবহার করে সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলুন। আমরা আগ্রহের সঙ্গে আপনার কথা শুনতে প্রস্তুত এবং আপনার প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করি। এছাড়াও, ভবিষ্যতের আপডেট, নতুন নিবন্ধ ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিস না করতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন—একসঙ্গে জানবো, শিখবো, আর নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখবো